ক্লপের কাছে কৃতজ্ঞ থাকতে চান স্লট

অসাধারণ সৌজন্যতার নিদর্শন রাখলেন আর্নে স্লট। ২৪ ঘন্টা আগে প্রিমিয়ার লিগ জিতেছে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে লালঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে গিয়েছে প্রতিপক্ষ টটেনহ্যাম। ৫-১ গোলে টটেনহ্যামকে পর্যদুস্ত করে লিগ তুলে নিয়েছে লিভারপুল। বহুদিন ধরেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, লিভারপুলের লিগ পাওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল ২৪ ঘন্টা আগে। ডাচ কোচ হিসেবে প্রথম প্রিমিয়ার লিগ জয়ের কোচ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন স্লট। নিজস্ব উচ্ছ্বাসকে প্রকাশ করেও ভুললেন না পূর্বসূরিকে। লিভারপুলের বিদায়ী কোচ য়ুরগেন ক্লপকে সম্মান জানিয়ে ডাচ কোচ স্লট বললেন, “প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিঃসন্দেহে দারুন লাগছে। এই মুহূর্তে আমার বিশেষ কিছু বলার আছে বলেও মনে হয়না। তবে এইসময় একজনকে আমার সম্মান জানানো উচিত, তিনি আর কেউ নন লিভারপুলের প্রাক্তন কোচ য়ুরগেন ক্লপ। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য তঁার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।” প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে, ৪৬ বছরের প্রাক্তন খেলোয়াড় স্লট মে মাসে ক্লপের স্থলাভিসিক্ত হন। পরমুহূর্তে স্লটকে বলতে শোনা যায়, “আমি ৯৯.৯ শতাংশ নিশ্চিত যদি এখনই আমি য়ুরগেনকে ফোন করি তিনি তা ধরে নিশ্চয় একটা বার্তা দেবেন। যেখানে বোঝাবেন, দলের সাফল্যে তিনিও দারুন খুশি হয়েছেন। এই মরশুমে আমাদের দুজনের মধ্যে অনেকবার কথা হয়েছে। গত মরশুমে আমাকে সর্বসমক্ষে পরিচয় করে দিয়ে বুঝিয়ে ছিলেন কতবড় হৃদয়ের মানুষ ক্লপ। আসলে এই দলটা তঁারই গড়া। যে দল রেখে গিয়েছেন তারাই আজ ট্রফি জিততে সক্ষম হল।” শুধু এখানেই না থেমে স্লট বলতেই থাকেন, “য়ুরগেন ও পেপ (লিজ্যান্ডার্স) তঁাদের কাজের মধ্যে দিয়ে ক্লাবের সংস্কৃতি, কাজের হার, মান-সবকিছুর মধ্যে একটা অসাধারণত্ব প্রকাশ করে গিয়েছেন। দেখুন আমি দায়িত্ব নেওয়ার সময় কেউ আশা করেনি, লিভারপুল এবার চ্যাম্পিয়ন হবে। শুরু থেকে আমরা ভাল খেলতে থাকি। তাছাড়া গত পঁাচ বছরে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির এত খারাপ সময় আসেনি। আমরা চেয়েছিলাম, লিগ টেবিলের শীর্ষে না হোক, প্রথম চারটে দলের মধ্যে যেন থাকি। কিন্তু ফুটবলাররা প্রমাণ করে দিয়েছে, এরচেয়েও ভাল কিছু করার ক্ষমতা রাখে।” খেলা শুরুর ১২ মিনিটের মাথায় কর্ণার থেকে ভেসে আসা বলে হেড দিয়ে প্রথমে স্পার্সকে এগিয়ে দেন ডমিনিক সোলাঙ্কি। লিভারপুলের সমর্থকরা তখন হতাশ হয়ে পড়েন। খেলার শেষে স্লট জানান, গোল শুরুতে খেয়েও তিনি আদৌ চিন্তিত ছিলেন না। তঁার ধারণা ছিল দল ঠিক ঘুরে দঁাড়াবে। এমন কী অ্যানফিল্ডে আসার আগে ফুটবলাররা যখন বাসে উঠেছিল তখন থেকেই নিশ্চিত ছিল তারা ম্যাচটা জিতবেই। আসলে নিজেদের মাঠে খেলা। তারউপর এই ম্যাচের টিকিটের হাহাকার ছিল তুঙ্গে। ভারতীয় মুদ্রায় এই ম্যাচের টিকিট বিক্রি হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকার কাছাকাছি। তাই সমর্থকদের জোরালো সমর্থন যে তঁারা পাবেন তা নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল স্লটের। সমর্থকদের আবেগের কাছে যে টটেনহ্যাম ভেসে যেতে বাধ্য হবে তা একপ্রকার ভেবেই নিয়েছিলেন ডাচ কোচ। “লিভারপুল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য শুধুমাত্র ফুটবলারদের কৃতিত্ব দেব তা নয়, আমার কাছে সমর্থক, সাপোর্ট স্টাফ, মাঠের কর্মী, সকলে এই সাফল্যের পিছনে অবদান রেখেছেন। তাই প্রত্যেকের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ৩৫ বছরের মধ্যে এটি দ্বিতীয় শিরোপা জিতল দল। পঁাচ বছরের মধ্যেও দ্বিতীয়বার।” বললেন স্লট।