গ্রাসরুটের ছেলেদের ‘টেকনিক্যালি’ দক্ষ ফুটবলার গড়ে তোলার লক্ষ্যে চলছে অর্ণবের পরিশ্রম

ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার অর্ণব মণ্ডলের লক্ষ্য ‘টেকনিক্যালি’ দক্ষ ফুটবলার তৈরি করা। গত দেড় বছর ধরে ঠাকুরপুকুরে চলছে ফিউচার ফাউন্ডেশন ফুটবল ক্যাম্প। কোচ বিশ্বরুপ মুখার্জির উদ্যোগেই তৈরি হয়েছিল এই প্রশিক্ষণ শিবির। প্রায় ৭০টি ছেলে কোচিং নিতে যায় ওই ক্যাম্পে। ছয় বছর থেকে শুরু। বেশি রয়েছে ১৩-১৪ বছর বয়সী ছেলেরা। তরুণ সমিতি ক্লাবের মাঠ ছাড়াও ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজের মাঠও ট্রেনিংয়ের জন্য পাওয়া যায়। ক্যাম্পে তিনজন কোচ আছেন। পরামর্শদাতা হিসেবে আছেন বাংলার প্রাক্তন কোচ তপনজ্যোতি মিত্রও। সেখানেই চলছে অর্ণবের পরিশ্রম। “মাঠে কীভাবে দাঁড়াবে একটি ছেলে? দলের আক্রমণের সময় তার মুভমেন্ট, পজিশনিং কী হওয়া উচিত ম্যাচ চলাকালীন, শরীরের অবস্থান কিরকম হওয়া উচিত-আমার মনে হয় একজন ফুটবলারের টেকনিকের প্রথম উপাদান এটা। স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন জাতীয় কোচ থাকাকালীন, জাতীয় শিবিরে গিয়ে আমি এবং আরও অনেকে এই বিষয়টার সামনে পড়েছিলাম। অনেকেরই ভুলভ্রান্তিও স্টিফেন দেখিয়ে দিয়েছিলেন। এই বিষয়ে দক্ষ হওয়ার পর আসে ফার্স্ট টাচ শেখার বিষয়। সেটা অবিরাম পরিশ্রমের ফসল হবে,” ‘টেকনিক্যালি’ দক্ষ ফুটবলার গরে তোলার প্রসঙ্গে বিশ্লেষণ করলেন অর্ণব। এই কোচিং ক্যাম্পে এখনও পর্যন্ত কোনও আর্থিক সহায়তা আসে নি। অর্ণব জানালেন অদূর ভবিষ্যতে ক্যাম্পে ছেলেদের অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার পরিকল্পনা আছে। “তবে গ্রাসরুটে থাকা ছেলেদের জন্য যন্ত্রপাতির বিশেষ প্রয়োজন হয় না। ওদের প্রয়োজন প্রাথমিক পর্যায়ের ট্রেনিং। সেটাই আমরা করার চেষ্টা করছি,” বলছেন অর্ণব। কোচিং করাতে গিয়ে অর্ণবের আরও একটা ইতিবাচক দিক মনে হয়েছে যে, বাবা-মায়েরা ছেলেদের ফুটবল খেলতে পাঠাচ্ছে। “এখন অল্পবয়সী ছেলেদের শেখার গুণ কিন্তু লক্ষ্যণীয়। আমাদের ক্যাম্পে অনেক ছেলে আছে, যারা প্রতিভাবান। সম্প্রতি, চেয়ারম্যান কাপের মত বেশ কয়েকটি টুর্নামেন্টে কিন্তু ওই ছেলেদের নিয়ে গড়া আমাদের দল কিন্তু ফাইনাল খেলেছে,” বলছেন অর্ণব। সিনিয়র জাতীয় দলে বাঙালি ফুটবলার না থাকা নিয়ে অর্ণবের বক্তব্য, “বাঙালি ছেলে খেলছে কোথায়? দেশের টপ-টায়ার ফুটবলে তো কেউ নেই। আমি, প্রীতম, প্রবীর, নারায়ণ, রফিক, অরিন্দম, শুভাশিষ রায় চৌধুরী-সেই গ্রুপটাই তো শেষ ছিল ২০১৯-এ। এখন শুভাশিষ বোস ছাড়া আর কেউ নেই। তবে জাতীয় কোচের ওপরও নির্ভর করে বিষয়টা। তাকেও দেখতে হবে কলকাতা লিগের খেলা। না হলে সে জানবে কীভাবে যে কারা ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলছে।”