দিল্লি প্লে অফ খেললে নায়ার, মুকেশকে পাবে না

আইপিএল প্লে অফে খেলা এখনও নিশ্চিত নয় দিল্লি ক্যাপিটালসের। ১১ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা লিগ টেবিলে পাঁচ নম্বরে দাঁড়িয়ে। প্ল অফ খেলতে গেলে তাদের বাকি তিনটি ম্যাচ জিততেই হবে। এই অবস্থায় খারপ খবর পেল দিল্লি ক্যাপিটালস। তারা প্লে অফে গেলেও দলের দুই সদস্য করুন নায়ার ও মুকেশ কুমারের সার্ভিস পাবে না। কারন এঁরা দুজনেই ভারতীয় এ দলের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে যাবে। দেশের হয়ে খেলা সবার আগে। সেখানে আইপিএল খেলা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তাই লিগের খেলা খেললেও প্লে অফ সম্ভব হবে না। দিল্লি লিগের প্রথম ম্যাচ খেলবে রবিবর গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধেষ ২১ মে তারা খেলবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে। ২৪ মে তাদের প্রতিপক্ষ পাঞ্জাব কিংস। এখানেই শেষ নয়, ২৬ মে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে মুম্বইকে হারতে হবে। তাই যদি বা কিন্তুর উপর দাঁড়িয়ে দিল্লির প্লে অফ খেলার ভবিষ্যত। তবু আগে থেকে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এই দুই ক্রিকেটারকে ছেড়ে দিতে হবে। শুধু এই দুই ক্রিকেটার নয়, দিল্লির হাতছাড় হয়েছে আরও চার ক্রিকেটার। এঁরা হলেন, ফাফ ডুপ্লেসি, মিচেল স্টার্ক, জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগুর্ক, ডোনোভান ফেরেরা। তাই ছয়জন ক্রিকেটারের সার্ভিস পাচ্ছে না দিল্লি। তবে লিগের কোনও একটি ম্যাচে হেরে গেলে দিল্লির প্লে অফ খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তখন আর ক্রিকেটার ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপার নিয়ে ভাবতে হবে না। আইপিএল প্লে অফ শুরু হবে ২৯মে। তার আগে অবশ্য ভারতীয় এ দলের ক্রিকেটাররা ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওন হবে। ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম খেলা ৩০ মে। দবে এ ব্যাপারে নায়ার বা মুকেশ শুধু নন, আর দুটি দল থেকে ক্রিকেটার ভারতীয় এ দলের হয়ে ইংল্যান্ডে যাচ্ছেন। আছেন হর্ষিত রান। কেকেআর আইপিএল থেকে ছিটকে যাওয়ায় তাদের কোনও অসুবিধ হবে না। লখনউ সুপার জায়ান্টসের ছবি এখনও পরিস্কার নয়। তাদের থেকে ভারতীয় এ দলে জায়গা পেয়েছেন শার্দুল ঠাকুর ও আকাশদীপ। ভারতীয় সিনিয়র দল ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে সেরা ক্রিকেটারদের নিয়ে এ দল গড়া হয়েছে। কারন এখান থেকে সিনিয়র দলে বেশ কিছু ক্রিকেটার জায়গা পাবেন। ভারতীয় এ দলে নির্বাচিত ক্রিকেটাররা হলেন- অভিমন্যু ঈশ্বরন (অধিনায়ক), যশ্বসী জয়সওয়াল, করুন নায়ার. ধ্রুব জুরেল (সহ অধিনায়ক), নীতিশ কুমার রেড্ডি, শার্দুল ঠাকুর, ইশান কিষান, মানব সুতার, তানুষ কোটিয়ান, মুকেশ কুমার, আকাশদীপ, হর্যিত রানা, আনসুল কামবোজ, খলিল আমেদ, ঋতুরাজ গায়কোয়াড, সরফরাজ খান, তুষার দেশপান্ডে ও হর্য দুবে।
দিল্লি থেকে অক্সিজেন নিয়ে শহরে ফিরছেন রাহানেরা

কেকেআর: ৯ উইকেটে ২০৪ (২০ ওভার) দিল্লি ক্যাপিটালস: ৯ উইকেটে ১৯০ (২০ ওভার) রোগী এখনও আইসিইউতে। তবে আগের থেকে কিছুট ভাল। রিপোর্ট বলছে, এক ধাপ সামনের দিকে এগিয়েছে। এখনও অনেকটা পথ পার করতে হবে। কারন এই অবস্থায় ভাল ও মন্দের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা রোগী যে কোনও সময় খারাপের দিকে যেতে পারে। অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে কেকেআরের ম্যাচ রিপোর্টের শুরুটা এমনই হতে পারে। পাঁচে পাঁচ করার জায়গা থেকে রাহানেদের লক্ষ্য এখন চারে চার। একবার পা হড়কে গেলে সব শেষ। তাদের কাছে আইপিএল নিয়ে বলার কিছু থাকবে না। তবে ৪মে ইডেনে বৈভব সূর্য়বংশীদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে দিল্লি ম্যাচের ভিডিও কয়েকবার দেখে নিতে পারেন ক্রিকেটাররা। ২০৫ রানের টার্গেট দিল্লির সামনে দিয়ে কেকেআর জিতল। ব্যবধান বিরাট কিছু নয়-১৪ রানের। একটা ঝড়ে সব কিছু লন্ডভন্ড হতে পারত। সেটা যেন পরের ম্যাচে না হয় তার আগাম সতর্কতা দিয়ে গেল দিল্লি ম্যাচ। খেলার শেষে আন্দ্রে রাসেল বলছিলেন, টিম মিটিংয়ে সতীর্থদের বলেছিলাম, আমার জন্মদিনে তোমাদের কাছ থেকে একটা জয় চাই। সেটাই হবে আমার সেরা উপহার। সেরা উপহারই বটে। কেকেআরের স্লোগান- করব, লড়ব, জিতব রে। সবাই মিলে লড়াই করলে জয় কঠিন হবে না। ক্রিকেটাররা লড়াই করলেন। রাসেলের হাতে জয় উপহার তুল দেওয়াই নয়, দলকে অক্সিজেনও দিল। কারন এই ম্যাচ হারলে সব শেষ হয়ে যেত। নিয়য়মরক্ষার বাকি ম্যাচে ইডেন মুখো কেউ হতে চাইতেন না। কে আর হেরোদের খেলা দেখবেন। লড়াই করল বটে কেকেআর। রানের দিকে তাকালে কারোর বড় স্কোর দেখা যাবে না। সবাই মিলে মিশে রান করেছেন। রঘুবংশী (৪৪) ও রিঙ্কু (৩৬) বাদে কেউ তিরিশের ঘরে ঢুকতে পারেননি। তবু কেকেআর দুশো ব্যারিকেড পার করে গেল। এর পিছনে অবশ্যই ওপেনারদের কৃতিত্ব আছে। গুরবাজ ও নারাইন যেভাবে দিল্লির বোলারদের উপর চেপে বসলেন, সেই জায়গা থেকে দিল্লি বোলারদের ঘুরে দাঁড়াবার রাস্তা ছিল না। পাওয়ার প্লে-তে ১ উইকেটে ৭৯। এটাই কেকেআরকে চালকের আসনে বসিয়ে দিল। কিন্তু সেখান থেকে দলের রান অন্তত ২২০-২৩০ হওয়া উচিত ছিল। সেটা হল না। এই অঙ্ক কষতে হবে রাহানেদের। কেন আরও কুড়ি রান তুলতে পারলেন না তাঁরা। তবু ২০৪ রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই করতে হলে পাওয়ার প্লে-তে ধাক্কা দিতে হয়। কেকেআর বোলররা সেটা করে দেখিয়েছে। দিল্লি ম্যাচে অনুকূল রায়কে দলে নিয়ে আসা হয়। তিনি শুরুটা করলেন। তারপর দুই স্পিনার ধাক্কা দিয়ে গেলেন। তবে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট রাহুলের রান আউট। শর্ট ফাইন লেগে বল ঠেলে রান নিতে ছোটেন রাহুল ও ডুপ্লেসি। নারাইনের থ্রো সরাসরি উইকেট ভেঙ্গে দিতে রাহুল আউট। তিনি থাকলে ম্যাচের রং বদলে যেতে পারত। কিন্তু ডুপ্লেসি ও অক্ষররা রান করলেও কেকেআরের দেওযা টার্গেটে পৌঁছনো সম্ভব ছিল না। একসময় তাদের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৩৫। ১৩ ওভার হয়ে গিয়েছে। সাত ওভারে প্রায় ৭০ রান তোলা সহজ ছিল না। হয়ওনি। নারাইন ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন। ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে তিন উইকেট পেলেন। জিতলেন ম্যাচের সেরার পুরস্কার। বরুন দুটি উইকেট পেলেন ৩৯ রান খরচ করে। সব শেষে ১৯০ রানে আটকে দিল্লি হারল ১৪ রানে। জয় এল। এক ধাপ সামনে উঠল কেকেআর। কিন্তু লিগ টেবিলের জায়গার বদল হল না। তারা এখনও সাতে। এই জায়গা তেকে রান রেটের দিকে তাকিয়ে খেলতে হবে। কারন বাকি ৬টি দল প্রয় গয়ে গায়ে ছুটছে। মনে হচ্ছে তিন ও চার নম্বর দল নির্বাচিত করার সময় রান রেট দেখা হবে। তাই কেকেআরের ম্যাচ জয়ের পাশে রান রেট দেখে খেললে সুবিধা পাবে। তার আগে অবশ্য় জয়ের কথা ভাবতে হবে। সেটা না এলে তো কিছুই পড়ে থাকবে না। সক্ষিপ্ত স্কোরঃ কেকেআর ৯ উইকেটে ২০৪ (গুরবাজ ২৬, নারাইন ২৭, রাহানে ২৬, রঘুবংশী ৪৪, আইয়ার ৭, রিঙ্কু ৩৬, রাসেল ১৭, পাওয়েল ৫, স্টার্ক ৪২ রানে ৩অক্ষর ২৭ রানে ২) দিল্লি ক্যাপিটালস ৯ উইকেটে ১৯০ ( ডুপ্লেসি ৬২, অক্ষর ৪৩, নিগম ৩৮, নারাইন ২৯ রানে ৩, বরুন ৩৯ রানে ২)