সুদীপ পাকড়াশীঃ
অবসর নিলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক অরিন্দম ভট্টাচার্য্য। বয়স হয়েছিল ৩৫। কিন্তু গত আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ইন্টার কাশীর হয়ে তার পারফরম্যান্স দেখে ক্লাব কর্তৃপক্ষের মনে হয়নি অরিন্দম অবসর নেবেন। আই লিগে ২১টি ম্যাচ খেলেছিলেন। ৬টা ক্লিন-শিট। ২১ ম্যাচে গোল খেয়েছেন ৩০টি।
তবু অবসর নেওয়ার অন্যতম কারণ ইন্টার কাশির তরুণ গোলকিপারদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার ভাবনা। রবিবার গোয়া থেকে ফোনে প্যারালাল স্পোর্টসকে অরিন্দম বললেন, “সুপার কাপে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের সঙ্গে আমাদের ড্রয়ের ম্যাচে শুভম শুরু করেছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে চোট পেয়ে বসে যাওয়ায় পরিবর্ত হয়ে আমারই নামার কথা। কিন্তু আমি না নেমে, মোহিত নামের একজন নতুন গোলকিপারকে বললাম নামতে। খুব খুশি হয়েছিলাম দেখে যে ওর প্রথম কম্পিটিটিভ ম্যাচে মোহিত খুব ভাল খেলেছিল। যদি সুযোগটা না পেত তাহলে ওর পেশাদার ফুটবল জীবনটা হয়ত আরও পিছিয়ে পড়ত। ক্লাবের শীর্ষকর্তারা আমাকে একাধিকবার অনুরোধ করেছিল আইএসএলে খেলার জন্য। কিন্তু মোহিত, শুভমদের কথা ভেবে আমার মনে হল আর নয়। আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আইএসএলে উত্তীর্ণ হয়েছে দল। অবসর নেওয়ার এটাই সেরা সময়।”
মনে হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ২০ বছর আগে এক ১৭ বছরের কিশোরকে প্রথম একাদশে সুযোগ কেউ করে দেয়নি। টিএফএ থেকে পাস-আউট হয়ে অরিন্দম ভট্টাচার্যের ফুটবলজীবন শুরু হয়েছে চার্চিল ব্রাদার্সে। অনুশীলনে পারফর্ম করে প্রথম একাদশে ঢুকেছিলেন। গোয়া লিগে প্রথম ম্যাচ ছিল ডেম্পোর বিরুদ্ধে। ফল ২-২। ১৭ বছরের সেই অরিন্দম সেদিন মাঠ ছেড়েছিলেন প্রশংসা নিয়ে। পরবর্তীকালে তার মুকুটে অনেক পালক লেগেছে। ভারতীয় ফুটবলে প্রায় সব বড় দলের জার্সি পরেছেন। ১০ বছর আইএসএল খেলেছেন। আই লিগে সেরা গোলকিপার হয়েছেন। সাফ কাপের ফাইনালে মলদ্বীপের বিরুদ্ধে পেনাল্টি বাঁচিয়ে টুর্নামেন্টে সেরা হয়েছেন। ফেডারেশনের বর্ষসেরা গোলকিপার হোয়েছেন। তবু, প্রথম ম্যাচে পারফরম্যান্সের স্মৃতিই এখনও উজ্জ্বল।

গোয়ায় সুপার কাপে জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে শেষ মিনিট দশেকের জন্য পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নেমেছিলেন ৩৫ বছর বয়সী অরিন্দম। এই সময়ের মধ্যে একটি গোল বাঁচিয়ে করে ও তারপর মাঠেই বিশেষ অনুষ্ঠানে ইন্টার কাশীর ২০২৪-২৫ আই লিগ জয়ের ট্রফি গ্রহণ করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের অবসরের কথা ঘোষণা করলেন প্রাক্তন জাতীয় গোলরক্ষক।
মাঠে নেমে কোচিং করানোর ইচ্ছে আর নেই অরিন্দমের। “আপাতত কয়েক মাস নিখাদ ছুটি কাটাই। তারপর দেখি। অনলাইনে স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশুনো করছি। ভবিষ্যতে ইচ্ছে আছে ফুটবলের জন্য কিছু করার। ফুটবলই তো আমাকে সব দিয়েছে,” বললেন অরিন্দম।







