ইলিশ-চিংড়ির দ্বৈরথে যোগ দিল জীবনও—কল্যাণীতে আবেগের স্রোত

মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল। শুধুই কি একটা ফুটবল ম্যাচ? না। এটা বাঙালির হৃদয়ের স্পন্দন, উৎসব, সংস্কৃতি। আর এই লড়াইকে ঘিরে গোটা বাংলা যেন দম আটকে বসে থাকে। শনিবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে সেই ঐতিহ্যেরই সাক্ষী থাকল CFL ডার্বি। গ্যালারির এক কোণে দেখা গেল সাদা কাছা গায়ে এক সমর্থককে। তার চোখে জলের রেশ। জানতে চাওয়া মাত্র বলল, “বাবা নেই আর। তিনিই ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের বড় সমর্থক। আজ ওঁর জন্যই এসেছি মাঠে।” অভিভাবকহীন সেই তরুণ যেন শুধু খেলা দেখতে আসেনি, এসেছিল বাবার স্মৃতিকে সম্মান জানাতে। অন্যদিকে, সবুজ-মেরুন পতাকা হাতে স্টেডিয়ামে হাজির এক প্রতিবন্ধী সমর্থক। হুইলচেয়ারে বসে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছিলেন “জয় মোহনবাগান!” তাঁর মুখেও ছিল এক অনমনীয় জেদ— জীবনের লড়াইয়ের মধ্যেও প্রিয় দলের পাশে থাকা। আজকের ডার্বি শুধুমাত্র স্কোরবোর্ডে সীমাবদ্ধ থাকলো না, এর চেয়েও বড় হয়ে উঠল মানুষের আবেগ, যন্ত্রণার সঙ্গে মিশে থাকা ভালোবাসা। মাঠে ইলিশ আর চিংড়ির টক্কর, গ্যালারিতে জীবন আর অনুভবের কোলাজ। কল্যাণী স্টেডিয়ামের ঘাস ছুঁয়ে গেল সেইসব গল্প, যা ফুটবলকেই পরিণত করে এক জীবন্ত রূপকথায়।
কোচ অস্কার ব্রুজোঁর সঙ্গে আরও এক বছরের চুক্তি বাড়িয়ে নিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল

প্রত্যাশিতই ছিল, শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে অস্কার ব্রুজোঁর সঙ্গে আরও এক বছেরর চুক্তি বাড়িয়ে নিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলের সুপার সিক্সে উঠতে না পারলেও, সুপার কাপেও সুবিধা করতে না পারলেও অস্কারের ওপরই আস্থা রাখল ইমামি ইস্টবেঙ্গল। তার কারণ কার্লেস কুয়াদ্রত বিদায় নেওয়ার পর দলকে অনেকটা তুলে এনেছিলেন অস্কার। গত বছর দলের হাল ফেরাতে অনেকটা ভাল দল গড়েছিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল। কার্লেস কুয়াদ্রতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল খুব খারাপ দল নয়। কিন্তু দলের হাল ফেরেনি। আইএসএলে খুব খারাপভাবে শুরু করেছিল কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল। হারের পর হারে দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হন কুয়াদ্রত। তারপরই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অস্কার ব্রুজোঁকে। তিনি আসার পর ভাল খেলতে শুরু করে লালহলুদ। লিগ টেবিলে কিছুটা উঠেও আসে। সুপার সিক্সের আশাও জেগে ওঠে। হয়ত শেষ পর্যন্ত আর সুপার সিক্সে ওঠা হয়নি, তবে অস্কারের পারফরম্যান্সে খুশি হয়ে তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাড়িয়ে নিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল। এবারও তাঁর পরামর্শেই দলগঠন হচ্ছে। ফুটবলার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে থংবই শিংটোকে। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই দল গড়ার কাজ চলছে। তাই অস্কার ব্রুজোঁর চুক্তি বাড়া প্রত্যাশিতই ছিল। বৃহস্পতিবার সেই কাজই সম্পন্ন হল।