ফুটবলকে বিদায় জানালেন অদিতি চৌহান; ক্যাসের রায়ের অপেক্ষায় ইন্টার কাশী

অবসর নিলেন ভারতের মহিলা জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক অদিতি চৌহান। মাত্র ৩২ বছর বয়সেই ১৭ বছরের দীর্ঘ ফুটবল কেরিয়ারের ইতি ঘটালেন তিনি। অদিতিই প্রথম ভারতীয় ফুটবলার, যিনি ইংল্যান্ডের উইমেন্স সুপার লিগে খেলেছেন। ২০১৫-১৮ টানা তিন মরসুম, বিখ্যাত ক্লাব ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের হয়ে সেদেশের সর্বোচ্চ মহিলা লিগে খেলেছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ভারতের অনুর্দ্ধ-১৯ মহিলা জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ঘটে অদিতি চৌহানের। এরপর ২০১১ সালে সিনিয়র জাতীয় দলেও সুযোগ পেয়ে যান তিনি। তবে তখনও ভারতীয় মহিলা ফুটবল পেশাদার হয়নি এবং এখনকার মতো জাতীয় পর্যায়ে মেয়েদের লিগ হতো না। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের লাউবরো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দলের হয়ে খেলা শুরু করেন অদিতি। সেখান থেকেই তিনি নজরে পড়ে যান ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের এবং বলতে গেলে লন্ডনের ক্লাবটিতেই তাঁর পেশাদার কেরিয়ার শুরু হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, নিজের কেরিয়ারের সেরা সময়টাতে ইংল্যান্ডে পড়াশোনা ও ক্লাব ফুটবলে নিয়োজিত থাকায় তাঁকে সেই সময়ে ভারতীয় দলে সেভাবে পাওয়া যায়নি। ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগ শুরু হলে তিনি ভারতে ফিরে ইন্ডিয়া রাস এসসি ও তারপর গোকুলম কেরল এফসি-র হয়ে খেলেন। মাঝে ২০২১ সালে একবার আইসল্যান্ডের মহিলা লিগে খেলে আসেন হামার হভেরাগার্ডির হয়ে। গত মরসুমে তিনি ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগে বাংলা থেকে নবোন্নীত ক্লাব শ্রীভূমি এফসি-তে যোগ দেন এবং দলটিকে প্রথমবারেই লিগে তৃতীয়স্থান পাওয়াতে বড় ভূমিকা পালন করেন। তবে এবার আর কেরিয়ার দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন না তিনি। ইতিমধ্যেই সি-কিকস্ নামের একটি ফুটবল অ্যাকাডেমি খুলেছেন অদিতি, যেখানে তিনি বালিকাদের ফুটবল পাঠ দেন। অবসরের পর জানিয়েছেন আকাডেমির জন্যই বেশি সময় দেবেন। ভারতের হয়ে অনুর্দ্ধ-১৯ পর্যায়ে চারটি ও সিনিয়র পর্যায়ে ৫৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন অদিতি, জিতেছেন ২০১২, ২০১৬ ও ২০১৯ স্যাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০১৬ ও ২০১৬ সাউথ এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদক। ক্লাব কেরিয়ারে গোকুলম কেরল এফসি-র হয়ে ২০১৯-২০ ও ২০২১-২২ ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগ জিতেছেন তিনি। অন্যদিকে সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত আন্তর্জাতিক সর্বোচ্চ ক্রীড়া আদালত, কোর্ট অব্ আরবিট্রেশন অব্ স্পোর্ট বা ক্যাসে, ইন্টার কাশী বনাম চার্চিল ব্রাদার্স, নামধারী এফসি, রিয়াল কাশ্মীর এফসি ও এআইএফএফ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী পরশু, অর্থাৎ ১৮ জুলাই এই মামলার রায় বেরোনোর কথা। প্রসঙ্গত, ইন্টার কাশীর স্পেনীয় ফুটবলার মারিও বার্কোর রি-রেজিস্ট্রেশন অবৈধ দাবি করে এআইএফএফের লিগ কমিটির কাছে আবেদন করে আই লিগের তিনটি ক্লাব, চার্চিল ব্রাদার্স, নামধারী এফসি, রিয়াল কাশ্মীর এফসি। লিগ কমিটি এই রি-রেজিস্ট্রেশনকে বৈধ বলে জানালেও পরবর্তীতে এআইএফএফের আপিল কমিটি আবেদনকারী তিন ক্লাবের দাবীকেই মান্যতা দেয় এবং তিন ক্লাবের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় লেগের (যে ম্যাচগুলিতে মারিও বার্কো খেলেছিলেন) সেই ম্যাচগুলি থেকে ইন্টার কাশীর প্রাপ্ত পাঁচ পয়েন্ট কেটে নেয়। এখন ইন্টার কাশী তাকিয়ে আছে ক্যাসের সিদ্ধান্তের দিকে। ক্যাসের রায় ইন্টার কাশীর পক্ষে গেলে তারাই আই-লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে।