শার্দূল না কুলদীপ? সিদ্ধান্ত অধিনায়কেরই, কোচ নয়—সোজাসাপটা গাভাসকর

ম্যানচেস্টার টেস্টে ভারতের বোলিং রণনীতির চূড়ান্ত ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কিংবদন্তি ব্যাটার সুনীল গাভাসকর। শার্দূল ঠাকুরের পরিবর্তে কুলদীপ যাদবকে খেলানো উচিত ছিল বলে মনে করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি আরও সোজাসাপটা বলেন—“একাদশ নির্বাচনের পূর্ণ দায়িত্ব অধিনায়কের, কোচ নন।” গাভাসকরের মতে, “দিনের শেষে দায়ভার অধিনায়কের। ওটাই তাঁর দল। ওর সিদ্ধান্তেই চলা উচিত। যদি শুভমান গিল কুলদীপকে খেলাতে চাইতেন, তাহলে সেটাই হওয়া উচিত ছিল।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমি জানি এইসব বিষয় বাইরের লোকজনের সামনে আসে না। সবকিছু ঠিকঠাক আছে দেখানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু সত্যিটা এড়ানো যায় না—দলের নেতৃত্ব ক্যাপ্টেনই দেন, তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও তাঁরই থাকা উচিত।” এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নতুন বিতর্ক দানা বাঁধছে। দ্বিতীয় দিনের খেলা চলাকালীন ইংল্যান্ডের ওপেনাররা যখন ভারতীয় বোলিংকে উড়িয়ে দিচ্ছেন, তখনও শার্দূলকে মাত্র পাঁচ ওভার ব্যবহার করেন গিল। তিন-চার দিন মিলিয়ে শার্দূল বল করেছেন মাত্র ১১ ওভার—৫৫ রান খরচ করে একটি উইকেটও পাননি। অথচ কুলদীপের মতো বৈচিত্র্যময় স্পিনার বেঞ্চেই বসে রইলেন। গাভাসকর আরও বলেন, “ধোনি, গাঙ্গুলির মতো ক্যাপ্টেনরা দলকে বদলে দিয়েছিলেন। কারণ ওরা নিজের সিদ্ধান্তে চলতেন। কোচের উপর ভরসা নয়, নিজের সাহসে নেতৃত্ব দিতেন। ক্যাপ্টেনকে যদি শুধু পোস্টার বয়ের মতো বসিয়ে রাখা হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব সংস্কৃতি ধ্বংস হবে।” গাভাসকরের এই মন্তব্য শুধু গম্ভীরের কোচিং কৌশল নয়, বরং গোটা টিম ম্যানেজমেন্টের রণনীতিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল। ওল্ড স্কুল হলেও আজও গাভাসকর এর মতো সরল, ধারালো বিশ্লেষণই ক্রিকেটের আসল স্পাইন।
প্রশ্ন উঠছে, পাঁচদিনের ক্রিকেট খেলতে পারবে তো সূর্যবংশী

বৈভব সূর্যবংশীর টেস্ট খেলা নিয়ে সংশয় বাড়ছে।
কে এল নিজেকে অনেক বদলে ফেলেছে: জয়রাজ

এই নামে অনকেই তাঁকে চেনেন না। প্রশ্ন করলে সবই জানতে চাইবেন এই স্যামুয়েল জয়রাজ কে! উত্তরে একটা কথাই বলার আছে, তিনি হলেন কে এল রাহুলের ছেলেবেলার কোচ। তাঁর হাত ধরেই ক্রিকেটে উঠে এসেছেন রাহুল। ইংল্যান্ডের মাঠে ৩৩ বছরের রাহুলের সেঞ্চুরির পর অনেক কথাই বললেন জয়রাজ। জাতীয় দলের খেলার কারনে এখন নিয়মিত যোগাযোগ নেই। জয়রাজের কাছে তালিমের প্রয়োজনও হয় না। নানা সময় নানা কোচকে তিনি পেয়েছেন। তবে জয়রাজ ভোলেননি রাহুলকে। তাঁর পুরো জার্সি জয়রাজের কাছে ছবির মতো স্পষ্ট। তাই তো তিনি বলতে পারছেন, রাহুল এখন নিজেকে অনেক বদলে ফেলেছে। মেজাজে, টেকনিকে, পরিস্থিতি বিচারে, কোন কিছুতে আগের রাহুলের সঙ্গে আজকের রাহুলের মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এখানেই শেষ নয়, ২০২৪-এ টি ২০ বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পেয়ে রাহুলকে হতাশায় ভেঙ্গে পড়তে দেখেননি। রাহুলের মনে হয়েছিল, নিজেকে আরও ভালভাবে তৈরি করতে হবে। এমন খেলতে হবে য়া দেখার পর কেউ তাকে দরে বাইরে ফেলে দিতে পারবে না। সেই জায়গা থেকে ফিরে এসে নিজেকে কীভাবে দাঁড় করিয়েছে রাহুল! এখন সবাই তা দেখতে পাচ্ছেন। তাই বলছিলাম, রাহুল নিজেকে অনেক বদলে ফেলেছে। এটা ঘটনা য়ে টি২০ বিশ্বকাপে রাহুলকে ছেঁটে ফেলা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। তার আগে ২০২৩-এর ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে দারুন খেলেছিলেন রাহুল। ব্যাটিং বা কিপিংয়ে সকলের নজর তিনি কেড়েছেন। তারপর ছয় মাসের মধ্যে কি এমন ঘটল যা নির্বাচকদের খুশি করতে পারল না। টি২০ বিশ্বকাপে জায়গা না পেলেও টেস্ট সিরিজে জায়গা করে নিল। এমন কি দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কেমন খেললেন রাহুল তা কি আজ নতুন করে মনে করিয়ে দিয়ে হবে! জয়রাজ বলছিলেন, এটা ঘটনা যে টি২০ বিশ্বকাপে জায়গা না পেয়ে ওকে হতশ হতে দেখিনি। রাহুল বিশ্বাস করে হতাশা বাচ্চাদের মানায়। ওর মতো একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হতাশায় ডুবে গেলে মনে করতে হবে, তোমার দিন শেষ হয়ে এসেছে। তাই নিজেকে পালিশ করে দারুনভাবে ফিরল রাহুল। এখন দল গড়তে হলে ওর নাম শুরুতেই লিখে ফেলতে হবে। গত দশ বছরের রাহুলকে বিচার করলে দেখা যাবে ও ভিষণ শান্ত। চাপের মধ্যেও মাথা ঠান্ডা রেখে দলকে টেনে নিয়ে চলে। জয়রাজ সেকথা টেনে বলছেন, রাহুল এখন কম্পোজড। লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নামলেও জানে কীভাবে খেলতে হবে। দেখবেন প্রথম চার বল খেলে স্ট্রোক করার পথে ছোটে। পঞ্চম বা শেষ বলে সিঙ্গলস নিয়ে পরের ওভারে শুরু থেকে খেলার সুযোগের চেষ্ট করে। ওকে দেখে কখনই মনে হবে না যে চাপে পড়ে গিয়েছে। আর এই মানসিকতা প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দেয়। আমি আশা করব, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে নিজেকে একভাবে মেলে ধরবে।
সেঞ্চুরি করলেও রাহুলকে টেস্ট সিরিজে ওপেনে চান না পন্টিং

২০২৪-এর শেষদিক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পারথ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন কে এল রাহুল। যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে জুটিতে বড় রান করে দলকে জেতাবার পর তাঁদের ওপেনিং জুটি ভাঙ্গতে চায় নি টিম ম্যানেজমেন্ট। রোহিত শর্মা পরের টেস্টে দলে এলেও খেলেন মিডলঅর্ডারে। পরে অবশ্য রোহিত ওপেনে আসায় রাহুল চলে যান মিডলঅর্ডারে। এবার ইংল্যান্ড সিরিজের আগে টেস্ট ক্রিকেট খেকে অবসর নিয়েছেন রোহিত। সঙ্গে বিরাট কোহলিও। তাই এবারের দলটি কিছুটা হলেও তারুন্যে ভরা। অভিজ্ঞতা কম। রাহুল, বুমরা ছাড়া অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্রিকেটার কোথায়! তাই বাড়তি চ্যালেজ্ঞ নিয়ে ভারতীয় দলকে মাঠে নামতে হবে। তবে কিছু করে দেখাবার তাগিদ থাকলে চাপের মুখেও ভাল পারফর্ম করা সম্ভব। আইসিসি রিভিউতে এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অ্ধিনায়ক রিকি পন্টিং বলেছেন, একটা দল ভেঙ্গে গেলে তাকে নতুন করে গড়ে তুলতে গেলে সময় লাগে। সেই সময়টা এই ভারতীয় দলকে দিতে হবে। আবার এটাও ঘটনা যে এই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অন্য কোনও দেশের যতটা সময় লাগবে, তার থেকে অনেক সময়ে ভারতীয় দল নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারবে। কারন একটাই, ভারতীয় দলের রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি। কিছুটা সময় পেলে তারা নিজেদের তৈরি করে নিতে পারবে। যা অন্য দেশের পক্ষে সহজ হবে না। তাই রোহিত, বিরাট, অশ্বিন ও শামি দলে না থাকলেও শুরুতে সমস্যা হলে ভারতীয় দল তাড়াতাড়ি নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারবে। ২০ জুন লিডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে। প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের বোলিং শক্তি আক্রমনাত্মক হতে পারছে না। তাদের প্রথম সারির অনেক পেসার চোটের কারনে দলের বাইরে। তাই ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা শুরুতে নিজেদের ধরে নিতে পারলে বড় রানের ইনিংস খেলতে পারবে। পন্টিং বলছেন, ইংল্যান্ডের আবহাওয়ায় খেলতে গেলে ধৈয্যের পরীক্ষা দিতে হবে। উইকেটে একবার জাঁকিয়ে বসতে পারলে বড় রান করতে অসুবিধা হবে না। ভারতীয় দলের বোালিং নিয়ে খুব বেশি ভাবতে হবে না। বুমরা চলে আসায় পুরো শক্তি নিয়ে মাঠে নামতে পারবে। ইংল্যান্ডে পেসাররা সুবিধা পায়। আহবাওয়াকে কাজে লাগিয়ে সিম বা সুইং দুটোই ঠিকভাবে করতে পারবে। সিরিজের শুরুর দিকের উইকেটে বল বাড়তি বাউন্স পাবে। এটা ভারতকে কাজে লাগাতে হবে। এবং সেটা করতে পারলে সিরিজে ভারতীয় দল এগিয়ে যেতে পারবে। বোলিং তো হল। ভারতীয় দলের ব্যাটিং লাইন আপ কেমন হতে পারে। ইংল্যান্ড পৌঁছে ভারতীয় এ দলের খেলতে নেমে কে এলে রাহুল ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছেন। লায়ন্সদের বিরুদ্ধে ভারতীয় এ দল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে করেছে ৩৪৮ রান। নায়ার রান পেয়েছেন। রান পেয়েছেন ধ্রুব জুরেলও। টেস্ট সিরিজ এত সহজ হবে না। পন্টিং বলছেন, রাহুল সেঞ্চুরি পেলেও টেস্টে ওকে ওপেনে রাখতে চাই না। যশস্বী বেশিদিন টেস্ট খেলছে না। তবু নিজেকে পরিণত মনে করতে পারে। ওর সঙ্গে ওপেনে চাই সাই সুদর্শনকে। আইপিএলে ওর অনেক ম্যাচ দেখেছি। টেকনিক খুব ভাল। টেস্ট খেলার আদর্শ টেকনিক বল যেতে পারে। তার উপর ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এবারও আইপিএলে অনেক রান করেছে। রানের খিদে আছে। ওপেনে একবার দাঁড়িয়ে গেলে ওকে নিয়ে চিন্তা থাকবে না। রাহুলকে আসুক তিন নম্বরে। ওপেনিং দুজন অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পর একজন সিনিয়র ব্যাটসম্যান দরকার। এখানে অনেকে আবার করুন নায়ারকে চাইবে। নায়ার অনেকদিন খেলছে। টেস্টে বড় রানের ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু আট বছর পর ভারতীয় দলে ফিরেছে। ভারতীয় এ দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে ডবল সেঞ্চুরি করার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও রান পেয়েছে। তবু আমার মতে নায়ার আসুক পাঁচ নম্বরে। তার আগে চারে চাই শুভমান গিলকে। এবারই প্রথম টেস্ট ক্রিকেটে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবে গিল। চাপ তো থাকবে। শুরুটা ভাল হলে চারে এসে গিলের খেলা সহজ হবে। ওর ব্যাটে রান দরকার। রান পেলে নেতৃত্ব বোঝা হয়ে দাঁড়াবে না। তা হলে ভারতীয় দলের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান কেমন দাঁড়াল- যশস্বী জয়সওয়াল, সাই সুদর্শন, কে এল রাহুল, শুভমান গিল ও করুন নায়ার। এই পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে তিনজন রান করে দিলে ভারতের টেস্ট ম্যাচ নিয়ে চিন্তা কমবে।
ভারতীয় দল ইংল্যান্ডে ফ্লপ হলে বিরাট ফিরে আসতে পারে: ক্লার্ক

আইপিএল ফাইনালের ৪৮ ঘন্টা আগে শোনা গিয়েছিল যে বোর্ডের তরফ থেকে আরও একবার বিরাটকে বলা হবে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ভেঙ্গে বেরিয়ে এস। আবার মাঠে নেমে পড়। আইপিএল চেয়ারম্যান অরুন ধুমাল এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন আরসিবি চ্যাম্পিয়ন হলে আমি নিজে বিরাটের সঙ্গে কথা বলব। জানা যায়নি, আরসিবি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বিরাটের সঙ্গে ধুমাল কথা বলেছেন কিনা। সবাই বিশ্বাস করেন, বিরাটকে অবসর ভেঙ্গে আবার টেস্ট ক্রিকেটে মাঠে নামতে বল হলে তিনি রাজি হবেন না। কিন্তু কথা কি আদ হয়েছে! অরুন ধুমালের পর এ ব্যাপারে এবার এগিয়ে এলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ নিয়ে অনেক কথাই শোনালেন। তিনি বলছেন, ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় ক্রিকেট দল ভল পারফরম্যান্স না করলে বিরাটের উপর এ নিয়ে চাপ বাড়তে পরে। ধরে নেওয়া যাক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত ৫-০ ম্যাচে সিরিজ হারল। তখন কি সবাই হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন। না, বোর্ড কর্তা থেকে শুরু করে ক্রিকেট ফ্যানরা বিরাটের উপর চাপ তৈরি করবেন। তাঁকে ফিরে আসতে অনুরোধ করবেন। তখন বিরাট সেই অনুরোধ ফেলে দিতে পারবে! নিজের ইচ্ছে কিন্তু হার মানবে। আমি বিশ্বাস করি না ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল এমন হতশজনক পারফরম্যান্স করবে। ২০০৭ সালের পর ভারতীয় দল ইংল্যান্ড গিয়ে সিরিজ জিততে পারেনি। এবার তেমন হবে বলে মনে হয় না। কিন্তু যদি তেমন কিছু হয় তা হলে বিরাটকে ফিরে আসর অনুরোধ করা হবে। বিশেষ করে ফ্যানদের চাপের কাছে হার মেনে বিরাট টেস্ট ক্রিকেটে আবার ফিরে আসতে পারে। এবার আইপিএলে ব্যাটসম্যান বিরাট ফ্যানদের হতাশ করেননি। ছশোর উপর রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ভাল না হলেও ফাইনালে ৪৩ রানের ইনিংংস তাঁর কছ থেকে পাওয়া গিয়েছে। আসলে বিরাটের এখন খিদে আছে। প্রচন্ড ফিট বলে মাঠে ছুটতে অসুবিধা হয় না। আজকের ভারতীয় দলে তাঁর মতো ফিট ক্রিকেটার কজ আছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আর এটাই বিরাটকে ভাল পারফর্ম করতে সাহায্য করে। তাঁর ব্যাডপ্যাচ-এর সময় হতাশায় ভেঙ্গে না পড়ে বাড়তি পরিশ্রম করে রানে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। অনেকে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন। বাড়তি খাটনির চেষ্টা না করে নিজেকে গুটিয়ে নেন। বিরাট সেই জাতের ক্রিকেটার নন। তাই তিনি আজও রান করে যাচ্ছেন। আরও দুবছর তিনি অনায়াসে টেস্ট ক্রিকেট খেলে দিতে পারেন। সেটাই অনেকে চাইছেন। টেস্ট ক্রিকেটে বিরাট ফিরে আসুন। ভারতীয় দলকে সামনে টেনে নিয়ে যান। তবে ভারতীয় দল ইংল্যান্ডে ভাল খেলে দিলে এই প্রশ্ন উঠবে না। এটা নিশ্চিত করে বলে দেওয়া যায়। গম্ভীর বা আগারকররাও এ নিয়ে কোনও কথা বলবেন না। সিরিজ জিতলে তো কথাই নেই। সন্মানজনক হার হলেও পিছন ফিরে থাকাবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করবেন না। তাই ক্লার্ক বলছেন, ইংল্যান্ডে খারাপ পারফরম্যান্স হলেই বিরাটকে নিয়ে আবার কথা উঠতে পারে। না হলে নয়।
বাবা টেস্ট ক্রিকেটের ফ্যান, আমার অবসরের কথা শুনে হতাশ হয়ে পড়েন: রোহিত

বাবা গুরুনাথ শর্মা। যাঁরা তাঁকে দেখেননি, তাঁরাও তাঁকে চেনেন। আসলে নামেই তাঁর পরিচিতি। তিনি রোহিত গুরুনাথ শর্মার বাবা। এবার সকলেই চিনতে পারবেন। সেই গুরুনাথ শর্মা একজন টেস্ট ক্রিকেটের ফ্যান। তাঁর কাছে আধুনিক ক্রিকেটের তেমন মূল্য নেই। ওয়ান ডে বা টি২০ ক্রিকেট পছন্দ নয়। তাঁর জমানায় টেস্ট ক্রিকেট ছিল একমাত্র ক্রিকেট। যা নিয়ে মুম্বইকররা মেতে উঠতেন। তাই টেস্টে ৩০ বা ৪০ রান করলেও বাবা গুরুনাথ ছেলের কাছে জানতে চাইতেন কীভাবে রান এল। কেন বেশি রান করতে পারলেন না। কোন বোলার বল করছিলেন। এমন নানা প্রশ্ন রোহিতের কাছে করতেন। রোহিত বলতে গেলে পুরো ম্যাচ রিপোর্ট বাবাকে বলে দিতেন। আবার ওয়ান ডে ক্রিকেটে বড় রান করেছে জানতে পারলে বলতেন, ভাল খেলেছ। আমি খুশি। ব্য এটুকুই। এমনকি ওয়ান ডে ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রোহিতর ২৬৪ রানের ইনিংসের কথা শুনেও ম্যাচের কথা জানতে চাননি। এই হলেন গুরুনাথ শর্মা। টি২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অবসরের কথা শুনিয়েছিলেন রোহিত। এই খবর বাবার কাছে যাওয়ার পর তিনি হতাশ হননি। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট থেকে রোহিতের অবসরের কথা শুনে কিছুটা হলেও হতাশ হয়ে পড়েন। কারন তিনি বুঝে গিয়েছিলেন, এরপর ছেলেকে আর টেস্ট ক্রিকেটে দেখতে পাবেন না। এমন নানা গল্প নিজেই শোনালেন রোহিত শর্মা। মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে এসে বাবা গুরুনাথকে নিয়ে অনেক অজানা কথা সামনে টেনে আনলেন। চেতেশ্বর পুজারার স্ত্রী পূজা সম্প্রতি একটি বই লিখেছেন। বইয়ের নাম- দ্য ডায়েরি অফ এ ক্রিকেটার্স ওয়াইফ। সেখানে এসে বাবা গুরুনাথকে নিয়ে নানা কথা বললেন। এর আগে নানা সাক্ষাৎকারে রোহিত শুনিয়েছেন নিজের রোল মডেলের কথা। তাঁর জীবনের হিরোর গল্প। সেকথা আবার টেনে আনলেন। বলছিলেন, বাবা ও মা আমার জীবন গড়ে দেওয়ার পিছনে যা করেছেন তা ভাষায় ব্যাখ্যা করা যায় না। সকলের বাবা- মা নিজের সন্তানদের জন্য অনেক কিছু ত্যাগ স্বীকার করেন। আমি বাবা-মাকে দেখেছি। ওঁদের ত্যাগের কথা ভুলতে পারব না। ওঁদের জন্য আজা আমি এই জায়গায় এসে দাঁড়াতে পেরেছি। না হলে আমাকে হয়তো অন্য কিছু করে জীবন চালাতে হত। বাবা এক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। হাতে সময় পেলে লাল বলের ক্রিকেট দেখতে মাঠে ছুটতেন। সেই থেকে লাল বলের প্রতি তাঁর ভালবাসা জন্মায়। আমি যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি, তখন থেকে আমার লাল বলের খেলার স্কোর জানতে চাইতেন। টেস্টের পাশাপাশি সাদা বলের ক্রিকেটের রান জানতে চাইলেও তাঁর মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখতে পেতাম না। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ক্রিকেটে ২৬৪ রান করে বিশ্বরেকর্ড করার পরও নয়। খুশি হতেন। সব বাবা- মা হন। ছেলের কীর্তিতে তাঁরা গর্ব অনুভব করেন। ব্যস এটুকু। কিন্তু টেস্টে ভাল কিছু করতে পারলে তাঁর মুখের চেহারা বদলে যেত। বোঝা যেতে তিনি খুব খুশি হয়েছেন। সেই আমি যেদিন টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা জানিয়ে দিলাম, সেদিন কিছুটা হলেও হতাশ হয়েছিলেন। এটা শুনে খুশি হয়েছিলেন যে আমি নিজে থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। এমন নয় যে দল থেকে বাদ পড়ে অবসরের কথা ঘোষনা করেছি। কদিন আগে (১৭ মে) ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে রোহিতের নামে স্ট্যান্ড হওয়ার দিন মাঠে এসেছিলেন বাবা-মা। তাঁরা দুজনেই এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে আনন্দে চোখ ভিজে গিয়েছিল। এটা তাঁদের কাছে গর্বের ব্যাপার। এসব দেখতে ভাল লাগে। নিজেকে ধন্য মনে হয়। তাঁদের ছেলে কিছু একটা করতে পেরেছে বলে খুশি হয়েছেন। এর থেকে বড় আর কি হতে পারে।
টেস্টে কোহলিকে ফেরাতে চায় বোর্ড!

বিরাট কোহলিকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করতে চলেছে ভারতীয় বোর্ড। না, একটু ভুল বলা হল, অরুণ ধুমাল। আইপিএল বা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের চেয়ারম্যান হলেন অরুণ। তবে তিনি এখন ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি হলেন বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ। ফলে বোর্ড অনুরোধ করছে কোহলিকে, এই কথাগুলো ঠিক নয়। তবে একটা কথা মানতেই হবে, আইপিএল চালায় বোর্ড। আর সেই আইপিএলের চেয়ারম্যান হলেন অরুণ ধুমাল। সুতরাং ধরে নেওয়া যেতেই পারে, বোর্ডের পক্ষ থেকেই বিরাটকে অবসর ভাঙার কথা বলা হচ্ছে। অরুণ জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করবেন যাতে কোহলি টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসেন। ২০ জুন হেডিংলেতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট শুরু করবে ভারত। সকলে আশা করেছিল, দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেই দেখা যাবে ব্যাট হাতে কোহলিকে নামতে। কিন্তু তিনি আচমকা ঘোষণা করে দেন, টেস্ট ক্রিকেট আর খেলবেন না। টেস্ট থেকে অবসর নিচ্ছেন। তাই দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর কোহলির জায়গায় এখন অনেকে করুণ নায়ারের কথা ভাবতে শুরু করেছেন। যেহেতু সদ্য বেসরকারি টেস্টে ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে ডাবল সেঞ্চুরি করে বসেছেন ভারতীয় এ দলের সঙ্গে যাওয়া করুণ। কিংবা অধিনায়ক শুভমান গিলকে দেখলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবু এখনও ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরা মনে করছেন, বিরাট কোহলিকে ওই জায়গায় খুব প্রয়োজন ছিল। ভারতীয়দের আশা, নিশ্চয় সাদা পোশাকে আবার কোহলিকে মাঠে প্রবেশ করতে দেখা যাবে। সেই আশার প্রদীপকে উস্কে দিলেন স্বয়ং আইপিএল চেয়ারম্যান। প্রশ্ন উঠছে, কোহলি যদি প্রথমবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে এখান থেকেও অবসরের কথা ঘোষণা করে দেন? অরুণ ধুমাল জানিয়েছেন, তেমন হবে তা তিনি আশা করছেন না। বরং তঁার ধারণা, কোহলি ঠিক আইপিএল খেলা চালিয়ে যাবেন। “দেখুন আমি তা মনে করিনা। বিরাট কোহলি আইপিএল খেলবে না, তেমন আশাও করছি না।” সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে একথা বলেছেন অরুণ ধুমাল। তিনি বরং জানালেন মঙ্গলবার কোহলি যদি আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হন তাহলে তিনি তঁাকে অনুরোধ করবেন ফের টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসতে। “টেনিসে যেমন রজার ফেডেরার, নোভাক জকোভিচ, ঠিক তেমনি ক্রিকেটে হলেন বিরাট কোহলি। বিরাট হল ক্রিকেটের সর্বশ্রেষ্ঠ দূত। তার টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার িসদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করাই বাস্তবসম্মত। তাই আমি সব সময় চাইবো একদিকে যেমন বিরাট কোহলি আইপিএল চালিয়ে যাক। অন্যদিকে চাইব, টেস্ট ক্রিকেটে আবার ফিরে আসুক। তাই আইপিএল মঙ্গলবার জিতলে বিরাটকে বলব, টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসতে।” অরুণ ধুমাল মনে করছেন, প্রথমবার আইপিএল খেলার সময় যেমন ফিট ছিলেন কোহলি ১৮ বছর খেলার পর তারচেয়েও বেশি ফিট হয়ে উঠেছেন। তাই আগের তুলনায় তঁাকে কোনও অংশে কম মনে করছেন না তিনি। “আরসিবি জিতলে শুধু আমি চাইব না, পুরো দেশ চাইবে বিরাট যেন টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসে।” বলেন অরুণ ধুমাল। ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে শুভমান গিল সম্পর্কে দারুন প্রশংসা করলেন আইপিএল চেয়ারম্যান। তঁার মতে ২৫ বছরের তরুণ তুর্কির নেতৃত্বকে উপেক্ষা করা ঠিক হবে না। গুজরাট টাইটান্সের হয়ে আইপিএলে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু এটা কোনও বড় মাপের দল নয়। তবে িজম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে তঁার নেতৃত্ব দেওয়া দেখে তিনি খুশি হয়েছেন। (ছবি-টেস্টে কোহলিকে ফেরানোর চিন্তা ভাবনা শুরু বোর্ডের।)
এপ্রিলের শুরুতে বিরাট নাকি বোর্ডকে জানিয়েছিলেন, টেস্ট ক্রিকেট আর নয়!

ভুলটা শুরুতেই ভেঙ্গে গেল। ১২ মে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিরাট কোহলির অবসর ঘোষণার পর অনেকেই বলেছিলেন, বন্ধুর কারনেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত। রোহিতের সঙ্গে বিরটের সম্পর্ক গভীর। সাম্প্রতিককালে অনেক বেড়েছে। তাই রোহিত শর্মার অবসরের ঘোষণা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। হিটম্যানের অবসরের পাঁচদিনের মাথায় বিরাট অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। কী এমন ঘটনা ঘটল যে বিরাট টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন। একথাও শোনা গিয়েছিল, বিরাট নাকি বোর্ডকে অবসরের কথা আগে জানিয়ে দিয়েছিলেন। এমন কথা শোনার পর বোর্ড ঠিক করেছিল, তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে আলাদাভাবে কথা বলা হবে। প্রয়োজনে কোন সিনিয়র ক্রিকেটারকে এই কাজে ব্যবহার করা হবে। তেমন কিছুই হল না। বিরাট টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ালেন। ইংল্যান্ড সফরের জন্য দল নির্বাচনের পর নির্বাচক প্রধান অজিত আগারকর মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে আসেন। দল নির্বাচন নিয়ে একথা-সেকথার পর বিরাট প্রসঙ্গ চলে এল। আগারকরের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে বিরাট কবে অবসরের কথা বোর্ডকে জানিয়েছিলেন! এরপর আগরকর যা বললেন, তাই শুনে সবাই অবাক। তা হলে এই খবর এতদিন চাপা ছিল! কী করে এমনটা হল! কারোর কাছে তখন উত্তর নেই। তো শুনে নেওয়া যেতে পারে আগারকর কি বলেছেন। নির্বাচক প্রধান আগারকর বলেন, এপ্রিলের শুরুতে বিরাট আমাদের জানিয়ে দিয়েছিল, টেস্ট ক্রিকেট আর খেলতে চায় না। হ্যাঁ, অবাক লাগলেও কথাট সত্যি। অস্ট্রেলিয়া থেকে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি হেরে দেশে ফিরে আসার পর বিরাট এ নিয়ে ভাবনা চিন্তা করেন। তারপর নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে টেস্ট ক্রিকেট আর তিনি খেলবেন না। বোর্ড সব শুনে তাঁকে পুনরায় ভাবার জন্য অনুরোধ করে। এর প্রায় দেড় মাস পর বিরাট সরকারিভাবে অবসরের কথা জানিয়ে দেন। কেন বিরাট টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ালেন। এমন প্রশ্ন আগারকরের কাছে রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, বিরাট হয়তো মনে করেছে টেস্ট ক্রিকেটে নতুন করে কিছু দেওয়ার নেই। টেস্টে মাঠে নেমে যে কট বল খেলেছে, তার পিছনে দুশো শতাংশ মনেনিবেশ করেছে। একই কথা ফিল্ডিংয়ের সময়ও করেছে। প্রত্যেকটা বলের পিছনে ছোটার সময় ওর লক্ষ্য একশো শতাংশ সঠিক থেকেছে। নিজের সবটা দিয়েছে। ওর হয়তো মনে হয়েছে এখনও টেস্ট ক্রিকেট খেললে সেটা আর সম্ভব হবে না। তাই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা সেই সিদ্ধান্তকে সন্মান জানিয়েছি। আগারকর অনেক কিছুই শোনালেন। সাদা চোখে সব মেনে নিলে কিছু বলার থাকে না। এটাই মনে হবে কোনও চাপে পড়ে বিরাট এমন সিদ্ধান্ত নেন নি। নিজের যা ভাল হয়েছে, তাই তিনি করেছেন। তা হলে সিডনি টেস্টের আগে কেন তাঁর কাছে আগারকর জানতে চেয়েছিলেন টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে বিরাটের ভবিষ্যত ভাবনা কি! শোনা যায়, এই কথোপকথনের সময় কোচ গম্ভীর কাছেই ছিলেন। তিনি অবশ্য কোনও কথা বলেননি। পারথ টেস্টে সেঞ্চুরির পর বিরাটের ব্যাটে রান ছিল না। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে তিনি বারবার আউট হয়ে যাচ্ছিলেন। হতাশা থেকে হয়তো এমন আলোচনা সেদিন হয়েছিল। কিন্তু বিরাট সেটা হয়তো ঠিকভাবে নেন নি। দলরে সতীর্থরা জানিয়েছিলেন, বিরাট অনেকবার নাকি বলেছিলেন, এরপর আর টেস্ট ক্রিকেট তিনি খেলবেন না। কেউ বিশ্বাস করেননি। ভেবেছিলেন বিরাট রসিকতা করছেন। কিন্তু তারপর এমনটা যে হবে তার আভাস কারোর কাছে ছিল না। বিরাট সরছেন। এমন আভাস পাওয়ার পর কি নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্ট রোহিতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, নেতৃত্ব থেকে সরানো হলে রোহিত নিজেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন। সেটাই হল। দুই সিনিয়র ক্রিকেটার সরে যেতে গম্ভীরদের কাজ সুবিধা হয়ে গেল। তরুন ব্রিগেড নিয়ে তাঁরা ছোটার চেষ্টা করবেন। সেখানে কেউ বলার থাকবে না। এর থেকে ভাল আর কি হতে পারে।
রোহিতকে ওপেনারে আনা ভুলেননি শাস্ত্রী

টেস্ট ক্রিকেট শুরুর আগে রোহিতের সঙ্গে করমর্দন করছেন শাস্ত্রী। (ফাইল চিত্র)
অফস্ট্যাম্পের বাইরে বল কোহলির টেস্ট কেরিয়র থামিয়ে দিল: মঞ্জেরেকর

ইদানীং ভারতীয় ক্রিকেটে সঞ্জয় মঞ্জেরেকরকে বড় সমালোচক বলা হয়। ক্রিকেটাররা তাঁর মন্তব্যে খুশি হতে পারেন না। সেটা শচীন জমানা থেকে চলছে। কাউকেই তিনি ছেড়ে কথা বলেন না। তাই বিরাট কোহলির হঠাৎ অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে সঞ্জয় কিছু বলবেন না! এটা হয় নাকি। প্রায় চব্বিশ ঘন্টা পর জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার সকলের সামনে এলেন। বললেন, অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল বিরাট কোহলির টেস্ট ক্রিকেটের কেরিয়রকে ছোট করে দিল। বলতে পারেন তাড়াতাড়ি থামিয়ে দিল। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে কোহলি বারবার আউট হচ্ছেন। গতবছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ৯ বারের মধ্যে কোহলি আউট হয়েছেন ৮ বার। সঞ্জয় বলছেন, আউট হয়ে ফিরে আসার সময় ওকে হতাশ হতে দেখেছি। ওর ব্যর্থতা দেখে ক্রিকেট ফ্যানরা যতটা না হতাশ হয়েছিলেন, তার থেকে বেশি ভেঙ্গে পড়েছেন অবসরের খবর পাওয়ার পর। কেরিয়র ঠিক করতে নিজেকে অনেক সময় দিয়েছে প্র্যাকটিসে। চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভুল শুধরে নেওয়া গেল না। আমি জানি কোনও ক্রিকেটারের অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয় না। নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করতে হয়। সে পারবে নাকি পারবে না। উত্তর হঠাৎ করে আসেও না। সময় দিতে হয়। তারপর মন বললে সে সরে যাবে, নইলে খেলা চালিয়ে যাবে। কোহলিও নিশ্চয় নিজেকে নিয়ে এমন অনেক প্রশ্ন করেছে। উত্তরে সাড়া পেয়ে সরে দাঁড়িয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত। ব্যাটসম্যান কোহলির মতো অধিনায়ক কোহলিও নজর কেড়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২, এই আটবছরে টেস্টে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৬৮ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে ৪০টিতে। সাফল্যের হার প্রায় ৫৮ শতাংশ। টেস্ট ক্রিকেটে দেশকে একনম্বরে নিয়ে গিয়েছিল। এর থেকে ভাল ট্র্যাকরেকর্ড আর কি হতে পারে অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে কোহলির আউট হওয়ার ঘটনা প্রথম ধর পড়ে ২০১৪ সালে ইংল্যান্ডের মাঠে টেস্ট সিরিজে। সেবার অ্যন্ডারসন কোহলির দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছিল। অ্যান্ডারসনের বোলিংয়ে বারবার ভুল করতে দেখা যায় কোহলিকে। কিন্তু দেশে ফিরে এসে নিজেকে শুধরে নেয়। সেই সময় অনেকের কাছে জানতে চেয়েছিল কী করে এই ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। তারপর ইংল্যান্ডের মাঠে জবাব দেয়। ২০১৮ ও ২০২১ সালে আমরা অনয বিরাটকে দেখেছি। যার ব্যাটে শুধু রান এসেছে। কিন্তু গতবছর থেকে আবর এক ভুল। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলকে মারার চেষ্টা করতে গিয়ে নিজের উইকেট দিয়ে এসেছেন। আসলে নিজের ডিফেন্স ঠিক হচ্ছিল না। দেশে ফিরে মুম্বইয়ের মাঠে আবার প্র্যাকটিস। ভেবেছিলেন ইংল্যান্ড সিরিজে গিয়ে ব্যর্থতার জবাব দেবেন। কিন্তু সেটা হল কোথায়।