হৃদয়ে ৫ জুলাই গঁাথা হয়ে থাকবে

বাবা শেখর ও মা ফুলঝুরি বাসফোরের সঙ্গে ভারতীয় মহিলা ফুটবলের গর্ব সঙ্গীতা বাসফোর।
আইডব্লিউ খেলা হয় না; তবু মেয়েদের এই লিগকে জাতীয় দলের সাফল্যের অন্যতম কারণ বলছেন সঙ্গীতা

সুদীপ পাকড়াশীঃ ২২ বছর পর ভারতীয় সিনিয়র মহিলা দলের এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ওঠার ইতিহাসে তিনি অন্যতম এক কারিগর। তিনি সঙ্গীতা বাসফোর। কোয়ালিফায়ার্সে চারটে গোল করেছেন যার মধ্যে শেষ ম্যাচে তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে দলকে জেতানো। তার কল্যাণীর বাড়িতে চলছে উৎসব। কিন্তু সঙ্গীতা বাসফোরের বাড়ি যেতে আরও দ’সপ্তাহ। নয়াদিল্লি থেকে সোমবার ফোনে সঙ্গীতা বলছেন, “শিলিগুড়ি গিয়ে অফিস জয়েন করতে হবে। সপ্তাহ দু’য়েক পর বাড়ি ফিরতে পারব। মা তো একা থাকেন, তাই চিন্তাও হয়।” ১০ বছর হল সঙ্গীতার সিনিয়র ভারতীয় মহিলা দলের জার্সি পরা হয়ে গেল। ২০১৯-এ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম গোল করেছিলেন। তখন সাফের মত টুর্নামেন্টে ভারতের মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। কিন্তু এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্স? সঙ্গীতার বিশ্লেষণ, “তখন মেয়েরা ম্যাচই পেত না। সারাবছরে হাতে গোনা কয়েকটি টুর্নামেন্ট। তাই কোরিয়া, জাপান, তাইল্যান্ডের মত দলগুলোর সঙ্গে আমরা যুঝতে পারতাম না। আইডব্লিউএল সবকিছু বদলে দিয়েছে। মেয়েরা এখন অনেক বেশি ফিট। আইডব্লিউএলে ভাল মানের বিদেশিদের বিরুদ্ধেও খেলছে। তার প্রতিফলন জাতীয় দলের পারফরম্যান্সেও পড়ছে।” যে আইডব্লিউএল-কে জাতীয় দলের সাফল্যের অন্যতম কারণ বলছেন সেই লিগে এখনও পর্যন্ত সঙ্গীতা খেলেছেন মাত্র একবার! কারণ তার অফিস এসএসবি। একবারই লিগের মূল পর্বে উঠেছিল এসএসবি। তাই সঙ্গীতার খেলা হয়েছিল। আইডব্লিউএল না খেলার সুযোগ পেয়েও নিয়মিত জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে নজরকাড়া পারফরম্যান্স কীভাবে সম্ভব হল? সঙ্গীতার ছোট্ট জবাব, “প্রচুর ট্রেনিং করে নিজেকে ফিট রাখি। একা একাও ট্রেনিং করি। আসলে আমাদের অফিসের একটা লক্ষ্য থাকে। সেটা হল অল-ইন্ডিয়া পুলিশ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া।” এশিয়ান কাপের মূল পর্বের লড়াই যে ভীষণ কঠিন হবে সেই ব্যাপারে সন্দেহ নেই সঙ্গীতার। তিনি চান, পিঙ্ক লেডিস কাপের মত একটা এক্সপোজার টুর্নামেন্ট। “কোয়ালিফায়ার্স খেলতে যাওয়ার আগে আমরা ওই টুর্নামেন্টে রাশিয়া, জর্ডন এবং কোরিয়ার মত শক্তিশালী দেশের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম। হেরে গিয়েছিলাম। কিন্তু যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম তার প্রতিফলন এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সে পড়ল। না হলে র্যাঙ্কিংয়ে আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকা তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারতাম না। এশিয়ান কাপের মূল পর্বের লড়াই ভীষণ কঠিন হবে। তার আগে পিঙ্ক লেডিস কাপের মত একটা এক্সপোজার টুর্নামেন্ট চাই।”