মোহনবাগানের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেঙ্গালুরুর

এতদিন চলছিল কানাঘুষো। এবার সরকারিভাবে ফেডারেশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করল বেঙ্গালুরু এফসি। জানিয়ে দিল, শনিবার মোহনবাগান-বেঙ্গালুরু আইএসএল ফাইনাল ম্যাচে যা ঘটেছে তা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। বরং এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে তারজন্য ফেডারেশনকে সতর্ক করার বার্তা দিতে অনুরোধ করল বেঙ্গালুরু। বুধবার ফুটবল ফেডারেশন ও ফুটবল স্পোর্টস ডেভলাপমেন্ট লিমিটিড বা এফএসডিএল-এর কাছে বেঙ্গালুরু এফসি এক লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। সেই অভিযোগ পত্রে তারা লিখেছে, “খেলার পর যেভাবে বাজি ফাটানো হয়েছে তা এক ধরনের জীবনহানির সংশয় থাকে। ফুটবল হল একটা সুন্দর খেলা। এমন ঘটনা ঘটলে সেই ফুটবলের সুন্দর স্পিরিট নষ্ট হতে বাধ্য। আমরা অনুরোধ করব দেশের প্রত্যেকটা স্টে়ডিয়াম আরও সুরক্ষিত করা হোক। যেখানে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে। এমন ঘটনা ফের ফুটবলে ঘটুক তা মোটেই আমাদের কাছে কাম্য নয়।” ক্লাবের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে কড়া ভাষায় ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে সতর্কবার্তা। সেই বার্তায় জানানো হয়েছে, “চরম বিশৃঙ্খলা শুধু নয়, বাজি ফাটানোর মাধ্যমে আমাদের সমর্থক ও আধিকারিকদের প্রকাশ্যে ভীতি সঞ্চার করালো এই ঘটনা। বুঝিয়ে দিল, প্রতিপক্ষ দলকে প্রচন্ড সতর্ক হয়ে মাঠে পা রাখতে হবে।” প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে, গত শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আইএসএল ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান-বেঙ্গালুরু এফসি। সেই ম্যাচে মোহনবাগান ২-১ গোলে জিতে যায়। খেলার শেষে সমর্থকরা জয়ের আতিশয্যে প্রচুর বাজি ফাটান। ফলে সেই আতসবাজির আগুনে বেঙ্গালুরু সমর্থকদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। তাই নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছিল। আতসবাজির আগুনের ফুল্কি এসে বেঙ্গালুরু সমর্থকদের গায়ে পড়ে। বেশ কয়েকজন বেঙ্গালুরুর সমর্থক আহত হন। একজনের চোখে তো সেই ফুল্কি গিয়ে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তঁার চিকিতসা শুরু করা হয়েছিল। তবে আহতদের তালিকায় রয়েছেন বেঙ্গালুরু এফসির মালিক পার্থ জিন্দাল। আতসবাজির ফুল্কি এসে পার্থের জার্সিতে পড়ে। ফলে জার্সির অনেকটা অংশ পুড়ে যায়। খেলার শেষে বেঙ্গালুরুর পক্ষ থেকে পুরো ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় সবিস্তারে তুলে ধরা হয়েছিল। যদিও যুবভারতীতে শুধু এমন ঘটনা ঘটেছে তা নয়, প্রথম সেমিফাইনালে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে টাটা নগরীতে বেশ কয়েকজন মোহনবাগান সমর্থক আহত হয়েছিলেন। সেদিনকার ঘটনার জন্য দায়ী ছিল জামশেদপুরের কিছু উশৃঙ্খল সমর্থক। তবে পুলিশের লাঠির ঘায়ে এক মোহনবাগান সমর্থকের মাথা ফেটে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে বেঙ্গালুরু ফেডারেশন ও এফএসডিলকে অভিযোগ জানিয়ে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তারজন্য অনুরোধ রাখল।
নীতিনকে ডোবালো আত্মবিশ্বাস

সময়ের ব্যবধান মাত্র এক মাইক্রো সেকেন্ড। আর তাতেই হাতছাড়া হল সোনার পদক। নাহলে ভারতের ঝুলিতে একটা সোনা আসা নিশ্চিত ছিল। সেই নিশ্চিত সোনা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলেন নীতিন গুপ্ত। একেই বোধহয় বলে ওস্তাদের মার শেষ রাতে। নাহলে নীতিন যেখানে শেষ ৫০ মিটারেও এগিয়ে ছিলেন। যেখানে সকলে ধরেই নিয়েছিলেন, ভারতের সোনা পাওয়া কেউ আটকাতে পারবে না। সেখানে কেন এমন ঘটবে? বুধবার সৌদি আরবের দাম্মামে ষষ্ঠ এশিয়ান অনূর্ধ্ব-১৮ অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় ৫০০০ মিটার দৌড়ে ভারতের নীতিন গুপ্ত রুপো পেলেন। সোনা পেয়েছেন চিনের ঝু নিংহাও। চিনের ঝু যেখানে ৫০০০ মিটার দুরত্ব অতিক্রম করতে সময় নিয়েছেন ২০ঃ২১.৫০ সেকেন্ড। সেখানে নীতিনের একই দুরত্ব অতিক্রম করতে সময় গিয়েছে ২০ঃ ২১.৫১ সেকেন্ড। তৃতীয় স্থানে ছিলেন চাইনিজ তাইপের শেং কিন লো। তঁার সময় গিয়েছে ২১ঃ ৩৭.৮৮ সেকেন্ড। মাত্র এক মাইক্রো সেকেন্ডের ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর স্বভাবতই নীতিন পড়ে গিয়েছেন প্রশ্ন চিহ্নের সামনে। তাহলে কি নীতিন শেষ মুহূর্তের দৌড়ে ভেবে নিয়েছিলেন, তঁার জয় নিশ্চিত? তঁাকে হারানোর জায়গায় নেই চিনের ঝু? অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ডুবিয়ে দিল নীতিনকে? ১৭ বছরের নীতিন গত মাসে পাটনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় যুব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১৯ঃ২৪.৪৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে নিজের করা জাতীয় রেকর্ড ভেঙেছিলেন। সুতরাং তঁার ৫০০০ দৌড়ে কম সময় করার ক্ষমতা যে রয়েছে তা অস্বীকার করা যাবে না। যারজন্য রুপো পাওয়ার পরও সমালোচনার সামনে পড়ে গিয়েছেন নীতিন গুপ্ত। যদিও দাম্মামের মিটে নিজের করা রেকর্ড তিনি ভাঙতে পারেননি। তবে নীতিন দেখালেন আগামী দিনে ভারতের সম্ভাবনাময় এক অ্যাথলিটের উদয় ঘটছে। যিনি আগামী দিনে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে নিজের পদচিহ্ন রেখে আসতে পারবেন।
ক্যান্সারকে জয় করে আইপিএলের মঞ্চে ফিরছেন অ্যালান উইলকিন্স

নেভার গিভ আপ – এই মন্ত্রে দুরন্ত ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে গিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মারণ রোগকে হারিয়ে আবার আইপিএলের মঞ্চে ফিরছেন অ্যালান উইলকিন্স। গলার ক্যান্সারে ভুগছিলেন প্রবাদ প্রতিম ধারাভাষ্যকার। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের প্রাক্তন ক্রিকেটার ৭১ বছরের উইলকিন্সকে ক্যান্সারমুক্ত বলে রায় দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারপরই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন ফিরতে চলেছেন আইপিএলের কমেন্ট্রি বক্সে। খুব শীঘ্রই তিনি ভারতে পৌঁছে যাবেন। ক্রিকেটার হিসাবে তিনি ছিলেন বাঁহাতি পেসার। খেলতেন গ্ল্যামারগন ও গ্লস্টারশায়ারে। কিন্তু চোটের জন্য সংক্ষিপ্ত হয় উইলকিন্সের ক্রিকেট জীবন। তারপরই তিনি বেছে নেন ধারাভাষ্য দেওয়ার কাজকে। তাঁর দুর্দান্ত ধারাভাষ্য শুধু ক্রিকেটেই নয়, শোনা যায় রাগবি, টেনিস, গলফের আসরেও। অল্প দিনের মধ্যেই ভাষ্যকার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যান। দিনে দিনে নিজেকে প্রবাদ প্রতিম ভাষ্যকারের পর্যায়ে নিয়ে যান। কিন্তু দুরন্ত ক্যান্সার থমকে দিয়েছিল সব কিছু। শেষ পর্যন্ত ভয়ঙ্কর যুদ্ধটা জিতলেন। হারালেন ক্যান্সারকে।উচ্ছ্বসিত, আবেগপ্রবণ উইলকিন্স সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়েছেন, হাল ছেড়ো না বন্ধু।
যোগ দিলেন লখনউ শিবিরে, চোট সারিয়ে আইপিএলে ফিরতে চলেছেন স্পিড সেনসেশন মায়াঙ্ক যাদব

চোট সারিয়ে আবার আইপিএলে ফিরছেন মায়াঙ্ক যাদব। ইতিমধ্যেই তিনি লখনউ সুপার জায়ান্টস শিবিরে যোগ দিয়েছেন। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে পিঠের চোটের জন্য মাঠের বাইরে এই স্পিড সেনসেশন। পরে তাঁর পায়ের পাতাতেও চোট লাগে। বোর্ডের সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে রিহ্যাব করছিলেন মায়াঙ্ক। সেখান থেকে আইপিএেল খেলার জন্য ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছেন। তারপরই মঙ্গলবার রাতে যোগ দেন লখনউ শিবিরে। আগামি শনিবার রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ রয়েছে লখনউয়ের। সেই ম্যাচে মায়াঙ্ক খেলবেন কিনা, সেটা নির্ভর করছে লখনউয়ের হেড ফিজিও আশিস কৌশিকের ওপর। তিনি মায়াঙ্কের ফিটনেস খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন। মায়াঙ্ক বেশ চোট প্রবণ। গত দু বছরে তিনি পাঁচবার চোট পেয়েছেন, তাই তাঁর ব্যাপারে সতর্ক হয়েই পা ফেলতে চায় লখনউ সুপার জায়ান্টস। গত আইপিএলে দুর্দান্তভাবে উঠে আসেন তিনি। বলের গতিতে চমকে দেন সকলকে। কিন্তু চারটির বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি। কারণ সেই চোট। বাকি আইপিএল থেকেই ছিটকে গিয়েছিলেন। তাই কোনও ভুল করতে চায় না লখনউ ফ্র্যাঞ্চাইজি। ২২ বছরের তরণ পেসারকে সতর্ক হয়েই নাড়াচাড়া করতে চায় ম্যানেজমেন্ট। ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝড় তুলে উঠে এসেছেন এই তরুণ স্পিডস্টার। দু বছর ধরে সিকে নাইডু ট্রফি, মুস্তাক আলি ট্রফিতে বল হাতে ঝড় বইয়ে সকলের নজরে চলে আসেন। সেখান থেকেই আইপিএলে উথ্থান। ২০২৪ আইপিএল থেকে ছিটকে যাওয়ার আগে ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন। তাই ১১ কোটি টাকায় তাঁকে ধরে রাখে লখনউ সুপার জায়ান্টস। আবার ফিরলেন শিবিরে। এবারের আইপিএলে গতির ঝড় তুলতে মুখিয়ে আছেন মায়াঙ্ক।
অসম্ভব চাহাল, আর জে মেহবাশের পোস্ট, নিজের উপর বিশ্বাস ছিল বলেই এমন সাফল্য

অসম্ভব…! আর জে মেহবাশের ইনস্ট্র্যাগ্রামে যুজবেন্দ্র চাহালকে নিয়ে পোস্ট। লিখেছেন, দারুন ট্যালেন্টেড ম্যান। আইপিএলে সব থেকে বেশি উইকেট পাওয়া বোলার। অসম্ভব…। ধনশ্রী ভার্মার সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার পর আর জে মেহবাশের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্কে জড়িয়েছেন যুজবেন্দ্র চাহাল। চারিদিকে এমনই গুঞ্জন। দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে তাঁদের একসঙ্গে গ্যালারিতে দেখতে পাওয়া যায়। তারপরই শুরু নতুন গল্প। তা হলে কি এই কারনে ধনশ্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে চাহালের। সে সব কথা থাক। মেহবাশের চোখে অসম্ভব মানুষটি সত্যি দারুন কিছু করে দেখালেন। মঙ্গলবার মুল্লানপুরে কেকেআরের বিরুদ্ধে একাই কামাল করলেন। তাঁর দাপটে কেকেআর সহজ পরিস্থিতিকে জটিল করে ১৬ রানে ম্যাচ হারল। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট পাওয়া চাহাল প্রমান করলেন, তিনি ফুরিয়ে যাননি। না হলে তিনি ম্যাচের সেরা কেন হবেন। এর থেকে প্রমান হয়, ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট। অদ্ভুত ব্যাপার এটাই যে ম্যাচে খেলার কথা ছিল না চাহালের। কাঁধে চোটের জন্য তিনি বাইরেই চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু খেলা শুরুর আগে ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করে তিনি মাঠে নামার অনুমতি পান। ভাগ্যিস চাহাল খেলতে নেমেছিলেন। না হলে পাঞ্জাবকে কে জেতাতেন। হেড কোচ রিকি পন্টিং ও অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার দুজনেই বলছিলেন, নিজেকে দারুনভাবে মেলে ধরেছে চাহাল। বলতে গেলে ম্যাচ একা ঘুরিয়ে দিয়েছে। তো এমন পারফরম্যান্সের পর চাহাল নিজে কি বলছেন! চাহালের কথায়- আমাদের রান খুব কম ছিল। ১১১ রান নিয়ে এই ম্যাচ বের করা কঠিন। তবে আমরা চাইছিলাম, পাওয়ার প্লে-তে ২-৩টি উইকেট তুলে নিতে। জানতাম পাওয়ার প্লে-তে উইকেট পেলে ওরা চাপে পড়ে যাবে। আমরা দুটি উইকেট তুলে নিলেও কেকেআর ম্যাচ প্রায় ধরে নিয়েছিল। আমি প্রথম ওভার বল করতে এসে দেখি উইকেটে টার্ন আছে। বল স্পিন করছে দেখে শ্রেয়স এসে আমাকে বলে অ্যাটাকিং মোডে চল। আমি স্লিপ রাখছি। ওদের শুরু থেকে চাপে ফেলতে হবে। তা হলে আমরা ম্যাচ ধরতে পারব। সেটাই হল। প্রথম ওভারে আমি উইকেট পেলাম। ব্যস, সেই শুরু। কেকেআর তারপর আর পারেনি। প্রথম তিন ওভারে চার উইকেট নিয়ে কেকেআরকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিই। তারপর তো জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। তবে চাহালের শেষ ওভারে রাসেল ১৬ রান নিতে চাপ বাড়েনি। না, তা নিয়ে আলাদা করে কোনও কথা তিনি বলেননি। আসলে আজকাল এই ফরম্যাটে ক্রিকেটাররা বলকে ফ্লাইট করাতে চান না। দুএকজন ছাড়া কাউকে সেভাবে দেখতে পাওয়া যায় না। চাহাল এদের মধ্যে ব্যতিক্রম। তিনি ফ্লাইট করান। পেসের বৈচিত্র আনেন। বলকে ডিক করান। আর এতেই তিনি সফল। সেটা আরও একবার করে তিনি দেখালেন। এমন ম্যাচে করলেন, যেখানে কেকেআরের সহজ জয়ের ম্যাচ কঠিন হয়ে হাত থেকে বেরিয়ে গেল।
আমিই দায়ি, দলের ব্যর্থতায় ব্যাখ্যা রাহানের

ব্যাটসম্যানরা দলকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ম্যাচ জেতায় বোলাররা। ক্রিকেট অভিধানে কথাটি প্রবচনের কাজ করে। একথা সবাই মানেন। বলেন, ব্যাটসম্যানরা ইনিংকে টেনে নিয়ে যান। কিন্তু ম্যাচ জেতায় বোলাররা। কদিন আগে চেন্নাইয়ের মাটিতে বোলারদের দাপটে সহজে ম্যাচ জিতেছিল কেকেআর। ১০৩ রান তাড়া করতে নেমে দশ ওভারে টার্গেটে পৌঁছে ম্যাচ জিতে নেয়। পাঞ্জাবের মাটিতে টার্গেট ছিল ১১২ রানের। আশা করা গিয়েছিল, চেন্নাইয়ের মতো একইভাবে রাহানের ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়বেন। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটা হল। ১৬ রনে ম্যাচ হেরে আবার চাপে পড়ে গেলেন রাহানেরা। সাত ম্যাচের মধ্যে চারটিতে হার। এরপর কি হবে! গত মরশুমে গোটা টুর্নেমেন্টে কেকেআর তিনটি ম্যাচ হেরেছিল। এবার শুরুতেই ব্যর্থতা পিছু ছাড়ছে না। কি হলে এই দলের। মঙ্গলবার পাঞ্জাবের মাঠে দলের ব্যর্থতার পুরো দায় নিজের ঘাড়ে নিলেন অধিনায়ক রাহানে। তিনি বললেন, আমার জন্যই দল চাপে পড়ল। না হলে সহজ টর্গেটের পিছনে ছুটে ম্যাচ হারব কেন! একসময় আমাদের লক্ষ্য ছিল আট উইকেট হাতে নিয়ে ৫১ বলে ৫০ রান করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে কেউ ম্যাচ হারে। আমরা হারলাম। এই ব্যর্থতার পুরো দায় আমার। আমি খুব খারাপ শট খেলেছি। সেই সময় ওই শট খেলা ঠিক হয়নি। চাহালের বলকে সুইপ মারতে গিয়ে ফস্কাই বল ব্যাটে না লেগে প্যাডে লাগে। আম্পায়ার আউট দিতে কি করব বুঝতে পারিনি। পরে অনেকেই বলেছেন ডিআরএস নেওয়া উচিত ছিল। আমি সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম না। বল কি স্ট্যাম্পের বাইরে ছিল। আমার পা কি অফস্ট্যাম্পের বাইরে থেকে ভিতরে ঢুকছিল। বল প্যাডে কখন লাগে। এই সব অঙ্ক তখন ঠিকভাবে বিচার করতে পারিনি। তাই ননস্ট্রাইকার রঘুবংশীর কাছে জানতে চাই। ও আমাকে ঠিকভাবে বলতে পারল না। তাই ডিআরএস নষ্ট না করে ফিরে আসি। পরে মনে হয়েছে ডিআরএস নিলে হয়তো আউট হতাম না। ব্যর্থতার শুরু সেই জায়গা থেকে। বিশ্বাস করুন, আউট হয়ে ফিরে আসার সময় আমি ভাবতেও পারিনি যে ম্যাচ হেরে আমাদের হোটেলে ফিরতে হবে। তখন মনে হয়েছে সাত উইকেট হাতে আছে। ৫০ রান হয়ে যাবে। কিন্তু তারপর যা ঘটল তাকে কি বলব। আমার পক্ষে ব্যাখ্যা করার কিছু নেই। সত্যি অবিশ্বাস্য। সেই জায়গা থেকে কোনও দল হারতে পারে। ম্যাচ জিতে যাব, এই মানসিকতা নিয়ে স্ট্রোক খেলতে গিয়ে কেকেআর ব্যাটসম্যানরা একে একে উইকেট দিয়ে আসেন। অবাক লাগে ৯ ওভারে তিন উইকেটে ৭২ থেকে কেকেআর হঠাৎ করে ১২.৫ ওভারে ৮ উইকেটে ৭৯ হয়ে যায়। এর কোনও ব্যাখ্যা আছে! রাহানের কাছে নেই। তিনি নিজেও বলতে পারলেন না। শুধু জানালেন, কি বলব বুঝতে পারছি না। পরে মাথা ঠান্ডা করে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসতে হবে। আলোচনা করতে হবে। এর কারন খুঁজে বের করতে হবে। কার কাছে প্রশ্ন করব। আমি নিজেই তো ঠিকভাবে খেলতে পারলাম না। সেটাও তো আমাকে ভাবাচ্ছে। এই উইকেট এমন ছিল না যে আমরা ১১২ রান তুলতে পারব না। উইকেটে তখনও রাসেল ছিলেন। মাসলম্যান রাসেল অনেক কিছু করতে পারেন। তিনি থাকা মানে শিবিরে ভরসা দেওয়া। ভয়ঙ্কর হয়ে ওটা চাহালের শেষ ওভারে তিনি শুরুতে কোনমতে বেঁচে যান। বল ব্যাটের ভিতরের দিকের কানায় লেগে লেগস্ট্যাম্পের গা ঘেষে বেরিয়ে যায়। কিন্তু তারপর! লং অফ, লং অন দিয়ে দুটি বিরাট ওভার বাউন্ডারি মারেন। পরের বল কভার দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান। চাহালের এক ওভারে ১৬ রান নিয়ে তিনি আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু রানা আউট অরোরা আউট হওয়ার পর রাসেল নিজের ভুলে শুধু উইকেট নয়, জয়ও তুলে দিলেন। আইপিএল ইতিহাসে এত কম রানের পুঁজি নিয়ে কোনও দল এর আগে ম্যাচ জিততে পারেনি। পাঞ্জাব সেটাই করে দেখাল। ম্যাচ হেরে আমার দোষ বলে চেঁচিয়ে লাভ নেই। ১২০ বলে ১১২ রান করতে না পারা বড় অপরাধ। এর কোনও ক্ষমা নেই।