ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপেও থাবা বসাতে চান লিওনেল মেসি। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, কোপা আমেরিকার সঙ্গে বিশ্বকাপ ফুটবলের ট্রফি তঁার ক্যাবিনেটে শোভা পাচ্ছে। এবার আর্জেন্টাইন তারকার লক্ষ্য, নতুন করে শুরু হওয়া ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ট্রফিও ক্যাবিনেটে শোভার তালিকায় রেখে দেওয়া।
শনিবার মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামি মুখোমুখি হবে আল আহলি এফসি-র। ৩২ দলের নতুন ক্লাব বিশ্বকাপ মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে এই খেলা দিয়ে শুরু হবে। এই প্রতিযোগিতাকে সামনে এনে ফিফা চাইছে, ফুটবলের উন্মাদনাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে। ঠিক যেমনটি হয়ে থাকে বিশ্বকাপের সময়। তবে বিশ্বকাপ আর ক্লাব বিশ্বকাপ কখনও এক পংক্তিতে পড়তে পারে না। তবু চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না ফিফা। তবে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, এই প্রতিযোগিতা করার কোনও মানে হয়না। কিন্তু বিশ্ব ফুটবলের সেরা মুখ মেসি মনে করছেন, ক্লাব বিশ্বকাপও যথেষ্ট আগ্রহ বাড়াবে। উত্তেজনায় পরিপূর্ন হয়ে উঠবে বিশ্ব ফুটবল। ফিফাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্্কারে আর্জেন্টাইন তারকা বলেছেন, “কে কী বলছেন জানিনা। আমার কাছে এই প্রতিযোগিতার আকর্ষণ কোনও অংশে কম নয়। যথেষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক প্রতিযোগিতা হতে চলেছে। সত্যি বলতে কী, এই টুর্নামেন্টের অংশীদার হতে পেরে আমি নিজেকে খুব গর্বিত মনে করছি। খেলতে নামার আগে দারুন উত্তেজনা অনুভব করতে শুরু করেছি।” পরমুহূর্তে মেসিকে বলতে শোনা যায়, “অন্যান্য দলের হয়ে খেলার সময় যে প্রত্যাশা ছিল, এখানে খেলার সঙ্গে তাকে গুলিয়ে ফেলবেন না। এই দলের হয়ে এখানে খেলতে এসেছি, সম্পূর্ন আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে। আমার এখানে লক্ষ্য থাকবে, সেরা দলের বিরুদ্ধে নিজের পারফরম্যান্সকে ভাল জায়গায় নিয়ে যেতে। দারুন কিছু করার জন্য সত্যিই আমি মুখিয়ে আছি।”
২০২৩ সালে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়েছিলেন মেসি। তিনি আসার পর মেজর লিগ সকার বা এমএলএসে ঝড় উঠে যায়। তিনি যোগ দিয়েই ৭৪ পয়েন্ট করে এমএলএস সাপোর্টার্স শিল্ড জিতে নেন। তারই সুবাদে ইন্টার মায়ামি ক্লাব বিশ্বকাপ খেলার ছাড়পত্র জোগাড় করে। দীর্ঘদিন আমেরিকায় থাকার দরুন মেসি বুঝে গিয়েছেন, আমেরিকান ফুটবল প্রেমীরা এই খেলা দেখার জন্য সর্বোতভাবে ঝঁাপাবেন। প্রত্যেকে আসবেন স্টেডিয়াম ভরাতে। ফলে টুর্নামেন্টের আকর্ষণ বহুগুণ বেড়ে যাবে। ফাইনাল হবে ১৩ জুলাই নিউইয়র্ক সিটির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে। মেসি নিশ্চিত, সারা বিশ্বের ফুটবল অনুরাগীরা এই প্রতিযোগিতার স্বাদ নিতে অবশ্যই আমেরিকায় আসবেন। যঁারা চাইবেন, বিশ্বকাপের মতোই ক্লাব বিশ্বকাপেও স্বচক্ষে খেলা দেখতে। “আমি নিশ্চিত সারা বিশ্বের ফুটবল প্রেমীরা দল বেঁধে আসবেন আমেরিকায় এই প্রতিযোগিতার সাক্ষী থাকতে। বিশ্ববাসীকে নাড়া দেবে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।” মেসি মনে করছেন, এই প্রতিযোগিতায় বহু দলের ফুটবলার আছেন যাদের দেখার জন্য সকলে খুবই আগ্রহী। “বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোতে খুব নামী ফুটবলাররা খেলে থাকেন। সেইসব গুরুত্বপূর্ণ দলের ফুটবলাররা আসবেন এই প্রতিযোগিতায় খেলতে। ফলে দর্শকরা তঁাদের খেলা দেখার জন্য অবশ্যই মাঠে আসবেন। এমন সুবর্ণ সুযোগ নিশ্চয় কেউ হারাবেন না।” বলেন মেসি।
আর্জেন্টাইন তারকা প্রতিযোগিতায় কোন দলগুলো ভাল রেজাল্ট করবে তার একটা আভাস দিয়েছেন। তঁার মতে, দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপের দলগুলোর মধ্যে মূলত লড়াই হবে। সেইজন্য এইসব দলের বিরুদ্ধে খেলার জন্য বহু দল মুখিয়ে আছে। ফুটবলাররা চাইবে বিশ্বের সেরা দলগুলোর বিপক্ষে নিজেকে তুলে ধরতে। মেসি তাই বলছিলেন, “সেইসব দলের বিরুদ্ধে খেলার একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। বিশ্বের সেরা দলগুলোর বিরুদ্ধে খেলতে নেমে বহু ফুটবলার নিজেদের উজাড় করে দেবে। যারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখবেন বা মাঠে নেমে খেলা ফুটবলাররা একটা দারুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন।”