শ্রীনিধিকে নিয়ে ছেলেখেলা, ৪ গোল দিয়ে যাত্রা শুরু ইস্টবেঙ্গলের

অভিষেকেই নজর কাড়লেন জয় গুপ্তা(Jay Gupta)। লাল-হলুদ জার্সিতে গোলও পেলেন যেমন আবার প্রতিপক্ষকে রুখেও দিলেন বারবার। আইএফএ শিল্ডের(IFA Shield) প্রথম ম্যাচেই শ্রীনিধি ডেকানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল(Eastbengal)। এদিন শুরু থেকেই ম্যাচের দখল ছিল অস্কোর ব্রুজোঁর(Oscar Bruzon) ফুটবলারদের হাতে। দল গঠনে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। শুরু থেকেই চার আক্রমণাত্মক বিদেশিদের মাঠে নামিয়ে দিয়েছিলেন অস্কার(Oscar Bruzon)। প্রতিপক্ষ অ্যাকাডেমি টিম হলেও, লাল-হলুদ কোচের কাছে শুরু থেকেই ছিল এটা সুপার কাপের প্রস্তুতি। তাই তো প্রথম থেকেই পূর্ণশক্তির দল নামিয়েছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের(Eastbengal) ছক ছিল শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলা। গোল না পেলেও, মিগুয়েল(Miguel) ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। প্রতিপক্ষের মাঝমাঠ যেমন তছনছ করলেন, তেমনই একের পর এক সুযোগও তৈরি করে দিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচেই আবার গোল পেলেন সওল ক্রেসপো(Saul Crespo)। কার্যত প্রথম ম্যাচে শ্রীনিধিকে নিয়ে ছেলেখেলাই করল ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গল(Eastbegal) এদিন শুরু থেকেই ছিল আক্রমণাত্মক। কৌশলটা ছিল প্রথম থেকেই শ্রীনিধিকে(Sreenidhi) চাপের মধ্যে রাখা। সেটাই লালজ-হলুদের ফুটবলাররা বেশ ভালো ভাবে করেছিল। ম্যাচের ২১ মিনিটের মধ্যেই ইস্টবেঙ্গলের প্রথম গোল। মিগুয়েলের(Miguel) ফ্রিকিক থেকেই গোলটা হয়ে যেতে পারত। কিন্তু প্রতিপক্ষ গোল রক্ষক তা আটকে দেন। তবে সেই বল ফেরত আসতেই জালে জড়িয়ে দেন জয় গুপ্তা। প্রতিপক্ষকে টাপে রাখার জন্য শুরু থেকে এদিন বিষ্ণুকেও দলে রেখেছিলেন লাল-হলুদ হেডস্যার। ম্যাচের বয়স য়খন ৩৮ মিনিট সেই সময় বিপিনের বাড়ানো বল থেকে ক্রেসপোর দুরন্ত হেড। প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল(Eastbengal)। বিরতির চাপ বাড়াতে বেশ কয়েকজন ফুটবলার বদল করেন অস্কার ব্রুজোঁ। ডেভিডদের মাঠে আনেন তিনি। ছকটা যেন ছিল প্রতিপক্ষকে মাঝমাঠ না পেড়োতে দেওয়ার। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ২ মিনিটের মধ্যে হামিদের(Hamid) গোল। কিছুক্ষণের মধ্যে ফের ইস্টবঙ্গল শিবিরে সাফল্য। এবার গোলদাতার নাম জিকসন সিং। ম্যাচের ভবিষ্যৎ তখনই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। যদিও আক্রমণ বহাল রেখেছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে শ্রীনিধির গোলরক্ষকের দক্ষতা তাদেরকে লজ্জ্বার হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। লাল-হলুদ ফুটবলারদের একের পর এক শট আটকে দিয়েছিলেন তিনি। সেগুলো যদি না হত তবে ইস্টবেঙ্গলের গোলের সংখ্যা অন্যরকম হতেই পারত। ম্যাচের সেরা হয়েছেন সওল ক্রেসপো। প্রথম ম্যাচেই এমনভাবে শুরুটা যে ইস্টবেঙ্গলের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কোহলির প্রতি ‘বিরাট’ কৃতজ্ঞতা ইংল্যান্ডের ‘বেবি বয়কটের’!

তার নাম হাসিম হামিদ। ইংল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যানকে ওদের দেশে ডাকা হয় ‘বেবি বয়কট’ নামে! শক্তিশালী টেকনিকের জন্য। বাবা-মায়ের দেশ ভারত। তার প্রথম ভারত সফর ২০১৬-তে। অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ডের হয়ে। সেই সফরে রাজকোটে হামিদের দু’ইনিংসে রান ৩১এবং ৮২। তারপর মোহালিতে প্রথম ইনিংসে উমেশ যাদবের একটি বিষাক্ত ডেলিভারিতে ডান হাতের আঙুলে চিড় ধরার পরেও দ্বিতীয় ইনিংসে আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে একটি তিন ঘন্টার লড়াকু অপরাজিত ৫৯। যে ইনিংসের জন্য ইংল্যান্ডের ইনিংসে হার বেঁচেছিল। কিন্তু ওই চোট হামিদের ক্রিকেট জীবনকে নিয়ে গিয়েছিল চরম এক অনিশ্চয়তার দিকে। তখন ওর বয়স? মাত্র ২৪। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া, ল্যাঙ্কাশায়ারের চক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া। খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথাও মনে এসেছিল হতাশায়। কিন্তু ছাড়তে হয়নি। দুর্দান্ত এক উত্তরণ হয়েছিল তার ক্রিকেট জীবনে। দুটো মরশুমের অন্ধকার কাটিয়ে আবার নটিংহ্যামশায়ারে পা রাখা এবং চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স। যার মধ্যে গত মরশুমে কাউন্টি ক্রিকেটের প্রথম ডিভিশনে ১০৯১ রান। চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত ৯টা ম্যাচ খেলেছেন। রান ৮৪৮! কিন্তু দুঃসময় কাটিয়ে উঠলেন কীভাবে? এক সর্বভারতীয় দৈনিককে জানিয়েছেন তার ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কার অনুপ্রেরণা ছিল। যাদের মধ্যে প্রথম নাম বিরাট কোহলি! বলেছেন, “আমাকে ওর ফোন নম্বরটা দিয়েছিল ২০১৬-র সফরেই। বলেছিল যখন প্রয়োজন হবে যেন আমি ফোন করি। সময়টা যখন শুধু ব্যর্থতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তখন একদিন ফোন করেছিলাম। কী আশ্চর্য! আমার ব্যর্থতা নিয়ে কোনও কথাই বলেনি। শুধু উপদেশ দিচ্ছিল, ব্যাট করে নেমে কীভাবে মাথাটা ঠাণ্ডা রাখতে হবে, কীভাবে নিজেকে অবিরাম বলে যেতে হবে যে তোমাকেই পারতে হবে! আমি এখনও ব্যাট করতে নেমে, আগে ও পরে, এমনকী, নেটে দাঁড়িয়েও নিজেকে বলি, তোমাকেই পারতে হবে!” কোহলি ছাড়াও, হামিদ বলছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ব্যাটসম্যান হাসিম আমলাও তার দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মানসিক শক্তি যুগিয়েছেন। কিন্তু বিরাটের প্রসঙ্গ উঠলে এখনও আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন হামিদ। হয়ত সারাজীবনই বিরাট-কৃতজ্ঞতায় আচ্ছ্বন্ন থাকবেন ‘বেবি বয়কট’!