ফুটবলপ্রেমীদের কাছে ফুটবল উপহার দেওয়ার আবেদন ইউনাইটেড স্পোর্টসের

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ফুটবল উপহার দেওয়ার আবেদন ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাবের। প্রায় গত ১৫ বছর ধরে ইউনাইটেড স্পোর্টস যে ইউথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে এখন প্রায় ৬০০ নতুন প্রতিশ্রুতিবান ফুটবলার নিয়মিত অনুশীলন করে যাচ্ছে। এই ইউথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম শুধু কল্যাণীর তিনটে মাঠে নয়, তার বাইরেও চলছে কাঁচড়াপাড়ার জোনপুর মাঠে, শ্যামনগর তরুণ সংঘ ক্লাবের মাঠ, হালিশহর পুরসভার অধীনে পবনতলা জাগ্রত সংঘের মাঠ, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বড়ুয়া যুবক সংঘের স্টেডিয়ামে, এবং শিলিগুড়িতে চাঁদমণি ট্রাইবাল একাডেমির মাঠে। ক্লাবের ডিরেক্টর নবাব ভটচার্য বললেন, “আর্থিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করেও আমাদের সিস্টেমকে প্রতিনিয়ত উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আরও তাৎপর্যপূর্ণ একটি ঘটনা, গত কয়েকবছর ধরে কল্যানী – নৈহাটি – ব্যারাকপুরে খেলা থাকলে আমাদের বেশ কিছু সমর্থক আসছেন ম্যাচ দেখতে। এবং তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে আমাদের অ্যাকাডেমি থেকে আসা ছোট ছোট বাচ্চাদেরও!” “অভিভাবকদের সঙ্গে ওদের মাঠে দেখাটা আমার কাছে এক বিশেষ প্রাপ্তি। তাই ওদের কথা ভেবেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমার আবেদন যে আমাদের এই বাচ্চাদের সম্ভব হলে একটা করে ফুটবল ডোনেট করুন। ব্র্যান্ড, কস্কো মিলানো। এর থেকে ভালো দিলে আপত্তি নেই। ৪ বা ৫ নম্বর ফুটবল আমাদের প্রচুর প্রয়োজন হয়। এটা আমাদের কাছে বড় সহায়তা হবে। ফেসবুকে আমাদের আবেদনটি পড়বেন। এই বিষয়ে অয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।”
জয় দিয়ে শিল্ডে অভিযান শুরু ইউনাইটেড স্পোর্টসের

রবিবার আইএফএ শিল্ডে জয় দিয়ে অভিযান শুরু করলো এবারের কলকাতা লিগের রানার্স আপ ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব। কল্যাণী স্টেডিয়ামে, গ্রুপ বি-র ম্যাচে তারা ১-০ গোলে গোকুলম কেরল এফসি-কে পরাজিত করলো। ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে ৫৪ মিনিটে অমিত বসাক একমাত্র গোলটি করেন। এর আগে, গোকুলম কেরল এফসি নিজেদের প্রথম ম্যাচে মোহন বাগানের কাছে ১-৫ গোলে পরাস্ত হয়েছিলো। আজও হেরে পয়েন্টের খাতা না খুলেই বিদায় নিলো তারা। অপরদিকে ইউনাইটেড এসসি আজ জিতলেও গোলপার্থক্যে তারা মোহন বাগানের (+৪) থেকে পিছিয়ে থাকায় ফাইনালে যেতে গেলে আগামী ১৫ অক্টোবর, গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তাদের মোহন বাগানের বিরুদ্ধে জিততেই হবে। ঐ ম্যাচ ড্র হলেও মোহন বাগান, গ্রুপ সেরা হয়ে ফাইনালে চলে যাবে। কোচ লালকমল ভৌমিক অবশ্য দলের খেলায় খুশি, বিশেষত দুই বিদেশি ক্রিষ্টোফার আর সেইলার পারফরম্যান্সে। ম্যাচের পর বললেন, “ওদের দুজনের পারফম্যান্স দেখে সন্তুষ্ট। শুধু আইভরি কোস্টের মিডফিল্ডার ইসমাইলের ফিটনেস ভাল জায়গায় নেই।” ১৫ অক্টোবরের মোহনবাগান ম্যাচ না জিতলে শিল্ড থেকে বিদায় নিতে হবে ইউনাইটেড স্পোর্টসকে। লালকমল বলছেন, “ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও ম্যাচটা কলকাতা লিগের ফাইনল ছিল। জিততেই হত। বুধবারও মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জিততেই হবে। ছেলেদের সামনে দারুণ এক সুযোগ নিজেদের চেনানোর। খাতায় কলমে মোহনবাগানের শক্তির সঙ্গে আমাদের কোনও তুলনাই হয় না। এককথায় ওরা ভারতের সেরা দল। আর সেটাই আমাদের ফুটবলারদের কাছে মোটিভেশন হওয়া উচিত। হারানোর কিছু নেই। আনন্দ করে খেলুক ছেলেরা।”
ডেভিডের ‘উইনারে’ মরশুমের প্রথম কলকাতা ডার্বির রং ‘লাল-হলুদ’

কল্যাণী স্টেডিয়ামে শনিবার ম্যাচের শেষ হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে একটি ফ্লাডলাইটের আলো নিভে গেল। দুধে চোনা পড়ে যাওয়ার মত। না হলে এদিন দুপুর থেকেই স্টেডিয়াম জুড়ে শুধুই আলোর ঝলকানি। গ্যালারি পূর্ণ দু’দলের সমর্থকে। কাছা পরেও খেলা দেখতে এসেছিলেন এক ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। সদ্য প্রয়াত হয়েছেন তার বাবা। জানালেন, বাবাই ছিলেন কট্টর ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। ঐতিহ্যের ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচকে ঘিরে আবেগের অন্য দিকে সবুজ-মেরুণ জার্সি পরে গ্যালারিতে হাজির এক ‘বিশেষভাবে সক্ষম’ সমর্থক। সব মিলিয়ে মরশুমের প্রথম কলকাতা ডার্বি শুরু হওয়ার আগেই শনিবারের কল্যাণী স্টেডিয়াম রঙীন! ম্যাচটাও যে বিরতির পর ভীষভাবে রঙীন হয়ে উঠবে সে আর কে ভাবেছিল। ৯ মিনিটে জেসিন টিকে, তারপর ৪৬ মিনিটে সায়ন ব্যানার্জির গোলে এগিয়ে লাল-হলুদ। মাঠ জুড়ে তাদেরই আধিপত্য। উল্টোদিকে দুই তারকা ফরোয়ার্ড, সুহেল ভাট আর কিয়ান নাসিরি। কিন্তু প্রভাত লাখরার নেতৃত্বে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স এতটাই জমাট যে, গোলের সূযোগ তৈরি করতে পারছে না মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। বিরতির পর, ৫৫ মিনিটে লিয়ান কাস্তানহা যখন প্রথম গোল করে মোহনবাগানকে ম্যাচে ফেরালেন, তারপরই যেন ফিরে এল ইলিশ-চিংড়ির ট্র্যাডিশনাল লড়াইয়ের উত্তেজনা। ম্যাচটা সমানে-সমানে হয়ে উঠছে। দুটো উইং দিয়ে দু’দলই আক্রমণ শানাচ্ছে। মাঝমাঠে তৈরি হচ্ছে আক্রমণের উৎস। আইএসএলে-র সাম্প্রতিক কলকাতা ডার্বির মত মোহনবাগানের পক্ষে এক তরফা ম্যাচ নয়। দু’দলই পজেশন তৈরি করছে এবং গোলের মুখ পর্যন্তও চলে যাচ্ছে। ৬৭ মিনিটে এই লড়াইয়েরই প্রতিফলন। কিয়ান নাসিরি-র গোলে স্কোরলাইন ২-২। ইস্টবেঙ্গল তারপরই ১০ জনে হয়ে গেল। আমন সিকে দুটো হলুদ কার্ড দেখে মাঠের বাইরে। তাতেও তাদের খেলার স্টাইল বিশেষ বদলায়নি। ৬৯ মিনিটে শেষ হাসি ডেভিডের এবং লাল-হলুদের। উত্তেজনার ম্যাচে ৩-২ গোলে জয় কী বাকি মরশুমে ইস্টবেঙ্গলকে আত্মবিশ্বাস দিয়ে গেল? সময়ই শেষ কথা বলবে।
ডার্বি কল্যাণীতেই, ১৯-এর পরিবর্তে ২৬ জুলাই

বুধবার নদীয়া পুলিশের আপত্তিতে ১৯ জুলাইয়ের কল্যাণী স্টেডিয়ামে নির্ধারিত কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ডার্বি ম্যাচ বাতিল হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ম্যাচের আয়োজক কল্যাণী পুরসভা এবং আইএফএ সচিব উদ্যোগ নিতে শুরু করেন এই ম্যাচ হওয়ানোর জন্য। এবং শেষপর্যন্ত নদীয়া জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইএফএ এবং কল্যাণী পুরসভার চেয়ারম্যানের প্রায় চার ঘন্টার বৈঠকের পর নিরাপত্তার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ও ইস্টবেঙ্গল এফসির ডার্বি ম্যাচ ১৯ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৬ জুলাই কল্যানী স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে কল্যাণীতে দু’বার ডার্বি ম্যাচ নির্ধারিত থাকলেও ভেস্তে গিয়েছে নিরাপত্তার কারণে। কিন্তু এবার ডার্বি হওয়া নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন কল্যাণী পুরসভার চেয়ারম্যান নীলিমেশ রায়চৌধুরী। প্যারালাল স্পোর্টসকে বৃস্পতিবার রাতে বললেন, “হতাশ হইনি। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম এবার ডার্বিটা এখানেই হবে। আইএফএ আসলে চায় ম্যাচটা সুন্দরভাবে এবং সুষ্ঠভাবে হোক। এত অল্প সময়ে সেটা সম্ভব ছিল না। তাই তারিখটা পিছিয়ে দেওয়া হল। এতে ম্যাচটা আয়োজন করার সময় পাওয়া যাবে।” নীলিমেশ রায়চৌধুরী আরও জানালেন, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই মাঠের বাইরে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখানো বাতিল করেছে পুলিশ। টিকিট অনলাইনে ছাড়া হবে, দাম ১৫০ টাকা। প্রতিটি গেটে থাকছে কিউ-আর কোড। ফুড-পার্কও রাখা হবে ম্যাচের জন্য। ২৬ জুলাইয়ের ম্যাচ নিয়ে অখুশি ইস্টবেঙ্গল। শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার জানালেন, ১৯ জুলাই ম্যাচটা হলেই তাদের সুবিধে হত। মোহনবাগান ক্লাবের সচিব সৃঞ্জয় বোস অবশ্য বলেছেন, এই বিষয়ে চিঠি পাওয়ার পরই তিনি মন্তব্য করবেন।