ব্যারেটো, সুনীলদের পর বিশাল-আপুইয়াদের হাত ধরে ২২ বছরের শাপমোচন, শুভেচ্ছা গোয়েঙ্কার

দীর্ঘ ২২ বছরের অপেক্ষার অবসান। আপুইয়ার(Apuia) গোলে কামব্যাক এবং বিশালের(Vishal Kaith) বিশ্বস্ত হাতে ভর করে ডার্বি জিতে আইএফএ শিল্ড(Ifa Shield) মোহনবাগানের(Mohunbagan)। আর সেইসঙ্গেই ২২ বছরের শিল্ড জয়ের খরাও কাটাল মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট(Mohunbagan Supergiant)। এমন একটা সাফল্যের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর দলকে শুভেচ্ছা জানালেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা(Sanjiv Goenka)। ২২ বছরের অপেক্ষার অবসানের কথা লিখতেও ভুলললেন না তিনি। ২০০৩ সালে শেষবার আইএফএ শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান। সেবার দলে ছিলেন আরেক ব্রাজিলিয় ব্যারেটো। এবারও জিতলেন। তার স্বাক্ষী আরেক ব্রাজিলিয় রবসন রবিনহো। ব্যারেটো(Barreto), সুনীলদের(Sunil Chetri) পর বিশাল, আপুইয়াদের হাত ধরেই ফের একবার শিল্ডে উজ্জ্বল মোহনবাগান(Mohunbagan)। দীর্ঘদিন পর আবারও সিনিয়র পর্যায়ে এবার আয়োজিত হয়েছিল আইএফএ শিল্ড(Ifa Shield)। নানান টাল বাহানার পর যোগ দিয়েছিল মোহনবাগান। প্রথম দিন থেকেই মোলিনার মুখে ছিল একটাই কথা জিততে হবে। আর যখন ফাইনালটাই বদলে গিয়েছিল ডার্বির(Kolkata Derby) মঞ্চে, তখন তো হোসে মোলিনা(Jose Molina) বলেই দিয়েছিলেন এই ম্যাচটাই তাঁর কেরিয়ারে আপাতত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ২২ বছরের অপেক্ষার অবসানের সুযোগ এসেছিল। কিন্তু সেইসঙ্গে মোহনবাগানের সামনে এসেছিল একের পর এক চ্যালেঞ্জ। যুবভারতীতে একের পর এক সুযোগ নষ্ট। তারপর হামিদের গোলে পিছিয়ে পড়া। গ্যালারীতে থাকা মোহন জনতা তখন একেবারে চুপ। তাদের মুখে প্রথম হাসিটা ফোটালেন আপুইয়া(Apuia)। প্রথমার্ধের ৪৪ মিনিটের মাথায় তাঁর দুরন্ত গোল থেকে জয়ে ফিরল মোহনবাগান(Mohunbagan)। কিন্তু তখনও অনেকটা পথ চলা বাকি ছিল। আক্রমণে-পাল্টা আক্রমণের খেলায় শেষপর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় টাই ব্রেকারে। সেখানেই বিশাল কাইথের বিশ্বস্ত(Vishal Kaith) হাত। মোহনহবাগানের(Mohunbagan) ২২ বছরের আক্ষেপ মেটাল। খরা কাটাল শিল্ডের। আবারও সবুজ-মেরুন তাঁবুতে এল শিল্ড। মোহনবাগানের(Mohunbagan) পারফরম্যান্স দেখে আপ্লুত সঞ্জীব গোয়েঙ্কাও(Sanjiv Goenka)। টুইট করে তিনি লেখেন, “ডার্বি জয় সবসময়ই বিশেষ। আর সেটা যদি ফাইনাল হয়, তবে তো আরও বিশেষ। ২১ তম আইএফএ শিল্ড জিততে ২২ বছরের অপেক্ষার অবসান”। A derby win is special… a derby win in a final even more so. The 22-year wait for our 21st IFA Shield is over. #MBSG #JoyMohunBagan pic.twitter.com/mHtH69G64k — Dr. Sanjiv Goenka (@DrSanjivGoenka) October 18, 2025 সুপার কাপের আগে এই আইএফএ শিল্ড জয় যে মোহনবাগানের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মাঝে দুদিনের বিশ্রাম। এরপরই শুরু সুপার কাপের প্রস্তুতি।
দলকে শিল্ড জিতিয়ে সমর্থকদের ধন্যবাদ বিশাল কাইথের

শুরু থেকে শেষপর্যন্ত হাড্ডহাড্ডি লড়াই। শেষপর্যন্ত বিশাল কাইথের সোনার হাতেই ঐতিহ্যের শিল্ড জয় মোহনবাগানের(Mohunbagan)। ডুরান্ডের মধুর প্রতিশোধ সম্পূর্ণ। আর ম্যাচ শেষে সেই বিশাল কাইথই(Vishal Kaith) ধন্যবাদ জানাচ্ছেন সবুজ-মেরুন সমর্থকদের। বয়কটের ডাক দেওয়া সমর্থকরা যে সব ভুলে তাদের সমর্থন করতে এসেছিলেন, সেটাই নাকি শক্তি বাড়িয়েছিল মোহনবাগানের। ইস্টবেঙ্গলের(Eastbengal) মতো চির প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড হাতে তুলতে পেরে আপ্লুত বিশাল কাইথও(Vishal Kaith)। আপুইয়ার(Apuia) গোলে সমতায় ফেরা। আর ম্যাচের শেষ মুহূর্তে বিশাল কাইথের দুরন্ত একটা সেভ। যুবভারতী মেতে ওঠে উল্লাসে। জয় গুপ্তা যখন শট নিতে যায় সেই সময় টাই ব্রেকারে স্কোর ৩-৩। এবারের ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম চমক ছিলেন এই জয় গুপ্তা। কিন্তু তাঁকেই আটকে দিলেন মোহনবাগানের তারকা গোলকিপার বিশাল কাইথ(Vishal Kaith)। কেন তাঁকে পেনাল্টি স্পেশ্যালিস্ট বলা হয় সেটা বোধহয় আবারও বুঝিয়ে দিলেন। তবে ম্যাচ শেষ বিশালের মুখে একটাই কথা। ডার্বিটা তাদের জিততেই হত। গোলের নীচে দাঁড়ানোর সময় একটাই কথা মাথায় ঘুরছিল, দলকে যেভাবেই হোক জেতাতে হবে। ম্যাচ শেষে বিশাল কাইথ(Vishal Kaith) জানান, যখন টাই ব্রেকার হচ্ছিল সেই সময় আমার মাথায় একটাই কথা ঘুরছিল। যেমনভাবেই হোক গোল বাঁচাতে হবে। আর সেটাই করতে পেরেছি। জিততে হবে এই ভেবেই এদিন মাঠে নেমেছিলাম। এদিন সমর্থকরা আমাদের ডাকে সারা দিয়ে মাঠে এসেছিলেন। তারা আমাদের পাশে থেকেছেন। সমর্থকদের অত্যন্ত ধন্যবাদ। তারা আমাদের পাশে থেকেছে বলেই তো এমনটা হয়েছে। এই জয় যেমন সমর্থকদের, তেমনই কোচ থেকে কর্তা সকলকে উতসর্গ করতে চাই। শেষ ম্যাচেও মোহনবাগানের সমর্থকরা তাদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল। কিন্তু এটা যে ডার্বি জয়। রাগ থাকলেও, শনিবার রাত ৯ টার পর থেকে সে সবই মিটে গেল তা বলাই যায়। এখন সকলেই যে মেতে মোহনবাগানের ডার্বি, সঙ্গে শিল্ড জয়ের আনন্দে।
বিশালের বিশ্বস্ত হাতে শিল্ডের রং সবুজ-মেরুন, ব্যর্থ অস্কারের শেষ মুহূর্তের চমক

পেনাল্টি স্পেশ্যালিস্ট বিশাল কাইথ(Vishal Kaith)। তাঁর বিশ্বস্ত হাতেই শিল্ড এবার মোহনবাগানের(MBSG)। জয় গুপ্তার(Jay Gupta) শট বাঁচানর পর থেকেই শুরু হয়েছিল অপেক্ষাটা। মেহতাব সিং( Mehtab Singh)শেষ শট নিতেই যুবভারতীতে শুরু সবুজ-মেরুন উল্লাস। টাইব্রেকারে ইস্টবেঙ্গলকে(Eastbengal) ৫-৪ গোলে হারিয়ে দীর্ঘদিন পর ফের আইএফএ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান(MBSG)। হিরোশি(Hiroshi Ibusuki) ম্যাজিক দেখতে পেল না যুবভারতী। শেষমুহূর্তে দেবজিতকে নামিয়েও চমক দিতে পারলেন অস্কার ব্রুজোঁ(Oscar Bruzon)। নির্ধারিত সময়ে এদিন ম্যাচ শেষ হয় ১-১ গোলে। অবশেষে টাই ব্রেকারেই নির্ধারিত হয় শিল্ড চ্যাম্পিয়ন। ম্যান অব দ্য ম্যাচ মহেশ হলেও, মোহনবাগান শিবিরের নায়ক যে বিশাল(Vishal Kaith) তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর হাত ধরেই তো ২১ তম শিল্ড(Ifa Shield) জিতল মোহনবাগান। এদিন ইস্টবেঙ্গলের(Eastbengal) বিরুদ্ধে শুরু থেকেই গোল তুলে নিতে মরিয়া ছিল মোহনবাগান(MBSG)। ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় লিস্টন এবং ৮ মিনিটের মুখে ম্যাকলরেন(Jamie Maclaren) সহজ সুযোগ মিস না করলে তখনই এগিয়ে যেতে পারত সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। যদিও তেমনটা হয়নি। ইস্টবেঙ্গল(Eastbengal) শুরু থেকে বলের দখল রাখলেও, বারবারই মোহনবাগান বক্সে আটকে যাচ্ছিল। ম্যাচের বয়স যখন ৩২ মিনিট। আনোয়ারের ভুলে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। যে কামিন্স(Jason Cummins) তাদের সবচেয়ে বড় ভরসা, তিনি বল মারলেন বাইরে। এরপর থেকেই যেন গোল পেতে মরিয়া আক্রমণ শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। মুহূর্মুহু ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণে ৩৫ মিনিটের মাথাতেই সাফল্য। মহেশের বাড়ানো পাসে হামিদের(Hamid Ahadad) গোল। মোহনবাগানকে(MBSG) পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার আগেই বারবার আক্রমণে যায় ইস্টবেঙ্গল। কখনও বিপিন তো কখনও মহেশের সাজানো পাস হামিদ মিস না করলে হ্যাটট্রিক করে ফেলেই পারতেন। মোহনবাগান গ্যালারী তখন চুপচাপ। অবশেষে তাদের ত্রাতা সেই আপুইয়া(Apuia)। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে আপুইয়ার(Apuia) দুরন্ত শট। সমতায় ফেরে মোহনবাগান। বিরতির পর কোন পক্ষ এগিয়ে যায় সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন সকলে। কিন্তু প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধেও মোহনবাগানের সুযোগ নষ্টের খেলা ছিল অব্যহত। সেইসঙ্গে খানিকটা অনিয়ন্ত্রিত ফুটবলই যেন খেলছিল ইস্টবেঙ্গলও। আক্রমণে জোর বাড়াতে ৬৩ মিনিটে অস্কারের(Oscar Bruzon) একসঙ্গে তিনটি বদল। একসঙ্গে মাঠে আসেন হিরোশি এবং জয় গুপ্তা। কিন্তু যে হিরোশিকে নিয়ে এত হৈচৈ তিনি কিছুই করতে পারেননি। বেশ কয়েকটা হেড নিলেও তা ছিল নিস্প্রভ। অন্যদিকে মোলিনাও(Jose Molina) পরপর বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেন। দ্বিতীয়ার্ধের কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঠে আসেন রবসন(Robson Robinho)। মিগুয়েল(Miguel) বনাম রবসন লড়াই দেখার জন্য তখন সকলে মুখিয়ে ছিলেন। কিন্তু ডার্বির মঞ্চে দুই দলের ব্রাজিলিয় তারকাই কিন্তু সেভাবে নজর কাড়তে পারল না। রবসন কয়েকটা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি লিস্টন, ম্যাকলরেনরা। কিন্তু সকলের নজরই তখন ছিল দিমি কখন আসবে। মোহনবাগানের(MBSG) হয়ে বরাবরই ডার্বির নায়ক দিমিত্রি(Dimitri Petratos)। এত সুযোগ নষ্টের পরও কেন তাঁকে এত দেরীতে আনলেন মোলিনা, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠতেই পারে। এদিন মোহনবাগানের হয়ে অবশ্য দুরন্ত পারফর্ম্যান্স দেখিয়েছেন সাহাল। জয় গুপ্তার সঙ্গে কড়া ট্যাকলে তাঁর চোখের পাশে কেটে গিয়ে রক্ত ঝড়লেও মাঠ ছাড়েননি এই তারকা ফুটবলার। বারবারই মোহনবাগানের আক্রমণে রসদ যোগাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গোল হচ্ছিল না। 🏆🏆🏆 CHAMP21ONS 🏆🏆🏆#MBSG #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন pic.twitter.com/VCeSpa7o9x — Mohun Bagan Super Giant (@mohunbagansg) October 18, 2025 তেমনই উইং দিয়ে ইস্টবেঙ্গলের খেলাটা চালাচ্ছিলেন নাওরেম মহেশ। প্রথমার্ধে বিপিন সিং দুরন্ত ছন্দে থাকলেও, বিরতির পর যেন খানিকটা দমে গিয়েছিলেন তিনি। বদলে গিয়েছিল তাঁর পজিশনও। অন্যদিকে হিরোশিকে আটকাতে ব্যস্ত ছিলেন অলড্রেড এবং রডরিগেজ। যদিও এদিন সেভাবে আক্রমণের ঝড় তুলতে পারেননি হিরোশি ইবুসুকি। রশিদ, মিগুয়েল কয়েকটা শট নিয়েছিল ঠিকই তবে সেগুলো গোল হওয়ার মতো নয়। নির্ধারিত সময়ে ১-১ ফলাফল। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়। সেই অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে আসেন দিমিত্রি পেত্রাতস। সেই সময় কয়েকটা ভালো মুভমেন্ট তিনি করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু বারবারই গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয়। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আর সেখানেই বাজিমাত সেই বিশাল কাইথের(Vishal Kaith)। অস্কারের বাজি ছিলেন এদিন দেবজিত। হবে নাই বা কেব পেনাল্টি শট বাঁচানোর জন্য তাঁকেই তো বলা হত সেভজিৎ। কিন্তু ভাগ্য সহায় দেয়নি। মোহনবাগানকে একবারও আটকাতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে জয় গুপ্তাকে রুখে দিয়েই মোহনবাগানের জয় নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন বিশাল(Vishal Kaith)। মেহতাবের শট জালে জড়াতেই যুবভারতীতে শুরু সবুজ-মেরুন বিজয়োল্লাস।