ব্যাটসম্যানরা দলকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ম্যাচ জেতায় বোলাররা। ক্রিকেট অভিধানে কথাটি প্রবচনের কাজ করে। একথা সবাই মানেন। বলেন, ব্যাটসম্যানরা ইনিংকে টেনে নিয়ে যান। কিন্তু ম্যাচ জেতায় বোলাররা। কদিন আগে চেন্নাইয়ের মাটিতে বোলারদের দাপটে সহজে ম্যাচ জিতেছিল কেকেআর। ১০৩ রান তাড়া করতে নেমে দশ ওভারে টার্গেটে পৌঁছে ম্যাচ জিতে নেয়। পাঞ্জাবের মাটিতে টার্গেট ছিল ১১২ রানের। আশা করা গিয়েছিল, চেন্নাইয়ের মতো একইভাবে রাহানের ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়বেন। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটা হল। ১৬ রনে ম্যাচ হেরে আবার চাপে পড়ে গেলেন রাহানেরা। সাত ম্যাচের মধ্যে চারটিতে হার। এরপর কি হবে! গত মরশুমে গোটা টুর্নেমেন্টে কেকেআর তিনটি ম্যাচ হেরেছিল। এবার শুরুতেই ব্যর্থতা পিছু ছাড়ছে না। কি হলে এই দলের।
মঙ্গলবার পাঞ্জাবের মাঠে দলের ব্যর্থতার পুরো দায় নিজের ঘাড়ে নিলেন অধিনায়ক রাহানে। তিনি বললেন, আমার জন্যই দল চাপে পড়ল। না হলে সহজ টর্গেটের পিছনে ছুটে ম্যাচ হারব কেন! একসময় আমাদের লক্ষ্য ছিল আট উইকেট হাতে নিয়ে ৫১ বলে ৫০ রান করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে কেউ ম্যাচ হারে। আমরা হারলাম। এই ব্যর্থতার পুরো দায় আমার। আমি খুব খারাপ শট খেলেছি। সেই সময় ওই শট খেলা ঠিক হয়নি। চাহালের বলকে সুইপ মারতে গিয়ে ফস্কাই বল ব্যাটে না লেগে প্যাডে লাগে। আম্পায়ার আউট দিতে কি করব বুঝতে পারিনি। পরে অনেকেই বলেছেন ডিআরএস নেওয়া উচিত ছিল। আমি সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম না। বল কি স্ট্যাম্পের বাইরে ছিল। আমার পা কি অফস্ট্যাম্পের বাইরে থেকে ভিতরে ঢুকছিল। বল প্যাডে কখন লাগে। এই সব অঙ্ক তখন ঠিকভাবে বিচার করতে পারিনি। তাই ননস্ট্রাইকার রঘুবংশীর কাছে জানতে চাই। ও আমাকে ঠিকভাবে বলতে পারল না। তাই ডিআরএস নষ্ট না করে ফিরে আসি। পরে মনে হয়েছে ডিআরএস নিলে হয়তো আউট হতাম না। ব্যর্থতার শুরু সেই জায়গা থেকে। বিশ্বাস করুন, আউট হয়ে ফিরে আসার সময় আমি ভাবতেও পারিনি যে ম্যাচ হেরে আমাদের হোটেলে ফিরতে হবে। তখন মনে হয়েছে সাত উইকেট হাতে আছে। ৫০ রান হয়ে যাবে। কিন্তু তারপর যা ঘটল তাকে কি বলব। আমার পক্ষে ব্যাখ্যা করার কিছু নেই।
সত্যি অবিশ্বাস্য। সেই জায়গা থেকে কোনও দল হারতে পারে। ম্যাচ জিতে যাব, এই মানসিকতা নিয়ে স্ট্রোক খেলতে গিয়ে কেকেআর ব্যাটসম্যানরা একে একে উইকেট দিয়ে আসেন। অবাক লাগে ৯ ওভারে তিন উইকেটে ৭২ থেকে কেকেআর হঠাৎ করে ১২.৫ ওভারে ৮ উইকেটে ৭৯ হয়ে যায়। এর কোনও ব্যাখ্যা আছে! রাহানের কাছে নেই। তিনি নিজেও বলতে পারলেন না। শুধু জানালেন, কি বলব বুঝতে পারছি না। পরে মাথা ঠান্ডা করে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসতে হবে। আলোচনা করতে হবে। এর কারন খুঁজে বের করতে হবে। কার কাছে প্রশ্ন করব। আমি নিজেই তো ঠিকভাবে খেলতে পারলাম না। সেটাও তো আমাকে ভাবাচ্ছে। এই উইকেট এমন ছিল না যে আমরা ১১২ রান তুলতে পারব না।
উইকেটে তখনও রাসেল ছিলেন। মাসলম্যান রাসেল অনেক কিছু করতে পারেন। তিনি থাকা মানে শিবিরে ভরসা দেওয়া। ভয়ঙ্কর হয়ে ওটা চাহালের শেষ ওভারে তিনি শুরুতে কোনমতে বেঁচে যান। বল ব্যাটের ভিতরের দিকের কানায় লেগে লেগস্ট্যাম্পের গা ঘেষে বেরিয়ে যায়। কিন্তু তারপর! লং অফ, লং অন দিয়ে দুটি বিরাট ওভার বাউন্ডারি মারেন। পরের বল কভার দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান। চাহালের এক ওভারে ১৬ রান নিয়ে তিনি আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু রানা আউট অরোরা আউট হওয়ার পর রাসেল নিজের ভুলে শুধু উইকেট নয়, জয়ও তুলে দিলেন। আইপিএল ইতিহাসে এত কম রানের পুঁজি নিয়ে কোনও দল এর আগে ম্যাচ জিততে পারেনি। পাঞ্জাব সেটাই করে দেখাল। ম্যাচ হেরে আমার দোষ বলে চেঁচিয়ে লাভ নেই। ১২০ বলে ১১২ রান করতে না পারা বড় অপরাধ। এর কোনও ক্ষমা নেই।

ঋষভকে শেহবাগ, পুরনো ভিডিও দেখার পাশাপাশি কথা বল ধোনির সঙ্গেও
ঋষভ পন্থের কি হল! কোনও কিছু ঠিকভাবে করতে পারছেন না। দলের সাফল্য নেই। তাঁর ব্যাটে রানও নেই। কেন এমন হচ্ছে!