দল হারলে লজ্জা নয়, কষ্ট পান মনোরঞ্জন

ইস্টবেঙ্গলের ক্রমাগত ব্যর্থতা দেখে একদম ভেঙে পড়েছেন লাল-হলুদের ঘরের ছেলে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাই প্রিয় দলের খেলা এখন নিয়মিত দেখেন না। কারণ একটাই, যদি তঁার প্রাণের দল হেরে বসে। হেরে গেলে লজ্জার চেয়ে মনের মধ্যে একটা দলাপাকানো কষ্ট প্রচন্ড চেপে ধরে। তবু লাল-হলুদকে নিয়ে তিনি এখনও স্বপ্ন দেখেন। ভাবেন আবার তঁার প্রিয় দল ঠিক ঘুরে দঁাড়াবে। আবার ভারতসেরা হবে। আইএসএলে চরম ব্যর্থতার পর অনেক লাল-হলুদ সমর্থকদের মতোই তিনিও ভেবেছিলেন সুপার কাপে নিশ্চয় ভালো কিছু হবে। কিন্তু কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে হারার পর মনের কষ্ট আর লুকিয়ে রাখতে পারছেন না। তাই আফসোসের সুরে বলেই ফেললেন মনোর়ঞ্জন ভট্টাচার্য, “ইস্টবেঙ্গলের সব ম্যাচ দেখা এখন ছেড়েই দিয়েছি। ম্যাচ দেখার আগে ভাবতে বসি, দলটা আজ হেরে যাবে নাতো। তবু মন মানে না বলে প্রায় টিভির সামনে বসে খেলা দেখি। আসলে প্রিয় দল যখন হেরে যায় তখন লজ্জা নয়, মনের মধ্যে প্রচন্ড কষ্ট অনুভব করি। মনে হয় কোনও স্বজনকে হারালাম।”দলটার গলদ কোথায় অন্যদের মতো তিনিও খঁুজেও বেড়াচ্ছেন। অনুসন্ধান করতে গিয়ে তঁার মনে হয়েছে, প্রকৃত নেতার অভাব। অস্কার ব্রুজোকে সম্মান জানিয়ে ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে বলছিলেন, “কোচ হিসেবে অস্কার ব্রুজো খারাপ তা বলব না। এই লোকটার হাতে আরও একটা বছর দায়িত্ব ছাড়া উচিত। সমস্যাটা হল অন্য জায়গায়। কোচ বাইরে থেকে দলকে পরিচালনা করে। কিন্তু মাঠের মধ্যে একজন প্রকৃত নেতার প্রয়োজন হয়। যে সবসময় দলকে চার্জড করবে। বোঝানোর চেষ্টা করবে, আমরাই পারব। গৌতম সরকার, সুভাষ ভৌমিকরা যখন ইস্টবেঙ্গলে খেলতেন এই কাজটাই করতেন। পরবর্তীকালে আমি কিছুটা করার চেষ্টা করতাম। এখন দলে সেই নেতা কেউ নেই। যারজন্য দলটা মোটেই দঁাড়াতে পারছে না।” মনোরঞ্জনের আরও মনে হয়েছে, দলের মধ্যে ধারাবাহিকতার অভাব। “দল যে খুব খারাপ পারফরম্যান্স করেছে সবসময় তা কিন্তু নয়। মাঝে মাঝে ভালোই খেলেছে। সমস্যাটা হয়ে দঁাড়িয়েছে, ধারাবাহিকতা নেই। আজ ভাল খেললো তো কাল খারাপ। সবসময় একটা দল ভাল খেলবে তার কোনও মানে নেই। খারাপের দিনেও একটা স্ট্যান্ডার্ড থাকবে। সেই স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে পারছে না আমাদের দল।” সুপার কাপের ব্যর্থতাকে বড় করে দেখতে নারাজ মনোর়ঞ্জন। তঁার মতে, নক-আউট টুর্নামেন্টে এমন অঘটন ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু আইএসএলে দল যদি না দঁাড়াতে পারে তখন বুঝতে হবে, দলে কোথাও খামতি রয়েছে। তাই তিনি বলছিলেন, “দল খারাপ একদম বলব না। ইস্টবেঙ্গলের চেয়েও খারাপ দল নিয়ে এবারের আইএসএলে অনেকে ভাল খেলেছে। আসলে বিদেশি নির্বাচন আমাদের ঠিক হচ্ছে না। বাজারে একশোজন হয়তো একই মাল নিয়ে বসে আছে। যে ক্রেতা তাকে ওই একশোজনের মধ্যে থেকে সেরা মাল কে নিয়ে বসেছে তাকে বাছতে হবে। আমাদের সেই বাছাই-এর কাজটা খুব খারাপ। আসলে ইনভেস্টাররা আমাদের কোনওদিন বিশ্বাস করল না। ভরসা রাখতে পারল না। যদি একটু-আধটু ভরসা রাখতো তাহলে হয়তো খেটে খুটে ভাল কিছু করার চেষ্টা করা যেত। যাইহোক, আশায় আছি। এমন দিন তো চিরদিন থাকবে না। যেদিন বদলাবে সেইদিন প্রাণ ভরে দলের খেলা দেখব।”বলেই দিলেন মনোরঞ্জন।
লাল-হলুদের দিকে তাকাবেই না মোহনবাগান

প্যারালাল স্পোর্টস ডেস্ক: স্টবেঙ্গল থেকে কোনও ফুটবলার না নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছে মোহনবাগান। টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করছে, এবার ইস্টবেঙ্গল থেকে ফুটবলার নেওয়ার অর্থ নিজেদের আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগা। যেহেতু আইএসএল ও সুপার কাপে চূড়ান্ত ব্যর্থ লাল-হলুদ শিবির। তাই সবুজ-মেরুন শিবির মনে করছে, ইস্টবেঙ্গল থেকে কোনও ফুটবলার নিলে প্রকারন্তরে সেই দলকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেইজন্য দলের প্রথম সারির কর্তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতীয় ফুটবলার যদি কাউকে নিতে হয় তাহলে বর্হিরাজ্যের থেকে নেওয়া হোক। কখনও ইস্টবেঙ্গল থেকে নয়। মোহনবাগানের এই সিদ্ধান্ত রীতিমতো লাল-হলুদ শিবিরকে চূড়ান্ত অপমান করা। ভারতীয় ফুটবলে বরাবর মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল হল পরস্পরের শত্রু। কেউ কাউকে সূচগ্র মেদিনী ছাড়তে চায়না। বিশেষ করে দলবদলের সময় দুটি দলই চেষ্টা করে এসেছে, চিরশত্রুর ঘর ভাঙতে। অথচ এবার তার ব্যতিক্রম ঘটায় শুধু অবাক করার মতো বিষয় নয়, বরং প্রকারন্তরে ইস্টবেঙ্গলকে হেনস্থা করার লক্ষ্যে এগিয়ে গেল মোহনবাগান। গত কয়েকদিন ধরেই দলবদলের বাজারে রটে গিয়েছিল, পিভি বিষ্ণুকে নাকি মোহনবাগান প্রস্তাব দিয়েছে। শুধু তাই নয়, দলে নেওয়ার জন্য দারুন আগ্রহী। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতে টিম ম্যানেজমেন্টের এক প্রথম সারির কর্তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “জানিনা কে বা কারা এসব রটাচ্ছে। তবে আমাদের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ইস্টবেঙ্গলের দিকে হাত বাড়াবার প্রশ্নই নেই। আইএসএল লিগ টেবিলে যারা নিচের দিকে আছে। যারা সুপার কাপে চূড়ান্ত ব্যর্থ। তাদের থেকে ফুটবলার নিতে যাব কোন দুঃখে? ভারতবর্ষে কি আর কোথাও সেই মানের ফুটবলার নেই? ইস্টবেঙ্গল থেকে যাকে নেওয়া হোক না কেন, দলের ফুটবলাররা এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেবে। ইতিমধ্যে প্রশ্ন তোলেনি তাতো নয়। তাই আমরা ঠিক করেছি, আর যাইহোক ইস্টবেঙ্গল থেকে কোনও ফুটবলারকে এবার নেব না।” মোহনবাগানে এবার লক্ষ্য একটাই, পুরোন দলকে ধরে রেখে এগোন। দলের অধিকাংশ ফুটবলারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। তাই তাদেরকে রাখতেই হবে। বিদেশিদের মধ্যে গ্রেগ স্টুয়ার্টের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন গ্রেগের ভাগ্য মোহনবাগান কোচের উপর নির্ভর করছে। যদি কোচ সবুজ সঙ্কেত দেন তাহলেই দুজনকে রাখা হবে, নচেত নয়। দুটো সাইডব্যক নিতে চাইছে মোহনবাগান। আসলে শুভাশিস, আশিস রাই চোট বা কার্ড সমস্যার দরুন না খেলতে পারলে দলের মধ্যে সমস্যা বাড়ে। তাই এই দুজনকে সাপোর্ট করার জন্য নেওয়ার কথা ভাবছে মোহনবাগান। পাশাপাশি টিম ম্যানেজমেন্ট এও ভাবছে, যদি রিজার্ভ টিমে নজরকাড়া পারফরম্যান্স কেউ করে তাহলে তার সঙ্গে চুক্তি করে নেওয়া হবে। তখন আর বাইরে থেকে কাউকে আনা হবে না। মোহনবাগান অবশ্য আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যারা একবার সবুজ-মেরুন জার্সি ছেড়ে চলে যাবে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে না। ভবিষ্যতে সে যতই ভালো খেলুক না কেন। “প্রীতম কোটাল হল সবচেয়ে বড় উদাহরণ। আমরা কোনওদিন প্রীতমকে ফিরিয়ে নেব না। যদি ভাল খেলে তাহলেও নয়। একটা কথা টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করে ফেলেছে, যে বা যারা আমাদের ক্লাব ছেড়ে চলে যাবে তাদেরকে নিলে দলের মধ্যে একটা অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। তবে হ্যঁা, আমরা যাদের ছেড়ে দিলাম তারা যদি ভাল খেলে তাহলে তাকে ফিরিয়ে নেওয়া যেতেই পারে।” বললেন টিম ম্যানেজমেন্টের এক প্রথম সারির সদস্য এমন কী টিম ম্যানেজমেন্ট এও ঠিক করেছে, যতটা সম্ভব নতুন বিদেশি নিয়ে আসা হবে। ভারতে খেলা চেনা মুখ আনার কথা ভাবা হচ্ছে না। গ্রেগ স্টুয়ার্টকে নিয়ে আসা হয়েছিল ঠিকই। খুব আহামরি খেলা ফুটবলারকে যদি নিতে হয় তাহলে আলাদা কথা। নাহলে ভারতে খেলা বিদেশিদের দিকে হাত বাড়াবেই না মোহনবাগান। আসলে দল ঠিক করেছে, নতুন বিদেশি নিয়ে এলে তার খেলায় একটা চমক থাকে। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা তার খেলা ধরতে ঠিকমতো পারেনা। ফায়দা তোলে দল। সেইজন্য এই সিদ্ধান্ত। তারমানে গ্রেগ স্টুয়ার্টকে যদি ছেড়ে দেয় মোহনবাগান তাহলে বিদেশ থেকে একজন নবাগতকে নিয়ে আসা হবে। দেখা বিদেশি দলে নেওয়া হবে না।
নীরজের আমন্ত্রণকে উপেক্ষা আরশাদের

প্যারালাল স্পোর্টস ডেস্ক: নসি ক্লাসিক বা নীরজ চোপড়া ক্লাসিক পঞ্চকুলায় হচ্ছে না। তবে পূর্ব ঘোষিত ২৪ মে পঞ্চকুলার এই প্রতিযোগিতা চলে যাচ্ছে বেঙ্গালুরুতে। তার মানে এই প্রতিযোগিতার দিনক্ষণ একই থাকছে, শুধু বদলে যাচ্ছে ভেনু। যা হওয়ার কথা ছিল তাউ দেবীলাল স্টেডিয়ামে, এখন তা হবে বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে। এই প্রতিযোগিতার প্রধান উদ্যোক্তা হলেন স্বয়ং নীরজ। সোমবার একথা স্বয়ং ঘোষণা করেছেন নীরজ চোপড়া। আগেই বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থা এই প্রতিযোগিতাকে শীর্ষ পর্যায়ের বলে ঘোষণা করেছে। এবারের জানুয়ারিতে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থার সভাপতি সেবাস্তিয়ান কো পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, এই প্রতিযোগিতার আয়োজক হিসেবে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে ভারতের স্থান আরও মজবুত করবে। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স ইভেন্ট ক্যালেন্ডারেও এই পরিবর্তনের দিকটা নিশ্চিত করেছে। বিশ্বের কোন জ্যাভলিন থ্রোয়াররা এই মিটে অংশ নেবেন তার তালিকাও প্রকাশ করেছেন নীরজ। সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এবং গ্রেনেডার প্যারিস অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী অ্যান্ডারসন পিটার্স আছেন। বিদেশিদের মধ্যে অ্যান্ডারসনকে রাখা হয়েছে তালিকার শীর্ষে। তাছাড়া আছেন জার্মানির প্রাক্তন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন থমাস রোহলার, কেনিয়ার প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জুলিয়াস ইয়েগো, আমেরিকার কার্টিস থম্পসন। বর্তমান থমসন ২০২৫ সালে জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন। তাঁর এই মুহূর্তে ছোঁড়ার দূরত্ব হল ৮৭.৭৬ মিটার। কিন্তু পাকিস্তানের আরশাদ নাদিম এই প্রতিযোগিতায় নামবেন কিনা সেই ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি নীরজ। অথচ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যতই বৈরিতা থাকুক না কেন, বিশ্ব মিটের সময় দেখা গিয়েছে দুজনে পরস্পরের প্রিয় বন্ধু। প্রশ্ন হল, পাকিস্তানের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন তাহলে বন্ধুর ডাকে ভারতে আসছেন না কেন? তাহলে কি আরশাদকে আটকে দিয়ে পাকিস্তান সমঝে দিতে চায়, ক্রিকেট টিম না পাঠানো পর্যন্ত কোনওরকম ক্রীড়াক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়াতে নারাজ? নাহলে নীরজ আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, আর আরশাদ নাদিম সেই ডাকে সাড়া দেবেন না? মোটেই বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। আরশাদ শুধু এইটুকু জানিয়েছেন, কোচের সঙ্গে কথা বলে তবেই তিনি ভারতে আসবেন কিনা চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। এরপরেও যে একদম আসবেন না তা বলা যাচ্ছে না। ভারতের সোনার ছেলে নীরজ জানিয়েছেন, কিছুদিনের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। তখন যদি আরশাদের নাম দেখা যায় তাহলে ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রেমীরা দারুন খুশি হবেন। তবে নীরজ চোপড়া যে অংশ নেবেন এই মিটে তাও জানিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি ১৬ এপ্রিল পচেফস্ট্রুমের ম্যাকআর্থার স্টেডিয়ামে ৮৪.৫২ মিটার ছুঁড়েছেন ভারতীয় থ্রোয়ার। বেঙ্গালুরুর মাটিতে কেমন পারফরম্যান্স করেন সেটাই দেখার বিষয় হয়ে রইল।
পিচ বিতর্কের জের, হর্ষ ভোগলে ও সাইমন ডুলকে ইডেনে ব্যান করার দাবি জানাল সিএবি

আইপিএলের পিচ বিতর্কে এবার কড়া অবস্থান নিল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল। হর্ষ ভোগলে ও সাইমন ডুল – এই দুই ধারাভাষ্যকারকে ইডেনের ম্যাচে যাতে ব্যান করা হয়, তার জন্য বিসিসিআইয়ের কাছে দাবি জানাল সিএবি। এই দুজন মন্তব্য করেছিলেন, ইডেনের পিচে যদি হোম অ্যাডভান্টেজ না পাওয়া যায়, তাহলে কেকেআরের উচিত ইডেন ছেড়ে অন্য কোথাও নিজেদের হোম বেস তৈরি করা। এই মন্তব্যেই বেজায় চটেছে সিএবি। সে কারণেই বোর্ডের কাছে হর্ষ ও ডুলকে ব্যান করার দাবি। যদিও বিসিসিআই এখনও কোনও কিছু জানায়নি তবে সূত্রের খবর সোমবার ইডেনে কেকেআরের ম্যাচে ধারাভাষ্য দেয়ার জন্য হয়ত থাকবেন না হর্ষ ভোগলে ও সাইমন ডুল। ঠিক কী বলেছিলেন ডুল? তিনি মন্তব্য করে ছিলেন, হোম টিমের চাহিদার কথা কিউরেটর ভাবছেন না। ফ্র্যাঞ্চাইজি স্টেডিয়ামের ভাড়া দেয়। যা যা খরচ সবই মেটায়, তবু যদি হোম টিমের চাহিদার কথা না ভাবা হয়, তাহলে তাদের এই স্টেডিয়াম ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়া উচিত। হর্ষ ভোগলেও ডুলের সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলেছিলেন, যদি কেউ হোম গ্রাউন্ডে খেলে তাহলে তাদের সুবিধামত পিচ পাওয়া উচিত। সিএবি অবশ্য কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে, কারণ তারা মনে করে বিসিসিআইয়ের নির্দেশই পালন করেছেন কিউরেটর। পিচ কেমন হবে, সে ব্যাপারে কোনও ফ্রঞ্চাইজিই হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এই বিতর্কের জেরেই হয়ত ইডেনে সাইমন ডুল ও হর্ষ ভোগলেকে ধারাভাষ্য দিতে দেখা যাবে না, যদিও এখনও তেমন কোনও সরকারি নির্দেশ এসে পৌঁছোয়নি।
রিয়ালকে বার্তা দিয়ে রাখলেন আনচেলেত্তি

“আর্সেনালের কাছে হারার পর একটা বার্তা দিতে চেয়েছিলাম। আশাকরি সেই বার্তা এবার দিতে পেরেছি।” বক্তা অন্যকেউ নন স্বয়ং কার্লো আনচেলেত্তি। যিনি এখন বিশ্ব ফুটবল খবরের শীর্ষে। ১৬ এপ্রিল আর্সেনালের কাছে ফিরতি লেগে ২-১ ব্যবধানে হারার পর থেকেই তিনি বসে পড়েছেন হটসিটে। কখনও সাংবাদিকরা তঁাকে প্রশ্ন করছেন, ব্রাজিল দলের দায়িত্বে আসছেন কিনা। কখনও প্রশ্ন করা হচ্ছে, রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে তঁার দল ছাড়া নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে? তাই লা লিগার অ্যাথলেটিক বিলবাও ম্যাচটা তঁার কাছে ভাইটাল ছিল। জয়ের সরণীতে ফিরে আসা তো অবশ্যই, তাছাড়া ২৪ ঘন্টা আগে বার্সেলোনা অবিশ্বাস্য জয়ের সাক্ষী থেকেছে। সুতরাং জয় না পেলে আরও চাপে পড়ে যেতেন ইতালিয়ান কোচ। ৯০ মিনিট অব্দি সংশয়ে থাকার পর অতিরিক্ত সময়ের খেলায় যদি দল গোল পায় তখন যে কোনও কোচকে এনে দেয় পরম স্বস্তি। আনচেলেত্তির ক্ষেত্রেও হয়েছে ঠিক তাই। দলের একমাত্র গোলটি করেন উরুগুয়ের ফেদে ভালভার্দে। এবারের লা লিগায় বিলবাও ভাল খেলে চলেছে। তার উপর প্রথম লেগের খেলায় রিয়ালকে হারিয়ে দিয়েছিল। তাই ম্যাচ শুরুর আগে একটা অস্বস্তি তো ছিলই। কিলিয়ান এমবাপে আবার প্রথম একাদশে ছিলেন না। সব মিলিয়ে প্রথম ৪৫ মিনিট মোটেই সুবিধে করতে পারেনি রিয়াল। বিরতির পর রিয়াল পুরোন মেজাজ ফিরে পায়। একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে বিলবাওয়ের রক্ষণে নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিল। কিন্তু গোলের কাছাকাছি গিয়ে সুবিধে করতে পারছিল না। ৮২ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়র গোল করে জয়ের আনন্দে মেতে ওঠেন। ভারের সাহায্য নিয়ে সেই গোল বাতিল করে দেন রেফারি। কিছুক্ষণ পরেই বেলিংহামকে বক্সের মধ্যে ফাউল করে ফেলে দিলে রিয়াল ফুটবলাররা পেনাল্টির দাবি জানাতে থাকেন। তাতেও কর্ণপাত করেননি রেফারি। নির্ধারিত সময়ের ৯০ মিনিট শেষ হয়ে যাওয়ার পর অনেকে যখন আনচেলেত্তির মুন্ডুপাত করছেন তখনই যাবতীয় সংশয়ের অবসান ঘটিয়ে বসেন ভালভার্দে। যোগ করা সময়ের তিন মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত এক ভলিতে গোল করে যান মিডফিল্ডার। খেলার শেষে তাই নিজস্ব উচ্ছ্বাসকে লুকিয়ে রাখতে পারেননি আনচেলেত্তি। তিনি ভালভার্দের প্রশংসা করে বলেন, “যে গতিতে আমরা খেলি তা প্রথমার্ধে খেলতে পারছিলাম না। গতি হারিয়ে বসছিল। কিন্তু বিরতির পর দল দুর্দান্ত খেলেছে। আমাদের কাছে জেতাটা জরুরি ছিল। সেই জয় পেয়ে যেতে আশাকরি অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ভালভার্দে অসাধারণ খেলেছে। বিশেষ করে গোলটার কথা বলতেই হবে।” শেষ মুহূর্তের গোলে জিতে রিয়ালের সঙ্গে বার্সেলোনার পয়েন্টের ব্যবধান থাকল চার। ৩২ ম্যাচ খেলে রিয়ালের পয়েন্ট যেখানে ৬৯। সেখানে সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে বার্সার পয়েন্ট ৭৩। দু-দলের সামনে রয়েছে ৬টা ম্যাচ। ১১ মে লা লিগায় দু-দল মুখোমুখি হবে। কে বলতে পারে সেই ম্যাচে লা লিগার ভাগ্য নির্ধারিত হবে না।
আনন্দের মাঝেও অভিমানী আর্নল্ড

পরিবর্ত হিসেবে নেমে গোল করলেন। দলকে জেতালেন। চ্যাম্পিয়নশিপের দোরগড়ায় দলকে পৌছয়েও দিলেন। আনন্দঘন মুহূর্তের মাঝেও অভিমানের সুর শোনা গেল লিভারপুলের ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ডের মুখে। কারণ একটাই, চোট আঘাতে জর্জরিত ছিলেন। খেলা থেকে সরে গিয়েছিলেন দূরে। তাই আর্নল্ডের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করেনি লিভারপুল। মরশুম শেষ হলেই তিনি হয়ে যাবেন ফ্রি-ফুটবলার। তখন যেখানে খুশি তিনি অনায়াসে যেতে পারেন। স্বভাবতই সকলের সঙ্গে যখন নতুন করে চুক্তি হচ্ছে তখন আর্নল্ডের কথা না ভাবাটা তঁার কাছে দুঃখের। তাই গোল করে জার্সি খুলে আনন্দ করতে গিয়ে রেফারি তঁাকে হলুদ কার্ড দেখান। তঁার করা একমাত্র গোলে লিভারপুল জিতে যায়। খেলার শেষে সাংবাদিকরা যখন চুক্তি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন তখন বিষয়টা এড়িয়ে গিয়ে আর্নল্ড জানিয়ে দেন, “চুক্তি প্রসঙ্গে যখনই আপনারা আমাকে প্রশ্ন করেছেন তখনই আমি জানিয়েছি, এই ব্যাপারে কোনও কথা বলব না। তাই আবারও যখন জানতে চাইলেন তখন সেই একই উত্তর দিচ্ছি, এই িনয়ে কোনও কথা বলতে আগ্রহী নই।” পরমুহূর্তে তঁাকে বলতে শোনা যায়, “আমার কাছে এমন দিনটা হল একটা বিশেষ দিন। গোল করা, দলকে জেতানো, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দোরগড়ায় পৌছে যাওয়া, এইগুলি একজন ফুটবলারের কাছে বিশেষ মুহূর্ত হিসেবে থেকে যায়। সবচেয়ে বড় কথা হল, আমার ভূমিকা পালন করতে পেরে সত্যিই আমি আনন্দিত।” লেস্টার সিটির বিরুদ্ধে ৭৬ মিনিটে একমাত্র গোলটি করে যান আর্নল্ড। একটা সময় গোলের পর গোল মিস করে প্রচন্ড চাপে পড়ে গিয়েছিল লিভারপুল। বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে দরকার আর একটা ম্যাচ। সেই ম্যাচ জিতলেই সব দলের ধরাছেঁায়ার বাইরে চলে যাবেন সালাহরা। ছঁুয়ে ফেলবেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে। যে দল সবচেয়ে বেশিবার (২০) ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ঘরে তুলেছে। আগামী রবিবার টটেনহ্যামের সঙ্গে খেলা। এতদিন অপেক্ষা করতে নাও হতে পারে। যদি বুধবার ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে হেরে বসে আর্সেনাল। তখন অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে লিভারপুল। ৭১ মিনিটে কনর ব্র্যাডলির পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন আর্নল্ড। চোট পাওয়ার পর প্রায় পঁাচ সপ্তাহের পরে তিনি মাঠে নামলেন। নামার পঁাচ মিনিটের মধ্যে গোল পেয়ে তিনি। তাও আবার গোল করেছেন বঁা পায়ের শটে। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত আর্নল্ডকে বলতে শোনা যায়, “এই মাঠে আগেও আমি বেশ কয়েকবার গোল করেছি। সবচেয়ে বড় কথা হল, চোট সারিয়ে মাঠে ফিরে গোল পেয়ে গেলাম। তাছাড়া গোলটা করেছি বঁা পায়ের শটে। এটি আমার প্রথম বঁা পায়ের গোল বলতে পারেন। এই ধরনের গোল আগেও প্রচুর মিস করেছি। ভাললাগছে, সঠিক সময়ে সঠিক জায়গা থেকে গোল করে যেতে পারলাম। আর দরকার আমাদের একটা মাত্র জয়। সমর্থকরা যেভাবে আমাদের পাশে আছেন তাতে মনে হয়না এই জয় তুলে নিতে কোনও সমস্যা হবে।
বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে শ্রেয়স, সঙ্গে ইশানও

একবছর বাইরে থাকার পর আবার বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে জায়গা পেলেন শ্রেয়স আইয়ার ও ইশান কিষান। তাঁদের নিয়ে মোট ৩৪ জন ক্রিকেটারকে এবার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আনা হল। টি২০ ক্রিকেট থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলেও রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে এ প্লাস ক্যাটেগরিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। এই ক্যাটেগরিতে আছেন চার ক্রিকেটার। এ ক্যাটেগরিতে আছেন আছেন ছয়জন। বি প্লাসে রাখা হয়েছে পাঁচজনকে। বাকি ১৯ জন ক্রিকেটার জাগা পেলেন সি ক্যাটেগরিতে। এক মাস আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। তারপর বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ক্রিকেটারদের নিয়ে আসতে অনেকটা সময় পার হয়ে গেল। সোমবার বোর্ডের পক্ষ থেকে ৩৪ জন ক্রিকেটারের নাম ঘোষনা করা হল। গত মরশুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে না খেলার জন্য চুক্তির বাইরে গিয়েছিলেন শ্রেয়স আইয়ার ও ইশান কিষান। কিন্তু জাতীয় দলে ঢোকার পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সব থেকে বেশি রান করেছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। আগেই জানা ছিল যে শ্রেয়স আইয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তি ঢুকছেন। সম্ভবত চুক্তির মধ্যে আনা হবে ইশান কিষানকে। সেটাই শেষপর্যন্ত হল। দুজনেই সুযোগ পেলেন। শ্রেয়স বি গ্রেডে ও ইশান জায়াগা পেলেন সি গ্রেডে। এবার ক্যাটেগরি অনুযায়ী তালিকা দেখে নেওয়া যেতে পারে- এ প্লাস ক্যাটেগিরতে- রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, জসপ্রীত বুমরা ও রবীন্দ্র জাদেজা। এ ক্যাটেগরিতে- মহম্মদ সিরাজ, লোকেশ রাহুল, শুভমান গিল, হার্দিক পান্ডিয়া, মহম্মদ শামি, ঋষভ পন্থ। বি ক্যাটেগরিতে- সূর্যকুমার যাদব, কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেল, যশ্বসী জয়সওয়াল, শ্রেয়স আইয়ার, সি ক্যাটেগরিতে- রিঙ্কু সিং, তিলক ভার্মা, ঋতুরাজ গায়কোয়াড, শিভম দুবে, রবি বিষ্ণোই, ওয়াশিংটন সুন্দর, মুকেশ কুমার, সঞ্জু স্যামসন, অর্শদীপ সিং, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, রজত পাতিদার, ধ্রুব জুরেল, সরফরাজ খান, নীতিশ কুমার রেড্ডি, ইশান কিষান, অভিষেক শর্মা, আকাশদীপ, বরুন চক্রবর্তী এবং হর্ষিত রানা। তালিকা দেখে বোঝাই যাচ্ছে ঋষভ পন্থ একধাপ উপরে উঠে এসেছেন। আগে ছিলেন বি ক্যাটিগরিতে। এবার চলে এলেন এ ক্যাটেগরিতে। তালিকার বাইরে গেলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। তাই তাঁর নাম বাতিল হওয়ারই কথা ছিল। আরও আছে। তালিকায় নাম নেই জিতেশ শর্মা, কে এস ভরত, আভেশ খান ও শার্দুল ঠাকুর। তাঁদের বদলে সি ক্যাটেগরিতে জায়গা পেলেন, ইশান কিষান, সরফরাজ খান, ধ্রুব জুরেল, নীতিশ কুমার রেড্ডি, অভিষেক শর্মা, আকাশদীপ, বরুন চক্রবর্তী ও হর্ষিত রানা।