ভারতীয় কোচেদের কাছে খালিদের কোচ হওয়া নতুন এক সন্ধিক্ষণ, বলছেন সঞ্জয় সেন

সুদীপ পাকড়াশী: সদ্য নির্বাচিত সিনিয়র জাতীয় কোচ খালিদ জামিলকে স্বাগত জানালেন সঞ্জয় সেন। শুক্রবারই সিনিয়র জাতীয় দলের চীফ কোচ নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ জামিল। ১৩ বছর পর সিনিয়র জাতীয় দল একজন ভারতীয় কোচকে পেল। সঞ্জয় সেনও জাতীয় কোচের পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তার কোনও আক্ষেপ নেই নির্বাচিত না হওয়ায়। বরং, ৬৪ বছর বয়সী এই কোচ মনে করছেন, খালিদের কোচ হওয়া ভারতীয় কোচেদের কাছে নতুন এক সন্ধিক্ষণ হয়ে এল! শনিবার এই প্রসঙ্গে তার বিশ্লেষণ, “অনেকদিন ধরেই বলছি, ভারতীয় কোচেদেরও সুযোগ পাওয়া উচিৎ। তাদেরও যোগ্যতা আছে। সেই সুযোগটা খালিদ পেল। ও সফল হলে ফেডারেশনও পরবর্তীকালে জাতীয় দলের কোচ নির্বাচন করার সময় ভারতীয় কোচের কথা ভাবতে পারে। দেশে আরও ভারতীয় কোচ আছেন যাদের সিনিয়র জাতীয় দলকে কোচিং করার যোগ্যতা আছে। কিন্তু তারা তো সুযোগ পায় না।” এবারও সিনিয়র জাতীয় দলের জন্য ১৭০ জনের মধ্যে তিনজনকে বাছা হয়েছিল। খালিদের সঙ্গে ছিলেন দুই বিদেশি কোচ। তার মধ্যে একজন, স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের উদাহরণ দিয়ে মোহনবাগানের আই-লিগ জয়ী কোচের প্রশ্ন, “আপনি বলুন, কনস্ট্যান্টাইনের কী সাফল্য আছে ভারতীয় ফুটবলে? ভারতে ক্লাব ফুটবলেই বা তার কী সাফল্য আছে? তাহলে কীভাবে তিনি তিনজন নির্বাচিত কোচের তালিকায় ঢুকলেন? যারা নির্বাচন করেছে তারাই জানে!” তবে একইসঙ্গে মেনেও নিলেন, ক্লাব ফুটবলের সঙ্গে জাতীয় দলে কোচিং করানোর মধ্যে ফারাক আছে। “জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত খেলা একজন ভারতীয় ফুটবলার আইএসএলে নিয়মিত গোল করে। দারুণ খেলে। তারপরই দেশের হয়ে সে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হয়। আইএসএলে খেলা বেশিরভাগ ফুটবলারদের নিয়েই জাতীয় দল তৈরি হয়। আইএসএল এমন একটি টুর্নামেন্ট যেখানে রেলিগেশন নেই। নামী এবং দামি ফুটবলারদের দেখি, ম্যাচ হারার পরও কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে মাঠ ছাড়ছে! কোথায় তাদের দায়বদ্ধতা? দেশের হয়েও সেই ‘দায়বদ্ধহীন’ ফুটবলাররাই মাঠে নামে। হংকং, বাংলাদেশকেও হারাতে ব্যর্থ সেই ফুটবলারদের মধ্যে থেকেই আবার পরের টুর্নামেন্টের জন্য তৈরি হয় জাতীয় দল। খালিদকেও এদের নিয়েই মাঠে নামতে হবে। হংকং, বাংলাদেশকেও যদি হারাতে না পারি, তাহলে ফুটবলারদের সঙ্গে কোচেরও তো লজ্জ্বা। তবু, আমার আশা, বিশ্বাস যে খালিদ পারবে,” সঞ্জয় সেনের বিশ্লেষণ। গত ১৫ বছরের ক্লাব কোচিংয়ে প্রথমবার তার ‘বর্ষসেরা কোচের’ সম্মান পাওয়া। শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ১০৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসে পি কে ব্যানার্জির নামাঙ্কিত এই সম্মান তার কাছে এক বিশেষ প্রাপ্তি, বলছেন এই বর্ষীয়ান কোচ। ২০১৫-য় আই লিগ জয়ের পর সেবছর, ২৯ জুলাই মোহনবাগান দিবসে তিনি আই লিগ জয়ী কোচ হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু বর্ষসেরা কোচের সম্মান? শুক্রবারই তার প্রথম পাওয়া। “ইস্টবেঙ্গল ক্লাব থেকে আমাকে ফোনে যখন জানানো হল যে আমাকে এই সম্মান দেওয়া হবে, আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। আমি তো কোনওদিন ইস্টবেঙ্গলে কোচিং করিনি। খেলিওনি। একবার শুধু খেলার প্রস্তাব পেয়েছিলাম, সেই ১৯৮৯-এ। তাই এই পুরষ্কার পেয়ে আমি অভিভূত। আমার কাছে পুরষ্কারটা অভিনব,” বললেন সঞ্জয় সেন।