মোহনবাগানের নতুন কমিটির উপর বেজায় ক্ষুব্ধ সমর্থকরা। প্রত্যেকের একটাই অভিমত, ক্লাবের খেলা দেখতে এসে এভাবে হেনস্থা হওয়া সত্ত্বেও কোনও কর্তাকে নৈহাটি স্টেডিয়ামে দেখা যায়নি। সচিব সৃঞ্জয় বোস বা সভাপতি দেবাশিস দত্ত নানান কাজে ব্যস্ত থাকেন। মাঠে না যাওয়া তঁাদের পক্ষে মানায়। কার্যনির্বাহি কমিটির বাকি সদস্যদের মধ্যে কাউকে দেখা যাবে না কেন? প্রশ্ন উঠে গেল প্রথম ম্যাচেই।
মোহনবাগানের খেলা দেখতে যাওয়া বারাসতের মৃন্ময় চক্রবর্তী পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলছিলেন,“দল হারলে বিক্ষোভ একটু-আধটু হবেই। তাই বলে পুলিশ যেভাবে মোহনবাগান সমর্থকদের লাঠি পেটা করেছে তা একেবারে মেনে নেওয়া যায়না। কাউকে রেয়াত করেনি। এমন কী মেয়েদের গায়ে লাঠি মারতে উদ্যত হয়েছিল। প্রিয় দল হারলে সমর্থকরা চুপচাপ চলে আসবে, এটা কখনও হয়? ” কলকাতা থেকে নৈহাটি স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়া আর এক মোহনবাগান সমর্থক সজল বিশ্বাস আক্ষেপের সুরে বললেন, “পুলিশের হাতে নৈহাটি স্টেডিয়ামে যেভাবে মোহনবাগান সমর্থকরা মার খেয়েছে তা মানতে কষ্ট হচ্ছে। খারাপ লাগছে, ক্লাবের পক্ষ থেকে কেউ এই নিয়ে মুখ পর্য়ন্ত খুললেন না। এমন কী কার্যনির্বাহি কমিটির কোনও সদস্যকে দেখলাম না, আমাদের বঁাচাতে এগিয়ে আসছেন। সমর্থকরা এমন কিছু করেনি যারজন্য পুলিশকে এভাবে লাঠি চালাতে হবে।”
সোমবার নৈহাটি স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়া মোহনবাগান সমর্থকদের লাঠি পেটা করছে পুলিশ।
প্র্যাকটিশ মাঠ নিয়ে সমস্যায় পড়েছে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল। ডুরান্ডের খেলা ২২ তারিখ থেকে শুরু হবে। পয়লা জুলাই মঙ্গলবার থেকে সেনা বাহিনি যুবভারতী সংলগ্ন দুটো প্র্যাকটিশ মাঠ নিয়ে নিয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই মাঠে আপাতত প্র্যাকটিশ বন্ধ। দুই প্রধানের প্রশ্ন হল, এভাবে মাঠ নিয়ে নেওয়ার কোনও মানে হয়না। ইস্টবেঙ্গল প্র্যাকটিশ শুরু করেছে হাওড়া ময়দানে। মোহনবাগানকে প্র্যাকটিশ করতে হবে নিউটাউনে ফেডারেশনের মাঠে। যথেষ্ট দূরত্বে রয়েছে এই মাঠ। তাছাড়া অ্যাসট্রো টার্ফের উপর প্র্যাকটিশ করতে হবে মোহনবাগানকে। টার্ফের অবস্থা মোটেই ভালো নয়। দলের হাল এমনিতেই খারাপ। তার উপর যদি কেউ চোট পেয়ে বসেন তাহলে তো হয়েই গেল। আরও ঘনীভূত হবে সমস্যা। নিজেদের মাঠে প্র্যাকটিশ করার উপায় নেই। যেহেতু মাঠ সংস্কারের কাজ চলছে। শুরু হয়েছে বর্ষা। সেই কারণে মোহনবাগান শিবির দারুন ক্ষুব্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোহনবাগান ফুটবল টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে এক প্রথম সারির কর্তা বলছিলেন,“ডুরান্ড শুরু হবে ২২ জুলাই। অথচ মাঠ তারা অধিগ্রহণ করে নিল ১ জুলাই থেকে। আমরাই ডুরান্ড খেলবো কিনা জানিনা। তাছাড়া আইএসএল খেলা ৭টা দল নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সেই জায়গায় টুর্নামেন্ট আদৌ হবে কিনা কেউ বলতে পারবে না। এমন পরিস্থিতির সামনে দঁাড়িয়ে ডুরান্ড কমিটির এভাবে মাঠ নিয়ে নেওয়া একদম মানা যায়না।”
সিনিয়র টিমের প্র্যাকটিশ ১৫ আগস্ট নাগাদ শুরু করতে চায় মোহনবাগান। সেপ্টেম্বরে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের খেলা রয়েছে সবুজ-মেরুন শিবিরের। তাই মোহনবাগানের লক্ষ্য হল, ম্যাচ শুরুর চার সপ্তাহ আগে প্র্যাকটিশ শুরু করা। আইএসএল শুরুর দিনক্ষণ জানা থাকলে হয়তো অনেক আগে থেকে নেমে পড়তো মোহনবাগান। ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের এখন ডামাডোল পরিস্থিতি। আইএসএল হওয়া নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠে গিয়েছে। যেহেতু এফএসডিএলের সঙ্গে ডিসেম্বরে চুক্তি শেষ হয়ে যাবে। তাই এফএসডিএল এমন কিছু প্রস্তাব দিয়েছে যা মানলে ফেডারেশন সমস্যায় পড়তে বাধ্য। আইএসএল খেলা দলগুলো বুঝে উঠতে পারছে না আদৌ তারা কী করবে। মোহনবাগানও এখন সেই পথের পথিক।