পেনাল্টি স্পেশ্যালিস্ট বিশাল কাইথ(Vishal Kaith)। তাঁর বিশ্বস্ত হাতেই শিল্ড এবার মোহনবাগানের(MBSG)। জয় গুপ্তার(Jay Gupta) শট বাঁচানর পর থেকেই শুরু হয়েছিল অপেক্ষাটা। মেহতাব সিং( Mehtab Singh)শেষ শট নিতেই যুবভারতীতে শুরু সবুজ-মেরুন উল্লাস। টাইব্রেকারে ইস্টবেঙ্গলকে(Eastbengal) ৫-৪ গোলে হারিয়ে দীর্ঘদিন পর ফের আইএফএ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান(MBSG)। হিরোশি(Hiroshi Ibusuki) ম্যাজিক দেখতে পেল না যুবভারতী। শেষমুহূর্তে দেবজিতকে নামিয়েও চমক দিতে পারলেন অস্কার ব্রুজোঁ(Oscar Bruzon)। নির্ধারিত সময়ে এদিন ম্যাচ শেষ হয় ১-১ গোলে। অবশেষে টাই ব্রেকারেই নির্ধারিত হয় শিল্ড চ্যাম্পিয়ন। ম্যান অব দ্য ম্যাচ মহেশ হলেও, মোহনবাগান শিবিরের নায়ক যে বিশাল(Vishal Kaith) তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর হাত ধরেই তো ২১ তম শিল্ড(Ifa Shield) জিতল মোহনবাগান।
এদিন ইস্টবেঙ্গলের(Eastbengal) বিরুদ্ধে শুরু থেকেই গোল তুলে নিতে মরিয়া ছিল মোহনবাগান(MBSG)। ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় লিস্টন এবং ৮ মিনিটের মুখে ম্যাকলরেন(Jamie Maclaren) সহজ সুযোগ মিস না করলে তখনই এগিয়ে যেতে পারত সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। যদিও তেমনটা হয়নি। ইস্টবেঙ্গল(Eastbengal) শুরু থেকে বলের দখল রাখলেও, বারবারই মোহনবাগান বক্সে আটকে যাচ্ছিল। ম্যাচের বয়স যখন ৩২ মিনিট। আনোয়ারের ভুলে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। যে কামিন্স(Jason Cummins) তাদের সবচেয়ে বড় ভরসা, তিনি বল মারলেন বাইরে। এরপর থেকেই যেন গোল পেতে মরিয়া আক্রমণ শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। মুহূর্মুহু ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণে ৩৫ মিনিটের মাথাতেই সাফল্য। মহেশের বাড়ানো পাসে হামিদের(Hamid Ahadad) গোল। মোহনবাগানকে(MBSG) পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার আগেই বারবার আক্রমণে যায় ইস্টবেঙ্গল। কখনও বিপিন তো কখনও মহেশের সাজানো পাস হামিদ মিস না করলে হ্যাটট্রিক করে ফেলেই পারতেন। মোহনবাগান গ্যালারী তখন চুপচাপ। অবশেষে তাদের ত্রাতা সেই আপুইয়া(Apuia)। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে আপুইয়ার(Apuia) দুরন্ত শট। সমতায় ফেরে মোহনবাগান।

বিরতির পর কোন পক্ষ এগিয়ে যায় সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন সকলে। কিন্তু প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধেও মোহনবাগানের সুযোগ নষ্টের খেলা ছিল অব্যহত। সেইসঙ্গে খানিকটা অনিয়ন্ত্রিত ফুটবলই যেন খেলছিল ইস্টবেঙ্গলও। আক্রমণে জোর বাড়াতে ৬৩ মিনিটে অস্কারের(Oscar Bruzon) একসঙ্গে তিনটি বদল। একসঙ্গে মাঠে আসেন হিরোশি এবং জয় গুপ্তা। কিন্তু যে হিরোশিকে নিয়ে এত হৈচৈ তিনি কিছুই করতে পারেননি। বেশ কয়েকটা হেড নিলেও তা ছিল নিস্প্রভ। অন্যদিকে মোলিনাও(Jose Molina) পরপর বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেন। দ্বিতীয়ার্ধের কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঠে আসেন রবসন(Robson Robinho)। মিগুয়েল(Miguel) বনাম রবসন লড়াই দেখার জন্য তখন সকলে মুখিয়ে ছিলেন। কিন্তু ডার্বির মঞ্চে দুই দলের ব্রাজিলিয় তারকাই কিন্তু সেভাবে নজর কাড়তে পারল না। রবসন কয়েকটা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি লিস্টন, ম্যাকলরেনরা। কিন্তু সকলের নজরই তখন ছিল দিমি কখন আসবে। মোহনবাগানের(MBSG) হয়ে বরাবরই ডার্বির নায়ক দিমিত্রি(Dimitri Petratos)। এত সুযোগ নষ্টের পরও কেন তাঁকে এত দেরীতে আনলেন মোলিনা, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠতেই পারে। এদিন মোহনবাগানের হয়ে অবশ্য দুরন্ত পারফর্ম্যান্স দেখিয়েছেন সাহাল। জয় গুপ্তার সঙ্গে কড়া ট্যাকলে তাঁর চোখের পাশে কেটে গিয়ে রক্ত ঝড়লেও মাঠ ছাড়েননি এই তারকা ফুটবলার। বারবারই মোহনবাগানের আক্রমণে রসদ যোগাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গোল হচ্ছিল না।
🏆🏆🏆 CHAMP21ONS 🏆🏆🏆#MBSG #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন pic.twitter.com/VCeSpa7o9x
— Mohun Bagan Super Giant (@mohunbagansg) October 18, 2025
তেমনই উইং দিয়ে ইস্টবেঙ্গলের খেলাটা চালাচ্ছিলেন নাওরেম মহেশ। প্রথমার্ধে বিপিন সিং দুরন্ত ছন্দে থাকলেও, বিরতির পর যেন খানিকটা দমে গিয়েছিলেন তিনি। বদলে গিয়েছিল তাঁর পজিশনও। অন্যদিকে হিরোশিকে আটকাতে ব্যস্ত ছিলেন অলড্রেড এবং রডরিগেজ। যদিও এদিন সেভাবে আক্রমণের ঝড় তুলতে পারেননি হিরোশি ইবুসুকি। রশিদ, মিগুয়েল কয়েকটা শট নিয়েছিল ঠিকই তবে সেগুলো গোল হওয়ার মতো নয়।

নির্ধারিত সময়ে ১-১ ফলাফল। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়। সেই অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে আসেন দিমিত্রি পেত্রাতস। সেই সময় কয়েকটা ভালো মুভমেন্ট তিনি করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু বারবারই গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয়। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
আর সেখানেই বাজিমাত সেই বিশাল কাইথের(Vishal Kaith)। অস্কারের বাজি ছিলেন এদিন দেবজিত। হবে নাই বা কেব পেনাল্টি শট বাঁচানোর জন্য তাঁকেই তো বলা হত সেভজিৎ। কিন্তু ভাগ্য সহায় দেয়নি। মোহনবাগানকে একবারও আটকাতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে জয় গুপ্তাকে রুখে দিয়েই মোহনবাগানের জয় নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন বিশাল(Vishal Kaith)। মেহতাবের শট জালে জড়াতেই যুবভারতীতে শুরু সবুজ-মেরুন বিজয়োল্লাস।







