অধিনায়ক গিলকে তিন বছর সময় দিতে বলছেন শাস্ত্রী

ইংল্যান্ড সিরিজে ভারতীয় দল হারলেও অধিনায়ক গিলকে নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচ বলছেন, গিল অনেক বদলে গিয়েছে। নিজেকে পরিণত করেছে। তাই একবার যখন তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তখন হঠাৎ করে সরিয়ে দেওয়ার মানে নেই। ওকে সময় দিতে হবে। অন্তত তিনবছর গিলের হাতে ভারতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়া উচিত। তারপর না হয় ওর পারফরম্যান্স নিয়ে ভাবা যেতে পারে। ভারত অধিনায়ক নিজেকে কতটা বদলেছেন! শাস্ত্রী এখন ইংল্যান্ডে টিভি কমেন্ট্রি করছেন। তাই খুব কাছ থেকে অধিনায়ক গিলকে দেখছেন। তাঁর মনে হয়েছে অধিনায়কের চেয়ারে বসে হঠাৎ করে সাফল্য এনে দেওয়া সহজ ব্যাপার নয়। একজন অধিনায়ক ততটাই ভাল, যতটা তার দল ভাল। একটা দল তৈরি করতে গেলে সময় দিতে হয়। সেই সময়টা অধিনায়ক আশা করতেই পারে। ধৈর্য ধরতে হবে। কারন টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন। ধীরে ধীরে শিখবে। তাই র উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আমার ধারণা গিলকে সেই সুযোগ দিলে ও সফল হবে। আইপিএলে গিল গুজরাট টাইটান্সকে নেতৃত্ব দিয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা ওর কাজে দেবে। শাস্ত্রী বিশ্বাস করেন, গিল একজন পরিণত ক্রিকেটার। তাই গিলকে ভবিয্যতের জন্য তৈরি করা যেতে পারে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গিলকে আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছেন শাস্ত্রী। বলেছেন, অধিনায়ক হিসেবে কাজ করা কঠিন ব্যাপার। পথটি সহজ নয়। প্রাক্তন অধিনায়কদের উদাহরণ টেনে এনে গিলকে বিচার করলে ভুল হবে। কারোর সঙ্গে মিল খোঁজা উচিত নয়। এখন কেউ যদি কোহলির সঙ্গে ওকে তুলনা করতে যান তা হলে ভুল করে বসবেন। কোহলি একাই তিনজনের কাজ করে দিতে পারত। ওর মধ্যে এমন একটা ব্যাপার ছিল। ব্যাটে রান না পেলেও মাঠে নেমে ক্রিকেটারদের চাঙ্গা করার এক সহজাত ক্ষমতা ছিল। প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারদের চাপে ফেলার জন্য ওদের চোখের দিকে চোখ রেখে চাপে ফেলার চেষ্টা করত। এটাই যে গিলের মধ্যে দেখা যাবে তা নয়। ওর উপর ভরসা রাখতে হবে। ও যেন বিশ্বাস করতে পারে যে দল, টিম ম্যানেজমেন্ট , বোর্ড কর্তারা সঙ্গে আছে। এতে একজন অধিনায়কের উপর থেকে চাপ অনেকটাই কমে যায়। আশা করি এই ভরসা ওকে দেওয়া হবে। আমার বিশ্বাস ও পারবে। শুরুতে দেখা গিলের সঙ্গে আজকের ভারত অধিনায়কের সঙ্গে তুলনা টানতে গেলে একটা কথাই বলতে হবে সে নিজেকে অনেকটাই বদলে ফেলেছে। মিডিয়ার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, কিভাবে প্রেস কনফারেন্সে এসে মিডিয়ার করা প্রশ্ন সামাল দিতে হবে, এসব এখন গিল শিখে গিয়েছে। তাই সময় যত দেওয়া হবে, তত নিজেকে আরও পরিণত করতে পারবে। প্রথম টেস্টে হারলেও সতীর্তদের কাছ থেকে পুরো সপোর্ট পাচ্ছেন গিল। শনিবার এক সাক্ষাৎকারে দলের পেসার প্রসিদ্ধ্ বলেন, অধিনায়ক গিলকে দেখে ভাল লাগল। চাপের মধ্যে থাকলেও সতীর্থদের উপর ভরসা রাখে। বোলার বদল, ফিল্ডিং সাজানো সবই ঠিক আছে। আর একটা বড় গুন হল, দরকার পড়লে সিনিয়রদের কাছে ডেকে পরামর্শ নেয়। এর থেকে বোঝা যায় যে গিল একজন সফল অধিনায়ক হতে পারবে।
পাশে কাউকে না পেলে বুমরা একা কতটা লড়বেঃ শাস্ত্রী

ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কথা মনে আছে তো ভারত অধিনায়ক শুভমান গিলের। ভারতীয় দল ইংল্যান্ড উড়ে যাওয়ার আগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে তিন টেস্টের বেশি খেলতে পারবেন না বুমরা। সঙ্গে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের দিকে নজর দিতে হবে। সেটা কি শুরু হয়ে গিয়েছে! প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের ইনিংস শুরু হওয়ার পর গিল বাধ্য হয়ে বুমরাকে যেভাবে ব্যবহার করছেন, তারপর একথা না উঠে পারছে না। এমন চললে বুমরা তিন টেস্ট খেলতে পারবেন তো! পাশে কাউকে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখা না গেলে তিনি আবার চোটে কাহিল হবেন। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে স্কাই স্পোর্টসে কথা বলতে গিয়ে জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী বলছিলেন, বুমরার পাশে কাউকে দেখতে পেলাম না। কেউ একজন বলল না যে আমি আছি। তুমি যতটা পার, চেষ্টা কর। বাকিটা আমরা সামলে দেব। কোথায় কি! একজনও এগিয়ে এল না। উল্টে রান দিয়ে ইংল্যান্ডকে ইনিংসকে সুবিধা করে দিল। বুমরা ১৩ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট পেল। বাকি চার বোলার দিল ১৫৪ রান। কোনও উইকেট নেই। তা হলে কি দাঁড়াল! ভারতীয় দলকে ম্যাচে চালকের আসনে বসাতে গেলে সেই বুমরাকে ছুটতে হবে। না হলে ব্যাটসম্যানরা যত রানই করুক না কেন, ভারত সুবিধা করতে পারবে না। ভারতের ৪৭১ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষে ইংংল্যান্ড ৩ উইকেটে ২০৯। এটা ৪ উইকেট হতে পারত। শেষ ওভারে বুমরার একটি শর্ট বল পুল মারার চেষ্টা করেন হ্যারি ব্রুক। বল ব্যাটের উপরের দিকের কানায় লেগে মিডঅনের দিকে যায়। সিরাজ পিছনের দিকে ছুটে সামনে ঝাঁপিয়ে ক্যাচটি ধরেন। ভারতীয় দলের উল্লাস থেমে যেতে বেশি সময় লাগল না। সেই ওভারে দুটি নো বল করেছিলেন বুমরা। আম্পায়ার নিশ্চিত হতে ব্রুককে থামিয়ে তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেন। দেখা যায়, বলটি নো ছিল। সে যাত্রা বেঁচে যান ব্রুক। তারপরই খেলা শেষ হয়ে যায়। তা হলে কি দাঁড়াল। উইকেট নিতে হলে গিলকে তাকিয়ে থাকতে হবে বুমরার দিকে। যা করার তিনি করবেন। বাকিরা আসবেন। মেডেন নেবেন বা রান দিয়ে ওভার শেষ রবেন। এভাবে একটা দল কতটা সামনের দিকে যেতে পারে। ইংল্যান্ডের মার্ক উড চোট থেকে সবে উঠে এসেছেন। তাঁকে এই সিরিজে নিয়ে আসা হলেও হেডিংলেতে তিনি নেই। খেলার শেষে বলছিলেন, বুমরা এখন বিশ্বের একনম্বর বোলার। ওর সামনে দাঁড়ালে ব্যাটসম্যানরা কেঁপে যায়। এটা ঘটনা, তার প্রমান দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের ইনিংসে দেখা গেল। শুধু উড নন, দুদিন আদে প্রাক্তন অধিনায়ক ডেভিড গাওয়ার বলছিলেন, বুমরাকে মাঠের বাইরে রাখলে ব্যাটসম্যানরা খুশি হবে। আমি আজকের ইংল্যান্ড দলে থাকলে বুমরাকে খেলতে চাইতাম না। মনে হত কখন বুমরা বিশ্রামে যাবে। শুনছি বুমরা পুরো সিরিজ খেলতে পারবে না। তা হলে ইংল্যান্ড মানসিক দিক থেকে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে মাঠে নামতে পারবে। তাই ভারতীয় দলের উচিত, বুমরাকে ঠিকঠাক রেখে পুরো সিরিজ খেলানো। সেটাই ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে মঙ্গল হবে। দ্বিতীয় দিনের খেলার মাঝে বুমরা মাঠ ছেড়ে বাইরে যান। ড্রেসিংরুমে গিয়ে সোজা কোচ গম্ভীরের পাশে বসে পড়েন। কি কথা হয়েছে তা কেউ জানেন না। তবে সতীর্থদের কথা নিশ্চয় তিনি বলেছেন। তাদের প্রত্যাশার কথা উঠতে বুমরা একরাশ হতাশা ছাড়া আর কিছু মেলে ধরতে পারেননি। এর বাইরে আর কি কথা থাকতে পারে!
ইংল্যান্ড সফরে আর্শদীপকে চান শাস্ত্রী

শাস্ত্রীর নজরে আর্শদীপ। তিনি চাইছেন ইংল্যান্ড সফরে একজন বঁা হাতি বোলার।