চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপৃষ্টে ১১ জনের মৃত্যু বিরাটকে ক্ষতবিক্ষত করেছে

মৃতের পরিবারদের পাশে আরসিবি। তাদের সঙ্গে কর্নাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা যৌথভাবে দিচ্ছে ৫ লাখ টাকা। কর্নাটক সরকার দিচ্ছে ১০ লাখ টাকা। তাহলে কি একজন মানুষের প্রাণের দাম ৫ লাখ টাকা! যারা আইপিএলে ক্রিকেটার দলে নেওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করেন, তাদের কাছে এই অর্থ দান মেনে নেওয়া যায় না। মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে অন্তত প্রত্যেককে ২৫ লাখ টাকা করে দেওয়া উচিত ছিল। একটা জীবনের দাম তাতেও পূরণ হয় না। তবু এই টাকা দিয়ে পরিবার কিছু করতে পারবেন। যাদের কাছে ছেলে বা মেয়ে ছিল একমাত্র সম্বল। সেখানে আরসিবির কাছ থেকে এই ভাবনা আশা করা যায় না। আরসিবি দেখাতে পারতো আমরা মাঠে নেমে ক্রিকেট খেলি। মাঠের বাইরে আমরা তোমাদের একজন। এই বার্তার সঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা দিলে আরসিবি দেশের ক্রিকেট মহলেই নয়, ১৫০ কোটি মানুষের মন জয় করে নিতে পারত। সেটা আর হল কোথায়! https://x.com/RCBTweets/status/1930303952983339405?t=LB70yp0IcNYPNN1FClJuvA&s=19 বুধবার সন্ধ্যায় চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) সংবর্ধনা অনুষ্টানের আগে বিরাট কোহলিরা জানতেও পারেননি কি ঘটনা ঘটে গিয়েছে। চ্যাম্পিয়নদের দেখতে আসা ক্রিকেট ফ্যাানদের নিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি অনেক কথাই বললেন। চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ক্রিকেট ফ্যানদের উৎসর্গ করলেন। মিনিট কুড়ির অনুষ্টানের পর ১১ জনের মৃত্যুর খবর তিনি পান। শুনে এতটাআই হতাশ হয়ে পড়েন যে কথা বলার ভাষা তিনি হারিয়ে ফেলেন। দেরি না করে ইনস্টাগ্রামে যা পোস্ট করলেন তা পড়লে প্রাক্তন অধিনায়কের মনের কথা জানা যায়। তিনি লিখলেন, একথা শোনার পর নতুন করে কোনও কথা বলার ভাষা আমার নেই। আমার হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবারের রাতের উৎসব বেঙ্গালুরুতে এসে বুধবার সন্ধ্যায় এভাবে অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যাবে তা আগে কে ভেবেছিলেন! কিন্তু সেটাই হল। উৎসব বিষাদে ঢাকা পড়ে গেল। ১১ জন ক্রিকেট ফ্যানের প্রান কেড়ে নিল আরসিবির বিজয় উৎসব। অনেকেই বলছেন, এর কি কোনও দরকার ছিল। এই অনেকের দলে আছেন তিরাশির বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম সদস্য সৈয়দ কিরমানি। তিনি বলেন, আমাদের সময় এত মিডিয়া ছিল না। ছিল না এত টিভি চ্যানেল। এখন যুগ বদলেছে। আমরা অতি আধুনিক হয়ে পড়েছি। বলা যায়, তারই খেসারত দিতে হল। এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এর দায় কে নেবে! আরসিবি ১৭ বছর পর (১৮ বছরের আইপিএল) আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমাদের সকলের কাছে বড় খবর। ক্রিকেটারদের অবশ্যই সংবর্ধনা জানানো উচিত। কিন্তু তার আগে সব কিছু দেখে নিয়ে করা যেত। এটা তো জানাই ছিল, ক্রিকেটারদের সামনে থেকে দেখতে মানুষের ঢল নামবে। নিরাপত্তা অনেক বাড়িয়ে নিয়ে, হাতে একটু সময় নিয়ে এটা করা যেতেই পারত। কিন্তু তা আর হল কই। সব কিছু কেমন যেন তাড়াহুড়ো করে সারার চেষ্টা। আর তাতেই এই অঘটন। এর তো ব্যাখ্যা নেই। মঙ্গলবার রাতে রাজ্যের মানুষের প্রতিক্রিয়া প্রশাসন জেনে গিয়েছিল। অনেক রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন জায়গায় উৎসব হয়েছে। এরপর বিরাটরা শহরে এলে কি হতে পারে তার আন্দাজ কি প্রশাসনের কাছে ছিল না। একথ কেউ বিশ্বস করবেন না। খবর ছিল বলে বাস প্যারেড করার অনুমতি আরসিবির মেলেনি। তা হলে নিরাপত্তা বাড়ানো হল না। চিন্নাস্বামীতে সন্ধ্যার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হলে গেটপাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শোনা গেল, একজন নিরাপত্তা কর্মীকে সামলাতে হয়েছে ১০০ জন ক্রীড়াপ্রেমী মানুষকে। এটা কী করে সম্ভব! স্টেডিয়মের গেট খোলার পর মানুষের ঢল এমনভাবে আসে যা কারোর পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না। এবং তাতেই পদপৃষ্ট হয়ে প্রান হারালেন ১১ জন মানুষ। মৃতদের বয়স ১৩ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আহত হয়েছে অনেকেই। কারোর পা ভেঙ্গেছে। কারোর দেহের অন্য কোথাও লেগেছে। স্টেডিয়ামের কাছে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও ছিল না। দুটি অ্যাম্বুলেন্স কী করে আহ মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে। এই কারনে অনেকে শ্বাসকষ্টে প্রন হারিয়েছেন। আগে থেকে পরিকল্পনা করে এগোতে পারলে হয়তো এমন অবস্থার মধ্যে পড়তে হত না। আহত মানুষের পাশে এখন দাঁড়িয়েছে সরকার। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে আহতদের চিকিৎসার সব খরচ সরকার দেবে। কিন্তু মৃতদের পরিবার কি করবে। তাদের ১০ লাখ টাকা দিয়ে সব কিছু সারতে চাওয়া কি সঠিক পথ।
ভয়ঙ্কর ঘটনা, আরসিবির বিজয়োৎসবে পদিপষ্ট হয়ে মৃত এগারো, আহত অসংখ্য

সেলিব্রেশন বদলে গেল বিষাদে। আরসিবির বিজয়োৎসবে ভয়ঙ্কর ঘটনা। ভিড়ের চাপে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে এগারোজন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। চিন্নাস্বামীর ভিতরে চলছিল সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও সেলিব্রেশন। যদিও যানজট হওয়ার আশঙ্কায় বিধান সৌধ থেকে চিন্নাস্বামী পর্যন্ত খোলা বাসে প্যারেডের পরিকল্পনা বাতিল করা হয় কিন্তু স্টেডিয়ামের বাইরে জনজোয়ার। ভিড়ের চাপে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এর মধ্যেই এগারো জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে স্টেডিয়ামের ভিতরে সে খবর কেন পৌঁছোল না, বোঝা যাচ্ছে না, কারণ ভিতরের অনুষ্ঠান তখনও চলছিল। বিরাটদের সেলিব্রেশনে এমন ঘটনায় হতবাক সকলে। যা জানা যাচ্ছে, বড় ড্রেনের ওপরেের স্ল্যাবগুলি ভিড়ের চাপে ভেঙে পড়ে। তাতে যেমন বহু মানুষ আহত হন, তেমনি প্যানিক তৈরি হওয়ায় দৌড়োদৌড়ি, বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তাতেই মৃত্যু হয় এগারো জনের। বিসিসিআিই গোটা ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে জানিয়েছে, এটাই জনপ্রিয়তার নেতিবাচক দিক। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল, দায় কার, এসব নিয়ে যেমন প্রশ্ন আছে, তেমনি বড় প্রশ্ন, স্টেডিয়ামের বাইরে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও কীভাবে ভিতরে তখনও অনুষ্ঠান চলছিল? আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমল ফোন করেন ফ্র্যাঞ্চািইজি কর্তাদের, বাইরের ঘটনার কথা জানিয়ে তখনই অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু বাইরের ঘটনার কথা কেন ভিতরে পৌঁছোল না, সেটা সত্যিই বিস্ময়কর। এমন মর্মান্তিক ঘটনার দায় কার? ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের? ফ্র্যাঞ্চািজির? না সরকারের ? প্রশ্ন অনেক কিন্তু উত্তর নেই।