আইপিএলে ১২, জাতীয় দলে ১৮ নম্বর জার্সি , বিরাটের বিকল্প বৈভব সূর্যবংশী!

শুরু হল যুবরাজ সিংকে দিয়ে। আপাতত চলে এসেছেন বিরাট কোহলিতে। বৈভব সূর্যবংশীর সংক্ষিপ্ত ক্রিকেট কেরিয়র নিয়ে অনেক ঘটনার মাঝে এটাও চলে এসেছে। তা হলে কি তিনি বিরাট কোহলির বিকল্প হতে চলেছেন। টি২০ ও টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন বিরাট। এখন শুধু ওয়ান ক্রিকেটে তাঁকে খেলতে দেখা যাবে। তার আগে বৈভবকে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হল! আইপিলে তাঁর মারকাটারি ইনিংস দেখে ছেলেবেলার কোচ বলেছিলেন ব্রায়ান লারা ও যুবরাজ সিংয়ের মিশেল বৈভবের ব্যাটিংয়ে। এখন শোনা যাচ্ছে বৈভব নাকি বিরাটের ভক্ত। ক্রিকেট কেরিয়র শুরু করার দিন থেকে টিভিতে বিরাটকে দেখে সেরকম হতে চেয়েছিলেন বৈভব। তাই হয়তো জার্সি নম্বর বদলে গেল। তবে যাই হোক না কেন, জাতীয় দলে তাঁকে ১৮ নম্বর জার্সি তে খেলতে দেখে সবাই বলছেন, আগামির বিরাটকে পেয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট। আইপিএলে তারকা বোলরদের মেরে রান করেছিলেন বৈভব। লখনউ সুপার জায়ান্টাসের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে একটুও কেঁপে যাননি তিনি। শার্দুলের প্রথম বল কভারের উপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে ফেলেন। দ্বিতীয় ম্যাচে গুজরাট টাইটান্সের ৩৮ বলে সেঞ্চুরি করার পথে সিরাজ, রশিদদের মেরে মাঠে ঝড় তোলেন। সেদিন থেকে ক্রিকেট মহলে তাঁকে নিয়ে নানা কথা শুরু হয়ে যায়। আইপিএলে ৭ ম্যাচে আড়াইশোর উপর রান করলেন। স্ট্রাইক রেট ২০৬। ভাবা যায়। তবে বড় আসরে পরীক্ষার জন্য তিনি কতটা তৈরি তা নিয়েও কাটাকাটি হয়। এবার ইংল্যান্ডে ভারতীয় অনুধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচে করলেন ১৯ বলে ৪৮ রান। এর মধ্যে তিনটি বাউন্ডারি ও পাঁচটি ওভার বাউন্ডারি। শুরুতেই চমক। সিরিজে শেষে সেটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা নিয়ে জল্পনা চলছে। ভারতীয় অনুধ্ব ১৯ দল ইংল্যান্ডের মাঠে পাঁচটি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলবে। তারপর দুটি চারদিনের ম্যাচ। ওয়ান ডে ক্রিকেটে বৈভবের খেলার চরিত্র বোঝা গিয়েছে। আসল পরীক্ষা চারদিনের ম্যাচে। সেখানে নিজেকে প্রমান করতে পারলে বোঝা যাবে সাদা বলের মতো লাল বলের ক্রিকেটেও সমান পারদর্শী বৈভব। তবে ক্রিকেট মহল মনে করছে, চারদিনের ম্যাচে তাঁর খেলার চরিত্রে বিরাট কিছু বদল হবে না। এভাবে তো অনেকেই আগে ব্যাটিং করেছেন। শেহবাগের কথা ধরা যাক। তিনি সব ফরম্যাটে এক মেজাজে ব্যাটিং করতেন। বৈভব সেভাবে গেলে অসুবিধা কোথায়! মনে হয় না খেলায় কোনও বদল আনবে বৈভব। কলকাতায় খেলতে আসার পর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। কথাও হয়। সৌরভ অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, ভারি ব্যাটে কীভাবে তুই ব্যাট করিস। আরও বলেছিলেন, খেলায় এখন কোনও বদল আনার দরকার নেই। যেভাবে খেলছিস, সেভাবেই খেলে যা। বৈভব সেভাবেই খেলছেন। তার প্রমান ইংল্যান্ডের মাঠে শুরুতে মিলল। ইংল্যান্ড উড়ে যাওয়ার আগে বলেছিলেন, আমি সেখানে গিয়ে আগে খেলিনি। সেখানেকার পরিবেশ নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। তবে ইংল্যান্ডের মাঠে রান করতে চাই। সিরিজ জিতে দেশে ফিরতে চাই। এখন সবে শুরু। ওয়ান ডে ক্রিকেটে আরও চারটি ম্যাচ বাকি। দেখা যাক,বৈভব সিরিজে কেমন খেলেন। অভিষেকে স্পটলাইট খুঁজে নিয়েছেন। সেই আলো সিরিজ শেষে দেখতে পাওয়া যাবে তো!
১৯ বলে ৪৮, বিরাটের জার্সিতে বৈভবের ঝোড়ো ইনিংসে সহজ জয় ভারতের

ইংল্যান্ডঃ ১৭৪ ( ৪২.২ ওভার) ভারতঃ ৪ উইকেটে ১৭৮ (২৪ ওভার) একইভাবে বল গড়িয়ে চলেছে। আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে যে মেজাজে বৈভব সূর্যবংশীকে দেখা গিয়েছিল, অনেকটা একই স্টাইলে খেলে ভারতীয় দলকে সহজ এনে দিলেন বিস্ময় বালক। ১৪ বছরের ক্রিকেটার। তবু সম্বোধনটা তুই বা তুমিতে আটকে রাখা যাচ্ছে না। কারন আইপিএলের পর জাতীয় দলের হয়ে যে মেজাজে খেলে চলেছেন, তারপর আলাদা একটা জায়গা হওযা উচিত। সেই কারনে বিশেষণ বদল আনা হল। হেডিংলের মাঠে শুভমান গিলদের দাপটের পরও বোলিং ও ফিল্ডিং ব্যর্থতায় ভারতীয় দল হারল পাঁচ উইকেটে। কিন্তু ব্রাইটনের কাউন্টি ক্রিকেট মাঠে অনুধ্ব ১৯ ওয়ান ডে সিরিজে ভারতীয় দলের সামনে উড়ে গেল ইংল্যান্ড। বলা যায়, কখনও তারা পাল্টা দিতে পারলেন না। প্রতিপক্ষ দলে ছিলেন অ্যান্ডু ফ্লিনটফের ছেলে রকি ফ্লিনটফ। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে রকি ৯০ বল খেলে করলেন ৫৬ রান। এর মধ্যে ছিল ৩টি বাউন্ডরি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারি। হাফ সেঞ্চুরি করলেও বাবার মতো তাঁকে কখনই দেখা গেল না। ওয়ান ডে ক্রিকেটে রানের থেকে প্রায় ডবল বল কেন খেলবেন রকি। এই খবর জানার পর বাবা কি পরামর্শ দেন, তা শোনার অপেক্ষা রইল। তবে রকি ফ্লিডিং করতে নেমে দেখলেন কেন আইপিএলে বৈভবকে নিয়ে মাতামাতি হয়েছে। এতদিন টিভিতে দেখেছেন। এবার প্রতিপক্ষ দলে বৈভবকে দেখলেন। কি দাপট। ইংল্যান্ডের কোনও বোলারই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারলেন না। বলা যায়, বৈভবের দাপটের কাছে তারা হার মানলেন। শুধু বোলাররা নন, হেরে গেলেন অধিনায়ক আয়ুশ মাত্রেও। বৈভবের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে ৩০ বল খেলে আয়ুশ করলেন ২১। ইনিংসে ছিল ৪টি বাউন্ডারি। আর বৈভব! তাঁকে নিয়ে এবার ব্রিটিশ মিডিয়া নতুন করে লেখার লাইন খুঁজবে। ১৯ বল খেলে ৪৮ রান। এর মধ্যে ৩টি বাউন্ডারি ও ৫টি ওভার বাউন্ডারি। নিজের ইনিংসে ৪২ রান এল এভাবেই। বাকি রান করলেন দৌড়ে। তাই ইংল্যান্ডের ১৭৪ রানের জবাবে ভারত মাত্র ২৪ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে জয়ের রান তুলে নিল। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৬ উইকেটে জিতে শুরুটা ভালই করল জুনিয়র ভারতীয় দল। বৈভবকে নিয়ে আর একটি কথা বলার আছে। আইপিএলে তাঁকে ১২ নম্বর জার্সি গায়ে খেলতে দেখা গিয়েছিল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এলেন বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি বিরাটের ফ্যান। শোনা গিয়েছিল. বিরাটের জার্সি ভারতের কোনও ক্রিকেটারের গায়ে দেখা যাবে না। তা হলে কি করে বৈভব ১৮ নম্বর জার্সি গায়ে মাঠে এলেন। এটাই অবাক করার মতো ব্যাপার হয়ে গেল। তাই নয় কি! আরও একজনের কথা ম্যাচ রিপোর্ট লিখতে গিয়ে অবশ্যই নিয়ে আসতে হবে। তিনি হলেন রাজস্থানের কনিষ্ক চৌহান। অফ স্পিনার কনিষ্কও দাপট দেখালেন। ১০ ওভার বল করে ২০ রান খরচ করে তুলে নিলেন ৩ উইকেট। তা হলে! ইংল্যান্ড কি স্পিন ভাল খেলতে পারেন না। গৌতম গম্ভীর কি শুনলেন। তা হলে এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে তিনি কি করবেন।