হেডিংলেতে ইংল্যান্ডের কাছে হার, জঘন্য বোলিং-ফিল্ডিংয়ে মাশুল দিল টিম ইন্ডিয়া

মর্মে মর্মে উপলব্ধি করল ভারতীয় দল, ক্যাচ ফস্কালে ম্যাচও ফস্কাতে হয়। একটা ম্যাচে পড়ল সাতটা ক্যাচ। পাল্লা দিয়ে খারাপ বোলিং। হেডিংলেতে প্রথম টেস্টে যে ৫ উইকেটে হারতে হল, তার পিছনে আর একটা বড় কারণ লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা। গোটা ম্যাচে ৭২ রানে লোয়ার মিডল অর্ডারের ১৩টি উইকেট হারিয়েছে ভারত। সে কারণেই যে ম্যাচে দলের পাঁচটি শতরান আছে সেই ম্যাচও এভাবে হারতে হল। শেষ দিন জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৩৫০ রান। ভারতীয় বোলিং ফিল্ডিংয়ের এমনই অবস্থা, শেষ দিনের পরিস্থিতিতেও সহজেই সেই রান তুলে নিয়ে গেলেন ডাকেট-ক্রলিরা। এই মাঠে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জিতল ইংল্যান্ড। ওপেনিং জুটিতে ক্রলি আর ডাকেট তুলে ফেললেন ১৮৮ রান। তখনই কী হতে যাচ্ছে, সেটা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। ডাকেট করলেন ১৪৯ রান। ক্রলি ৬৫ রান করে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে গেলেন। এরপর স্টোকস ৩৩ রানে আউট হলেও রুট ৫৩ রানে ও জেমি স্মিথ ৪৪ রানে অপরাজিত রইলেন। অথচ টেস্টটা কী দুর্দান্তভাবে শুরু করেছিল ভারত। প্রথম ইনিংসে যশস্বী, গিল ও পন্থ তিনজনই শতরান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও শতরান পন্থ ও রাহুলের। তবু হার ওই তিন কারণে। ক্যাচ মিস, বাজে বোলিং ও লোয়ার মিডল অর্ডারের নির্ভরতা দিতে না পারা। অ্যঠান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফিতে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ০-১ এ পিছিয়ে পড়ল টিম ইন্ডিয়া। তরুণ ভারতীয় দলের আত্মবিশ্বাসে যেমন বড়সড় ধাক্কা লাগল, তেমনি প্রশ্ন উঠে গেল জসপ্রীত বুমরার ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের জন্য তাঁকে কীভাবে বিশ্রামে রাখা যাবে? এরপর হয়ত দলে ঢুকতে পারেন অর্শদীপ সিং, কিন্তু তাতে ছবি কতটা বদলাবে?
শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে হাইভোল্টেজ টেস্ট, করুণের চোটে উদ্বেগ শিবিরে

অপেক্ষার পালা শেষ। শুক্রবার থেকেই হেডিংলেতে শুরু হয়ে যাচ্ছে হাইভোল্টেজ সিরিজ। ২০২৭ থেকে ২০২৯ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সাইকেলে এই টেস্ট দিয়েই শুরু হবে ভারতের অভিযান। তুমুল উৎসাহ, আগ্রহ, কৌতুহল। তবে প্রশ্ন উঠেছে বৃষ্টি কি বাধ সাধতে পারে? আবহাওয়ার যা পূর্বাভাস, তাতে প্রথম দিন শুকনো আবহাওয়াই থাকবে। তবে দ্বিতীয় দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। উইকেট শুরুর দিকে পেস বোলারদের সাহায্য করবে। পরের দিকে সুবিধা পাবেন স্পিনাররা। তবে টেস্ট শুরু হওয়ার আগে করুণ নায়ারের চোট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভারতীয় শিবির। দীর্ঘ ৮ বছর পর টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন করেছেন করুণ। ২০১৭-র পর শুক্রবার আবার তাঁর টেস্ট খেলতে নামার প্রবল সম্ভাবনা, কিন্তু তার আগেই বড় চোট পেয়ে গেলেন তিনি। নেটে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার বলে পাঁজরে আঘাত পান। করুণের চাট নিয়ে বেশ উদ্বেগ রয়েছে ভারতীয় শিবিরে। হাইভোল্টেজ সিরিজ শুরু হওয়ার আগে শুভমন গিলের সামনে গ্রেম স্মিথ। স্মিথের কেরিয়ারের একটা বড় অংশই গিলের প্রেরণা হতে পারে। তরুণ বয়সে ভারতের অধিনায়কত্ব পেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সামনে গিল। ২০০৩-এ একই রকম চ্যালেঞ্জের সামনে পড়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার গ্রেম স্মিথ। তাঁর কেরিয়ারের দ্বিতীয় সিরিজেই অধিনায়কত্ব পান। এবং শুরুতেই ছিল কঠিন ইংল্যান্ড সিরিজ। তারপর কিংবদন্তি অধিনায়ক হয়ে উঠেছিলেন তিনি। গিলের সামনেও একই রকম পরিস্থিতি। এই মুহূর্তে ক্যাপ্টেন স্মিথই তাঁর প্রেরণা। এই সিরিজে দুজনকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি আলাচনা। ভারত অধিনায়ক শুভমন গিল ও জসপ্রীত বুমরা। বিশ্বের অন্যতম সেরা পেস বোলার ইংল্যান্ড সিরিজে কতটা প্রভাব ফেলতে পারবেন সেটা নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টাকস অবশ্য আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই জানিয়ে দিলেন, বুমরাকে ইংল্যান্ড ভয় পাচ্ছে না। তাঁর মতে কোনও একজন একটা সিরিজ জেতাতে পারেন না। বুমরাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার মেনে নিয়েও স্টোকস বলেন ভারতকে একার হাতে ম্যাচ জেতাতে পারবেন না বুমরা। সব আলোচনা, সব অনুমান ভিত্তিক মতামত মতামত দেওয়ার পালাও শেষ। এবার শুরু হচ্ছে মাঠের লড়াই। সেখানে গিল-বুমরা, না স্টোকস-রুট, কারা কাদের টক্কর দেন সেটাই দেখার।