রিম্পার লক্ষ্য এশিয়ান কাপের মূল পর্বেও জাতীয় দলের জায়গা ধরে রাখা

সুদীপ পাকড়াশীঃ নদীয়ার হাসপুকুর গ্রাম অপেক্ষা করে আছে। কবে তাদের সোনার মেয়ে বাড়ি ফিরবে। দেশের হয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জাতীয় সিনিয়র মহিলা ফুটবল দলের এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এখনও নয়াদিল্লিতে। বৃহস্পতিবার সেখানে তার চাকরির পরীক্ষা। ফুটবলারের চাকরির পরীক্ষা মানে তো আবার মাঠে নামা, আবার ফুটবল খেলা। প্রায় ৫০০ জন পরীক্ষার্থী! রিম্পা ছাড়াও সিনিয়র জাতীয় দলের আরও দুই ফুটবলার আছেন পরীক্ষার্থীর তালিকায়। এছাড়াও মাঠে নামবেন, মৌসুমী মুর্মুর মত একাধিক অভিজ্ঞ ফুটবলার। তাই হয়ত, দিল্লি থেকে বুধবার ফোনে কথা বলার সময় রিম্পার মধ্যে টেনশনের ছোঁয়া। “কালকের ট্রায়াল নিয়েই ভাবছি।” তাইল্যান্ডে যে সিনিয়র মহিলা ফুটবলাররা ভারতকে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে নিয়ে গেলেন তাদের মধ্যে বাংলার দু’জন। কল্যাণীর সঙ্গীতা বাসফোর আর নদীয়ার হাসপুকুর গ্রামের রিম্পা হালদার। গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে ইতিমধ্যে নায়ক সঙ্গীতা বাসফোর। রিম্পার সামনেও সুযোগ এসেছিল গোল করে নায়ক হওয়ার। “ইরাক ম্যাচে গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি। যাই হোক, ম্যাচটায় ভাল খেলেছিলাম। কোচের প্রশংসা পেয়েছিলাম। সেটাও কম প্রাপ্তি নয়,” বললেন রিম্পা। কোচ ক্রিসপিন ছেত্রীর কথা আলাদাভাবে রিম্পার মুখে। “ফুটবলারদের মানসিকতা বোঝার ক্ষমতা চমৎকার। কার বিশ্রামের প্রয়োজন, কাকে কোন পজিশনে খেলাতে হবে, ফুটবলারদের মোটিভেট করার স্টাইল-সবই সহজভাবে করতে পারেন। পুরো টুর্নামেন্টে আমরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে খেলতে পেরেছি,” রিম্পা বলছেন। ১৮-বছরের ফুটবলারের এখন লক্ষ্য একটাই, ২২ বছর পর আগামি বছর মার্চে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলবে ভারতের মেয়েরা। সেই দলেও জায়গা যেন ধরে রাখা যায়। “অনুশীলন বাড়াতে হবে। শুধু বল নিয়ে নয়, আরও ফিট হতে হবে। শারীরিক সক্ষমতা আরও জোরদার করতে হবে,” রিম্পার উপলব্ধি। আপাতত, রিম্পার ভাবনায় চাকরি পাওয়ার ট্রায়াল। ছোট থেকে দেখে আসছেন বাবা-মা-র লড়াই। মনে পড়ছে ২০১৯-এ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত দল থেকে বাদ গিয়ে প্রবল্ভাবে হতাশ হয়ে পড়ার সময় গ্রামের কোচ অভীক বিশ্বাসের উৎসাহের কথা। এই ছবিগুলোই বৃহস্পতিবার আবার মাঠে নামার আগে রিম্পার অনুপ্রেরণা, মনের শক্তি। দেশের হয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এবার জীবনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পালা। তার গ্রামও সেই অপেক্ষায় রয়েছে যে ফিরে রিম্পা বলবেন ‘চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি…’
জাতীয় দলে নিয়মিত খেলাই লক্ষ্য রিম্পার

বাবা শ্রীবাস ও মা বাসন্তী হালদারের মাঝে দঁাড়িয়ে পুরস্কার মঞ্চে রিম্পা।