গুরুতর চোটে হুইলচেয়ারে মাঠ ছাড়লেন পেসার! বিশ্বকাপের আগে ধাক্কা হরমনপ্রীতদের

এবার ভারতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মহিলাদের একদিনের বিশ্বকাপ (ODI World Cup)। তার আগে প্রস্তুতি ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গুরুতরভাবে চোট পেলেন দলের অন্যতম পেসার অরুন্ধতী রেড্ডী। তাঁর বাঁ হাটুতে এতটাই লেগেছে যে হুইলচেয়ারে করে মাঠের বাইরে নিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। অরুন্ধতীর বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে ভারত। অরুন্ধতীর বলে সোজা শট মারেন ইংল্যান্ডের ব্যাটার হেথার নাইট (Hethar Knight)। ক্যাচ ধরার চেষ্টা করেন অরুন্ধতী। কিন্তু পা সরাতে পারেননি তিনি। বল গিয়ে সোজা তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটুতে লাগে। মাটিতে পড়ে গিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায় অরুন্ধতীকে। ছুটে আসেন ফিজিয়ো। মাঠে কিছু ক্ষণ চিকিৎসা চলে তাঁর। ফিজিয়ো জানিয়ে দেন, আর খেলতে পারবেন না ভারতীয় পেসার। প্রথমে কয়েক জন ক্রিকেটার অরুন্ধতীকে ধরে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর হাঁটুতে এতটাই লেগেছিল যে বাঁ পা মাটিতে ফেলতে পারছিলেন না তিনি। ফলে হুইলচেয়ারে করে অরুন্ধতীকে মাঠের বাইরে নিয়ে যেতে হয়। চোট পাওয়ার আগে ৪.৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন অরুন্ধতী। দিল্লি ক্যাপিটালসের (Delhi Capitals) হয়ে মহিলাদের আইপিএলের দুই মরসুমে ভাল বল করার সুবাদে গত বছর ভারতের এক দিনের দলে অভিষেক হয়েছিল অরুন্ধতীর। ১১ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। গত বছর ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এক দিনের ক্রিকেটে সেটাই অরুন্ধতীর সেরা বোলিং পরিসংখ্যান। ভারতের ১৫ জনের বিশ্বকাপের দলে যে চার পেসার রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অরুন্ধতী এক জন। স্ট্যান্ড বাই হিসাবে সায়ালি সাতঘরে অবশ্য রয়েছেন। এখন দেখার, অরুন্ধতীর চোট খতিয়ে দেখে কী বলেন চিকিৎসকেরা। প্রস্তুতি ম্যাচ ভাল যায়নি ভারতের। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৫৩ রানে হেরেছে তারা। প্রস্তুতি ম্যাচ হওয়ায় অবশ্য স্মৃতি মন্ধানা, হরমনপ্রীত কউরেরা ব্যাট করেননি।
ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার পাকিস্তানের ক্রিকেটার, সাসপেন্ড করে দিল পাক বোর্ড

অপরাধ সংগঠিত করার অভিযোগে গ্রেফতার পাকিস্তানের ব্যাটার হায়দার আলি। ব্রিটেনের আদালত অন্তর্বর্তী জামিন দিলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ইংল্যান্ডের গ্রেটার ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশ। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ২৪ বছরের ক্রিকেটারকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি)। হায়দারকে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। পাকিস্তান শাহিনসের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন হায়দার। পিসিবি সূত্রে খবর, সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করছে পুলিশ। যদিও গ্রেটার ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশ বা পিসিবি সরকারি ভাবে ধর্ষণের কথা জানায়নি। গ্রেটার ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘আমরা ২৪ বছরের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছি। গত ২৩ জুলাই ম্যাঞ্চেস্টারের একটা বাড়িতে তিনি অপরাধ সংগঠিত করেন। ধৃত ব্যক্তি আপাতত জামিন পেলেও তদন্ত চলছে।’’ হায়দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং তদন্তের কথা পিসিবিকে জানিয়েছেন গ্রেটার ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশ কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতেই অভিযুক্ত ক্রিকেটারকে সাময়িক ভাবে নিলম্বিত করা হয়েছে। তবে তাঁকে আইনি সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তারা। পিসিবি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘হায়দার আলির বিরুদ্ধে গ্রেটার ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশের তদন্তের ব্যাপারে পিসিবি অবহিত। সম্প্রতি পাকিস্তান শাহিনসের সফরের সময়ে ঘটা একটি ঘটনার জন্য এই তদম্ত চলছে।’’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘যুক্তরাজ্যের আইনি প্রক্রিয়াকে সম্মান এবং সমর্থন করে পিসিবি। এই তদন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত। হায়দারকে সাময়িক ভাবে নিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই মূহূর্ত থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত হায়দার নিলম্বিত থাকবেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর প্রয়োজনে পিসিবি নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে।’’ ২০২০ সালে পাকিস্তানের হয়ে আম্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হায়দারের। দেশের হয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৫টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ এবং দুটো এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সম্প্রতি পাকিস্তান শাহিনসের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনটে ৫০ ওভারের ম্যাচ এবং দুটো তিন দিনের ম্যাচ খেলেন তরুণ ব্যাটার। পাকিস্তানের হয়ে তিনি শেষ খেলেন গত এশিয়ান গেমসে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের অন্যতম সেরা তরুণ ব্যাটার হিসাবে বিবেচনা করা হয় তাঁকে। ক্রিকেটজীবনে আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। ২০২১ সালে পাকিস্তান সুপার লিগে কোভিড বিধি ভঙ্গের অভিযোগে নিলম্বিত হয়েছিলেন। পাঁচ বছর আগে ম্যাঞ্চেস্টারে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন হায়দার। আন্তর্জাতিক অভিষেক হওয়া সেই ম্যাঞ্চেস্টারেই নতুন বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন তিনি।
কোহলির প্রতি ‘বিরাট’ কৃতজ্ঞতা ইংল্যান্ডের ‘বেবি বয়কটের’!

তার নাম হাসিম হামিদ। ইংল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যানকে ওদের দেশে ডাকা হয় ‘বেবি বয়কট’ নামে! শক্তিশালী টেকনিকের জন্য। বাবা-মায়ের দেশ ভারত। তার প্রথম ভারত সফর ২০১৬-তে। অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ডের হয়ে। সেই সফরে রাজকোটে হামিদের দু’ইনিংসে রান ৩১এবং ৮২। তারপর মোহালিতে প্রথম ইনিংসে উমেশ যাদবের একটি বিষাক্ত ডেলিভারিতে ডান হাতের আঙুলে চিড় ধরার পরেও দ্বিতীয় ইনিংসে আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে একটি তিন ঘন্টার লড়াকু অপরাজিত ৫৯। যে ইনিংসের জন্য ইংল্যান্ডের ইনিংসে হার বেঁচেছিল। কিন্তু ওই চোট হামিদের ক্রিকেট জীবনকে নিয়ে গিয়েছিল চরম এক অনিশ্চয়তার দিকে। তখন ওর বয়স? মাত্র ২৪। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া, ল্যাঙ্কাশায়ারের চক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া। খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথাও মনে এসেছিল হতাশায়। কিন্তু ছাড়তে হয়নি। দুর্দান্ত এক উত্তরণ হয়েছিল তার ক্রিকেট জীবনে। দুটো মরশুমের অন্ধকার কাটিয়ে আবার নটিংহ্যামশায়ারে পা রাখা এবং চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স। যার মধ্যে গত মরশুমে কাউন্টি ক্রিকেটের প্রথম ডিভিশনে ১০৯১ রান। চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত ৯টা ম্যাচ খেলেছেন। রান ৮৪৮! কিন্তু দুঃসময় কাটিয়ে উঠলেন কীভাবে? এক সর্বভারতীয় দৈনিককে জানিয়েছেন তার ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কার অনুপ্রেরণা ছিল। যাদের মধ্যে প্রথম নাম বিরাট কোহলি! বলেছেন, “আমাকে ওর ফোন নম্বরটা দিয়েছিল ২০১৬-র সফরেই। বলেছিল যখন প্রয়োজন হবে যেন আমি ফোন করি। সময়টা যখন শুধু ব্যর্থতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তখন একদিন ফোন করেছিলাম। কী আশ্চর্য! আমার ব্যর্থতা নিয়ে কোনও কথাই বলেনি। শুধু উপদেশ দিচ্ছিল, ব্যাট করে নেমে কীভাবে মাথাটা ঠাণ্ডা রাখতে হবে, কীভাবে নিজেকে অবিরাম বলে যেতে হবে যে তোমাকেই পারতে হবে! আমি এখনও ব্যাট করতে নেমে, আগে ও পরে, এমনকী, নেটে দাঁড়িয়েও নিজেকে বলি, তোমাকেই পারতে হবে!” কোহলি ছাড়াও, হামিদ বলছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ব্যাটসম্যান হাসিম আমলাও তার দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মানসিক শক্তি যুগিয়েছেন। কিন্তু বিরাটের প্রসঙ্গ উঠলে এখনও আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন হামিদ। হয়ত সারাজীবনই বিরাট-কৃতজ্ঞতায় আচ্ছ্বন্ন থাকবেন ‘বেবি বয়কট’!
ছক্কার নজির পন্থের!

ছক্কার নজির গড়লেন ঋষভ পন্থ। আঙুলে চোট নিয়ে যে ইনিংসটি তিনি উপহার দিলেন, তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর ৭৪ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮টি চার এবং ২টি ছক্কা দিয়ে। আর ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি ছাপিয়ে গেলেন কিংবদন্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটার স্যার ভিভ রিচার্ডসকে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩৬টি টেস্ট খেলেছেন রিচার্ডস। এর মধ্যে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৩৪টি। ৫৯তম ওভারের শেষ বলে বেন স্টোকসকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারকে টপকে যান পন্থ। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ১২টি টেস্ট খেলেছেন টিম ইন্ডিয়ার সহ-অধিনায়ক। আর তাতেই রিচার্ডসকে টপকে গিয়ে পন্থের ঝুলিতে এখন ৩৫টি ছয়ের ভান্ডার! তাছাড়াও রোহিত শর্মাকেও ছুঁয়ে ফেলেছেন পন্থ। টেস্টে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি ছয় মারার তালিকায় ‘হিটম্যানে’র সঙ্গে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক। দুই ব্যাটারই টেস্টে ছয় মেরেছেন ৮৮টি। পন্থ ৪৬টি টেস্টে এই নজির গড়েছেন। রোহিত খেলেছেন ৬৭ টেস্ট। প্রথম স্থানে রয়েছেন বীরেন্দ্র শেহওয়াগ (৯০)। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে সর্বোচ্চ রানের নজিরও গড়েছেন পন্থ। লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে উইকেটকিপিং করার সময় আঙুলে চোট পেয়েছিলেন। ভারতীয় উইকেটকিপার ব্যাট করতে নামবেন কি না, সেই সংশয় ছিল। পন্থ অবশ্য সব সংশয় উড়িয়ে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন। ইংল্যান্ডের বোলাররাও তার শরীর লক্ষ্য করে শর্ট-পিচ ডেলিভারি করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পন্থের মনোবলে চিড় ধরানো যায়নি।
গিলকে দরাজ সার্টিফিকেট সুনীল গাভাসকারের

শুবমান গিলের অধিনায়কত্ব নিয়ে উচ্ছ্বসিত সুনীল গাভাসকার। এজবাস্টন টেস্টে জিতে ভারতের সিরিজ ১-১ করার পরই শুবমান গিলের অধিনায়কত্বে মজেছেন গাভাসকার। কিংবদন্তি প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার বলছেন, ”গিল ঠাণ্ডা মাথায় সিরিজে নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রতিটা সিদ্ধান্ত ঠাণ্ডা মাথায় বুঝে নিচ্ছে। এটার জন্য প্রশংসা করতেই হয়। আমি মনে করি ভারতীয় প্লেয়ারদের মধ্য়েও গিলকে অধিনায়ক হিসেবে মেনে নেওয়াটা সহজ হয়েছে। আমি মনে করি ওর কথায় সবার বিশ্বাস করা উচিৎ। গিল যদি এখন কাউকে ১০ তলা থেকে ঝাঁপও দিতে বলে, সেটা নির্দিধায় করা উচিৎ। কারণ গিলের দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা জন্মগত এবং স্বতঃস্ফুর্ত। দারুণ অধিনায়ক হয়ে উঠছে ও। আগামিদিনে আরও পরিণত হয়ে উঠবে ও।” ভারতের তৃতীয় টেস্ট আগামী ১০ তারিখ থেকে শুরু লর্ডসে। লর্ডসকে বিশ্ব ক্রিকেটের মক্কা বলা হয়। ভারতীয় ক্রিকেট দল এই মাঠে এখনও পর্যন্ত মোট ১৯টি ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু জিতেছে মাত্র দুটো। টিম ইন্ডিয়া হেরেছে ১২টিতে, ৫টিতে ড্র। লর্ডসে ভারতের জয়ের শতকরা হার ১০.৫ শতাংশ। লর্ডসে ভারতের শেষ তিনটি ম্যাচে একটিতে হার আর দুটি-তে জয় এসেছিল। ২০১৪-র লর্ডস টেস্টে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্বে ৯৫ রানে জিতেছিল ভারত। ২০১৮-য় এক ইনিংস ও ১৫৯ রানে হারতে হয় ভারতকে। আবার ২০২১-এ ১৫১ রানে জিতেছিল ভারত। শুবমান গিল এজবাস্টনে আরও এক কীর্তি করেছেন। গাভাসকারের ৪৯ বছরের কীর্তি ভেঙেছেন। সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে মাত্র ২৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জিতেছেন। ১৯৭৬-এ গাভাসকার ২৬ বছর বয়সে এই কীর্তি করেছিলেন।
লর্ডসের পিচ হচ্ছে বোলারদের জন্য বললেন কোটাক

লর্ডসের মাঠে ভারতীয় দল নেমে পড়ল প্র্যাকটিশে। মঙ্গলবার।
এজবাস্টনের পিচ নিয়ে ক্ষুব্ধ স্টোকস

বিশাল রানে এজবাস্টনে হারার জন্য পিচকে দায়ী করলেন স্টোকস।
ভুল শুধরে জয়ে ফিরলাম, বললেন গিল

জয়ের অন্যতম নায়ক আকাশদীপের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক।
কুলদীপকে প্রথম একাদশে না দেখে বিস্মিত গাভাসকার, সৌরভ

দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের প্রথম একাদশ দেখে অসন্তুষ্ট দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাসকর। কুলদীপ যাদবকে না দেখে তিনি বিস্মিত। জশপ্রীত বুমরাহ নেই প্রথম একাদশে। তিনটি পরিবর্তন আনা হয়েছে দলে। আকাশদীপ, ওয়াশিংটন সুন্দর ও নীতীশ রেড্ডি দলে ঢুকেছেন। গাভাসকর মনে করে কুলদীপের অন্তর্ভুক্তি ভারতের বোলিংকে শক্তিশালী করত। কারণ বার্মিংহ্যামের পিচ স্পিনার সহায়ক বলে মনে করা হচ্ছে। সানিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ”কুলদীপকে দলে না নেওয়ায় আমি অবাকই হয়েছি। এরকম পিচে বল ঘুরবে বলে মনে করা হচ্ছে, সেখানেই সুযোগ দেওয়া হল না কুলদীপকে।” গাভাসকরের সংযোজন, ”টপ অর্ডার যদি প্রত্যাশিত রান করতে না পারে, তাহলে সাত নম্বরে নামা ওয়াশিংটন ও আটে নামা নীতীশ রেড্ডির পক্ষে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে না। প্রথম টেস্টে তোমরা দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮৩৫ রান করেছিলে। সেই রানটা কম নয়। ফলে ব্যাটিংয়ে নয়, উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও শক্তি বাড়ানো উচিত ছিল।” জশপ্রীত বুমরাহকে প্রথম একাদশে না দেখায় অবাক হয়েছিলেন রবি শাস্ত্রীও। সব মিলিয়ে পিছিয়ে থাকা একটা দলের প্রথম একাদশ খুশি করতে পারেনি প্রাক্তন ক্রিকেটারদের। গাভাসকরের মত দেশের আর এক প্রাক্তন আধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিও ওয়াশিংটন সুন্দরকে প্রথম একাদশে নেওয়ায় বিস্মিত। সৌরভ বলেছেন, “আমার মনে হয় না, এই টেস্টে ভারতের দুজন সেরা স্পিনার খেলছে।” রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে কুলদীপ যাদব প্রথম একাদশে ঢুকবেন, সেটাই প্রাক্তনদের ধারণা ছিল।
গাভাসকর, মঞ্জেরেকর একমত, এজবাস্টনে কুলদীপকে চাই

ভারতীয় দলের কোচ গৌতম গম্ভীর ব্যাটিং গভীরতা কমিয়ে প্রথম একাদশ বাছাই করতে চান না। তাই দলে আট ব্যাটসম্যান রেখে খেলতে নামার কথা ভাবেন। ছয় ব্যাটসম্যানের সঙ্গে দলে দুজন অলরাউন্ডার হলেও চলবে। এই অবস্থায় তিনি কী দলে দুই স্পিনার নিয়ে খেলতে রাজি হবেন! তবে হেডিংলেতে হারের পর এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে ভারতীয় দলের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার দলে দুই স্পিনার নিয়ে খেলতে নামার কথা বলছেন। তাঁদের ভাবনা গম্ভীরের কাছে কতটা গুরুত্ব পাবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এজবাস্টনে ভারতের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ শুরু ২ জুলাই। তাই হাতে অনেকটা সময় আছে। এর মধ্যে দলে কতটা বদল হতে পারে বা আদৌ বদল হবে কিনা, তা নিয়ে ভাবনার সময় পাচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। আরও খবর এটাই যে সেখানে বুমরার সার্ভিস ভারতীয় দল পাবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ভারত অধিনায়ক শুভমান গিল ও কোট গম্ভীর বলেই দিয়েছেন, আমরা এখনও ঠিক করে উঠতে পারিনি। বুমরার সঙ্গে এনিয়ে কথা বলতে হবে। মনিটরিং করা চলছে। তবে তিনটি টেস্টের বেশি বুমরা খেলবে না। রবি শাস্ত্রী বলেছেন, বুমরা এজবাস্টনে না খেললে ইংল্যান্ড সেখানেই সিরিজ ২-০ করে ফেলবে। তাই বুমরাকে দরকার। তবে রবির ধারনা ভারতীয় দল এজবাস্টনে বুমরাকে না খেলিয়ে লর্ডসের জন্য অপেক্ষা করবে। আর এক প্রাক্তন দীনেশ কার্তিকের ধারনা, এজবাস্টনে বুমরাকে বাইরে রেখে ভারত খেলবে। এই দোলাচালে অবস্থার মধ্যে গাভাসকর বোমা ফাটিয়ে দিলেন। তিনি টিম ম্যানেজমেন্টকে হুঁশিয়ারি দিলেন যে অফশনাল প্র্যাকটিস না রেখে মাঠে গিয়ে ফিল্ডিংয়ে জোর দিতে। প্রথম টেস্টে ভারতীয় ফিল্ডাররা সাতটি ক্যাচ ফেলেছে। ম্যাচ সেখানেই হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। তাই হতাশ গাভাসকর বলছেন একসপ্তাহ সময় থাকলেও সবাইকে মাঠে নামতে হবে। ফিল্ডিংয়ে বাড়তি সময় দিয়ে নিজেদের ভুলগুলি শুধরে নিতে হবে। না হলে আবার সমস্যায় পড়বে ভারত। গাভাসকর অবশ্য বুমরা নিয়ে কথা বলতে চাননি। তিনি হেডিংলেতে বুমরার পারফরম্যান্স দেখার পর সঞ্জনা বলেছিলেন বুমরাকে গিয়ে বলবে ও যেন পাঁচটি টেস্ট খেলে দেয়। সনি টিভিতে কাজ করন বুমরার স্ত্রী সঞ্জনা। তিনি সেদিন মাঠে গিয়ে বুমরাকে সেই বার্তাও দেন। কিন্তু ম্যাচ হারার পর গম্ভীর পরিস্কার করে দিয়েছেন, বুমরাকে তিনটি টেস্টের বেশি খালাবার কথা ভাবছে না ভারত। তাই তাঁর আশা ছেড়ে দিতে হচ্ছে। তবে গাভাসকর সেদিকে না তাকিয়ে এজবাস্টনে কুলদীপ যাদবকে দলে চাইছেন। তাঁর সঙ্গে এব্যাপারে সহমত পোষন করেছেন সঞ্জয় মঞ্জেরেকর। তিনিও বলছেন, এজবাস্টনে স্পিনাররা কিছুটা হলেও বাড়তি সুযোগ পাবে। তাই কুলদীপকে সেখানে দরকার। তাঁদের মতে শার্দুল ঠাকুরকে বসিয়ে কুলদীপকে নিয়ে আসা হোক। এখন দেখার বিষয় গম্ভীর এ নিয়ে কি চিন্তা ভাবনা করেন! কারন সাত নম্বরে শার্দুলের জায়গায় নীতিশ আসতে পারেন। তা হলে ব্যাটিংয়ে গভীরতা ঠিক থাকবে। কিন্তু কুলদীপ দলে এলে সেটা আর হচ্ছে না। এমন ভাবনা কি গম্ভীর ভাবতে পারবেন! মনে হয় না। তবে সময় আছে। দেখা যাক কোথাকার জল কোথায় গড়ায়।