এবছর ‘অপেক্ষাকৃত ভাল’ দল ইস্টবেঙ্গলের; কিন্তু ম্যাচ না জিতলে আত্মবিশ্বাস আসবে না’ বলছেন দেবজিৎ

সুদীপ পাকড়াশীঃ আশিয়ান কাপ জয়ী ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি, দেবজিৎ ঘোষ। জাতীয় দলের হয়েও নিয়মিত খেলেছেন। কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে সেই দেবজিৎ ঘোষের কোচিংয়েই রেনবো অ্যাসোস সদ্যসমাপ্ত কলকাতা লিগে পাঁচ নম্বরে শেষ করেছে। দক্ষ ফুটবল বিশ্লেষক, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ স্পষ্টবক্তা হিসেবে তার যেমন সুনাম, সেরকম ‘তথাকথিত’ ফুটবল সমাজে দুর্নামও অর্জন করেছেন তিনি। তাতেও তিনি অবিচলিত। শুক্রবার সুপার কাপে কলকাতা ডার্বিতে, মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ড্র করেও টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছেছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু দেবজিতের মনে হচ্ছে দলকে ম্যাচ জিততে হবে। না হলে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে না। অন্তত এই মরশুমের আইএসএলের পারফরম্যান্সে আত্মবিশ্বাসের প্রভাব দেখা যাবে না। “গত কয়েক মরশুমে আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের ব্যর্থতার দিকে তাকালে আমার পর্যবেক্ষণ, এবছর দল খাতায় কলমে ‘অপেক্ষাকৃত’ শক্তিশালী। ভারসাম্য বেশি। দলে যোগ দেওয়া নতুন বিদেশি ফুটবলারদের গুণগত মানও ভাল। বিশেষত মিগুয়েল ফেরেরার খেলা বেশ ভাল লেগেছে। বল ধরে রাখতে পারে। ডিস্ট্রিবিউশন ক্ষমতাও উন্নত। শুধু আমার মনে হয়েছে, সল ক্রেসপোর পরিবর্তে একজন আরও দক্ষ ‘ডিফেন্সিভ ব্লকার’ আনা উচিত ছিল। কিন্তু এত কথার পর আপ্তবাক্য একটাই য, ইস্টবেঙ্গলকে ম্যাচ জিততে হবে। আইএসএলের দিকে তাকালে বলব, কয়েকটা ম্যাচ জিতলেই দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাসটা তৈরি হবে,” শনিবার প্যারালাল স্পোর্টসকে বললেন দেবজিৎ। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের নতুন সংবিধান, এফএসডিএলের পাশাপাশি ফেডারেশনের টেন্ডার দিয়ে নতুন কর্পোরেট অংশীদার খোঁজার প্রচেষ্টা-দেবজিতের আদৌ মনে হচ্ছে না এই প্রচেষ্টায় ভারতীয় ফুটবল ভবিষ্যতে আশার আলো দেখবে। “ফেডারেশন নিয়ে যত কম কথা বলা যায় ততই ভাল। যা হচ্ছে সবই লোকদেখানো বলে মনে হচ্ছে। আপনার আগামি পাঁচ বছরের কোনও গঠনমূলক প্রোজেক্ট আছে কি? ৪৭-এর ভিশন দেখিয়ে আপনি কাউকে আনতে পারবেন না। তাই বলি, এফএসডিএল যদি ভারতীয় ফুটবলের পাশে থাকে তাহলেই আমাদের ফুটবল ঠেলাগাড়ির মত হলেও হাঁটবে।” সিনিয়র ন্যাশনাল দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে প্রাক্তন জাতীয় ডিফেন্ডারের মত, “ভবিষ্যতের জন্য আমাদের জাতীয় ফুটবলারদের কি কোনও ব্যাঙ্ক করা হয়েছে? নতুন প্রতিভাবান ফুটবলারদের না খুঁজে, তাদের না গ্রুম করে সুনীল ছেত্রীকে ফিরিয়ে আনা হল। কেন? নৌশাদ মুসা, বিবিয়ানো ফার্ণাডেজের দল থেকে ফুটবলার বেছে কেন তাদের সিনিয়র দলের জন্য গ্রুমিং করা হয় না? তাই ফলও সেরকম হবে।”
চেন্নাইয়িন ম্যাচের আগে অস্কারের মুখে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের উদাহরণ

সুপার কাপ শুরু হয়েছে ডেম্পোর বিরুদ্ধে ২-২ ড্র-য়ে। এবার ইস্টবেঙ্গলের সামনে মঙ্গলবার চেন্নাইয়িন এফসি। সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করতে হলে ক্লিফোর্ড মিরান্ডার চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে জিততেই হবে। তার আগে সোমবার ট্রেনিং-য়ের পর ফুটবলারদের মনের জোর বাড়াতে কোচ অস্কার ব্রুজোর মুখে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্সের কথা। বলেছেন, “এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্রথম ম্যাচের কথা মনে করুন। আশানুরূপ ফলাফল হয়নি। পরবর্তীতে আমরা কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। ছেলেদের সেটাই বুঝিয়েছি। ২০১০ সালের বিশ্বকাপে স্পেনও প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছিল। সেই স্পেনই কিন্তু বিশ্বকাপ জিতেছিল। আমাদের তেমনই নির্ভুল ফুটবল খেলতে হবে।” আরও বলেছেন, “চেন্নাইয়িন ম্যাচ আমাদের জন্য ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। আমাদের দল খারাপ খেলেনি। ওরা সুসংহতই রয়েছে। তবে মনঃসংযোগের অভাব আমাদের ভুগিয়েছে। সেই কারণে পুরো ৯০ মিনিট নিখুঁত ফুটবল খেলতে হবে। কোনওভাবেই মনঃসংযোগ হারালে চলবে না।“ মোহনবাগানের কাছে ০-২ গোলে হেরে সুপার কাপ অভিযান শুরু হয়েছে ক্লিফোর্ড মিরান্ডার চেন্নাইয়িন এফসি’র। ২০২৩ সালে ওড়িশা এফসি’কে সুপার কাপ এনে দেওয়া কোচ মিরান্ডা চাইবেন ইস্টবেঙ্গলকে রুখে দিয়ে সুপার কাপে পয়েন্টের খাতা খুলতে।
হিজাজি মাহেরকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে জানাল ইস্টবেঙ্গল

হিজাজি মাহের যে ইস্টবেঙ্গলের জার্সি আর গায়ে চাপাবেন না সেটা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার সরকারিভাবে জর্ডনের ডিফেন্ডারকে বিদায় জানাল লাল-হলুদ শিবির। ক্লাবের তরফে সোশাল মিডিয়ায় হিজাজিকে ধন্যবাদ জানিয়ে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের খবর জানিয়ে দেওয়া হল। হিজাজি ২০২৩-এ ইস্টবেঙ্গলে সই করার পর প্রথম মরশুমে বেশ ভালোই খেলেন। বিশেষ করে ডুরান্ড কাপে তাঁর পারফরম্যান্স নজর কাড়ে। কিন্তু গত মরশুমে চোট আঘাতের জন্যই বেশিরভাগ সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়। এই মরশুমে তাঁকে রাখা হবে না আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার রাতের দিকে সরকারিভাবে তাঁর বিদায়ের বার্তা জানানো হয়। সোশাল মিডিয়ায় ইস্টবেঙ্গলের তরফে বলা হয়েছে, “আমরা হিজাজিকে আগামীর জন্য শুভেচ্ছা জানাই। ইস্টবেঙ্গলের জন্য যে নিষ্ঠা এবং একাগ্রতা দেখিয়েছ, সেসবের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।” ইস্টবেঙ্গলের হয়ে হিজাজি ৪২টি ম্যাচে খেলেছেন এবং ৪টি গোল করেছেন। এই সময়েই তিনি জর্ডন জাতীয় দলে ডাক পান। ব্যাকলাইনে তাঁর শক্তিশালী শারীরিক উপস্থিতি সত্ত্বেও, গত মরসুমে তার পারফর্মেন্স গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সমালোচনার মুখে পড়ে। তাছাড়া গত মরশুমের শেষের দিকে চোটের কবলে পড়েন তিনি। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে হাঁটুর চোটের জন্য তিনি ২০২৪-২৫ মরশুমে আর খেলতেই পারেননি। এখনও তিনি পুরোপুরি ফিট নন। নতুন মরশুমে আনফিট ফুটবলার নিয়ে নামতে চাননি কোচ অস্কার ব্রুজো। সম্প্রতি হিজাজি আল-ফয়সালি এসসিতে যোগদান করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
‘খেপ’ খেলা ফুটবলারের দক্ষতায় বাজিমাৎ পুলিশের; দু’গোলে হারল ইস্টবেঙ্গল!

বয়স ২১। বাড়ি আসানসোলে। মশলা ম্যাচ, যাকে বাংলায় ‘খেপ’ বলে, সেই খেলে রোজগার করা ছিল তার নেশা এবং পেশাও! সেই মহম্মদ আমিল নঈমের স্পিড, বল হোল্ড করে রাখার ক্ষমতা এবং বল নিয়ন্ত্রণের দক্ষতায় এই মরশুমে ধরাশায়ী হয়েছিল মোহনবাগান। রবিবার হল ইস্টবেঙ্গল। কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে, রবিবার ব্যারাকপুর স্টেডিয়ামে পুলিশ এসি-র কাছে ২ গোলে হেরে গেল ইস্টবেঙ্গল। পেনাল্টি থেকে পুলিশ এসি-কে এগিয়ে দেন আমিল। ৭৫ মিনিটে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন মৃন্ময় মহাপাত্র। দ্বিতীয়ার্ধে, ম্যাচের শেষভাগে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণের সময় পুলিশ এসি-র রক্ষণভাগ নজরকাড়া ফুটবল খেলেছে। কোচ জোসেফ বলছেন, “বিরতিতে ছেলেদের একটা কথাই বলেছিলাম যে, ইস্টবেঙ্গল কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াবে। আমি চাই তোমরা ডিসিপ্লিনড ফুটবল খেল। ওরা কথা রেখেছে।” তারপরও জোসেফের মুখে আমিলের প্রশংসা। বললেন, “মূলত উইং দিয়ে খেলা শুরু করে। দারুণ স্পিড, বল কন্ট্রোলও চোখে পড়ার মত। যখনই ওর পায়ে বল ছিল, বিপক্ষের রক্ষণভাগ অস্বস্তিতে পড়েছে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধেও আমরা জিতেছিলাম আমিলের দুর্দান্ত ফুটবলের জন্য। আজও ম্যাচের সেরা জিজ্ঞেস করলে আমিলের কথাই বলব।” ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তাদের গ্রুপে রবিবার শীর্ষে পৌঁছে গেল পুলিশ এসি। জোসেফ বলছেন, এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আরও ওঠাপড়া হবে। তাদের লক্ষ্য, সুপার-সিক্স পর্বে এই ধারাবাহিকতাটা বজায় রাখা।
ভারতীয় কোচেদের কাছে খালিদের কোচ হওয়া নতুন এক সন্ধিক্ষণ, বলছেন সঞ্জয় সেন

সুদীপ পাকড়াশী: সদ্য নির্বাচিত সিনিয়র জাতীয় কোচ খালিদ জামিলকে স্বাগত জানালেন সঞ্জয় সেন। শুক্রবারই সিনিয়র জাতীয় দলের চীফ কোচ নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ জামিল। ১৩ বছর পর সিনিয়র জাতীয় দল একজন ভারতীয় কোচকে পেল। সঞ্জয় সেনও জাতীয় কোচের পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তার কোনও আক্ষেপ নেই নির্বাচিত না হওয়ায়। বরং, ৬৪ বছর বয়সী এই কোচ মনে করছেন, খালিদের কোচ হওয়া ভারতীয় কোচেদের কাছে নতুন এক সন্ধিক্ষণ হয়ে এল! শনিবার এই প্রসঙ্গে তার বিশ্লেষণ, “অনেকদিন ধরেই বলছি, ভারতীয় কোচেদেরও সুযোগ পাওয়া উচিৎ। তাদেরও যোগ্যতা আছে। সেই সুযোগটা খালিদ পেল। ও সফল হলে ফেডারেশনও পরবর্তীকালে জাতীয় দলের কোচ নির্বাচন করার সময় ভারতীয় কোচের কথা ভাবতে পারে। দেশে আরও ভারতীয় কোচ আছেন যাদের সিনিয়র জাতীয় দলকে কোচিং করার যোগ্যতা আছে। কিন্তু তারা তো সুযোগ পায় না।” এবারও সিনিয়র জাতীয় দলের জন্য ১৭০ জনের মধ্যে তিনজনকে বাছা হয়েছিল। খালিদের সঙ্গে ছিলেন দুই বিদেশি কোচ। তার মধ্যে একজন, স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের উদাহরণ দিয়ে মোহনবাগানের আই-লিগ জয়ী কোচের প্রশ্ন, “আপনি বলুন, কনস্ট্যান্টাইনের কী সাফল্য আছে ভারতীয় ফুটবলে? ভারতে ক্লাব ফুটবলেই বা তার কী সাফল্য আছে? তাহলে কীভাবে তিনি তিনজন নির্বাচিত কোচের তালিকায় ঢুকলেন? যারা নির্বাচন করেছে তারাই জানে!” তবে একইসঙ্গে মেনেও নিলেন, ক্লাব ফুটবলের সঙ্গে জাতীয় দলে কোচিং করানোর মধ্যে ফারাক আছে। “জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত খেলা একজন ভারতীয় ফুটবলার আইএসএলে নিয়মিত গোল করে। দারুণ খেলে। তারপরই দেশের হয়ে সে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হয়। আইএসএলে খেলা বেশিরভাগ ফুটবলারদের নিয়েই জাতীয় দল তৈরি হয়। আইএসএল এমন একটি টুর্নামেন্ট যেখানে রেলিগেশন নেই। নামী এবং দামি ফুটবলারদের দেখি, ম্যাচ হারার পরও কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে মাঠ ছাড়ছে! কোথায় তাদের দায়বদ্ধতা? দেশের হয়েও সেই ‘দায়বদ্ধহীন’ ফুটবলাররাই মাঠে নামে। হংকং, বাংলাদেশকেও হারাতে ব্যর্থ সেই ফুটবলারদের মধ্যে থেকেই আবার পরের টুর্নামেন্টের জন্য তৈরি হয় জাতীয় দল। খালিদকেও এদের নিয়েই মাঠে নামতে হবে। হংকং, বাংলাদেশকেও যদি হারাতে না পারি, তাহলে ফুটবলারদের সঙ্গে কোচেরও তো লজ্জ্বা। তবু, আমার আশা, বিশ্বাস যে খালিদ পারবে,” সঞ্জয় সেনের বিশ্লেষণ। গত ১৫ বছরের ক্লাব কোচিংয়ে প্রথমবার তার ‘বর্ষসেরা কোচের’ সম্মান পাওয়া। শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ১০৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসে পি কে ব্যানার্জির নামাঙ্কিত এই সম্মান তার কাছে এক বিশেষ প্রাপ্তি, বলছেন এই বর্ষীয়ান কোচ। ২০১৫-য় আই লিগ জয়ের পর সেবছর, ২৯ জুলাই মোহনবাগান দিবসে তিনি আই লিগ জয়ী কোচ হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু বর্ষসেরা কোচের সম্মান? শুক্রবারই তার প্রথম পাওয়া। “ইস্টবেঙ্গল ক্লাব থেকে আমাকে ফোনে যখন জানানো হল যে আমাকে এই সম্মান দেওয়া হবে, আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। আমি তো কোনওদিন ইস্টবেঙ্গলে কোচিং করিনি। খেলিওনি। একবার শুধু খেলার প্রস্তাব পেয়েছিলাম, সেই ১৯৮৯-এ। তাই এই পুরষ্কার পেয়ে আমি অভিভূত। আমার কাছে পুরষ্কারটা অভিনব,” বললেন সঞ্জয় সেন।
‘ভারত গৌরব’ হয়ে আপ্লুত সৃজেশ, ক্রীড়ামন্ত্রী বললেন ডার্বি জয়ে লাল-হলুদ সুর্য উঠেছে!

শুক্রবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ইস্টবেঙ্গল দিবসে চাঁদের হাটের সমাগম! গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে সমর্থকদের উল্লাস চলছে জয় ইস্টবেঙ্গল স্লোগানে। মঞ্চে বসে এই ছবিটা দেখে তিনি, পি আর সৃজেশ অভিভূত। আবেগে আরও আপ্লুত ‘ভারত গৌরব’ হয়ে! সৃজেশ এখন জুনিয়র জতীয় দলের কোচ। শুক্রবার মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললেন, “এটা বিরাট মুহূর্ত আমার কাছে। কারণ আমি তো হকি খেলোয়াড়। ইস্টবেঙ্গলের মত ভারতীয় ফুটবলের মহীরুহ ক্লাবের দেওয়া এই সম্মানে আমি অভিভূত। অবশ্যই আইএম বিজয়নকে কে না চেনে, উনি তো সবারই আইডল।” এদিন সৃজেশের হাতে সেই সম্মান তুলে দেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই ঐতিহ্যময় দিনের মঞ্চ থেকেই ইস্টবেঙ্গলের ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন অরূপ বিশ্বাস ক্রীড়ামন্ত্রী বলে দিলেন, “ডার্বি দিয়ে শুরু হয়েছে। ইস্টবেঙ্গলে সূর্য উঠছে, ডার্বি দিয়ে শুরু হয়েছে। সমর্থকদের ফুটবলারদের আরও পাশে থাকতে হবে। ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে সব জায়গায় যাই। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে সবার একটা জায়গাতেই পার্থক্য, ইস্টবেঙ্গল অতীত কে মনে রাখে। সবাইকে সম্মান দিতে জানে। প্রতিবার এই যে ভারত গৌরব। ভারতের ক্রীড়া নক্ষত্রদের দিয়েছে। বাংলার লিয়েন্ডার, সৌরভ, অরুণ ঘোষদের দিয়েছ। এবার দলের সাফল্য আসবে। খেলোয়াড়রা খেলুক মাঠে, দর্শকরা মাঠের বাইরে।” তবে এদিন সকলের অপেক্ষা ছিল একটাই কখন প্রিয় দল মঞ্চে উঠবে। অস্কার ব্রুজোর সঙ্গে যখন একে একে লাল হলুদ তারকারা মঞ্চে উঠলেন, সেই সময় গোটা স্টেডিয়ামে ফেটে পড়ে হাততালি। স্লোগান জয় ইস্টবেঙ্গল। এই মঞ্চেই এদিন সেরা উঠতি তারকা সম্মানে সম্মানিত হলেন পিভি বিষ্ণু। সম্মান পেলেন সৌভিক চক্রবর্তী। ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা মঞ্চে উঠতেই সমর্থকদের ছিল বন্ধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। আবদার একটাই, এবার সাফল্য। আর সেই সঙ্গেই বেজে উঠলো ইস্টবেঙ্গলের ঐতিহ্যের গান।
ডার্বি কী জানেন, কলকাতা ডার্বিও উপভোগ করতে চান হামিদ

মঙ্গলবার এক বছরের চুক্তিতে সই করলেন ইস্টবেঙ্গলের ষষ্ঠ বিদেশি, মরক্কোর জাতীয় স্ট্রাইকার হামিদ আহদাদ। ৩০ বছরের আহদাদ সেন্টার ফরোয়ার্ড এবং উইঙ্গার পজিশনে খেলতে পারেন। ফরওয়ার্ডকে পেয়ে খুশি ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজ়ো। তিনি বলেছেন, ‘‘আহদাদ মূলত সেন্টার ফরোয়ার্ড হলেও লেফট উইংয়ে খেলতে পারে। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসাবেও ব্যবহার করা যাবে। গোল করার দক্ষতা দুর্দান্ত। মরক্কো এবং মিশরের একাধিক শীর্ষস্তরের ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। আহদাদ যোগ দেওয়ায় আমরা লাভবান হব।’’ লাল-হলুদ শিবিরে যোগ দিয়ে উচ্ছ্বসিত আহদাদও। তিনি বলেছেন, ‘‘এই ক্লাব সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছি। শতবর্ষ প্রাচীন এমন একটা ক্লাবে যোগ দিতে পারা আমার জন্য সম্মানের। আমি জ়ামালেক এফসির হয়ে খেলেছি। ডার্বি কী জিনিস জানি। ডার্বির চাপ, উত্তেজনা সম্পর্কে ধারণা রয়েছে। আশা করি কলকাতা ডার্বিও উপভোগ করব। ডার্বি খেলার অপেক্ষায় রয়েছি। এশিয়ার অন্যতম বড় ডার্বি। ক্লাব এবং সমর্থকদের জন্য নিজের সেরাটা দিতে চাই। যত বেশি সম্ভব ট্রফি জিততে চাই।’’
নতুন মরশুমে চার নতুন বিদেশিকে নিয়ে নতুন আশায় লাল-হলুদ

ব্রাজিলের মিগুয়েল ফিগুয়েরা। প্যালেস্তাইনের মহম্মদ রশিদ। মরোক্কোর হামিদ আহাদাদ এবং আর্জেন্তিনার ডিফেন্ডার কেভিন সিবিল্লে। এই চার নতুন বিদেশিকে সই করিয়ে নতুন আশা ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকর্তাদের, কোচেদের এবং সমর্থকদের। দলের সাফল্য গত পাঁচ বছরে দূরবীণ দিয়ে দেখতে হবে। আইএসএলে, প্লে-অফে তো ওঠা দূর অস্ত, ২০২৪-২৫ মরশুমে নবম স্থানে শেষ করাই গত পাঁচ মরশুমের আইএসএলে সেরা প্রাপ্তি ক্লাবের কাছে! প্রদীপের মত জ্বলছে ২০২৪-এ সুপার কাপ জয় আর এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ কোয়ালিফায়ার্সে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছনো। যে চার বিদেশীর ওপর ভরসা রেখে লাল-হলুদ ম্যানেজমেন্ট গত মরশুমের শেষে ব্যর্থতাকে বরণ করে নিয়েছিল সেই মেসি বোউলি, হিজাজি মাহের, মাদি তালাল এবং হেক্টর ইউস্তেকে ক্লাব এই ইতিমধ্যে রিলিজ করে দিয়েছে। নতুন এই চার বিদেশী ফুটবলারের মধ্যে ব্রাজিলের মিগুয়েল ফিগুয়েরার ইস্টবেঙ্গলে আসা কোচ অস্কার ব্রুজোর উদ্যোগে। স্প্যানিশ কোচের কোচিংয়েই টানা তিন মরশুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ জেতা বসুন্ধরা কিংসের অন্যতম প্রধান স্ট্রাইকার ছিলেন মিগুয়েরা। প্যালেস্তাইনের মিডফিল্ডার মহম্মদ রশিদ গতবছর তার দেশকে প্রথমবার এএফসি এশিয়ান কাপের শেষ ১৬-য় পৌঁছনোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। আর রক্ষণ জমাট করতে হিজাজি মাহেরের পরিবর্তে আর্জেন্তিনার কেভিন সিবিল্লে। আর্জেন্তিনার বিখ্যাত ক্লাব রিভারপ্লেটের যুব দল থেকে উঠে আসা এই ডিফেন্ডার স্পেনের একটি তৃতীয় ডিভিশন দলের হয়ে খেললেও তার সাম্প্রতিক ম্যাচের ভিডিও-ক্লিপিংস দেখে খুশি হয়েছেন কোচ ব্রুজো এবং ফুটবল ডিরেক্টর থাংবই সিংটো বলে জানা গিয়েছে। আর একদিকে এফসি গোয়া-র জয় গুপ্তের সঙ্গে দুই মরশুমের চুক্তিও সম্পন্ন করল ইস্টবেঙ্গল। ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন এই চার বিদেশীরই ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে কলকাতায় পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা। ম্যানেজমেন্ট এবং কোচ, ফুটবল ডিরেক্টরদের ইচ্ছে ডুরান্ড কাপে বিদেশীদের খেলিয়ে দেখে নেওয়া। যদিও ফুটবলারদের সুস্থতার পরীক্ষার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শুধু নতুন বিদেশী ফুটবলার নয়. ইস্টবেঙ্গল মাঠকেও এই মরশুমে নতুন সাজে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। বসানো হচ্ছে আধুনিক বারমুডা ঘাস। কলকাতায় যা একমাত্র যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে রয়েছে। মাঠের চারপাশ জুড়ে বসানো হবে জল দেওয়ার একাধিক স্প্রিঙ্কলার। ফ্লাডলাইটেরও সংস্কার কাজ হবে এবং প্র্যাক্টিসের জন্য মূল মাঠের পাসে কৃত্রিম ঘাসও বসানোর পরিকল্পনা আছে।
ডুরান্ডে নামছে তিন প্রধান

ডুরান্ড কাপের ট্রফি উন্মোচন ও পতাকা নেড়ে উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। শুক্রবার নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে।
দশজনের বিরুদ্ধেও আটকে গেল লাল-হলুদ

বিরতির বঁাশি বাজার আগের মুহূর্তে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন গুইতে।