টানা দু’বার ইউএস ওপেন জয় সাবালেঙ্কার

নজির গড়ে ইউএস ওপেন জিতলেন এরিনা সাবালেঙ্কা। গত ১১ বছরে প্রথম মহিলা হিসাবে টানা দু’বার ইউএস ওপেন শিরোপা জিতলেন সাবালাঙ্কা। এর আগে ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ সালে টানা তৃতীয় বার ইউএস ওপেন জিতেছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। আসলে, চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং ফরাসি ওপেনের ফাইনালেও উঠেছিলেন তিনি। শিরোপার অনেক কাছ থেকে ফিরতে হয়েছিল। অবশেষে আমেরিকায় শাপমুক্তি হল ২৭ বছরের এই টেনিস তারকার। তাই আনন্দও যেন দ্বিগুণ ছিল। শনিবার মার্কিন তারকা আমান্ডা আনিসিমোভাকে স্ট্রেট সেটে উড়িয়ে দিলেন বেলারুশের এই টেনিসকন্যা। বিপক্ষের ঘরের মাঠে দর্শকদের চিৎকারের মধ্যেও টানা দ্বিতীয়বার ইউএস ওপেনের মুকট জিতে সাবালেঙ্কা বললেন, “হয়তো পরের বার সমর্থন পাব।” নিউ ইয়র্কের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ইউএস ওপেন ফাইনালে অষ্টম বাছাই আনিসিমোভাকে দেড় ঘণ্টার লড়াইয়ে পরাস্ত করলেন সাবলাঙ্কা। খেলার ফলাফল ৬-৩, ৭-৬। ফলাফলই বলে দিচ্ছে, অনায়াসেই জিতেছেন বেলারুশ তারকা। কেবল আনিসিমোভাকে নন, সাবলাঙ্কা হারালেন খেলা দেখতে আসা হাজার পঁচিশেক দর্শককেও। যাঁরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঘরের মেয়েকে পূর্ণ দমে সমর্থন করে গিয়েছেন। কিন্তু সাবলাঙ্কার অনবদ্য টেনিস এবং অভিজ্ঞতার সামনে পার পেলেন না ‘ঘরের মেয়ে’। ম্যাচ জেতার পর আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি সাবালাঙ্কা। কোর্টের মধ্যেই হাঁটু মুড়ে কেঁদে ফেলেন। এরপর সোজা দৌড় লাগান গ্যালারিতে। সেখানে তখন জয়ের আনন্দে মশগুল তাঁর কোচ এবং কোচিং স্টাফেরা। তাঁদের সঙ্গে জয় উদযাপন করলেন। দেখা গেল, কোচ তাঁকে রুপোলি রঙের পোশাক উপহার দিচ্ছেন। এরপর প্রেমিককে চুমুও খেলেন।
অটোগ্রাফ দেওয়ার সময় সিনারের ব্যাগ খোলার চেষ্টা সমর্থকের!

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গিয়েছেন জ্যানিক সিনার। চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছে। সিনার তখন ভক্তদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন, সুভেনির বিলোচ্ছেন। তখনই নিরাপত্তা রক্ষী দেখলেন এক ভক্ত সিনারের ব্যাগ খোলার চেষ্টা করছেন! সঙ্গে সঙ্গে সেই ভক্তকে সরালেন কোর্ট থেকে। সিনারও বুঝতে পেরে সমর্থকদের ভিড় থেকে সরে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে দ্রুত লকার রুমের দিকে হাঁটতে শুরু করলেন। ব্যাগ থেকে নিশ্চয়ই কিছু খোয়া যায়নি। না হলে ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে সিনার নিশ্চয়ই কিছু বলতেন। বরং সাংবাদিকদের উদ্দেশে তার বক্তব্য, “এই প্রথম এখানে রাতে ম্যাচ খেললাম। খেলাও এই কারণে আরও ভাল হয়েছে। উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ রাতে ম্যাচ দেওয়ার জন্য। সমর্থকদেরও ধন্যবাদ আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।” চতুর্থ রাউন্ডে বুবলিককে স্ট্রেট সেটে হারিয়েছেন জ্যানিক সিনার। এই টুর্নামেন্টে বুবলিক ছিলেন ২৩তম বাছাই। প্রথম তিনটি রাউন্ডে নিজের সার্ভিসে একটাও পয়েন্ট খোয়াননি। সিনারের সামনে তাকে অসহায় দেখাল। বুবলিকের সার্ভিস ভেঙেছেন আট বার। সিনারের ফোরহ্যান্ড টপস্পিনের কোনও জবাব বুবলিক দিতে পারেননি। ২০২৩ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে অপরাজিত হয়ে আছেন জ্যাক সিনার। এবার দেখা যাক তার সেই কীর্তি অক্ষুণ্ণ থাকে কি না।
কোর্টে ঢুকলেন ফটোগ্রাফার! যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের প্রথম রাউন্ডে হেরে র্যাকেট ভাঙলেন মেদভেদেভ

যত কাণ্ড যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে! প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গেলেন ২০২১-এর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন দানিল মেদভেদেভ। ফ্রান্সের বেঞ্জামিন বোঞ্জির কাছে ৩-৬, ৫-৭, ৭-৬ (৭-৫), ৬-০, ৪-৬ ব্যবধানে হারলেন বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড়। তখন চলছিল ম্যাচের তৃতীয় সেট। কামব্যাকের লড়াইয়ে ৫-৪ ব্যবধানে এগিয়ে রাশিয়ান টেনিস তারকা। ওখানে ম্যাচ পয়েন্ট পেলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যেতে পারত। প্রথম সার্ভে ‘ফল্ট’ করার পর দ্বিতীয় সার্ভের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বোঞ্জি। সেই সময় আচমকা কোর্টের মধ্যে ক্যামেরা নিয়ে ঢুকে পড়েন এক ফটোগ্রাফার। দ্রুত ম্যাচ থামিয়ে দেন আম্পায়ার। তিনি ফের বোঞ্জিকে প্রথম সার্ভ নিতে বলেন। তাতেই মেজাজ চড়ে যায় মেদভেদেভের। আম্পায়ারের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। রাশিয়ান টেনিস তারকার অভিযোগ, আম্পায়ার দ্রুত ম্যাচ শেষ করতে চান। এমনকী তাঁকে বলতে শোনা যায়, “উনি তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে চান। উনি ম্যাচ ধরে টাকা পান, ঘণ্টা ধরে পান না।” লুই আর্মস্ট্রং স্টেডিয়ামের দর্শকদেরও তিনি বলতে থাকেন প্রতিবাদ করার জন্য। এই গন্ডগোলের জেরে প্রায় ৬ মিনিট ম্যাচ বন্ধ থাকে। সেই সেটটা জিতলেও শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি মেদভেদেভ। ম্যাচ হারার পর নিজের ছ’টি র্যাকেট দর্শকদের দিকে ছুড়ে দেন মেদভেদেভ। আর যে র্যাকেটটা হাতে ছিল, সেটা বেঞ্চে সজোরে মেরে ভেঙে ফেলেন। এমনকী তাঁর নিজের হাতেও চোট লাগে। ফের সেটা বেঞ্চে মারার আগে তাঁকে থামিয়ে দেওয়া হয়। কোর্টের বাইরেও বের করে দেওয়া হয়। এমনিতে চলতি বছরে একেবারেই ছন্দে নেই মেদভেদেভ। চলতি বছরে এখনও মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছেন রাশিয়ান টেনিস তারকা।
ইউএস ওপেনে নামছেন ৪৫ বছরের ভেনাসও!

ফ্লাশিং মিডোজ়ে ফের ভেনাস উইলিয়ামস। না, বিশেষজ্ঞ হিসেবে মাইক হাতে নয়। ভারতীয় সময় মঙ্গলবার ভোররাতে ৪৫ বছরের ভেনাস নামবেন ইউএস ওপেনে মেয়েদের সিঙ্গলসে। প্রতিপক্ষ গতবারের সেমিফাইনালিস্ট ক্যারোলিনা মুচোভা। এবারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে ভেনাসের ২৫তম উপস্থিতি। সেটাও এক রেকর্ড! এই মুহূর্তে ভেনাসের বিশ্বর্যাঙ্কিং ৫৮০। তাতে কী হল? গত ৪৪ বছরে মহিলাদের বিশ্ব টেনিসের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘বেশি বয়সের খেলোয়াড় ভেনাস উইলিয়ামস, যাকে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে ওয়াইল্ড কার্ডে খেলতে দেওয়া হচ্ছে। সেটাও তো এক কৃতিত্ব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভেনাসের সহাস্য জবাব, “টেনিস আমার ডিএনএ-তে রয়েছে। ৩০ বছর পরও যদি সুস্থ থাকি, ফিট থাকি, তখনও র্যাকেট হাতে নামব কোর্টে। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের উদ্যোক্তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে ওয়াইল্ড কার্ডে খেলতে দেওয়ার জন্য।” বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর খেলোয়াড় আরও জানিয়েছেন, এবার ইউএস ওপেনে খেলার সুযোগ পেয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত। “পুরোনো হয় না। স্মৃতি সততই সুখের। আমার উত্তেজনা বেড়ে গিয়েছে এই গ্র্যান্ড স্ল্যামে নামার সুযোগ পেয়ে,” বলেছেন ভেনাস।