শার্দূল না কুলদীপ? সিদ্ধান্ত অধিনায়কেরই, কোচ নয়—সোজাসাপটা গাভাসকর

ম্যানচেস্টার টেস্টে ভারতের বোলিং রণনীতির চূড়ান্ত ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কিংবদন্তি ব্যাটার সুনীল গাভাসকর। শার্দূল ঠাকুরের পরিবর্তে কুলদীপ যাদবকে খেলানো উচিত ছিল বলে মনে করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি আরও সোজাসাপটা বলেন—“একাদশ নির্বাচনের পূর্ণ দায়িত্ব অধিনায়কের, কোচ নন।” গাভাসকরের মতে, “দিনের শেষে দায়ভার অধিনায়কের। ওটাই তাঁর দল। ওর সিদ্ধান্তেই চলা উচিত। যদি শুভমান গিল কুলদীপকে খেলাতে চাইতেন, তাহলে সেটাই হওয়া উচিত ছিল।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমি জানি এইসব বিষয় বাইরের লোকজনের সামনে আসে না। সবকিছু ঠিকঠাক আছে দেখানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু সত্যিটা এড়ানো যায় না—দলের নেতৃত্ব ক্যাপ্টেনই দেন, তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও তাঁরই থাকা উচিত।” এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নতুন বিতর্ক দানা বাঁধছে। দ্বিতীয় দিনের খেলা চলাকালীন ইংল্যান্ডের ওপেনাররা যখন ভারতীয় বোলিংকে উড়িয়ে দিচ্ছেন, তখনও শার্দূলকে মাত্র পাঁচ ওভার ব্যবহার করেন গিল। তিন-চার দিন মিলিয়ে শার্দূল বল করেছেন মাত্র ১১ ওভার—৫৫ রান খরচ করে একটি উইকেটও পাননি। অথচ কুলদীপের মতো বৈচিত্র্যময় স্পিনার বেঞ্চেই বসে রইলেন। গাভাসকর আরও বলেন, “ধোনি, গাঙ্গুলির মতো ক্যাপ্টেনরা দলকে বদলে দিয়েছিলেন। কারণ ওরা নিজের সিদ্ধান্তে চলতেন। কোচের উপর ভরসা নয়, নিজের সাহসে নেতৃত্ব দিতেন। ক্যাপ্টেনকে যদি শুধু পোস্টার বয়ের মতো বসিয়ে রাখা হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব সংস্কৃতি ধ্বংস হবে।” গাভাসকরের এই মন্তব্য শুধু গম্ভীরের কোচিং কৌশল নয়, বরং গোটা টিম ম্যানেজমেন্টের রণনীতিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল। ওল্ড স্কুল হলেও আজও গাভাসকর এর মতো সরল, ধারালো বিশ্লেষণই ক্রিকেটের আসল স্পাইন।
ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক হলেন শুভমন গিল, সহঅধিনায়ক ঋষভ পন্থ, দলে বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণ, বাদ সামি

জল্পনার অবসান। ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় দলের অধিনায়ক হলেন শুভমন গিল। সহঅধিনায়ক ঋষভ পন্থ। বাংলার জন্য ভাল খবর, দলে সুযোগ পেয়েছেন বঙ্গ ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরণ। কয়েকদিন ধরে অধিনায়ক নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। কে হবেন টেস্টে রোহিত শর্মার উত্তরসূরী সেটা নিয়ে জল্পনা চললেও শুরু থেকেই দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন গিল। জসপ্রীত বুমরা, কেএল রাহল, ঋষভ পন্থদের নাম নিয়ে আলোচনা চললেও গিল যে কোচ গৌতম গম্ভীর ও নির্বাচকদের প্রথম পছন্দ ছিলেন, সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত শনিবার সরকারভাবে অধিনায়ক হিসাবে শুভমন গিলের নাম ঘোষণা করা হল। ভারতের ৩৭তম অধিনায়ক হলেন গিল। এবং সাম্প্রতিক সময়ে কনিষ্ঠ অধিনায়ক। এর আগে ২০২৪-এ জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টিতে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সফলভাবে আইপিএলে গুজরাট টাইটানসকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাছাড়া টি টোয়েন্টি ও একদিনের ম্যাচে রোহিত শর্মার ডেপুটি হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। এবার অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। ৩২টি টেসেট খেলার পর মাথায় উঠল নেতৃত্বের মুকুট। ইংল্যান্ডে পাঁচটি টেস্ট খেলবে ভারত। এই সিরিজ দিয়েই শুরু হবে এবারের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সাইকেল। ঋষভ পন্থ সহঅধিনায়ক হলেন। পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেট, ভারতীয় এ দলে নিয়মিত পারফরম্যান্স করার পুরস্কার পেলেন ঈশ্বরণ। আবার সুযোগ পেলেন সিনিয়র দলে। বাংলা থেকে আকাশদীপও সুযোগ পেলেন। তবে বাদ পড়লেন মহম্মদ সামি। এদিন যে ১৮ জনের দল ঘোষণা করা হবল, তাঁরা হলেন, শুভমন গিল(অধিনায়ক), ঋষভ পন্থ (সহঅধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, কেএল রাহুল, সাই সুদর্শন, অভিমন্যু ঈশ্বরণ, করণ নায়ার, নীতীশ কুুমার রেড্ডি, রবীন্দ্র জাদেজা, ধ্রব জুরেল, ওয়াশিংন সুন্দর, শার্দূল ঠাকুর, জসপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, আকাশদীপ, অর্শদীপ সিং ও কুলদীপ যাদব।
শনিবারই সম্ভবত জানা যাবে ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়কের নাম

রোহিত শর্মার রেখে যাওয়া ব্যাটন তুলে নেবেন কে? ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক কে? জানা যাবে সম্ভবত শনিবারই। অধিনায়ক ও দল নির্বাচন করার জন্য শনিবার মিটিংয়ে বসছেন নির্বাচকরা। তারপরই দুপুর নাগাদ জানানো হতে পারে ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক কে এবং কোন দল ইংল্যান্ড যাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরেই অধিনায়ক নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছিল শুভমন গিল, ঋষভ পন্থ ও জসপ্রীত বুমরার নাম, কিন্তু বুমরা দৌড় থেকে সরে গিয়েছেন। তিনি ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টর জন্য ইংল্যান্ডে পাঁচটি টেস্টই সম্ভবত খেলবেন না। তাই এখন নজরে দুজন – গিল ও পন্থ। দৌড়ে অবশ্য অনেকটাই এগিয়ে আছেন শুভমন গিল। মনে করা হচ্ছে জাতীয় কোচ গৌতম গম্ভীরের পছন্দ শুভমন। কয়েকদিন আগে গম্ভীরের দিল্লির বাড়িতে দুজনে ৪-৫ ঘন্টা কথাবার্তাও বলেন। এছাড়া মুম্বইয়ে প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকরের সঙ্গেও একান্তে আলোচনা করতে দেখা গিয়েছিল গিলকে। এসব দেখেই মনে করা হচ্ছে এগিয়ে আছেন গিলই। এছাড়া বিভিন্ন সূত্র থেকেও খবর আসছে, গিলেই আস্থা নির্বাচকদের। শনিবার একই সঙ্গে দল ঘোষণাও করা হবে। পরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি অবসর নেওয়ায় নির্বাচকদের অনেকগুলি জায়গা ভরাট করতে হবে। আগামি ২০ জুন থেকে শুরু হবে ভারত-ইংল্যান্ড পাঁচ টেস্টের সিরিজ। এই সিরিজ দিয়েই শুরু হবে এবারের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন সাইকেল।