নির্বাসনের শাস্তি পেতে চলেছেন লিগ ফাইনালের অভিযুক্ত ক্রিকেটাররা, শো কজ দুই ক্লাবকে

লিগ ফাইনালে অভিযুক্ত ক্রিকেটারদের কঠোর শাস্তি দিতে শাস্তি দিতে চলেছেন বাংলার ক্রিকেট কর্তারা। অভিযুক্ত ক্রিকেটাররা হলেন ইস্টেবঙ্গলের সুরজ সিন্ধু জয়সওয়াল, ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়, এবং আকাশ ঘটক। ভবানীপুরের শাকির হাবিব গান্ধী। বিতর্কিত কলকাতা লিগ ফাইনালের ঝামেলায় দোষী সাব্যস্ত এই চার ক্রিকেটার। তাদের কড়া শাস্তি হচ্ছে। সোমবার অ্যাপেক্স কমিটির মিটিংয়ে সবাইকে ডকা হয়েছিল। ক্রিকেটারদের সঙ্গে ছিলেন দুদলের ক্রিকেট কর্তরা। সেখানে তাঁদের বক্তব্য শোনা হয়। কোন পরিস্থিতিতে তাঁরা এই ধরনের আচরণ করেছেন, তা বোঝার চেষ্টা করে বাংলার ক্রিকেট কর্তারা। প্রেসিডন্ট স্নেহাশিষ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শাস্তির বিযয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। তবে তা দুদিন পর জানানো হবে। সূত্রের খবর, ক্রিকেটাররা লেভেল থ্রি পর্যায়ের অপরাধ করেছেন। তাঁদের চার থেকে ছয় ম্যাচের নির্বাসনের শাস্তি হতে পারে। শাস্তিপ্রাপ্ত ক্রিকেটররা সামনের মরশুমে লিগের সেই সব ম্যাচ খেলতে পারবেন না। তবে এবার বেঙ্গল প্রো লিগে তাঁদের খেলায় কোনো বাধা থাকবে না। ক্রিকেটারদের পাশাপাশি দুই ক্লাবকে কারন দর্সানোর চিঠি দেওয়া হচ্ছে। ক্লাব দুটির জবাবে সিএবি সন্তুষ্ট হতে না পারলে তাদের আর্থিক জরিমানা করা হবে। আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারির রিপোর্ট হাতে আসার পর ক্রিকেটারদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। সিএবি প্রথম ডিভিসন লিগ ফাইনাল ঘটনাবহুল। যা ক্রিকেটকে কলুষিত করেছে। ইস্টবেঙ্গল ও ভবানীপুর দোষারেপের খেলায় মাতলেও সিএবি প্রেসিডেন্ট তাঁর ক্ষএাভ প্রকাশ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, নিজের ক্রিকেট কেরিয়রে তো নয়ই, এমনকি বাংলার ক্রিকেট কর্তার দায়িত্ব পালনের সময়ও তিনি এই ধরনের ঘটনার মুখোমুখি কখনও হননি। তাই কড়া শাস্তির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তাই যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হলেও লিগ ফাইনাল শেষ হল না। লিগের শেষদিনে দুই দলের কর্তাদের নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি আরও দৃষ্টিকটু হয়ে দাঁড়ায়। তাই সিএবি কর্তারা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। এতো গেল কর্তাদের কথা। তাঁরা ভুল করলে শাস্তি পাবেন। কিন্তু সিএবি কর্তার কি নিজেদের ঠিক পথে চালিত করেছেন। তাঁদে নিয়মের জাঁতাকলে নিজেরই জড়িয়ে পড়েছেন। তাই মাঠ গরম হয়ে উঠতে বেশি সময় লাগেনি। প্রথমদিন পাঁচ ঘন্টা খেলা বন্ধ থাকেএ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এসে মিটমাট করে দিতে খেলাশুরু হয়। আসলে সৌরভের মতো চরিত্রের মানুষ খেলা চলাকালীন মাঠে ছিলেন না বলে এমনটি হয়েছে। সৌরভ থাকলে এটা কিছুতেই হত না। কর্তাদের ভুল কে ধরিয়ে দেবেন। সেখানে তো আম্পায়ার বা ম্যাচ রেফারির রিপোর্টে কিছু থাকবে না। তা হলে..!
ঘরোয়া লিগ ক্রিকেটের ফাইনালে গোলমাল, সৌরভের হস্তক্ষেপে পাঁচ ঘন্টা পর খেলা শুরু

বাংলার ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে কজনের মাথাব্যথা আছে! কতজন রনজিতে খেলা বাংলার ১১ জন ক্রিকেটারের নাম বলতে পারবেন! কেউ পারবেন না। আসলে ফুটবলের মতো বাংলার ঘরোয়া ক্রিকেট জনপ্রিয় না হওয়ায় এমনটা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার দুপুরে সেই ক্রিকেট নিয়েই গোল বাঁধল। খেলা বন্ধ হল। শুরু করতে এগিয়ে আসতে হল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। পাঁচ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর খেলা শুরু হল। এমন ঘটনা বাংলার ক্রিকেটে আগে হয়েছে কিনা অনেকেই মনে করতে পারলেন না। এটাই হয়তো ময়দানে ক্রিকেটকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এল। ঘটনাটি কি হয়েছে। সেদিকে তাকানো যেতে পারে। লিগ ফাইনাসল শুরু হয়েছে রবিবার। দিনরাতের ফাইনাল গোলাপি বলে খেলা হয়। দুপুর একটায় খেলা শুরু। প্রথমদিনের শেষে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভবানীপুর করে ৩ উইকেটে ২৫৭ রান। সেঞ্চুরি করে নজর কাড়েন শাকির হাবিব গাধীঁ। তিনি ১০২ রান অপরাজিত ছিলেন। সোমবার দুপুরে তাঁকে ঘিরেই গোল। প্রথম ওভারে দ্বিতীয় বলে কনিষ্ক শেঠের বোলিংয়ে গাধীঁ স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। আম্পায়ার অভিজিত ভট্রাচার্য ( যিনি এবার আইপিএল ম্যাচ করেছেন) আউটের সিদ্ধান্ত দেন। তাঁর সিদ্ধান্ত জানার পর গাধীঁ প্যাভিলিয়েনের দিকে হাঁটা শুরু করেন। পরের ব্যাটসম্যান বিবেক সিংও মাঠে ঢুকে পড়েন। বাউন্ডারি লাইনের বাইরে আসার আগে গাধীঁকে আটকে দেন প্যাভিলিয়েনের বাইরে বসে থাকা ভবানীপুরের ক্রিকেটার ও কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য গাধীঁ আউট নন। রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে ক্যাচ ঠিকভাবে ধরা হয়নি। তাঁদের অভিযোগে তৃতীয় আম্পায়ার টিভিতে ঘটনাটি দেখেন। তিনি দেখে বোঝেন ক্যাচটি ঠিকভাবে ধরা হয়নি। এনিয়ে গোল বাঁধে দুই দলের মধ্যে। ভবানীপুরে জানায় গাধিঁকে আবার ব্যাট করতে না দিলে তার খেলবেন না। পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গলও এক কথা জানায়। এই টাপান উতোরে খেলা বন্ধ হয়ে য়ায়। সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় মাঠে এসে দুই দলের কর্তাদের সঙ্গে বলেন। কিন্তু সেই কথায় কাজ হয় না। ফলে আম্পায়াররা খেলা বন্ধ করে মাঠের বাইরে চলে আসেন। এটাই লিগ ফাইনালকে আলোচনায় নিয়ে আসে। খবর যায় সৌরভের কাছে। সোমবার বিকেলে সিএবিতে অ্যাপেক্স কমিটির মিটিং ছিল। তার জন্য সৌরভ বিকেলের দিকে ইডেনে আসেন। এসে পুরো ঘটনা শোনেন। দুই শিবির তাঁর সঙ্গে কথা বলে। তাঁদের কথা শুনে সৌরভ যান আম্পায়ার্স রুমে। সেখানে আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানিয়ে দেন গাধীঁ আবার ব্যাট করবেন। কারন টিভি রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে গাধীঁর ক্যাচ ঠিকভাবে ধরা হয়নি। এতেই সব মিটে যায়। সন্ধ্যে ৬টা ১০ মিনিটে আবার খেলা শুরু হয়। খেলা বন্ধ হয়েছিল দুপুরে ১টা ৫ মিনিটে। এর অর্থ পাঁচ ঘন্টা খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হল। এখন প্রশ্ন, সৌরভ শহরের বাইরে থাকলে কি হত! খেলা কি শুরু করা যেত! মাঠের কেউ কেউ বলছেন প্রচন্ড গরমের জন্য নাকি ক্রিকেটাররা খেলতে চাইছিলেন না। তাঁরাও মনে করেছিলেন খেলা বন্ধ থাকলে ভাল হয়। ঘটনা বাস্তব কিনা তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে এটাও ঘটনা যে দুপুরে প্রচন্ড গরম ছিল। এই তাপদাহে খেলা সম্ভব নয়। দিনরাতের খেলা। তাহলে বিকেল তিনটেয় শুরু করলে অসুবিধা কোথায়! ফ্লাড লাইটে খেলা হবে। সেটা তো করাই যায়। এটা ভেবে দেখতে পারেন বাংলার ক্রিকেটার কর্তারা।