ইজরায়েলি বোমায় হত ‘প্যালেস্তাইনের পেলে’! উয়েফার পোস্টে ক্ষোভ সালাহর

মারা গেলেন সুলেমান ওবেদ। প্যালেস্তাইনের কিংবদন্তি ফুটবলার। ‘প্যালেস্তাইনের পেলে’ বলা হত তাকে। ১০০-র বেশি গোল তার। দেশের হয়ে ২৪টি ম্যাচ খেলেছিলেন। গোল করেছিলেন ২টো। কিন্তু ২০১০-এ ইয়েমেনের বিরুদ্ধে তার অসাধারণ বাই-সাইকেল কিকে গোল? বিশ্বফুটবলে তারপর থেকেই তাকে নিয়ে কৌতূহল। তাকে নিয়ে আগ্রহ। সেই সুলেমান ওবেদ গাজার রাজপথে তখন খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক থেকে বেরনো শেলে তিনি ছিন্নভিন্ন হয়ে যান! তার নিথর দেহ অনেকক্ষণ পর তার পরিবারের কেউ আবিষ্কার করেন ধ্বংসস্তুপের মধ্যে। সোশ্যাম মিডিয়ায় উয়েফার একটা ছোট্ট পোস্টে ওবেদকে শ্রদ্ধাঞ্জলি, ‘রেস্ট ইন পিস’। তাতেই ক্ষুব্ধ লিভারপুলের বিখ্যাত স্ট্রাইকার, মিশরের মহম্মদ সালাহ। ‘কোথায়, কীভাবে মারা গেলেন উনি’? স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে পরে বলেছেন, “এটাও তো পোস্টে জানানো উচিত ছিল যে, কোথায়, কীভাবে মারা গেলেন ওবেদ।” মর্মান্তিক এই ঘটনায় উয়েফার দায়সারাভাবে শ্রদ্ধাঞ্জলিতে আফ্রিকা এবং ইউরোপ জুড়ে শুধু শোক নয়, ক্ষোভের আঁচও পাওয়া যাছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অসাধারণ এক ফুটবলারের জীবন যুদ্ধের বারুদে মুছে যাবে কেউ মেনে নিতে পারছেন না। ১৯৮৪ সালের মার্চে জন্ম। শৈশব কেটেছে গাজার ধুলো-বালিময় কংক্রিটের রাস্তায়, বিদ্যুৎহীন রাতে। কিন্তু ফুটবল নিয়ে সুলেমানের পাগলামি ছিল অদ্ভুত। জার্নির শুরু খাদামাত আল-শাতি-র জার্সিতে। তারপর পশ্চিম তীরের মার্কাজ শাবাব আল-আমারি, গাজা স্পোর্ট—যেখানেই খেলেছেন, দর্শক দেখেছে একই জিনিস: নিখাদ দক্ষতা, নিপাট আনন্দ। দু’দেশের লড়াই-সংঘর্ষের মধ্যেও মাঝে মাঝে হওয়া যুদ্ধবিরতিতে ফুটবল খেলতেন সুলেমান। কিন্তু ৬ আগস্ট গাজার দক্ষিণে রিলিফ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন ইজরায়েলি ট্যাঙ্কের বিমানের হানায় তাঁর জীবন শেষ হয়ে যায়। বয়স মাত্র ৪১। রইল স্ত্রী আর পাঁচ সন্তান। এত বছর গাজার ফুটবল স্টেডিয়াম এক ছবি দেখে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল। গোলের পর দু’হাত তুলে সুলেমান দর্শকের অভিবাদন গ্রহণ করছেন। ৬ অগস্ট সেই গাজার মানুষকে আর এক নির্মম ছবি দেখতে হয়েছিল। খাবার আর ওষুধের জন্য রিলিফ লাইনে হাত তুলে দাঁড়িয়ে আছেন প্যালেস্তাইনের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার! প্যালেস্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের হিসেবমতে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখনও পর্যন্ত গাজায় নিহত ৬৬২ জন খেলোয়াড়। এর মধ্যে ফুটবলার ৪২১ জন। শিশু ১০৩ জন।