সংযুক্ত আরব আমিরশাহী টি-২০ লিগ থেকে খালি হাতে ফিরছেন অশ্বিন!

সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ইন্টারন্যাশনাল টি-২০ লিগ থেকে খালি হাতে ফিরছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। কোনও দল তাকে কিনল না! অভিজ্ঞ এই ভারতীয় স্পিনারের ন্যুনতম মূল্য ছিল ১ কোটি টাকা। নিলামে যা ছিল সবচেয়ে বেশি। অশ্বিন নিজেই নিজের বেস-প্রাইস ঠিক করেছিলেন। কিন্তু কোনও দলই পেলেন না তিনি। ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও আইপিএল থেকে অবসরের পর বিদেশের লিগে খেলতে চাইছেন তিনি। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে তাকে। একই অবস্থা হয়েছে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন পেসার জেমস অ্যান্ডারসন ও পাকিস্তানের প্রাক্তন পেসার মহম্মদ আমিরের। তাঁদেরও কোনও দল কেনেনি। এখনও পর্যন্ত সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৩৩৩টি ম্যাচ খেলেছেন অশ্বিন। তাতে ৩১৭ উইকেট নিয়েছেন। রান করেছেন ১২৩৩। আইপিএলে পাঁচ দলের হয়ে মোট ২২১ ম্যাচ খেলেছেন অশ্বিন। ১৮৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এত অভিজ্ঞতার পরেও আমিরশাহির লিগে দল পেলেন না অশ্বিন। চলতি বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও আইপিএল থেকে অবসর নিয়েছেন অশ্বিন। তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন। তবে এর পরও অশ্বিনের বিদেশের টি-২০ লিগে খেলা আটকাচ্ছে না। কারণ এর আগেই অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগে সিডনি থান্ডার কিনেছে অশ্বিনকে। আমিরশাহির লিগে অশ্বিনকে কেউ না কেনায় মুখে হাসি ফুটবে সিডনির দলের। কারণ, এবার অশ্বিনকে বিগ ব্যাশে পুরো টুর্নামেন্টে পাবে সিডনি থান্ডার্স।
এবার আইপিএল থেকেও অবসর অশ্বিনের

গতবছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন অশ্বিন। এবার আইপিএলকেও বিদায় জানালেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। বুধবার সকালে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান যে, আইপিএল থেকেও সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। আইপিএল কর্তৃপক্ষ ও বিসিসিআইকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। গত মরশুমে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছেন অশ্বিন। তবে সম্ভবত, বিভিন্ন ঘরোয়া ফ্রাঞ্চাইজি লিগে নিজের অভিযান চালিয়ে যেতে পারেন তিনি। বুধবার গণেশ চতুর্থী। সেই বিশেষ দিনটাকেই অশ্বিন অবসরের জন্য বেছে নিলেন। আইপিএলের অন্যতম সেরা স্পিনার লিখেছেন, ‘আজ একটা বিশেষ দিন। আজ একটা বিশেষ যাত্রা শুরু করা যাক। সবাই বলে, প্রতিটি শেষের একটা শুরু থাকে। আইপিএল ক্রিকেটার হিসেবে আমার সময় এখানেই ফুরিয়ে এল। কিন্তু বিভিন্ন লিগে আমার অভিযান আজ থেকে শুরু হল। আমি যে সব ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলেছি, দারুণ স্মৃতি তৈরি হয়েছে, তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আইপিএল ও বিসিসিআইকেও ধন্যবাদ, তারা আমাকে আজ যা দিয়েছে, তার জন্য। এবার সামনের দিকে তাকাতে চাই এবং সামনে যা আছে তা উপভোগ করতে চাই।’ ২০০৮-এ আইপিএলের অভিযান শুরু হয় অশ্বিনের। তখন তিনি খেলতেন ‘ঘরের দল’ চেন্নাই সুপার কিংসের। পরে রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টস, কিংস ১১ পাঞ্জাব, দিল্লি ক্যাপিটালস ও রাজস্থান রয়্যালসে খেলেছেন। গত মরশুমে ফের ৯.৭৫ কোটি টাকায় চেন্নাই সুপার কিংসে ফিরে এসেছিলেন। এর মধ্যে জল্পনা ছিল, তিনি সিএসকে ছেড়ে অন্য দলে যেতে পারেন। কিন্তু তার আগেই আইপিএল থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি।
আইপিএলে ধোনিদের বাসের পিছনে ছুটে নেট বোলার হয়ে গেলামঃ বরুন

আইপিএল অনেক ক্রিকেটারের কেরিয়র তৈরি করে দিয়েছে। সবাই যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন তা নয়। কিন্তু নিজেকে মেলে ধরার পাশাপাশি আর্থিক দিক থেকেও লাভবান হয়েছে। ১৪০ কোটি দেশের মানুষের মধ্যে থেকে ১৫ জন ক্রিকেটার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান। সেই ১৫ জনের দলে ঢুকতে কতটা লড়াই করতে হয় তা সকলেই জানেন। আর যাঁরা জাতীয় দলে জায়গা করে নেন, তাঁদের আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় না। এমনই একজন কলকাতা নাইট রাইর্ডাসের বরুন চক্রবর্তী। একটু বেশি বয়সে ক্রিকেটে আসেন। এলেও জাতীয় দলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলে ফেললেন তিনি। এখন ওয়ান ডে বা টি২০ ক্রিকেটে জাতীয় দল বাছাই করতে হলে প্রথমেই চলে আসবেন বরুন চক্রবর্তী। কীভাবে সম্ভব হল। সেকথাই তিনি বলেছেন রবিচন্দ্র অশ্বিনের ইউটিউব চ্যানেলে। অ্যাশ কি বাত অনুষ্ঠানে খোলামেলা কথা বললেন বরুন। অশ্বিনের সঙ্গে আড্ডায় বরুন ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে সিএসকের নেট বোলার হলেন। যদিও তিনি সিএসকের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি। তবু আইপিএলে প্রবেশের পথ তাঁর সামনে খুলে গিয়েছিল। চেন্নাই থেকে কলকাতায় এসে মাঠে দাপালেন। সেখান থেকে একেবারে জাতীয় দলে। এই লম্বা পথ মসৃন ছিল না। অনেক লড়াই করে তিনি নিজের জায়গা করতে পেরেছেন। বরুন বলছিলেন, আমি দীনেশ কার্তিককে বল করেছিলম। যিনি আমার বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়ে বলেছিলেন পরে আমাক ফোন করবেন। দুবছর ব্যান থাকার সেবারই চেন্নাই আইপিএলের মূলস্রোতে ফিরে আসে। সেবার একটি মজার ঘটনা ঘটেছিল। আমি জানতে পারি টি এস মোহন সিএসকের নেট বোলারদের দেখাশোনা করছেন। একদিন আমি সিএসকে দলের বাসের পিছনে স্কুটার নিয়ে ছোটা শুরু করি। টিম মাঠে এসে ভিতরে চলে গেল। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ পর মোহনকে ফোন করি। তাঁকে বলি, আমি একজন রহস্যময় স্পিনার। আমি সিএসকে দলের নেট বোলার হতে পারি। তিনি আমার কাছে জানতে চান কোন ডিভিসনে খেলি। পঞ্চম ডিভিসনে খেলি শুনে তিনি বলেন, আমরা প্রথম ডিভিসনের বোলারদের নেটে ডাকছি। তাই তোমার তো সুযোগ নেই। ঠিক আছে, তুমি কাল আমাকে ফোন কর। পরেরদিন বরুন স্টেডিয়ামে যান। মোহনের সঙ্গে কথা বলে নেট বোলার হওয়ার সুযোগও হয়ে যায়। প্রচন্ড খুশি হয়ে পরেরদিন স্টেডিয়ামে যান। বরুন বললেন, নেটে গিয়ে দেখি সব বোলারই প্রথম ডিভিসনের। একজন শুধু নিচের ডিভিসনের বোলার ছিল। তার সঙ্গে কি হল জানি না, হঠাৎ করে তার কাছ থেকে বল নিয়ে আমার হাতে দেওয়া হল। আসলে মোহন দেখতে চাইছিলেন আমি কি করতে পারি। তখন আমার পিছনে প্রথম ডিভিসনের বোলার। নেটে তখন ব্যাট করছে ব্র্যাভো। সত্যি কথা বলতে কি বল হাতে নিয়ে নার্ভাস হয়ে পড়ি। তাই হয়তো প্রথম দুটি বল বিমার হয়ে গেল। কিন্তু তারপুর নিজেকে ফিরে পাই। সেদিন নেটে ব্র্যাভো, রায়না, ধোনিদের বল করি। ওরা মুগ্ধ হয়ে জানতে চেয়েছিল আমি আইপিএলে নাম লিখিয়েছি কিনা। কিন্তু সে সব তো কিছুই হয়নি। শুরুতে চমক দিয়েও আমাকে হতাশ হতে হয়েছিল। কিছু রাজনৈতিক কারনের জন্য সিএসকের বেস ক্যাম্প পুনেতে চলে যায়। সেখানেই প্র্যাকটিস চলে সিএসকের। নেট বোলার হিসেবে আমার যাওয়া হয় না। তবে বেশিদিন মাঠের বাইরে বসে থাকতে হয়নি। দীনেশ কার্তিক আমাকে কেকেআরে নেট বোলার হওয়ার সুযোগ করে দেয়। চেন্নাই থেকে কলকাতায় চলে এলাম। তখনও ভবিষ্যত নিয়ে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। ভাল লাগছে ক্রিকেট খেলতে। তাই নেট বোলার হয়ে লেগে থাকলাম। ২০১৯ সালে বরুন পাঞ্জাব কিংসে সই করলেন। যদিও বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেন না। একবছর সেখানে কাটিয়ে ২০২০ সালে কেকেআরে চলে এলেন বরুন। সেই থেকে দলের প্রধান চরিত্র। পরেরটা তো ইতিহাস। কেকেআরে খেলে নিজেকে প্রমান করলেন। সেখান থেকে জাতীয় দলে খেলার টিকি়টও হাতে চলে এল। এখন শুধু সামনের দিক চলা।