বার্সেলোনায় পিকে-শাকিরার ২০০ কোটি টাকার বাড়ি কিনছেন ইয়ামাল

এল ক্লাসিকো হার এবং ওই ম্যাচে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকার পরও স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনামে লামিন ইয়ামাল। এবার তিনি বিলাসবহুল একটি বাড়ি কিনতে চলেছেন। বাড়িটি আবার বার্সেলোনার প্রাক্তন তারকা জেরার্ড পিকে আর তার প্রাক্তন স্ত্রী শাকিরার। বাড়িটির বর্তমান দাম প্রায় ২০০ কোটি টাকা! বার্সেলোনার এক অভিজাত এলাকায় ৩ হাজার ৮০০ বর্গমিটারের বাড়িটি ২০১২-য় তৈরি হয়েছিল। সেই বাড়িটিই এবার কিনবেন ইয়ামাল। এই বাড়িতে রয়েছে ৬টি বেডরুম, ৫টি বাথরুম, ৬টি বারান্দা, একটি ইনডোর ও একটি আউটডোর সুইমিং পুল, একটি টেনিস কোর্ট, একটি জিম ও একটি স্টুডিও। স্পেনের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন এল পেইস জানিয়েছে, ইয়ামাল ইতিমধ্যে ১১ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে দিয়েছেন বাড়ির মালিককে! বার্সেলোনা তার সঙ্গে আগামি ৬ মরশুমের চুক্তি করেছে। তাতে ১৮ বছরের ফুটবলারের মাসিক বেতন হবে ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাছাছি! কারা থাকবেন এত বড় বাড়িতে? ইয়ামাল বরাবরই জানিয়েছেন, তার মা, বাবা আর ঠাকুমার সঙ্গে তিনি থাকবেন। এবার তার সঙ্গে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম যোগ করেছে, ইয়ামালের বিশেষ বান্ধবীও থাকতে পারেন। ২৫ বছর বয়সী আর্জেন্তাইন পপ সিঙ্গার নিকি নিকোলের সঙ্গে ইয়ামালের সম্পর্ক বেশ গভীর বলে জানাচ্ছে বিভিন্ন স্প্যানিশ ট্যাবলয়েড। নিকি সম্প্রতি একটি ম্যাগাজিনকে বলেওছিলেন তার সঙ্গে ইয়ামালের অন্তরঙ্গতা গভীর। এদিকে বার্সেলোনার সহকারী কোচ মার্কাস সর্গ বলেছেন, এল ক্লাসিকোর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিয়াল মাদ্রিদ সম্পর্কে ইয়ামালের মন্তব্যটা করা উচিত হয়নি। তার প্রভাব ম্যাচে ওর খেলায় পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের লাইভে ইয়ামাল মজার ছলে বলেছিলেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদ সবসময় চুরি করে আর অভিযোগ জানায়।’ এল ক্লাসিকোয় হারের পর মাদ্রিদ অধিনায়ক ড্যানি কার্ভাহাল ও তাঁর সতীর্থরা ইয়ামালের দিকে তেড়ে যান। ম্যাচে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়, পরিস্থিতি গরম হয়।
নেমারের প্রেমে মজলেন ইয়ামাল
নেমারের বাড়িতে গিয়ে চুটিয়ে আড্ডা মারলেন ইয়ামাল।
এবার ইয়ামালের সামনে রোনাল্ডো পালা
সতীর্থর সঙ্গে গোল করে উল্লাসে মাতলেন ইয়ামাল।
রিয়ালে কোনওদিন যাবেন না ইয়ামাল
না, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে কোনওদিন খেলবেন না বলে জানিয়ে দিলেন লামিনে ইয়ামাল। বিশ্ব ফুটবলে সকলেই জানে, রিয়াল মাদ্রিদে খেলার জন্য সকলে মুখিয়ে থাকে। অনেকে আবার এও বলেন, রিয়ালে খেলা তঁার জীবনের স্বপ্ন। স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যমে এক সাক্ষাত্্কারে ইয়ামাল জানিয়েছেন, তঁার ফুটবল জীবনে কখনও রিয়ালে খেলা অসম্ভব। বার্সেলোনার হয়ে এবার বিশ্ব ফুটবলে সাড়া ফেলে দিয়েছেন ১৭ বছরের ইয়ামাল। একদিকে যেমন গোল করেছেন, আবার গোলও করিয়েছেন প্রচুর। মরশুমের শেষে তবু আক্ষেপের অন্ত নেই ইয়ামালের। কেন? একটাই, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘরে তুলতে না পারার আক্ষেপ। প্রশ্ন হল, বার্সেলোনার হয়ে খেললেও রিয়াল মাদ্রিদের প্রতি তঁার ক্ষোভ কিসের? কিসের জন্য তিনি বার্সা ছেড়ে যেতে চাইছেন না? উত্তর পাওয়ার জন্য আপনাকে ফিরে যেতে হবে আজ থেকে ২৫ বছর আগে। ২০০০ সালে এখনও একটা ঘটনা বিশ্ব ফুটবল কখনও ভুলতে পারেনি। সেই বছর লুইস ফিগো বার্সা ছেড়ে যোগ দিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। ঘটে গেল ধুন্ধুমার কান্ড। চর্তুদিকে রিয়ালের উপর ক্ষোভ উগরে দিতে লাগলেন বার্সেলোনার সমর্থকরা। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে গেল ক্যাম্প নু্যতে যখন বার্সেলোনার বিরুদ্ধে খেলতে এলো রিয়াল। তখন খেলার মাঝে ছঁুড়ে মারা হয়েছিল শূকরের কাটা মুন্ডু। তখন থেকেই দু-দল লিখিতভাবে না হলেও মৌখিক স্তরে ঠিক করে নিয়েছে, একে অপরের দল থেকে ফুটবলার সই করাবে না। তাছাড়া ইয়ামাল ভালমতো জানেন, তিনি এখন বার্সেলোনার তারকা বনে গিয়েছেন। শুধু স্পেন নয়, সারা বিশ্বের ফুটবল মহল ইয়ামালের নাম জেনে গিয়েছে। তাই তারকা হওয়ার পর যদি বার্সেলোনা ছেড়ে রিয়ালে চলে যান তাহলে তঁাকে কোনওভাবে ভালমতো নিতে পারবে না বার্সার সমর্থকরা। তাছাড়া রিয়ালের সমর্থকরা মন থেকে মেনে নিতে পারবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে স্প্যানিশ তারকার। তার উপর বার্সার আতুঁড়ঘর লা মাসিয়া থেকে উঠে এসেছেন ইয়ামাল। বয়স মাত্র ১৭ বছর। কিন্তু এখন থেকেই তিনি দলের অপরিহার্য একজন ফুটবলার। তাই এই দলের প্রতি তঁার দুর্বলতা থাকা স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে ফুটবলার ও ক্লাবের মধ্যে সম্পর্ক যথেষ্ঠ ভাল। সেইজন্য ইয়ামাল চাইবেন না চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের পথে এগোতে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল লিওনেল মেসির ক্ষেত্রে। যিনি ফুটবল জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে গিয়েছেন বার্সেলোনায়। সাক্ষাত্্কারে ইয়ামাল এও জানিয়েছেন, আগামী মরশুমে তঁার লক্ষ্য কী থাকবে। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এবারের চেয়ে বেশি গোল করাই হবে তঁার প্রধান লক্ষ্য। তাছাড়া পারফরম্যান্সের আরও উন্নতি ঘটাতে চান তিনি। “আমার প্রধান লক্ষ্য থাকবে আগামী বছর আরও বেশি গোল করা। যাতে সমর্থকরা খেলা দেখতে এসে দারুন খুশি হন। শুধু গোল করলে হবে না, আরও বেশি ম্যাচ জিততে চাই। গোল করার জন্য সতীর্থকে সাহায্য করতে চাই। চেষ্টা করব পারফরম্যান্সের আরও উন্নতি ঘটাতে। আমার ধারণা, শারীরিক দিক দিয়ে যদি উন্নতি ঘটাতে পারি তাহলে আরও বেশি নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হব।” জানিয়ে দিয়েছেন ইয়ামাল। সেই সঙ্গে তিনি চাইছেন সমর্থকরা যেন তঁাদের উপর থেকে আস্থা না হারান। বিশেষ করে ইন্টার মিলানের কাছে ড্র করার পর বার্সার সমর্থকরা যেন ধরেই নিয়েছিলেন তঁাদের দল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বেশিদূর এগোতে পারবে না। “আর্সেনালের কাছে নিজেদের মাঠে হারার পরও রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকরা তঁাদের উপর থেকে আস্থা হারাননি। বরং রিয়াল সমর্থকরা বিশ্বাস করছিলেন, দল ঠিক তঁাদের ঘুরে দঁাড়াবে। সেইভাবে আমাদের উপরও ভরসা রাখতে হবে। সমর্থকরা যদি আমাদের উপর বিশ্বাস না রাখেন তাহলে আমরা বেশিদূর এগোব কী করে। তাই সমর্থকদের অনুরোধ করব, আপনারা আমাদের উপর ভরসা রাখুন। তাহলেই আমরা প্রতিকূল পরিস্থিতিকে জয় করতে পারব।”
মেসিকে নিয়ে ভাবেন না ইয়ামাল

দুই কিংবদন্তী। একদিকে ইয়ামাল, অন্যদিকে মেসি।
ইয়ামালকে নিয়ে তোলপাড় বিশ্ব
সেই অবিশ্বাস্য গোল করছেন ইয়ামাল। যখন পঁাচ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল করছেন বার্সা তারকা।