হুড খোলা বাসে রোড শো চ্যাম্পিয়ন ডায়মন্ডহারবার এফসি-র

আইলিগ টু-তে চ্যাম্পিয়ন হয়েই আইলিগে গেল ডায়মন্ডহারবার এফসি। আইলিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল আগেই। শনিবার মিজোরামের জানমারি এফসি-কে ১-০ গোলে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে যায় এক ম্যাচ বাকি থাকতে চ্যাম্পিয়ন হয়েই আইলিগে যাচ্ছে কিবু ভিকুনার দল। কারণ দ্বিতীয় স্থানে থাকা জানমারির সঙ্গে তাদের পয়েন্টের তফাৎ ৭। তাই ৩৭ পয়েন্ট দাঁড়িয়ে থাকা ডায়মন্ডহারবার শেষ ম্যাচে বেঙ্গালুরু ইউনাইটেডের সঙ্গে যাই করুক চ্যাম্পিয়ন হওয়া আটকাবে না। আগামি ২৬ এপ্রিল বেঙ্গালুরু ইউনাইটেডের সঙ্গে ম্যাচের পরই ট্রফি তুলে দেওয়া হবে ডায়মন্ডহারবারকে। মাঠেই একপ্রস্থ সেলিব্রেশন হবে। তবে তারপর দিন ২৭ এপ্রিল ক্লাবের চিফ পেট্রন অভিষেক বন্দ্যাপাধ্যায়ের নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারেই হবে জমকালো রোড শো। হুড খোলা গাড়িতে ঘোরানো হবে কিবু ভিকুনহা, নরহরি শ্রেষ্ঠাদের। সেখানে নিজে উপস্থিত থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচ, ফুটবলার, সাপোর্ট স্টাফ – সবাই থাকবেন রোড শোতে। তিন বছরের মধ্যে ধূমকেতুর মত উঠে এল ডায়মন্ডহারবার এফসি। আইলিগ থ্রি থেকে তিন বছরের মধ্যে আইলিগের মূলপর্বে নিয়ে চলে গিয়েছেন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ক্লাবটা করে ছিলেন অভিষেক। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, আইলিগ চ্যাম্পিয় হয়ে আইএসএলে খেলা তাঁর স্বপ্ন। সেই স্বপ্নপূরণ থেকে আর মাত্র এক ধাপ দূরে কিবু ভিকুনহা একমাত্র কোচ, যিনি আইলিগ থ্রি, আইলিগ টু ও আইলিগের মূলপর্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তিনি বলেন, ডায়মন্ডহারবারের প্রোজেক্ট পছন্দ হয়েছিল বলেই দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তবে জানিয়ে দিলেন, এবার লড়াইটা অনেক বেশি কঠিন।
নাটকীয় জয় বার্সেলোনার

সকলে যখন ধরেই নিয়েছেন আর কোনও আশা নেই। রিয়ালের থেকে পয়েন্টের ব্যবধান বাড়ার সম্ভাবনা নেই দেখে যখন এক এক করে বেশ কিছু সমর্থক মাঠ ছাড়ছেন। ঠিক তখনই বজ্রপাত ঘটলো বার্সেলোনার মাঠে। পেনাল্টিতে গোল করে জিতিয়ে দিলেন রাফিনিয়া। বার্সেলোনা ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে দিল সেল্টা ভিগোকে। তবে জিতলেও বড়সড় ক্ষতি হয়ে গেল লিয়নডস্কির চোট। এখনও বোঝা যাচ্ছে না সেই চোট কতটা গুরুতর। তবে পরিস্থিতি যা তাতে বলা যাচ্ছে না সহজে মাঠে ফিরে আসতে পারবেন পোলিশ স্ট্রাইকার। গতম্যাচে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে হেরে গিয়েছিল বার্সা। দ্বিতীয় লেগের খেলায় বার্সা হেরে বসে ৩-১ গোলে। তবু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে উঠতে সমস্যা হয়নি বার্সেলোনার। যেহেতু প্রথম লেগের খেলায় ৪-০ ব্যবধানে জিতেছিল বার্সা। হেরে যাওয়ার জন্য হোক কিংবা অন্য যে কোনও কারণের জন্য ঘটুক, বার্সেলোনা যে এই ম্যাচ জিততে পারে তা কেউ কল্পনা করেনি। অতিরিক্ত ৮ মিনিটের মাথায় রাফিনিয়া পেনাল্টি থেকে গোল দিয়ে কোনওমতে বার্সাকে জেতান। নাহলে ৬৭ মিনিট অব্দি ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল সেল্টা ভিগো। সেল্টা ভিগো না বলে বলা উচিত বোরহা ইগলেসিয়াসের সামনে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়েছিল বার্সা। একাই তিনটে গোল করে তিনি বার্সেলোনাকে চাপে ফেলে দেন। অথচ খেলা শুরুর ১২ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সা। ফেরান তোরেস গোলটা করেন। গোল খাওয়ার ৪ মিনিটের ব্যবধানে গোল দিয়ে ভিগোকে সমতায় নিয়ে আসেন ইগলেসিয়াস। প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। কিন্তু বিরতির পর গোল করে ভিগোকে এগিয়ে দেন সেই ইগলেসিয়াস। তখন খেলা হয়েছে ৫২ মিনিট। ১০ মিনিট পর ফের গোল করে হ্যাটট্রিক সম্পন্ন করেন তিনি। সেই সঙ্গে ভিগো এগিয়ে যায় ৩-১ গোলে। সেই ম্যাচ যে ঘুরে দঁাড়াতে পারে বার্সেলোনা তা কট্রর সমর্থকরাও ভাবেননি। অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী থাকলেন রাফিনিয়া। তার আগে ওলমো গোল দিয়ে বার্সাকে নিয়ে এসেছিলেন ২-৩ গোলের ব্যবধানে। ৬৮ ও ৯৮ মিনিটে দুটো গোল করে তিনি দলকে জেতালেন তাই নয়, রিয়ালের থেকে দলকে নিয়ে গেলেন ৭ পয়েন্টের ব্যবধানে। দানি ওলমোকে বক্সের মধ্যে ফাউল করা হয়েছিল। বার্সার ফুটবলাররা পেনাল্টির দাবি জানাতে থাকেন। রেফারি ভারের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে যান রাফিনিয়া। তখন খেলা ৯৮ মিনিট গড়িয়ে গিয়েছে। দুটো টুর্নামেন্টকে এখন পাখির চোখ করেছেন রিয়াল কোচ আনচেলেত্তি। যার মধ্যে একটা লা লিগা হলে অপরটা হল কোপা দেল রে। ২৭ এপ্রিল কোপা দেল রে-র ফাইনালে মুখোমুখি হবেন বার্সেলোনার। সেখানে কী ঘটবে তা ভবিষ্যত বলবে। কিন্তু লা লিগা যে ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছে তঁার সামনে থেকে তা এখনই বলে দেওয়া যায়।
ব্রাজিলের নাম শুনে চমকে গেলেন আনচেলেত্তি

ব্রাজিলের পথ কি পা বাড়াতে রাজি নন কার্লো আনচেলেত্তি? বাস রিয়াল মাদ্রিদের মতই ব্র্যাকে গিয়ে অগ্নি গ্রোপের শিকার হতে না চান তিনি? আর্নালসেলের কাছে দু-লেগ ক্ষমতা ৫-১ গোলে হেরে সদস্য লিগ থেকে ছিটকে নির্দেশিকা রিয়াল। তারপর দেওয়া কার্লোকে নিয়ে নেতার ঝড়। শুধু সম্প্রদায় লিগ নয়, লা লিগ। সব রিয়াল সমর্থক সম্প্রচার করা। তাই ইতালির কাউন্সিলের উপর থেকে ক্রমাগত আস্থা সরে সমর্থকদের। চাপে পড়ে রিয়াল ক্লাবের টিম মনেজমেন্ট। তঁারা আলোচনা করতে পারছেন না কার্লোকে ছেড়ে, না রেখে? তবে ৬৫ বছর কাউন্সিল এই সব ক্লাবকে পাত্তা দিতে রাজি। তিনি চাইছেন যে সামনের সামনের ট্রুতে উত্তরের পথ রিয়ালকে বিবেচনা আনতে। যদি আপনি সফল হন তাহলে তাঁকে আর পেছন তাকাতে হবে না। তাই যতই গুঞ্জন উঠুক, তত তঁকে রিয়াল ছাড়ার পথ ঠেলে দেওয়া না কেন, তিনি কিন্তু দেখতে খোশমেজাজে। তবে ব্রাজিল জাতীয় গুরুতর দায়িত্ব নেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ব্রাজিল গুরুতর দায়িত্ব নেব? নেই। এটুকু বলতে পারি, বাকি দলের দিকে এগিয়ে আছি। যাতে করে আমরা টুর্নামে সফল হতে পারি সেইজন্য ভাব-চিন্তা করছি৷ মুখর মধ্য টুর্নামেন্ট বলতে লা লিগা ও কোপাদেল রে। কোপা দেলে রে-র সুযোগে মোকাবিলা করতে হবে বার্সেলোনার সাথে। যা হবে ২৭ এপ্রিল। বাকি দুই সপ্তাহের মধ্যে বার্সেলোনার সঙ্গে দু-বার বার করতে হবে। লা লিয়্যাথিন রিয়ালের প্রতিগামী অ্যাথলেটিক বিলবাও। সেই ম্যাচ খেলতে নামার আগে তুরীয় মেজে দেখা গেল আনচেলত্তিক। সত্যিকারের ব্রাজিলের একের পর এক বঙ্গের প্রসঙ্গ উঠলেই আনচেলেত্তির নাম ভেসেসের সামনে। বিশেষ করে ২৬ মার্চ জেন্টিনারের বিরুদ্ধে ৪-১ গোলে হারার পরের আনই আর্ সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। একটা বছর বাকি। অনুষ্ঠান এখনো ব্রাজিল জাতীয় দল ঠিক করতে পারল না। দরিভালকেজেনটিনার ইরুদ্ধে পরসারিত অর্গানিক ফুটবল হারার ফল ফেডারেশন। কিন্তু ইতালি কাউন্সিল রিয়াল ফুটবলারদের উপর দারুন সন্তুষ্ট। তিনি মনে করেন, দ্বিতীয়বার রিয়ালে ফেরার পর যেভাবে ফুটবলাররা তাঁহার পাশে রয়েছে তাকে উচ্ছ্বসিত। “আমি রিয়াল শান্তির ভুলদের চিরকৃতজ্ঞ। তিনি বলেন আনচেলেতি। ২০২৬ সাল অব্দি তিনি রিয়ালের সঙ্গে বন্ধন। তার আগে যে তাঁকে বিদায় নিতে হবে এই নিয়ে সন্দেহ নেই। এর আগে স্বয়ং আনচেলেত্তিও বলেছিলেন, “২০২৬ সাল অব্দি যে আমি রিয়ালে থাকতে তার কারণ নেই। সত্য সেই সময় বোদ্ধহয় এসেছিলেন।
পাখির চোখ করে ওড়িশা গেল ইস্টবেঙ্গল

‘শেষ আশার’ তরী ভাসাতে এবার সুপার কাপ খেলতে চললো ইস্টবেঙ্গল। শনিবার ওড়িশা রওনা হওয়ার আগে লাল-হলুদ শিবির সকালে প্র্যাকটিশ করে নেয়। দুপুরের ফ্লাইটে যায় অস্কার ব্রুজো বাহিনি। প্রথম ম্যাচ রবিবার। খেলার সময় পাল্টে গিয়েছে। উদ্বোধন দিন রবিবার রাত আটটায় ইস্টবেঙ্গল মুখোমুখি হবে কেরল ব্লাস্টার্সের। একই দিনে মোহনবাগানের খেলা ছিল চার্চিল ব্রাদার্সের সঙ্গে। প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে চার্চিল। তাই বাই পেয়ে গিয়েছে মোহনবাগান। তবে রবিবার যে দল জিতবে তাদের মোকাবিলা করতে হবে মোহনবাগানের সঙ্গে। সেই ম্যাচ হবে ২৬ তারিখ। অস্কার ব্রুজো কলকাতা ছাড়ার আগে জানিয়ে দিলেন, এখন তাঁদের কাছে পাখির চোখ সুপার কাপ। “সব ট্রফি প্রায় জিতে নিয়েছে মোহনবাগান। আমরা সেখানে কিছুই পাইনি। তাই এবার সুপার কাপ জেতার জন্য আমরা মরিয়া। যেভাবেই হোক সেরা ট্রফিটা জিতে নিয়ে আসতে চাই।”জানিয়ে দিলেন অস্কার ব্রুজো। স্রেফ কথার কথা বললেন অস্কার তা কিন্তু নয়। কলকাতায় যোগ দেওয়া দুই প্রধানের তুলনায় অনেক বেশিদিন প্র্যাকটিস করেছে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগান নেমেছে সদ্য কয়েকদিন। মহামেডান তো নামেইনি। শোনা যাচ্ছে রবিবার থেকে নাকি প্র্যাকটিশ শুরু করবে। বেশিদিন প্র্যাকটিশ করলেও বিতর্কের সঙ্গে চোট-আঘাত তাড়া করে বেড়িয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। ক্লেটন সিলভার সঙ্গে কোচের ঝামেলা হওয়ায় তঁাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। অথচ গতবার সুপার কাপ জয়ের পেছনে প্রধান অবদান ছিল ক্লেটন সিলভার। চোটে ভুগছেন সওল ক্রেসপো। প্রথম ম্যাচে তঁার খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। গত দু-দিন বলের চেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন ফিজিওর কাছে। ক্রেসপো সম্পর্কে অস্কার জানালেন, “রিপোর্টে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। গত দু-দিন দলের সঙ্গে প্র্যাকটিশও করেনি। সাইড লাইনে ফিজিওর কাছে বেশি সময় কাটিয়েছে। তবু ক্রেসপোকে ২০জনের দলে রাখবো। চেষ্টা করব কিছুটা সময় খেলাতে।” কেরলের বিরুদ্ধে তাই চার বিদেশিকে নিয়ে শুরু করবে ইস্টবেঙ্গল। যেহেতু সুপার কাপকে পাখির চোখ করেছেন তাই অস্কার ঠিক করেছেন, খেলার স্টাইল কিছুটা বদলাবেন। ইস্টবেঙ্গলের হেডস্যার বলছিলেন, “ছেলেদের একটা কথা বলেছি, তোমরা নিজেদের সেরাটা দাও। শেষ আটে ইতিমধ্যে পৌঁছে গিয়েছে মোহনবাগান। কেরলের বিরুদ্ধে জিতলে আমরা একটা উত্তেজক ডার্বিতে নামতে পারব। গত তিন সপ্তাহ ধরে ছেলেরা প্র্যাকটিশ করেছে। খেলার স্টাইল কিছুটা বদলেছি। এবার দেখা যাক।” আইএসএলের লিগ টেবিলে দশম স্থানে ছিল ইস্টবেঙ্গল। তাছাড়া কোনও ট্রফি ঘরে ঢোকেনি। বাড়তি চাপ নিয়ে যে দল সুপার কাপ খেলতে নামবে এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অস্কার ব্রুজো তাই বলছিলেন, “চাপ আছে একটা ঠিকই। তাই বলে অতিরিক্ত চাপ নয়। গতবারের চ্যাম্পিয়ন আমরা। এখানে জিতলে আমরা পরের মরশুমে এএফসি খেলতে পারব। তাই এই প্রতিযোগিতা আমাদের বাড়তি প্রেরণা জোগাবে।” দলকে কিছুদিনের মধ্যে ৩৬০ মিনিট খেলতে হতে পারে। এটাই ভাবাচ্ছে অস্কারকে। তাই ইস্টবেঙ্গল কোচ জানালেন, “খুব কম দিনের মধ্যে আমাদের ৩৬০ মিনিট খেলতে হবে। নিজেদের সেরাটা তুলে ধরা ছাড়া উপায় নেই। আশা করছি কঠিন প্রতিযোগিতায় ছেলেরা নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরতে পারবে।” আনোয়ার আলি সম্পূর্ন ফিট। অস্কারকে ভাবাচ্ছে অন্য জায়গায়। এক, ধারাবাহিকতার অভাব। দুই, দিয়ামান্তোকোসের ফর্ম। গতবার যেখানে কেরলকে একাই বলতে গেলে টেনে তুলেছেন এবার সেখানে তিনি সম্পূর্ন ব্যর্থ। “আমরা যে খুব বেশি গোল খেয়েছি তা কিন্তু নয়। আসলে প্রচুর সুযোগ তৈরি করেও তাকে কাজে লাগানো যায়নি। তাই ফরোয়ার্ডদের এই জায়গায় বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। প্র্যাকটিশে ভালোভাবে নিজেকে তুলে ধরেছে দিয়ামান্তোকস। আমার ধারণা, সুপার কাপে নিজের সেরাটা তুলে ধরতে পারবে। তাছাড়া দলে গোল করার জায়গায় থাকতে হবে মেসি বাউলি, রিচার্ড স্যালিসদের। তাই রক্ষণকে যেমন ভরসা জোগাতে হবে, পাশাপাশি ফরোয়ার্ডদের কাজ হল গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।” বলেই ফেললেন অস্কার ব্রুজোঁ।
রাজস্থান হারলেও নজর কাড়লেন বৈভব

লাইনউ সুপার জায়েন্টস: ১৮০-৫ রাজস্থান রয়্যালস: ১৭৮- ৫ ঝড়ের পূর্বাভাস ছিল। ঝড়ও উঠল। সেই ঝড়ে চাপে লখনউ বোলিং। শার্দূল, আবেশ খানরা কোথায় বল ফেলবেন বুঝে উঠতে পারলেন না। যশস্বী জয়সওয়ালকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু পাওয়ার প্লে তে যিনি নজর কেড়ে নিয়েছিলেন তাকে আপনি না তুমি বলা উচিত সেটাও বোঝা যাচ্ছিল না। ১৪ বছর ২৩ দিন। বিহারের বৈভব সূর্যবংশী কামাল করে দিলেন। শার্দূল ঠাকুরকে কভারের ওপর দিয়ে যেভাবে ছয় মারলেন তাকে কি বলব? পরের ওভারে আবেশ খানকে লং অফের ওপর দিয়ে গ্যালারিতে যে বলটি পাঠালেন তার কি কোনও ব্যাখ্যা আছে? এসব দেখে একটা প্রশ্নই মাথা ঘোরপাক খাচ্ছিল, অসম্ভব মানসিক শক্তি না থাকলে এই ধরণের ক্রিকেট খেলা যায় না। বৈভব বেশি সময় উইকেটে ছিলেন না। তার ৩৪ রানের ইনিংসটিতে দুটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি ছিল(২০)। মার্কক্রমের বলে লখনউ অধিনায়ক ঋষভ পন্থ ক্ষিপ্রতার সঙ্গে তাকে স্ট্যাম্প করে দিতেই ডাগআউটে বসে থাকা জাহির খানরা হাপ ছেড়ে বাচেন। ১৮১ রানের লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজস্থান তখন ৪.৪ ওভারে ১ উইকেটে ৮৫। এই জায়গা থেকে ম্যাচ হারতে হলে খুব বাজে ব্যাটিং করতে হবে। নয়ত বা প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত বোলিং করতে হবে। প্রথমটি চোখে পড়ল। যশস্বী জয়সওয়াল (৭৪) আউট হতেই রাজস্থান প্রায় ম্যাচ থেকে হারিয়ে গেল। জয়ের সুযোগ কি একেবারেই ছিল না? ছিল। শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ২৫ রান। হাতে সাত উইকেট। এই জায়গা থেকে কেউ কি ম্যাচ হারে! রাজস্থান হারল পরিকল্পনাহীন ক্রিকেট খেলে। হেটমায়ারের আগে জুরেলকে কেন পাঠানো হল তার ব্যাখা নেই। জুরেলের কাছ থেকে একটাও বড় স্ট্রোক দেখা গেল না। হেটমায়ার তবু চেষ্টা করলেন। কিন্তু আবেশ খান হঠাৎ করে ‘বুমরা’ হয়ে উঠলেন। রাজস্থানের জারিজুরি শেষ। বুমরা যেমন ডেথ ওভারে ইয়র্কারের ওপর ভরসা রাখেন আবেশও সেই কাজটা করলেন। তাঁর তিন নম্বর ওভারে ছয় রান এলেও রাজস্থান উইকেট হারিয়ে বসে। আর শেষ ওভারের কথা কি বলব? কদিন আগে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে জেতার জন্য রাজস্থানের জেতার জন্য দরকার ছিল ৯ রান। সেই ম্যাচ জেতেনি রাজস্থান। জয়পুরেও তাই। জয়ের লক্ষ্যে ছুটতে গিয়ে রাজস্থান আটকে গেল ১৭৮ রানে। লখনউ জিতে গেল ২ রানে। ম্যাচের সেরা অবশ্যই আবেশ খান। যিনি প্রথম দুই ওভারে দিয়ে ছিলেন ২৬ রান। শেষ দুই ওভারে দিয়ে নিলেন ১১ রান ৩ উইকেট। এমন পারফরম্যান্সের পর অন্য কারো নাম ম্যাচের সেরাতে আসে কি! অন্যদিকে, চলতি আইপিএলে দ্বিতীয় হার দিল্লি ক্যাপিটালসের। অক্ষর প্যাটেলদের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে সহজেই ম্যাচ জিতে নিল গুজরাট টাইটান্স। বাটলারের দাপটে দিল্লির দেওয়া ২০৪ রানের লক্ষ্য চার বল বাকি থাকতেই পূরণ করে গুজরাট। ৩ রানের সেঞ্চুরি হল না জোশ বাটলারের। ৫৪ বলে ৯৭ রানে নট আউট রইলেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গত দিলেন সাই৷ সুদর্শন ও শেরফানে রাদারফোর্ড। ২১ বলে ৩৬ রান করে কুলদীপ যাদবের শিকার হন তিনি। ৩৪ বলে ৪৩ রান করে মুকেশ কুমারের শিকার হন রাদারফোর্ড। ৩ রানে ১১ রান ঝলক দেখিয়ে গেলেন রাহুল তেওয়াটিয়া। তবে দিনটা ভালো যায়নি শুভমান গিলের ৫ বলের ৭ রান করে করুণ নায়ারের থ্রোয়ে রান আউট হন তিনি। দিল্লর হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেন অক্ষর প্যাটেল। ৩২ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। কে এল রাহুল করেন ১৪ বলে ২৮ রান। ১৮ বলে ৩১ রান করেন করুন নায়ার। ২১ বলে ৩১ রান করেন স্টাবস। ১৯ বলে ৩৭ রান করেন আশুতোষ শর্মা। গুজরাটের হয়ে সবচেয়ে বেশি চার উইকেট নেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ।
আইএফএ-র ফুটবল অ্যাকাডেমি পলাশিতে

বহুদিনের লালায়িত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চলেছে আইএফএ। রাজ্য ফুটবল সংস্থা অথচ তার নিজস্ব কোনও অ্যাকাডেমি নেই। এই বদনাম বহুদিন ধরেই শুনতে হচ্ছিল আইএফএ-কে। এবার সেই বদনাম ঘুচিয়ে ফেলতে আগ্রহী রাজ্য ফুটবল সংস্থা। নদীয়ার পলাশিতে হতে চলেছে আইএফএ-র ফুটবল অ্যাকাডেমি। কিছুদিনের মধ্যে তা উদ্বোধন হয়ে যাবে। মাঠ, পরিকাঠামো সব প্রস্তুত। এখন চলছে শেষ তুলির টান। তেমনই জানালেন নদীয়া জেলা সভাধিপতি তারুন্নুম সুলতানা। মূলত তঁার উদ্যোগে মরুভূমির বুকে মরুদ্যানের সঞ্চার ঘটবে। পলাশি বলতে আমরা বুঝি, ভারতীয় স্বাধীনতার সূর্যাস্তের শুরু। যে যুদ্ধের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল ইংরেজদের ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার অধিকার অর্জন। সেখান থেকে জিতে এবার জেলা সভাধিপতি হয়েছেন তারুন্নুম সুলতানা। ২০১৬-১৭ সালে মাইনোরিটি সম্প্রদায়ের জন্য একটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়। নামেই তৈরি হলেও কাজের কোনও প্রতিফলন ছিল না। স্রেফ ইঁট, পাথর, সুড়কির সমাবেশে কয়েকটা বিল্ডিং তৈরি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু নতুন সভাধিপতি হয়েই তাতে হাত লাগান তারুন্নুম। কীভাবে ফুটবল অ্যাকাডেমি গড়া যায় তারজন্য চেষ্টা চালাতে থাকছিলেন। কিন্তু বাস্তবে প্রতিফলিত হচ্ছিল না। সেই সময় ধূমকেতুর মতো উদয় হন অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। আইএফএ-র প্রেসিডেন্ট হিসেবে কৃষ্ণনগরের একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই দুইয়ে দুইয়ে চার হয়ে যায়। তারুন্নুম ম্যাডাম প্রস্তাব দিতেই তাকে লুফে নেন অজিত বন্দে্যাপাধ্যায়। শুরু হয়ে যায় কাজ। “কৃষ্ণনগরের অনুষ্ঠানে আমিও গিয়েছিলাম। সেখানেই অজিতদাকে বলতে তিনি খুব আগ্রহী হন। তারপর আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বেশ কয়েকবার এসে দেখে গিয়েছেন। সবকিছু দেখে তিনিও দারুন খুশি।” আপ্লুত কন্ঠে বলছিলেন তারুন্নুম। অ্যাকাডেমির জন্য আইএফএ-র সঙ্গে নদীয়া জেলা পরিষদের মৌ সাক্ষর হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা মাঠে এখন চলছে পরিচর্যার কাজ। স্টেডিয়াম সংলগ্ন একটা মাঠ থাকলেও আশেপাশে রয়েছে বহু মাঠ। “ওই অঞ্চলটা বলতে পারেন খেলা পাগল। বিশেষ করে শীতকালে প্রচুর টুর্নামেন্ট হয়। এমন কী টিকিট কেটে ৭-১০ দিন ধরে চলে ফুটবল প্রতিযোগিতা। বিশ্বাস করবেন না, বহু খেলা পাগল মানুষ ওখানে আসেন খেলা দেখতে। যখনই ডাক পাই তখনই চেষ্টা করি ছুটে যেতে।” কথাবার্তায় ফুটে উঠছিল ক্রীড়াপ্রেমী তারুন্মুমের নানান দিক। কী নেই সেখানে? মাঠ থেকে গ্যালারি, ক্যান্টিন থেকে থাকার ঘর। সবকিছু এক ছাতার তলায় পাওয়া যাবে। “বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, জেলা সভাধিপতি হওয়ার পর আমি প্রথমেই ঠিক করেছিলাম, পলাশির ওই মাঠকে কাজে লাগাব। শুধুমাত্র যোগাযোগের অভাবে একটা পরিকাঠামোকে কখনও ধ্বংস করা যায় না। আমি একটা জিনিস বুঝি, যদি কাজে নিষ্ঠা থাকে, লক্ষ্য স্থির রাখা যায়, তাহলে যত কঠিন কাজই হোক না কেন, সফল মানুষ হবেই।” বলছিলেন নদীয়া জেলার সভাধিপতি। যে কোনও প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে প্রথমেই প্রয়োজন হয় অর্থ। এই দিকটাও ঠিক করে রেখেছেন তারুন্নুম ম্যাডাম। ইতিমধ্যে মাইনোরিটি ডিপার্টমেন্টে সাহায্যের আবেদন করা হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া প্রাথমিক স্তরে যে অর্থের প্রয়োজন তা জোগাচ্ছে নদীয়া জেলা পরিষদ। নামকেওয়াস্তে অ্যাকাডেমি গড়তে আবার তিনি রাজি নন। তাই আইএফএকে জানিয়েছেন, বিদেশি কোচ আনতে হবে। এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া ফুটবলারদের নিয়ে যেতে হবে কলকাতায় খেলতে। সেখান থেকে ছড়িয়ে দিতে হবে ভারতবর্ষের বিখ্যাত ক্লাবগুলোতে। তাই বলে এই অ্যাকাডেমিতে কেবলমাত্র নদীয়ার ছেলেরাই সুযোগ পাবে তা চাইছেন না তিনি। তঁার মতে, “নদীয়া জেলায় অ্যাকাডেমি হচ্ছে বলে, কেবলমাত্র আমাদের জেলার ছেলেদের সুযোগ দিতে হবে তা কখনও হতে পারে না। ফুটবলার বাছাইয়ের নানান পদ্ধতি নিশ্চয় আছে। সেই পদ্ধতি মেনে আমাদের জেলার যে কজন সুযোগ পাবে তা মেনে নিতে হবে।” অকপট স্বীকারোক্তি তারুন্নুম ম্যাডামের। পর্দানসীন, শিক্ষায় অনগ্রসর, আধুনিকতার মোড়কে ঢাকা নয়, এভাবে কতই না বলা হয় মুসলিম সম্প্রদায় মহিলাদের। কিন্তু তারুন্নুম সমস্ত প্রতিকূলতার পর্দাকে সরিয়েছেন তাই নয়, বুঝতে শিখেছেন কীভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া তরুন সমাজকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসতে হয়। তাইজন্য ইতিহাসে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট হওয়া মহিলা বলছিলেন,“এমনিতেই আমি খেলাধূলোকে ভালোবাসি। তার উপর আমার প্রথম থেকে লক্ষ্য ছিল, তরুন সমাজকে বর্তমান ধ্বংসের হাত থেকে বঁাচানো। ক্রমাগত মোবাইল, আড্ডা, বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে মাঠে আসার প্রয়োজনীয়তাকে এরা ভুলে গিয়েছে। সেইজন্য বর্তমান প্রজন্মকে মাঠমুখো করার জন্য আমার এই উদ্যোগ।” কাল যদি জেলার দায়িত্বে না থাকেন তাহলেও অ্যাকাডেমি বন্ধ হতে দেবেন না তিনি। “আমি জানিনা পরবর্তী জেলার দায়িত্বে যিনি আসবেন তিনি আমার সঙ্গে সহমত হবেন কিনা। যদি নাও হন তাহলেও অ্যাকাডেমি বন্ধ হতে দেব না। যতদিন বেঁচে থাকব, এই অ্যাকাডেমি চালিয়ে যাব। তেমন ক্ষমতা আমার রয়েছে।” বেশ জোর দিয়ে কথাগুলো বললেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, কারওর দিকে তাকিয়ে তিনি এই মহাযজ্ঞের প্রস্তুতি নিতে আসেননি। ডেভলাপমেন্ট বলতে শুধু আলো, রাস্তা, ঘর-বাড়ি তৈরি নয়। এমন কিছু করা যেখানে আগামী প্রজন্ম এরই আলোয় আলোকিত হতে পারে। তারুন্নুম তখন না হয় দূর থেকে রসস্বাদন করবেন।
আরসিবি ব্যাটসম্যানদের তুলোধোনা করলেন বীরেন্দ্র সেওয়াগ

রীতিমত অবাক। বিস্মিত বীরেন্দ্র সেওয়াগ। পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে যেভাবে ব্যাট করেছেন আরসিবি ব্যাটাররা, তাতে তাদের রীতিমত তুলোধোনা করলেন বীরেন্দ্র সেওয়াগ। এ কথা বলতে বীরুর কোনও দ্বিধা নেই যে, আরসিবি ব্যাটারদের সাধারণ জ্ঞান প্রয়োগ করা উচিত। শুক্রবার পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১৪ ওভারের ম্যাচে ১০০-রও কম রানে থেমে যায় আরসিবি। এতেই বেশ অসন্তিষ্ট সেওয়াগ। বীরু বলেন, “খুব খারাপ ব্যাট করেছে আরসিবি। সবাই বেহিসেবি শট খেলে আউট হয়েছে। একজন ব্যাটসম্যানও ভাল বলে আউট হয়নি। অন্তত একজন ব্যাটসম্যানের সাধারণ জ্ঞান প্রয়োগ করা উচিত ছিল। যদি হাতে উইকেট থাকত তাহলে ১৪ ওভারে তারা ১১০-১২০ রানে সহজেই পৌছে যেত, তাহলে অন্তত লড়াইটা দিতে পারত।“ পঞ্জাবের বেশিরভাগ বোলারই দুটি করে উইকেট পেয়েছন, কিন্তু আরসিবি ব্যাটাররা উইকেট ছুঁড়ে দিয়েছেন বলে মনে করেন সেওয়াগ। তিনি স্পষ্টই বলেন, উইকেট পাওয়া আর উইকেট আদায় করে নেওয়ার মধ্যে তফাৎ আছে। ঘরের মাঠে পরপর হারছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সেওয়াগ জানান, সমাধানের রাস্তা বার করতে হবে অধিনায়ক রজত পাতিদারকে। তিনি বলেন, “পাতিদারকে ভাবতে হবে। বোলাররা তো ভাল বল করছে, কিন্তু ব্যাসম্যানরা কেন এভাবে ব্যর্থ হবে? সমাধান খুঁজে বার করবে কে?” শুক্রবার আরসিবিকে হারিয়ে টেবিলের দু নম্বরে উঠে এসেছ পঞ্জাব কিংস। আরসিবি রয়েছে চার নম্বরে। এবার ভাল শুরু করেও মূলত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাতেই কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন বিরাট কোহলিরা। যদি এখনই সমাধান খুঁজে না বার করা যায় তাহলে আরও বড় সমস্যায় পড়বে আরসিবি, সতর্কবার্তা বীরুর।
ফুটবলার শুভ দাসকে সুস্থ করে তোলার উদ্যোগে এবার সামিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবও

গোটা ময়দানে সাড়া ফেলে দিয়েছে ফুটবলার শুভ দাসের করুণ কাহিনি। এক সময় দাপিয়ে ফুটবল খেলা শুভ পক্ষাঘাতে আজ প্রায় শয্যাশায়ী। সংক্রমণে বাদ গিয়েছে একটি হাতও। তাছাড়া নিদারুন আর্থিক সঙ্কট। চিকিৎসার খরচ যোগানো অসম্ভব। শুভর পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেয় পিআর সলিউশন। তাদের সেই উদ্যাগে এবার সামিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবও। ফুটবলার শুভ দাসের জন্য চেক তুলে দিল লালহলুদ। শুক্রবার সকালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, আদিত্য গ্রুপ ও পিআর সলিউশনের উদ্যাগে শুভ দাসের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়েছিল। আর সন্ধ্যায় শুভর জন্য চেক তুলে দিলেন ইস্টবেঙ্গল সচিব রূপক সাহা। ফুটবলারটিকে সুস্থ করে তোলার মহান উদ্যোগে এবার সামিল হল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। সচিব রূপক সাহা জানান, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বরাবরই এমন উদ্যোগে সামিল হয়েছে। ভবিষ্যতেও তারা শুভর পাশে থাকবেন বলে জানান। পাশাপাশি শুভ দাসের ঘটনা তুলে ধরার জন্য এবং তাঁর পাশে থাকার মূল উদ্যোগটা নেওয়ার জন্য পিআর সলিউশনকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
নেহালের দাপটে হারিয়ে গেল ডেভিডের লড়াই

আরসিবিঃ ৯ উইকেটে ৯৫ (১৪ ওভার) পাঞ্জাব কিংসঃ ৫ উইকেটে ৯৮ (১২.১ ওভার) বেঙ্গালুরুর মাঠ খুব বড় নয়। স্পিনাররা লাইনের একটু গরমিল করে ফেললে রক্ষে নেই। সেটাই শুক্রবারের ম্যাচে বড় করে দেখা দিল। একদিকে পাঞ্জাব কিংসেক বাঁহাতি স্পিনার ব্রার, অন্যদিকে লেগস্পিনার সুযশ শর্মা। দুজনে এমন মার খেলেন যে ম্যাচ একদিক থেকে আর একদিকে চলে গেল। বৃষ্টির জন্য ম্যাচ ২০ ওভার থেকে ১৪ ওভারে নেমে না এলে রান কোথায় গিয়ে থামত তা আন্দাজ করে নেওয়া কঠিন। ভারি আবহাওয়ায় পেসাররা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। সেটাই পেয়ে গিয়েছিলেন অর্শদীপ ও হ্যাজেলউড। কিন্তু সেই স্পিনারদের ব্যর্থতায় ম্যাচের রাশ চলে গেল ব্যাটসম্যানদের হাতে। এবং শেষে আরসিবিকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে লিগ টেবিলে দুনম্বরে উঠে এলেন শ্রেয়স আইয়াররা। দিল্লি ক্যপিটালস ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। দ্বিতীয় স্থানে পাঞ্জাব কিস। তাারা ৭ ম্যাচে এখন ১০ পয়েন্ট নিয়ে ছুটছে। আইপিএল ইতিহাসে এদের কারোর হাতে আগে ট্রফি ওঠেনি। এবার কি উঠবে! উঠলেও উঠতে পারে। এখনও পর্যন্ত যে ক্রিকেট ওরা খেলছে, তারপর আশা করা যেতেই পারে। পয়েন্টের লড়াইয়ে উপরে যাওয়ার দৌড়ে পাঞ্জাব যেন এই ম্যাচ আলাদা করে বেছে নিয়েছিল। আগের ম্যাচে কেকেআরের বিরুদ্ধে নাটকীয় জয় পাওয়ার পর তারা অনেকটাই চাঙ্গা। বেঙ্গালুরুর মাঠে ১৪ ওভারের ম্যাচে শুরুততে কোহলিদের চাপের মধ্যে ঠেলে দিলেন অর্শদীপ। ফিরিয়ে দিলেন সল্ট (৪) ও কোহিলকে (১)। দুটি উইকেট তিন ওভারের মধ্যে চলে যাওয়ার পর কমাত্র অধিনায়ক রজত পাতিধার (২৩) ছাড়া কেউ হাল ধরতে পারছিলেন না। অবাক করার মতো ব্যাপার এটাই যে একসময় ৬৩ রানে ৯ উইকেট চলে যায় আরসিবির। কিন্তু টিম ডেভেডের সৌজন্যে তারা একশোর কাছে পৌঁছে গেলেন। বিশেষ করে ব্রার শেষ ওভার করতে এসে ২১ রান দিয়ে ফেললেন। ওভারের শেষ তিন বল মাঠের বাইরে ফেলে ডেভিড ২৬ বলে করে ফেললেন ৫০ রান। তাঁর দাপটের কারনেই আরসিবি ৯৫ রানে পা রাখল। কিন্তু এটাই কি জয়ের জন্য যথেষ্ট! শুরুতে তা মনে হয়নি। কারন ওভার প্রতি সত রান করতে পপারলে ম্যাচ জেতা যাবে। এমন টার্গেট সামনে থাকলে ম্যাচ জয় কঠিন হয় না। তবু জোস হ্যাজেলউডের দাপটে পাঞ্জাব একসময় ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসল। জয়ের জন্য তখনও দরকার ৪৩ রান। সেই জায়গা থেকে ম্যাচ ধরে নিলেন লুধিয়ানার ছেলে নেহাল। তাঁকে সাহায্য করেলন আরসিবি অ্ধিনায়ক পাতিধার। কেন যে তিনি লেগ স্পিনার সুযশ শর্মাকে পরপর দুওভার নেহালের সামনে আনলেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এই দুওভারে সুযশ দিলেন ২১ রান। ম্যাচ সেখানেই শেষ। ভুবনেশ্বর কুমার এসে শশাঙ্ক সিংকে ফিরিয়ে দিলেও নেহালের সামনে ছাড়ল পেলেন না। সেই ওভারের শেষ দুই বলে ১০ রান করেন নেহাল। তাই ম্যাচের ১১ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে নিল পাঞ্জাব। নেহাল ৩ট বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ১৯ বলে করলেন অপরাজিত ৩৩ রান। নেহালের দাপটে পাঞ্জাব জিতলেও টিম ডেভিড ম্যাচের সেরা হলেন। তাতে অবশ্য কিছছু আসে যায় না নেহালের। তাঁরা টান দুটি ম্যাচ জিতে দুনম্বরে উঠে এলেন, এটাই তো বড় প্রাপ্তি।
কেকেআরের এখনও সুযোগ আছে, আমর দল তো ভাল খেলছেঃসৌরভ

আইপিএলের শুরুতে তিনি ছিলেন কলকাতয় আইকন। কেকেআরের অধিনায়ক। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু বদলে যায়। ঘর ছেড়ে তাঁকে বাইরে চলে যেতে হয়। কলকাতা থেকে ঠিকানা বদল। তিনি তখন পাকাপাাকিভাবে পুনেতে নাম লেখান। কিন্তু সেখানে গিয়েও সুবিধা করতে পারলেন না। ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে মন কষাকষি। ইডেনে কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচে এক বিশ্রি ঘটনা ঘটল। তারপর আর তাঁকে ব্যাট হাতে বাইশ গজে দেখা যায়নি। ক্রিকেটার থেকে হয়ে যান ক্রিকেট কর্তা। সে সব অনেকদিন আগের কথা। আইপিএলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে এর বেশি কিছু লেখার নেই। জাতীয় দলে যা পেয়েছেন, তা নিয়ে একটা ইতিহাস লেখা যায়। আইপিএল সে কথা কখনই বলবে না। কিন্তু এই ফরম্যাট থেকে চোখ সরাতে পারেননা। এখন দশ দলের টুর্নামেন্টে কোথায় দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে দেখা না গেলেও টিভি থেকে চোখ সরাতে পারেননা। কি করে সরে থাকবেন। একসময় দিল্লি ক্যাপিটালসের বড় দায়িত্বে ছিলেন। সেই দল এখনও তাঁকে টানে। তাঁদের সাফল্যে মন নেচে ওঠে। তাই এবার আইপিএল নিয়ে কথা উঠতে চোখ নেচে উঠল। বললেন, আমার দল তো দারুন খেলছে। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট। প্লে অফ দেখতে পাচ্ছি। এবং সেটা হলে পরবর্তী লড়াইয়ে অন্য দিল্লিকে দেখা যাবে। কিন্তু বাঙ্গালি তো দিল্লি নিয়ে বেশি উৎসাহী নয়। তদের প্রিয় দল কেকেআর। সেই দলের অবস্থা এমন কেন! ৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত দাঁড়িয়ে। প্লে অফ খেলতে হলে অন্তত ১৬ পয়েন্টে যেতে হবে। সেখানে গেলেও যে প্লে অফ খেলা যাবে তা নিশ্চিত রে বলা যাবে না। তবে আশা করা যায়। কিন্তু এই জায়গা থেকে ১৬ পয়েন্টে পা রাখা যে কঠিন ব্যাপার। সৌরভকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখনও অনেক সময় আছে। এই জায়গা থেকে কেকেআর দারুনভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। ওদের সময় দিন। হয়তো এরাই আগামি ম্যাচে চমক দিতে পারবে। সত্যিই কি তাই! সাত ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে। লিগের লড়াইয়ে এখনও সাতটি ম্যাচ খেলতে হবে। এই সাতের মধ্যে পাঁচটিতে জিততে হবে। কিন্তু শাহরুখের দলের খেলা দেখে তাদের উপর কেউ বাজি লাগাবার সাহস পাবেননা। হতাশা আরও বেসি করে কাজ করছে অন্য কারনে। পাঞ্জবের বিরুদ্ধে ১১২ রান তাড়া করতে নেমে কেকেআর ৯৫ রানে অলআউট। ভাবা যায়! সৌরভের সামনে এই পারফরম্যান্সের কথা মেলে ধরলে তিনি বলেন, ক্রিকেটে এমন ঘটন ঘটতেই পারে। তাই বলে কোনও দলকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। ওদের সময় দিতে হবে। ওরা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। এখনও সাত ম্যাচ বাকি। অনেক কিছু হতে পারে। তাই আমাদের শেষ কথা বলার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ক্রিকেটে একটি নতুন দায়িত্ব সৌরভের উপর পড়েছে। তিনি আবার টেকনিকাল কমিটির চেয়ারম্যান। এর আগেও তাঁকে এই দায়িত্ব পালন করতে দেখা গিয়েছিল। আবার তিনি পুরনো চেয়ারে ফিরে এসেছেন। এখানে কি চাপ বেশি থাকে! সৌরভ বলছিলেন, অনেক কাজ করতে হয়। কত নতুন নিয়ম ক্রিকেটে ঘুরে ফিরে আসছে। সেটা ঠিক কিনা তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। আগামি জুলাইয়ে আমরা এ নিয়ে বব। সেখানে দেখা হবে কোনটা ক্রিকেটের জন্য সঠিক। আবার কোনওটার দরকার নেই। তাই এখনই বলা যাচ্ছে না আমরা কোনদিকে পা ফেলব।