রোহিত জমানায় দাড়ি দিতে রোড ম্যাপ তৈরি ছিল বোর্ডেরও

রোহিত শর্মা জমানায় দাড়ি টানতে শুধু দুই পক্ষকে টার্গেট করলে ভুল হবে। শুরুতে কিন্তু এটাই হয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, এ ব্যাপারে বোর্ড কর্তারা আলোচনার বাইরে। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীর বা নির্বাচক প্রধান অজিত আগারকরের সঙ্গে বোর্ড কর্তারাও হাত মিলিয়েছিলেন। তাই রোহিতের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়রে দুই ফরম্যাট শেষ হতে সময় লাগেনি। টি২০ ক্রিকেট থেকে অবসরের পর টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরতে বাধ্য হয়েছিলেন রোহিত। তাঁকে খেলা চালিয়ে যেতে বলা হয়নি। সেই গল্পের অন্য এক তথ্য সামনে এল। সেটা কি! এখানেও বোর্ড কর্তাদের হিসেব তৈরি ছিল। কিন্তু অঙ্ক না মেলায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রোহিত এখনও আছেন। তবে সেটা কতদিন তা বলা যাচ্ছে না। এটা বলে দেওয়া যায় যে ২০২৭ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে রোহিতের জায়গা হচ্ছে না। এমনও হতে পারে, এবছরই তিনি ওয়ান ডে ক্রিকেট থেকে সরে যেতে পারেন। এমন কি বিরাট কোহলিও তাঁর সঙ্গে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াতে পারেন। ভারতীয় ক্রিকেটে জল সেদিকে গড়াতে শুরু করেছে। এবার রোহিতের ওয়ান ডে ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে আসা যেতে পারে। অবাক লাগলেও এটা ঘটনা যে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের আগে ওয়ান ডে ক্রিকেট থেকে রোহিতের অবসরের আগাম খবর আশা করেছিলেন বোর্ড কর্তারা। তাঁরা মনে করেছিলেন যে টি২০ ক্রিকেটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা দুজনেই জানিয়ে দেন তাঁরা আর এই ফরম্যাটে খেলবেন না। সেভাবেই রোহিত এগোবেন, এমন ভাবনা বোর্ডের ছিল। তাঁরা মনে করেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর দুবাইয়ের মাঠে রোহিত জানিয়ে দেবেন, এরপর আর তিনি ওয়ান ডে ফরম্যাটে খেলবেন না। কারন সরে যাওয়ার জন্য সেটই ছিল আদর্শ সময়। সেটা রোহিত করেননি। কী করে করবেন। তাঁর মাথায় যে দেশের মাটিতে ২০২৭ বিশ্বকাপ ঘুরছে। তিনি মনে করেছিলেন, সেই বিশ্বকাপ খেলে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়বেন। কিন্তু তা হওয়ায় বোর্ড কর্তাদের ভাবনায় ছেদ পড়ে। তার আগে থেকে টেস্ট ক্রিকেট থেকে রোহিতর অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়ার ভাবনা চলে এসেছে। তাঁরা জানতেন, অধিনায়কত্ব কেড়ে নিলে রোহিত টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলবেন। সেটাই হল। কিন্তু এখনও বেঁচে আছে ওয়ান ডে ক্রিকেট ফরম্যাট। সেখানে রোহিত নিজেকে ধরে রেখেছেন। রোহিত ধরে রাখলে কি হবে, বোর্ড কর্তারা চাইলে তো তিনি খেলবেন। এবছরই ভারতীয় ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তার জন্য তোড়জোর শুরু করে দিয়েছে। তাঁরা চাইছেন, সেই সিরিজে রোহিত ও বিরাটকে সংবর্ধনা দেবে। সেটা হবে তো! বিরাট দলে থাকলেও রোহিতের খেলা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। ওয়ান ডে ফরম্যাট থেকে রোহিত অধিনায়কত্ব কেড়ে নিলে রোহিত কি খেলা চালিয়ে যাবেন! মনে হয় না। তিনি পাকাপাকিভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়াবেন। বোর্ডের ভাবনায় এমনই রয়েছে। তাই ধরে নেওয়া যায় যে রোহিতের দিন ফুরিয়ে এসেছে। তাঁর পক্ষে খেলা চালিয়ে যাওয়ার আর বেশি সময় নেই। টিম ম্যনেজমেন্ট, নির্বাচক প্রধান সঙ্গে বোর্ড কর্তারাও এক টেবিলে বসে পড়েছেন। রোহিত সেই জায়গা থেকে নিজের দিকে বল কি করে টেনে আনবেন। তাই ধরেই নেওয়া যায় যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে রোহিতের অবসর এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
ভারতীয় দল ইংল্যান্ডে ফ্লপ হলে বিরাট ফিরে আসতে পারে: ক্লার্ক

আইপিএল ফাইনালের ৪৮ ঘন্টা আগে শোনা গিয়েছিল যে বোর্ডের তরফ থেকে আরও একবার বিরাটকে বলা হবে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ভেঙ্গে বেরিয়ে এস। আবার মাঠে নেমে পড়। আইপিএল চেয়ারম্যান অরুন ধুমাল এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন আরসিবি চ্যাম্পিয়ন হলে আমি নিজে বিরাটের সঙ্গে কথা বলব। জানা যায়নি, আরসিবি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বিরাটের সঙ্গে ধুমাল কথা বলেছেন কিনা। সবাই বিশ্বাস করেন, বিরাটকে অবসর ভেঙ্গে আবার টেস্ট ক্রিকেটে মাঠে নামতে বল হলে তিনি রাজি হবেন না। কিন্তু কথা কি আদ হয়েছে! অরুন ধুমালের পর এ ব্যাপারে এবার এগিয়ে এলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ নিয়ে অনেক কথাই শোনালেন। তিনি বলছেন, ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় ক্রিকেট দল ভল পারফরম্যান্স না করলে বিরাটের উপর এ নিয়ে চাপ বাড়তে পরে। ধরে নেওয়া যাক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত ৫-০ ম্যাচে সিরিজ হারল। তখন কি সবাই হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন। না, বোর্ড কর্তা থেকে শুরু করে ক্রিকেট ফ্যানরা বিরাটের উপর চাপ তৈরি করবেন। তাঁকে ফিরে আসতে অনুরোধ করবেন। তখন বিরাট সেই অনুরোধ ফেলে দিতে পারবে! নিজের ইচ্ছে কিন্তু হার মানবে। আমি বিশ্বাস করি না ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল এমন হতশজনক পারফরম্যান্স করবে। ২০০৭ সালের পর ভারতীয় দল ইংল্যান্ড গিয়ে সিরিজ জিততে পারেনি। এবার তেমন হবে বলে মনে হয় না। কিন্তু যদি তেমন কিছু হয় তা হলে বিরাটকে ফিরে আসর অনুরোধ করা হবে। বিশেষ করে ফ্যানদের চাপের কাছে হার মেনে বিরাট টেস্ট ক্রিকেটে আবার ফিরে আসতে পারে। এবার আইপিএলে ব্যাটসম্যান বিরাট ফ্যানদের হতাশ করেননি। ছশোর উপর রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ভাল না হলেও ফাইনালে ৪৩ রানের ইনিংংস তাঁর কছ থেকে পাওয়া গিয়েছে। আসলে বিরাটের এখন খিদে আছে। প্রচন্ড ফিট বলে মাঠে ছুটতে অসুবিধা হয় না। আজকের ভারতীয় দলে তাঁর মতো ফিট ক্রিকেটার কজ আছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আর এটাই বিরাটকে ভাল পারফর্ম করতে সাহায্য করে। তাঁর ব্যাডপ্যাচ-এর সময় হতাশায় ভেঙ্গে না পড়ে বাড়তি পরিশ্রম করে রানে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। অনেকে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন। বাড়তি খাটনির চেষ্টা না করে নিজেকে গুটিয়ে নেন। বিরাট সেই জাতের ক্রিকেটার নন। তাই তিনি আজও রান করে যাচ্ছেন। আরও দুবছর তিনি অনায়াসে টেস্ট ক্রিকেট খেলে দিতে পারেন। সেটাই অনেকে চাইছেন। টেস্ট ক্রিকেটে বিরাট ফিরে আসুন। ভারতীয় দলকে সামনে টেনে নিয়ে যান। তবে ভারতীয় দল ইংল্যান্ডে ভাল খেলে দিলে এই প্রশ্ন উঠবে না। এটা নিশ্চিত করে বলে দেওয়া যায়। গম্ভীর বা আগারকররাও এ নিয়ে কোনও কথা বলবেন না। সিরিজ জিতলে তো কথাই নেই। সন্মানজনক হার হলেও পিছন ফিরে থাকাবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করবেন না। তাই ক্লার্ক বলছেন, ইংল্যান্ডে খারাপ পারফরম্যান্স হলেই বিরাটকে নিয়ে আবার কথা উঠতে পারে। না হলে নয়।
বাবা টেস্ট ক্রিকেটের ফ্যান, আমার অবসরের কথা শুনে হতাশ হয়ে পড়েন: রোহিত

বাবা গুরুনাথ শর্মা। যাঁরা তাঁকে দেখেননি, তাঁরাও তাঁকে চেনেন। আসলে নামেই তাঁর পরিচিতি। তিনি রোহিত গুরুনাথ শর্মার বাবা। এবার সকলেই চিনতে পারবেন। সেই গুরুনাথ শর্মা একজন টেস্ট ক্রিকেটের ফ্যান। তাঁর কাছে আধুনিক ক্রিকেটের তেমন মূল্য নেই। ওয়ান ডে বা টি২০ ক্রিকেট পছন্দ নয়। তাঁর জমানায় টেস্ট ক্রিকেট ছিল একমাত্র ক্রিকেট। যা নিয়ে মুম্বইকররা মেতে উঠতেন। তাই টেস্টে ৩০ বা ৪০ রান করলেও বাবা গুরুনাথ ছেলের কাছে জানতে চাইতেন কীভাবে রান এল। কেন বেশি রান করতে পারলেন না। কোন বোলার বল করছিলেন। এমন নানা প্রশ্ন রোহিতের কাছে করতেন। রোহিত বলতে গেলে পুরো ম্যাচ রিপোর্ট বাবাকে বলে দিতেন। আবার ওয়ান ডে ক্রিকেটে বড় রান করেছে জানতে পারলে বলতেন, ভাল খেলেছ। আমি খুশি। ব্য এটুকুই। এমনকি ওয়ান ডে ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রোহিতর ২৬৪ রানের ইনিংসের কথা শুনেও ম্যাচের কথা জানতে চাননি। এই হলেন গুরুনাথ শর্মা। টি২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অবসরের কথা শুনিয়েছিলেন রোহিত। এই খবর বাবার কাছে যাওয়ার পর তিনি হতাশ হননি। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট থেকে রোহিতের অবসরের কথা শুনে কিছুটা হলেও হতাশ হয়ে পড়েন। কারন তিনি বুঝে গিয়েছিলেন, এরপর ছেলেকে আর টেস্ট ক্রিকেটে দেখতে পাবেন না। এমন নানা গল্প নিজেই শোনালেন রোহিত শর্মা। মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে এসে বাবা গুরুনাথকে নিয়ে অনেক অজানা কথা সামনে টেনে আনলেন। চেতেশ্বর পুজারার স্ত্রী পূজা সম্প্রতি একটি বই লিখেছেন। বইয়ের নাম- দ্য ডায়েরি অফ এ ক্রিকেটার্স ওয়াইফ। সেখানে এসে বাবা গুরুনাথকে নিয়ে নানা কথা বললেন। এর আগে নানা সাক্ষাৎকারে রোহিত শুনিয়েছেন নিজের রোল মডেলের কথা। তাঁর জীবনের হিরোর গল্প। সেকথা আবার টেনে আনলেন। বলছিলেন, বাবা ও মা আমার জীবন গড়ে দেওয়ার পিছনে যা করেছেন তা ভাষায় ব্যাখ্যা করা যায় না। সকলের বাবা- মা নিজের সন্তানদের জন্য অনেক কিছু ত্যাগ স্বীকার করেন। আমি বাবা-মাকে দেখেছি। ওঁদের ত্যাগের কথা ভুলতে পারব না। ওঁদের জন্য আজা আমি এই জায়গায় এসে দাঁড়াতে পেরেছি। না হলে আমাকে হয়তো অন্য কিছু করে জীবন চালাতে হত। বাবা এক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। হাতে সময় পেলে লাল বলের ক্রিকেট দেখতে মাঠে ছুটতেন। সেই থেকে লাল বলের প্রতি তাঁর ভালবাসা জন্মায়। আমি যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি, তখন থেকে আমার লাল বলের খেলার স্কোর জানতে চাইতেন। টেস্টের পাশাপাশি সাদা বলের ক্রিকেটের রান জানতে চাইলেও তাঁর মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখতে পেতাম না। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ক্রিকেটে ২৬৪ রান করে বিশ্বরেকর্ড করার পরও নয়। খুশি হতেন। সব বাবা- মা হন। ছেলের কীর্তিতে তাঁরা গর্ব অনুভব করেন। ব্যস এটুকু। কিন্তু টেস্টে ভাল কিছু করতে পারলে তাঁর মুখের চেহারা বদলে যেত। বোঝা যেতে তিনি খুব খুশি হয়েছেন। সেই আমি যেদিন টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা জানিয়ে দিলাম, সেদিন কিছুটা হলেও হতাশ হয়েছিলেন। এটা শুনে খুশি হয়েছিলেন যে আমি নিজে থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। এমন নয় যে দল থেকে বাদ পড়ে অবসরের কথা ঘোষনা করেছি। কদিন আগে (১৭ মে) ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে রোহিতের নামে স্ট্যান্ড হওয়ার দিন মাঠে এসেছিলেন বাবা-মা। তাঁরা দুজনেই এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে আনন্দে চোখ ভিজে গিয়েছিল। এটা তাঁদের কাছে গর্বের ব্যাপার। এসব দেখতে ভাল লাগে। নিজেকে ধন্য মনে হয়। তাঁদের ছেলে কিছু একটা করতে পেরেছে বলে খুশি হয়েছেন। এর থেকে বড় আর কি হতে পারে।
অবসরের পর ফের মাঠে বিরাট, কেকেআরকে চিন্তায় ফেলেছে বৃষ্টির পূর্বাভাস

আইপিএল ফাইনাল ইডেনে করতে হলে বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করতে হবে। তাই ৩ জুন আইপিএল ইডেন থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভাবনা বোর্ডের। ভাবনা বললে ভুল হবে। সরকারি সিলমোহর না পড়ায় নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে আমেদাবাদে ফাইনাল হওয়া একপ্রকার নিশ্চিত। ৩ জুন আসতে অনেক দেরি। তার আগে স্থগিত থাকা আইপিএলের প্রথমদিনের ম্যাচ বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমনই আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের খবরে। তাই চাপে কেকেআর। খেলা না হলে পয়েন্ট ভাগ হয়ে যাবে। আর তা হলে আরসিবির প্লে অফে চলে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকবে না। কিন্তু কেকেআর। তারা ভেবেছিল ১৫ পয়েন্ট নিয়ে বসে থাকবে। যদি সুযোগ আসে তা হলে প্লে অফ খেলবে। না হলে বাপি বাড়ি যা। কিন্তু শনিবার খেলা না হলে কেকেআর বড় জোর ১৪ পয়েন্টে যেতে পারবে। সেটা হলে কেকেআরের প্লে অফ খেলার আশা ছেড়ে দিতে পারে। এমন হলে বেঙ্গালুরুর ম্যাচ কেন সরিয়ে নেওয়া হল না। কেন প্রশ্ন তোলা হল না এমন আবহাওয়া হলে বেঙ্গালুরুতে খেলা করা সম্ভব নয়। বোর্ড বলবে না। কারন ম্যাচ না হলে পয়েন্ট ভাগ হয়ে যাবে। আর এটা নিয়ে বোর্ড কর্তাদের মাথাব্যথা নেই। কিন্তু ফাইনালে তো পয়েন্ট ভাগ করা সম্ভব নয়। রিজার্ভ ডে থাকলে পরদিন খেলা হবে। তাই ইডেন চলে গেল হিসেবের বাইরে। সে যাই হোক, আরসিবি ম্যাচে ফিরে আসা যাক। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর বিরাট কোহলি আবার মাঠে নামছেন। মনে হয় না এই ম্যাচে মানসিক দিক থেকে তিনি চাপ অনুভব করবেন। অনেক ভেবে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই নিজের ডেরায় খেলতে নামার আগে আবেগ কাজ করবে না। বরং আরসিবি ফ্যানদের কিছু ফিরিয়ে দিতে চাইবেন। ফিরিয়ে দেওয়া মানে ট্রফি জিতে তাদের হাতে তুলে দেওয়া। এবার সেদিকে ছুটবেন বিরাটরা। তবে লক্ষ্যে পৌঁছতে অনেকটা পথ ছুটতে হবে। বিরাট আছে। তাই স্বপ্ন দেখতে ক্ষতি কি। ইডেনে আইপিএলের প্রথম ম্যাচ হয়েছিল বিরাট বনাম রাহানের লড়াইয়ের মধ্যে। সেই ম্যাচে আরসিবি জিতেছিল। তাই ফিরতি ম্যাচে জয়ের সঙ্গে বদলা কথাটা জড়িয়ে আছে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে প্রথমদিনের প্র্যাকটিসে রাহানের সঙ্গে দেখা হয় বিরাটের। এক সপ্তাদে ক্রিকেটের দুই নক্ষত্রের অবসরে রাহানেও অবক হয়ে গিয়েছেন। তাই দেখা হতে জড়িয়ে ধরেন বিরাটকে। কি কথা হল তা অবশ্য জান যায়নি। রাহানে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বললে হয়েতো কিছুটা জানা যেত। কিন্তু সেট আর হল কোথায়। নিজে না এসে পাঠিয়ে দিলেন মণীষ পান্ডেকে। এখন তাঁর কথা শুনে কি আর হবে। তাই সেদিকে কান না দিয়ে অঙ্কের হিসেবে সকলে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। আরসিবির খেলা বলে চমক দেওয়ার অপেক্ষায় আরসিবি ফ্যানরা। ম্যাচের থেকে তাঁদের নজর সেদিকে বেশি। তবু ক্রিকেট আছে। থাকবেও। আর তাঁদের মধ্যে থাকবেন বিরাট। একটা দারুন ইনিংসের সঙ্গে জয় দেখতে পেলে আরসিবি ফ্যানদের পয়সা উশুল। তবে পয়সা উশুল হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা থেকে যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, শনিবার সাড়ে সাতটা থেকে বৃষ্টি শুরু হবে। হালকা থেকে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। রাত যত বাড়বে, বৃষ্টি সেই হারে বাড়বে। তাই কেকেআরের চিন্তা সেই বৃষ্টি নিয়ে। পয়েন্ট ভাগ হয়ে গেলে শেষ ম্যাচের গুরুত্ব থাকবে না। তাই জয় দিয়ে শেষ করা ভাবনায় থাকলেও আবহাওয়া দপ্তরের আগাম খর তাদের স্বস্তি দিচ্ছে না। তাই খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেঙ্গালুরুতে বেড়েই চলেছে।
বিরাটকে শ্রদ্ধা জানাতে কেকেআর ম্যাচে আরসিবি ফ্যানরা সাদা জার্সিতে মাঠে থাকবেন

এ এক অভিনব শ্রদ্ধা। তাঁদের ভাবনাকে স্যালুট জানাতে হয়। হ্যাঁ, আরসিবি ফ্যানরা ১৭মে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসবেন সাদা জার্সিতে। সত্যি এ এক অবাক করার মতো ব্যাপার। আইপিএলে আরসিবি সাধারনত লাল-কালো জার্সিতে মাঠে নামে। কখনও তাঁদের আবার সবুজ জার্সিতেও খেলতে দেখা যায়। কিন্তু এবার অন্য ভূমিকায় দেখা যাবে বিরাট কোহলি ফ্যানদের। কেন এমন ভাবনা! সোমবার টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন বিরাট কোহলি। পাঁচদিনের ক্রিকেটের ফরম্যাট তাঁর পছন্দের। সেই ফরম্যাট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এটা কতটা কষ্টের তা আরসিবি ফ্যানরই শুধু নয়, জানে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। সেই মহানায়ককে শ্রদ্ধা জানাতে আরসিবি ফ্যানরা এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। সবাই টেস্টের সাদা জার্সিতে মাঠে আসবেন। এবং এক বার্তায় তাঁরা সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছেন, আপনারা এই ম্যাচ মিস করবেন না। সবাই আসুন। এটাই সঠিক সময় আমাদের সকলের তরফ থেকে বিরাটকে শ্রদ্ধা জানানোর। আবেদনে আরও অনেক কিছু লেখা আছে। এই অবাক করা কান্ড ঘটাতে হলে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। তার জন্য ফ্যানরা চাঁদা তুলছেন। সেই টাকা দিয়ে তর স্টেডিয়ামের বাইরে সাদা জার্সি হাতে নিয়ে দাঁড়াবেন। মাঠে যাঁরা আসবেন, তাঁদের সকলের হাতে সেই টি শার্ট তুলে দেবেন। চাহিদা একটাই- সাদা জার্সি গায়ে মাঠে প্রবেশ করুন। এটাই বিরাটকে শ্রদ্ধা জানানোর সেরা পন্থা। শোনা যাচ্ছে, ফ্যানদের এই আবেদন দারুনভাবে সাড়া ফেলেছে। সবাই চান এমন কিছু করা হোক যা বিরাটকে বরন করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সেরা হয়ে থাকবে। বিরাট সম্ভবত বৃহস্পতিবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দলের সঙ্গে আসবেন প্র্যাকটিস করতে। বিরাটরা এবারের আইপিএলে ভাল জায়গায় আছে। প্লে অফ খেলা প্রায় নিশ্চিত। এখন অপেক্ষা কেকেআরকে হারিয়ে প্লে অফ খেলা পাকা করা। সেই প্র্যাকটি দেখতে স্টেডিয়ামে অনেক মানুষ আসবেন। আগেও তাঁরা এসেছেন। এবারের আসাটা অন্য কারনে। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ঘরের মাঠে আরসিবি খেলতে নামছে। একথাও বলা যায় যে বিরাটের সেকেন্ড হোম এখন বেঙ্গালুরু। সেখানে তিনি সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাট হাতে মাঠে নামবেন। এবং সেখানেই ফ্যানদের অভিনব পন্থা। ফ্যানদের এই উপহারে বিরাট কি সহজ ও স্বাভাবিক থাকতে পারবেন। মনে হয় না। তিনিও মানুষ। ১৮ বছর ধরে এই ফ্যানদের জন্য কিছু একটা করার চেষ্টা তিনি চালিয়ে এসেছেন। এবারও লক্ষ্যে ছুটছেন। পারবেন কি বিরাট আইপিএল ট্রফি ফ্যানদের জন্য জিততে। এমনটা হলে সেটাই হবে ফ্যানদের কাছে তাঁর সেরা উপহার।
অবসর নিচ্ছি না, জানিয়ে দিলেন শামি

কদিন ধরে নানা মহলে কথাটা ঘুরপাক খাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চলেছেন মহম্মদ শামি। সম্ভবত ইংল্যান্ড সিরিজে যাবেন না। তিনি যাবেন না বললে ভুল হবে, তাঁর পারফরম্যান্স দেখে নির্বাচকরা হয়তো দলে নেবেন না। সেই গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন শামি নিজেই। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লিখলেন, এমন খবর করার কোনও যুক্তি আছে বলে মনে হয় না। আমর সঙ্গে এ নিয়ে কেউ কোনও কথা বললেন না। নিজের মনে এমন কিছু লেখার কি দরকার ছিল। আসল রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির অবসরের সিদ্ধান্ত জানার পর অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, সেই পথ ধরে হাঁটবেন শামিও। শোনা যাচ্ছিল, নির্বাচকরা তাঁর পারফরম্য়ান্সে খুশি নন। আইপিএলে মোটেও ছন্দে নেই তিনি। ২০২৩ বিশ্বকাপে শামি চার ম্যাচ মাঠের বাইরে থাকার পর ফিরে এসে চমক দিয়েছিলেন। বলা যায়, ভারতীয় বোলিংকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। হ্যাঁ, বুমরা থাকার পরও একথা বলতে হচ্ছে। তারপর চোটের কারনে হারিয়ে যান শামি। প্রায় দেড় বছর এভাবে কেটে যায়. এরপর ফিট হয়ে মাঠে ফিরে এসে সেই মেজাজে তাঁকে দেখা যায়নি। এমনকি আইপিএলেও পুরনো চেহারায় তিনি নেই। কেন এমন হচ্ছে! এটাই মাথাব্যথার কারন হয়ে উঠেছে নির্বাচকদের। তাঁদের চোখে বুমরা পুরো ফিট নন। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কথা মাথায় রেখে তাঁকে পুরো সিরিজ নাও খেলানো হতে পারে। তাঁর সঙ্গে শামির অবস্থাও যদি এমন হয়, তা হলে দলকে টানবেন কে! তাই শামিকে নিয়ে দ্বিধায় নির্বাচকরা। এ খবর বাইরে আসার পর সবাই ধরে নিয়েছিলেন, শামিও হয়তো রোহিত ও বিরাটের পথে হাঁটবেন। এর পিছনে কারনও ছিল। সত্যি এবারের আইপিএলে শামিকে আগের চেহারায় দেখা যায়নি। গুজরাট টাইটান্স প্রথমবার আইপিএলে আসার পর শামি দলের বোলিংকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেরা বোলারের শিরোপাও পেয়েছিলেন। টানা দুবছর ভাল পারফরম্যান্স করার পর থেকে শামি হারিয়ে গেলেন। চোট সারিয়ে দেশের হয়ে খেলতে নেমে চমক নেই। আইপিএলে সাড়ে দশ কোটি টাকায় তাঁকে কেনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। কিন্তু কোথায় কি! তাঁর শেষ ম্যাচের কথা খুব তাড়াতাড়ি ভুলতে চাইবেন। শামি সেই ম্যাচে চার ওভারে দেন ৭৪ রান। আর একটু হলে আইপিএল ইতিহাসে রেকর্ডের খাতয় তাঁর নাম উঠত। এই শামিকে কেউ চেনেন না। তাই প্রশ্ন, তিনি কি ইংল্যান্ড সিরিজে নিজেকে প্রমান করতে পারবেন। পারলে ভাল, না হলে তাঁকে কিন্তু দল থেকে ছিটকে যেতে হবে। জল সেদিকে গড়িয়ে চলেছে। ইংল্যান্ড সিরিজে পাঁচ বা ছয় পেসার নিয়ে ভারতীয় দল যাবে। বুমরা ও শামি ছাড়াও দলে থাকার সম্ভাবনা সিরাজ, প্রসিদ্ধ, মুকেশ, আকাশদীপরা। তাই জায়গা পাকা করতে হলে আগের মেজাজে ফিরতে হবে শামিকে। এবং সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হয়, তত ভাল।
অশ্বিন বলছেন, এখনও দেশকে অনেক কিছু দেওয়ার ছিল রোহিত, বিরাটের

টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচশোর উপর উইকেট। প্রায় একই সঙ্গে টেস্ট কেরিয়ার শুরু রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিদের সঙ্গে কত সাফল্য ভাগ করে নিয়েছেন। ব্যর্থতাও পিছু ছাড়েনি। কিন্তু সাফল্যের ছবি বেশি দেখেছেন। তাই রোহিত ও বিরাটের অবসর মন থেকে মেনে নিয়ে পারছেন না। গতবছর অস্ট্রেলিয়ার মাঠে হঠাৎ করে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন অশ্বিন। একদিন রোহিতের পাশে বসে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে এসে অশ্বিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর নয়। লোকাল ক্রিকেট ও আইপিএল খেলবেন। কিন্তু এর বেশি নয়। সেই অশ্বিন আশা করেছিলেন, ভারতীয় দলের আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজে রোহিত দলকে নেতৃত্ব দেবেন। মিডলঅর্ডারের দায়িত্ব সামলাবেন বিরাট। কিন্তু তাঁদের অবসরে অনেকের মতো অবাক অশ্বিনও। বলছেন, ২০ জুন লিডসে ভারতীয় দল প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে। সেদিনের লাইন আপে রোহিত ও বিরাটকে দেখতে পাওয়া যাবে না। সবাই মিস করবে। একটা অনভিজ্ঞ দল নিয়ে ভারত খেলতে নামবে। আমি এখনও বিশ্বাস করি, রোহিতের কম্পোজার এবং বিরাটের এনার্জি দলকে সামনের দিকে টেনে নিয়ে যেত। ওদের এখনও দেশকে অনেক কিছু দেওয়ার ছিল। ওরা হারিয়ে যায়নি। কিন্তু হঠাৎ করে অবসর নিয়ে নিজেদের সরিয়ে নিল। গত দশ-বারো বছর ধরে দেখে আসছি বিরাট ও রোহিত কীভাবে দলকে টেনে নিয়ে এসেছে। প্রথমে বিরাট অধিনায়ক ছিল। কত সাফল্য আমরা পেয়েছি। তরপর রোহিত আসার পর সাফল্য আমাদের ছেড়ে যায়নি। অভিজ্ঞতা একদিনে আসে না। কোথাও কিনতে পাওয়া যায় ন। তাই ইংল্যান্ড সিরিজে ওকে খুব দরকার ছিল। তারপর না হয় অন্য কিছু ভাবা যেত। যাক, সে আর হল কোথায়! এখন নতুনদের নিয়ে চলতে হবে। রোহিতের পর এবার দলকে কে নেতৃত্ব দেবেন! এই প্রশ্ন উঠেছে। তবে কি বুমরা। তিনি অস্ট্রেলিয়ার মাঠে পারথ টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। তারপর শেষ টেস্টে রোহিতের অবর্তমানে বুমরার কাঁধে দলের নেতৃত্বের ভার ওঠে। এবর কি তাহলে বুমরা! অনিল কুম্বলে, হরভজন সিংর এ ব্যাপারে বুমরাকি এগিয়ে রেখেছেন। অশ্বিন উল্টোপথে হাঁটলেন না। তিনি বলছেন, এই দলের মধ্যে সিনিয়র ক্রিকেটার বুমরা। ওর উচিত দলকে নেতৃত্ব দেওয়া। তাছাড়া অস্ট্রেলিয়ার মাঠে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন এটা পুরোপুরি নির্ভর করবে নির্বাচকদের উপর। শুনছি, শুভমন গিলকে নাকি অধিনায়ক রর হবে। ঋষভ পন্থ সহ অধিনায়ক। বুমরা চোটের কারনে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে। বুমরা সরে দাঁড়ালে অন্য কথা। নির্বাচকরা না চাইলে আলদা। তবে আমর ভোট বুমরার দিকে থাকবে। েখন দেখার ব্যাপার, কাকে অধিনায়ক করা হয়। শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, ভারতীয় দলের শেষ ইংল্যান্ড সফরে রেহিতের অধিনায়কত্বে ভারত সিরিজ ২-১ করেচিল। শেষ টেস্টে রোহিত চোটের কারনে সরে দাঁড়ান। তখন বোর্ডের পছন্দের তালিকায় থাকা বুমরা অধিনায়ক হন। তিনি দলকে নেতৃত্ব দেন। ভারত অবশ্য সেই ম্যাচ হারে। সিরিজ ২-২ হয়। তাই অভিজ্ঞতা বুমরা আছে। এখন দেখার ব্যাপার অভিজ্ঞতা তারুন্যের কাছে হার মানে কিনা।
অফস্ট্যাম্পের বাইরে বল কোহলির টেস্ট কেরিয়র থামিয়ে দিল: মঞ্জেরেকর

ইদানীং ভারতীয় ক্রিকেটে সঞ্জয় মঞ্জেরেকরকে বড় সমালোচক বলা হয়। ক্রিকেটাররা তাঁর মন্তব্যে খুশি হতে পারেন না। সেটা শচীন জমানা থেকে চলছে। কাউকেই তিনি ছেড়ে কথা বলেন না। তাই বিরাট কোহলির হঠাৎ অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে সঞ্জয় কিছু বলবেন না! এটা হয় নাকি। প্রায় চব্বিশ ঘন্টা পর জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার সকলের সামনে এলেন। বললেন, অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল বিরাট কোহলির টেস্ট ক্রিকেটের কেরিয়রকে ছোট করে দিল। বলতে পারেন তাড়াতাড়ি থামিয়ে দিল। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে কোহলি বারবার আউট হচ্ছেন। গতবছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ৯ বারের মধ্যে কোহলি আউট হয়েছেন ৮ বার। সঞ্জয় বলছেন, আউট হয়ে ফিরে আসার সময় ওকে হতাশ হতে দেখেছি। ওর ব্যর্থতা দেখে ক্রিকেট ফ্যানরা যতটা না হতাশ হয়েছিলেন, তার থেকে বেশি ভেঙ্গে পড়েছেন অবসরের খবর পাওয়ার পর। কেরিয়র ঠিক করতে নিজেকে অনেক সময় দিয়েছে প্র্যাকটিসে। চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভুল শুধরে নেওয়া গেল না। আমি জানি কোনও ক্রিকেটারের অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয় না। নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করতে হয়। সে পারবে নাকি পারবে না। উত্তর হঠাৎ করে আসেও না। সময় দিতে হয়। তারপর মন বললে সে সরে যাবে, নইলে খেলা চালিয়ে যাবে। কোহলিও নিশ্চয় নিজেকে নিয়ে এমন অনেক প্রশ্ন করেছে। উত্তরে সাড়া পেয়ে সরে দাঁড়িয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত। ব্যাটসম্যান কোহলির মতো অধিনায়ক কোহলিও নজর কেড়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২, এই আটবছরে টেস্টে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৬৮ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে ৪০টিতে। সাফল্যের হার প্রায় ৫৮ শতাংশ। টেস্ট ক্রিকেটে দেশকে একনম্বরে নিয়ে গিয়েছিল। এর থেকে ভাল ট্র্যাকরেকর্ড আর কি হতে পারে অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে কোহলির আউট হওয়ার ঘটনা প্রথম ধর পড়ে ২০১৪ সালে ইংল্যান্ডের মাঠে টেস্ট সিরিজে। সেবার অ্যন্ডারসন কোহলির দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছিল। অ্যান্ডারসনের বোলিংয়ে বারবার ভুল করতে দেখা যায় কোহলিকে। কিন্তু দেশে ফিরে এসে নিজেকে শুধরে নেয়। সেই সময় অনেকের কাছে জানতে চেয়েছিল কী করে এই ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। তারপর ইংল্যান্ডের মাঠে জবাব দেয়। ২০১৮ ও ২০২১ সালে আমরা অনয বিরাটকে দেখেছি। যার ব্যাটে শুধু রান এসেছে। কিন্তু গতবছর থেকে আবর এক ভুল। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলকে মারার চেষ্টা করতে গিয়ে নিজের উইকেট দিয়ে এসেছেন। আসলে নিজের ডিফেন্স ঠিক হচ্ছিল না। দেশে ফিরে মুম্বইয়ের মাঠে আবার প্র্যাকটিস। ভেবেছিলেন ইংল্যান্ড সিরিজে গিয়ে ব্যর্থতার জবাব দেবেন। কিন্তু সেটা হল কোথায়।
বিশ্বকাপ দূরঅস্ত, একদিনের ক্রিকেটেও বেশিদিন নেই রোকো

টি২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ভারতীয় ক্রিকেটের দুই তারকার অবসর নিয়ে কথা হয়নি। কেন সরে গেলেন, এ নিয়ে ক্রিকেট বিশ্ব ঝড় তোলেনি। বাকি দুটি ফরম্যাটে আরও বেশি করে মন দিতে পারবেন বলে রোকো সরে গেলেন, এটাই সবাই ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে যে পালাবদল শুরু হয়ে গেল, তারপর ক্রিকেট বিশ্ব থেমে থাকেনি। হ্যাঁ, প্রথমে রোহিত সরে দাঁড়ালেন। পাঁচদিনের মধ্যে বিরাট কোহলি। এবার শুধু ঝড় নয়, সাইক্লোন শুরু হয়ে গেল। ভারতীয় ক্রিকেটে রোকো বলতে সবাই রোহিত শর্মা, ও বিরাট কোহলিকে জানেন। সেই রোকোকে এখন থেকে সাদা জার্সিতে খেলতে দেখা যাবে না। কেন তাঁরা অবসর নিলেন, এর ব্যাখ্যা কোথাও নেই। একটা রহস্য তৈরি করে তাঁরা সরে গেলেন। এটা ঘটনা যে টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকরা এর পিছনে কলকাঠি নেড়েছেন। তাঁদের সঙ্গে সহমত বোর্ড কর্তাদের। কেউ একজন এ নিয়ে প্রশ্ন তুললে হয়তো এত কিছু ভারতীয় ক্রিকেটে হত না। কিন্তু সবাই হাত গুটিয়ে নিলেন। সব থেকে অবাক লাগে এটা দেখে যে দুই ক্রিকেটরের অবসরের পর তাঁরা টুইট করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। একজনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কেউ কিছু জানেন না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন। সব থেকে ভাল জায়গায় নিজেদের দাঁড় করাবার চেষ্টা করেছেন বোর্ড কর্তারা। তাঁর বলছেন, কোনও ক্রিকেটার অবসর নিতে চাইলে বোর্ড বাধা দেয় ন। কারন অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধু তাঁর নিজের উপর নির্ভর করে। একথা সবাই নিশ্চয় মেনে নিতে শুরু করেছেন যে কে বা কাঁরা এই কলকাঠি নেড়েছেন। এটা আর বলা যেতে পারে ওপেন সিক্রেট। আলাদা করে বলার দরকার নেই। ফলে তাঁদের জমানায় ২০২৭ একদিনের বিশ্বকাপে রোকো-কে খেলতে দেখা যাবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। বড় জোর একবছর তাঁরা একদিনের ক্রিকেটে থাকবেন। তারপর তাঁদের দল থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। তখনও হয়তো এভাবেই তাঁরা নীরবে সরে দাঁড়াবেন। এর কারন কেউ জানতেও পারবেন না। জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার সুনীল গাভাসকর এ প্রসঙ্গে বলছেন, আমার মনে হয় না ২০২৭ একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে রোহিত বিরাটকে খেলতে দেখা যাবে। রোহিতের বয়স এখন ৩৮। বিরাট আগামি নভেম্বরে ৩৭ বছরে পা দেবে। তার অর্থ ২০২৭ বিশ্বকাপের সময় রোহিত ৪০ এ পা দেবে। বিরাট ৩৮ পার করবে। এই বয়সে নিজেদের ধরে রাখা সহজ হবে না। এটা করতে গেলে আগামি বছর একদিনের ক্রিকেটে সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি করে যেতে হবে। সেট সম্ভব হবে কিনা বলতে পারব না। তাই আমার কাছে পুরো ব্যাপারটি অনিশ্চয়তায় ঘেরা মেঘ বলে মনে হচ্ছে। গাভাসকরের কথায় পরিস্কার, আগামি একদিনের বিশ্বকাপে তিনি রোহিত ও বিরাটকে দেখছেন না। আরও একটি কারন আছে। আগস্টে সম্ভবত বাংলদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল একদিনের ক্রিকেট সিরিজ খেলবে। সেখানে ব্যাটে রান না এলে কথা শুরু হয়ে যাবে। পরের সিরিজে একই ঘটনা ঘটলে রোহিতদের জানিয়ে দেওয়া হবে, তেমর জায়গা ছেড়ে দাও। এবং সেটা অনেক অঙ্ক কষে হবে। রোহিত এখনও একদিনর ক্রিকেটে অধিনায়ক। তাঁর হাত থেকে নেতৃত্ব নিয়ে নেওয়া হলে বোঝা যাবে ম্যানেজমেন্ট তাঁকে চাইছে না। রোহিত নিজে সরবেন। যেমন টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরলেন। বিরাটের কাছেও ছবি পরিস্কার হয়ে যাবে। তিনিও হয়তো একই পথে হাঁটবেন। আরও একটি সমস্যা আছে। টি২০ ক্রিকেটে তাঁরা নেই। টেস্ট খেলবেন না। শুধু একদিনের ক্রিকেটে মন লাগানো সহজ হবে না। প্র্যাকটিসের অভাবে নিজেদের ছন্দ নষ্ট হয়ে যাবে। আর তার ছাপ পডবে পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে। তখন কি এই মেজাজে খেলতে পারবেন! তাই ২০২৭ বিশ্বকাপ অনেক দূরের পথ। তার অনেক আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে যাবেন রোকো।
টেস্টে আলবিদা কোহলির

১৪ বছরের লড়াইয়ের শেষে বিদায় নিলেন ক্রিকেট আইকন কোহলি।