খেলো ইন্ডিয়ার ট্রায়াল শুরু, খবর নেই জেলার কাছে

খেলো ইন্ডিয়ার ট্রায়াল চলছে অথচ খবর নেই কোনও জেলার কাছে। বুধবার থেকে কলকাতায় শুরু খেলো ইন্ডিয়ার ট্রায়াল। ফুটবলের ট্রায়াল হবে বেলঘরিয়ার এসি মাঠে। আইএফএ-র কাছে মেল পৌঁছেছে গত শুক্রবার রাতে। শনিবার সেই মেল দেখে আইএফএ তড়িঘড়ি কোচ ঠিক করে। দায়িত্ব দেওয়া হয় কোচ নাসিম আলিকে। খবর দেওয়া হয় শুধু কলকাতার ক্লাবগুলোকে। কর্তাদের এই গড়িমসির জন্য সুযোগই পেলেন না জেলার ক্রীড়াবিদরা। প্যারালাল স্পোর্টসের পক্ষ থেকে আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, ‘১৮ তারিখ মাঝরাতে আমাদের মেল করা হয়। ১৯ তারিখ আমরা কাজ শুরু করি। ২০ তারিখ ছিল রবিবার। ২১ তারিখ কোচে’স কমিটির মিটিং ডেকে কোচ ঠিক করা হয়। সেদিনই আমরা কলকাতার ক্লাওগুলোকে খবর পাঠাই। জেলাতে কোনও খবর পাঠানো হয়নি। কারণ এত অল্প সময়ের মধ্যে সব জেলা থেকে খেলোয়াড়দের আসা সম্ভব নয়। তাই শুধু কলকাতার ক্লাবেই খবর দেওয়া হয়েছে’। আইএফএ সচিবের দাবি তাদের যদি আরও আগে জানানো হত তাহলে আরও পরিকল্পনা মাফিক কাজ করতে পারতেন তারা। অনির্বাণ দত্ত জানিয়েছেন, আমাদের যদি একমাস আগে থেকে জানানো হত। আমরা আরও পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে পারতাম। জেলা থেকেও খেলোয়াড়রা আসতে পারত’। কেন জানানো হল না আগে? এই দায় কার? কাদের জন্য বঞ্চিত হলেন খেলোয়াড়রা? এই প্রশ্নের উত্তর কারো কাছে নেই। অনির্বাণ দত্ত জানিয়েছেন, ‘সাই বা বিওএ থেকে আমদের জানাতে দেরি করেছে নাকি তাদের কাছেও খবর দেরিতে পৌঁছেছে আমাদের জানা নেই। তবে কম সময়ের মধ্যে পুরোটা আয়োজন করা সম্ভব নয়’।
সামনে ২০১৪ ও ২০২১, প্রত্যাবর্তনের উজ্জ্বল ইতিহাস-ঐতিহ্যই প্রেরণা নাইটদের

সামনে ২০১৪ ও ২০২১। এভাবেই এখন নিজেদের উদ্দীপ্ত করছে কেকেআর। ওই দুটো মরসুমেও যে এবারের মত অবস্থা হয়েছিল। টুর্নামেন্টের মাঝপথে এমনই পরিস্থিতি ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই দুবারের একবার চ্যাম্পিয়ন ও একবার রানার্স হয়। এবারও সেই স্বপ্ন দেখছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আর একবার সেই রকম দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের ইতিহাস লিখতে চায় কিং খানের নাইটরা। এবার ৮ ম্যাচ খেলে মাত্র ৬ পয়েন্ট নিয়ে প্লে অফ থেকে তারা এখন অনেক দূরে। কিন্তু সিইও বেঙ্কি মাইসোর বলেন, ঘুরে দাঁড়িয়ে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করা কেকেআরের ঐতিহ্য। ২০১৪ ও ২০২১-এও প্রথম সাত ম্যাচ খেলে মাত্র দুটি ম্যাচ জিতেছিল। কিন্তু তারপর অসাধারণ কামব্যাকে ২০১৪-য় চ্যাম্পিয়ন ও ২০২১-এ রানার্স হয়। বেঙ্কি জানিয়ে দিলেন এবারও সেভাবেই ফিরে আসবে কেকেআর। আসবেই। তিনি নিশ্চিত। বেঙ্কি আরও বলেন, “আমাদের ইতিহাস দেখলে বোঝা যাবে আমরা সফল তিন দেলর একটা। ২০২৪ সালে শুরুর সাত ম্যাচে মাত্র দুিট জয় এবং পাঁচটি হার ছিল। সেখান থেকে টানা ৯ ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন। তারপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পরপর ৫টি জয়। অর্থাৎ টানা ১৪ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড। ২০২১-এও শুরুর সাত ম্যাচে পাঁচটি হার সত্ত্বেও ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল দল। তাই এই ফরম্যাটে যে কোনও কিছুই হতে পারে। এখনও আমাদের অনেক ম্যাচ বাকি আছে।“ অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে ও মেন্টর ডোয়েন ব্র্যাভোর ওপর তাঁদের অগাধ আস্থা। কেকেআর সিইও বলেন, অজিঙ্ক ও ব্র্যাভো দুজনেই বোঝে খারাপ পিরিস্থিতি থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। কেকেআর জানে। কেকেআর বোঝে। কিন্তু আবার কি করে দেখাতে পারবে? পারবে কি দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের ইতিহাসে আর একটা উজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজিত করতে?
শুধু মাধি তালালকে রাখার ভাবনা, ইস্টবেঙ্গলে অস্কারের ভবিষ্যৎও নিশ্চিত নয়

অস্কার ব্রুজোঁর সঙ্গে চুক্তি বাড়িয়েছে ইস্টবেঙ্গল? হ্যাঁ, আইএসএলে ফল না পেলেও ভাল খেলতে শুরু করার জন্য তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাড়ানো হয়েছিল। তবু না, নিশিচত করে বলা যাচ্ছে না, আগামি মরসুমে অস্কার ব্রুজোঁই ইস্টবেঙ্গলের কোচ থাকবেন কিনা। কারণ দলের ঘোরতর বিপর্যয়ের পর খোলনলচে আমূল বদলে ফেলার ভাবনা লালহলুদ ম্যানেজমেন্টের। সেখান থেকে অস্কার ব্রুজোঁও বাদ যাচ্ছেন না। তাঁর পারফরম্যান্সকেও ফেলা হচ্ছে আতস কাচের নিচে। সুপার কাপে কেরালার বিরুদ্ধে তাঁর দলগঠন নিয়েও চাপা অসন্তোষ। ম্যানেজমেন্টের প্রশ্ন, রক্ষণ আঁটোসাঁটো না করে কেন তিন ব্যাকে যাওয়া হল? কেন উইংয়ের ফুটবলার মহেশকে উইংয়ে না খেলিয়ে সেন্টার হাফে খেলানো হল? বিষ্ণুকে উইং ব্যাকে নিয়ে আসা হল কেন? এমনই হাজার প্রশ্ন। হাজার অসন্তোষ। ম্যানেজমেন্ট কিন্তু কোনও কিছুতেই খুশি নয়। এমনও হতে পারে বোঝাপড়ার মাধ্যেম অস্কারের সঙ্গেও গোল্ডেন হ্যান্ডশেক করে ফেলা হল। ম্যানেজমেন্টের ভিতর থেকে যে খবর চুঁইয়ে আসছে, তাতে সেই সম্ভাবনা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর একজন – মাধি তালাল। এই মুহূর্তে তিনি যত দূরেই থাকুন না কেন, কর্তাদের ভাবনার সবচেয়ে কাছে কিন্তু রয়েছেন তিনিই। তালাল সময়মত সুস্থ হয়ে উঠলে একমাত্র তাঁকেই রেখে দেওয়ার ভাবনা আছে। তাঁর এসিএল থ্রি ইনজুরি। এই চোট সারতে সাধারণত ৭-৮ মাস লাগে। তা যদি হয়, সেপ্টম্বর-অক্টাবরেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা করা যায়। আর যদি তাঁর ফিট হতে জানুয়ারি হয়ে যায় তাহলে অবশ্য বদলে যাবে ভাবনা। না, তালাল ছাড়া আর কোনও বিদেশিকে রাখতে চায় না লালহলুদ ম্যানেজমেন্ট।কিন্তু মুশকিল হচ্ছে অর্থ। চার জন বিদেশির সঙ্গে ২ বছরের চুক্তি আছে। তালাল, ক্রেসপো, হিজাজি মাহের এবং দিয়ামন্তাকস। হিজাজিকে কোনও অবস্থাতেই রাখার ভাবনা নেই। তালাল সুস্থ হলে তিনি থাকছেন। সমস্যা হচ্ছে ক্রেসপো ও দিয়ামন্তাকসকে নিয়ে। ফর্মের যা হাল তাতে তাঁদের রাখতে চায় না ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু ছাড়তে হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এখন ইমামি যদি এই বাড়তি টাকাটা দিতে রাজি হয়, তাহলে হয়ত ছুটি হয়ে যাবে ক্রেসপা ও দিমির। নচেৎ হয়ত তাঁদের গিলতে হবে। রবিবার ম্যাচের পর ফুটবল থেক অবসর নেওয়ার কথা জনিয়ে দিলেন হেক্টর ইউস্তে। ফলে ক্লাবকে আর থ্যাঙ্ক ইউ বলতে হল না। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে? মোট কতজনকে ইস্টবেঙ্গল থ্যাঙ্ক ইউ বলে সেটাই এখন দেখার। ক্রেসপো আর দিমিকে থ্যাঙ্ক ইউ বলাটা যে ঝুলে আছে ইমামির গো এহেড বলা না বলার ওপর।
রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ! পাল্টা দাবি ফ্র্যাঞ্চাইজির

আইপিএলে আবার ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ! রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাডহক কমিটির কনভেনর জয়দীপ বিহানি। আর তারপরই ক্ষোভে ফুঁসে উঠে বিহানির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ জানানোর পথে হাঁটল রাজস্থান ফ্র্যাঞ্চাইজি। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রী ও ক্রীড়া সচিবের কাছে বিহানির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে. বলা হয়েছে এই অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিহানির কাছে এই বিষয়ে কোনও তথ্য নেই। লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে মাত্র ৯ রান তুলে ম্যাচ জিততে ব্যর্থ হয় রাজস্থান রয়্যালস। একইভাবে তারা ম্যাচ হারে দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছেও। তারপরই ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ আনেন জয়দীপ বিহানি। এমনকী তিনি অতীতের ঘটনাও তুলে ধরেন। ২০১৩ সালে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল। অভিযুক্ত হয়েছিলেন কর্ণধার রাজ কুন্দ্রাও। সে রকমই ঘটনার পুনরাবৃত্তির অভিযোগ আনছেন বিহানি। তবে এরপরই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে রাজস্থান রয়্যালস ম্যানেজমেন্ট। তারা সরাসরি রাজ্য সরকারকে এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনার জন্য জয়দীপ বিহানির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে। অ্যাডহক কমিটি যেহেতু সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন তাই আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। এমনিতেই রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে রাজস্থান ফ্র্যাঞ্চাইজির সম্পর্ক বেশ খারাপ, এই ঘটনার পর সেই সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সঞ্জু স্যামসনের নেতৃত্বাধীন রাজস্থান রয়্যালস এবার বেশ খারাপ পারফরম্যান্স করছে। এই মুহূর্তে তারা রয়েছে লিগ টেবিলের অষ্টম স্থানে।
নাইটদের কাছে কুম্বলের প্রশ্ন, রাসেলকে ডাগআউটে বসিয়ে রাখতে দলে নিয়েছ

গতবারের চ্যাম্পিয়নরা এবারের আইপিএলে প্রচন্ড চাপে। আট ম্যাচের পর ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে সাত নম্বরে। এই জায়গা থেকে প্লে অফ খেলতে গেলে অন্তত বাকি ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিততেই হবে। সঙ্গে রান রেটের দিকেও নজর রাখতে হবে। কথাটা যত সহজে বলা যাচ্ছে, কাজটা ততটাই কঠিন। বিশেষ করে কেকেআর যেভাবে খেলছে, তারপর তাদের উপর কেউ ভরসা রাখতে পারছেন না। কেকেআর ফ্যানরা হতাশ দলের এই পারফরম্যান্সে। কেন এমন বেহাল কেকেআর! এক টিভি চ্যানেলে বিশেষজ্ঞর কাজে ব্যস্ত জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক অনিল কুম্বলের চোখে যা ধরেছে, তা তিনি সামনে আনলেন। তাঁর কথায় নিজেদের ভুলে কেকেআর ডুবছে। এভাবে খেললে তাদের পক্ষে শেষ চারে যাওয়া কঠিন। ভাবনায় গলদ থাকলে ম্যাচ কী করে বের করাে যাবে। গতবারের চ্যাম্পিয়নদের কাছে এমনটা আশা করা যায় না। সোমবার রাতে ইডেনে গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে কোথায় ভুল কেকেআরের! কুম্বলে বলছেন, ১৯৯ রান তুলে ম্যাচ জিততে হলে পাওয়ার প্লে-তে অনেক বেশি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে হবে। সেখানে যত বেশি রান তুলবে, ম্যাচ তোমার দিকে চলে আসবে। কেকেআর পারেনি। তার উপর শুরুতে দুটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়। তবু বলব, থেকে ম্যাচ বের করা যেত। কেকেআর ম্যানেজমেন্ট চালে ভুল করে ফেলল। ভাবতে অবাক লাগে আন্দ্রে রাসেলের কাছে ওরা কী চাইছে। ওকে নিশ্চয় ডাগআউটে বসিয়ে রাখার জন্য দলে নেওয়া হয়নি। ওর পাওয়ার ক্রিকেটকে বাইশ গজে কাজে লাগাতে হবে। তার জন্য কেকেআর ম্যানেজমেন্ট যা করছে তা মানা যায় না। ওদের ভাবনায় এটাই নিশ্চয় কাজ করে, রাসেলকে ডেথ ওভারে পাঠিয়ে সুবিধা আদায় করে নিতে। কিন্তু সব সময় সেটা কাজে আসে না। রান রেট অনেক বেড়ে যায়। রাসেল তখন মাঠে নেমে কিছু করতে পারবে ন। উল্টে বেহিসেবী স্ট্রোক খেলে উইকেট দিয়ে আসবে। গুজরাটের বিরুদ্ধে ছয় নয়, আরও আগে রাসেলের মাঠে আসা উচিত ছিল। ওকে দেখলে প্রতিপক্ষ মানসিক দিক থেকে চাপে পড়ত। সেই সুবিধা রাসেল নিতে পারত। কিন্তু আমার অবাক লাগল, দল যখন চাপে পড়েছে, তখন রাসেলের মতো ব্যাটসম্যান ডাগআউটে। কেন এমন হবে! তা হলে ওকে নেওয়া হল কেন! আসলে কুম্বলে চাইছেন, রাসেলকে প্রয়োজনে চার নম্বরে আনতে। রাসেল এলেন ১২.৩ ওভারে। দলের রান ৪ উইকেটে ৯১। জেতার জন্য দরকার ৪৫ বলে ১০৮ রান। হাত ছয় উইকেট। এই জায়গা থেকে ম্যাচ বের করা সহজ নয়। রাহানের পর রাসেল এলে হাতে উইকেট থাকত। আর ও নিজেও পাঁচ-ছটি বল খেলে সেট হওয়ার সুযোগ পেত। কিন্তু রাহানের পর আইয়ার, রিঙ্কুরা মাঠে এল। ওরাও আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলে। কিন্তু রাসেলের মতো নয়। পাওয়ার হিটার কখনই নয়। ডাগআউটে বসে রাসেল এসব দেখলেন। তারপর উইকেটে এসে ১৪০ স্ট্রাইক রেট রেখে ১৫ বলে ২১ রান করে আউট হলেন। তিনি যখন ফিরলেন, দলের রান ৫ উইকেটে ১১৮ (১৫.৩ ওভার)। ম্যাচ সেখানেই শেষ। ভুল স্ট্র্যাটেজিতে কেকেআর মাত। এর দায় কে নেবেন! এটাই কি বলা হবে যে রাসেলরা এবার রান পাচ্ছেন না। তাই দল চাপে। এখনই তো সব দোষ ওদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। তা হলে কুম্বলের প্রশ্নের উত্তর কী দাঁড়াল! না এর ব্যাখ্যা কেকেআর শিবির থেকে নেই। ম্যানেজমেন্টের ভাবনার বদল না হলে দলের হাল এমনটাই তো হবে।
সিএসকের ভুল, রাহানেকে ছেড়ে ৩ কোটি বেশি দিয়ে দলে রাহুল!

আট ম্যাচের ছটিতে হার। পয়েন্ট চার। দশ দলের টুর্নামেন্টে লিগ টেবিলে একেবারে শেষে ধোনিরা। এমন অবস্থা দেখে সিএসকে ফ্যানরাও হতাশ। কোনও কিছুতেই তো খামতি ছিল না। তা হলে এমন কেন হল! রবিবার রাতে ম্যাচ শেষে পুরস্কার মঞ্চে দাঁড়িয়ে ধোনি বলছিলেন, কোনও কিছু ঠিকভাবে হল না। ভাল ক্রিকেট না খেললে এমনটাই হওয়ার কথা। বাকি ম্যাচগুলি দেখব। দেখা যাক কতদূর যেতে পারি। তারপর সামনের মরশুম নিয়ে ভাবব। তার আগে দেখে নিতে হবে কোথায় ভুল হচ্ছে। সেই বুঝে আগামি অকশনে দল গড়ার কথা ভাবতে হবে। একথা শোনার পর মনে হচ্ছিল, তা হলে কি ধোনি এখনই সামনের মরশুমের কথা ভাবা শুরু করে দিয়েছেন। না হলে এখনই আগামি মরশুম নিয়ে বলছেন কেন! আসলে দল গড়ার ক্ষেত্রে ভুল ভাবনা নিয়ে এগোলে এমনই তো হওয়ার কথা। সেটা আগে ধোনিরা বোর্ডে দেখে নিন। তারপর না হয় অন্য পথে হাঁটবেন। ধোনিদের ভুলটা ঠিক কোথায়! দলের দিকে তাকালে অনেক ভুল চোখে পড়বে। এক বেসরকারি চ্যানেলে কয়েকজন প্রাক্তন ক্রিকেটার আইপিএলের প্রিভিউ করতে বসে সিএসকে নিয়ে আশার বানী শোনতে পারেননি। গত মরশুমে মুম্বই ইন্ডিয়ন্স হতাশ করলেও কেউ কেউ তাদের নিয়ে বাজি লাগিয়েছিলেন। কিন্তু ধোনির দল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেউ নাম্বার দেননি। কারন কি! কারন আছে। সিএসকের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে মিডলঅর্ডারে ভাল ব্যটসম্যান নেই। ক্রিকেটার রিলিজ করার আগে তাঁরা এ নিয়ে কি ভেবেছিলেন! অজিঙ্কে রাহানে গত মরশুমে দেড় কোটি টাকায় খেলেছিলেন। দুবছর সিএসকেতে খেলা ক্রিকেটারকে রিলিজ করে দেওয়া হয়। তিনি দারুন পারফরম্যান্স করেছেন একথা বলা যাবে না। আবার পুরোপুরি হতাশও করেননি। তিন নম্বরে নেমে কখনও ভরসা দিয়েছেন। কখনও ব্যর্থ হয়েছেন। সেই রাহানেকে ছেড়ে দেওয়ার কারন কি ছিল। ক্রিকেট কর্তারা বলেননি। রাহানের বদলে ভাল কোনও ক্রিকেটারকে দলে নিলে কথা ছিল। তাঁরা রাহানের বদলে সাড়ে চার কোটি টাকায় আনলেন রাহুল ত্রিপাঠিকে। ভাবা যায়! তিন কোটি টাকা বেশি দিয়ে যাঁকে আনা হল তিনি এই ফরম্যাটে কত রান করেছেন। তাঁকে শুরুতে অনেক ম্যাচে খেলতে দেখা গেল। কখনও তিন নম্ববে, কখনও ওপেনে রাহুলকে পাঠিয়ে সিএসকে দেখে নিতে চাইল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হল না। যখন দেখল কিছু হচ্ছে না, তখন বাইরে বসিয়ে দিল। এখন প্রশ্ন, রাহুলকে সাড়ে চার কোটি টাকা দিয়ে দলে নেওয়ার ব্যাপারে কার ভোট সেদিন ছিল। আরও আছে। বিজয় শঙ্কর একসময় জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। বাংলাদেশের মাটিতে এক সিরিজে হতাশ পারফরম্যান্সের পর জাতীয় দলে জায়গ পাননি। যে ফাইনালে দীনেশ কার্তিক সৌম্য সরকারের শেষ বলে ছয় মেরে দলকে জিতিয়েছিলেন, সেই ম্যাচে উল্টোদিকের উইকেটে ছিলেন বিজয়। একার দায়িত্বে দলকে প্রায় হারিয়ে দিচ্ছিলেন। তাঁর কথা সবাই ভুলেই গিয়েছিলেন। তিনি কিনা সিএসকে দলে আছেন। শুধু থাকা নয়, চার নম্বরে তাঁকে নামানো হল। যেখানে ব্যাটসম্যানের কাজ দলকে সামনের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া, সেখানে বিজয় কি করেছেন। এক ম্যাচে ৬৯ রান করেছিলেন। ব্যস বলার মতো এটুকুই। তারপর তাঁকেও বাইরে বসানো হল। এই ত্রিপাঠি, বিজয় শঙ্করদের মতো ক্রিকেটারদের নিয়ে সিএসকে কি আইপিএল জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল! ধোনির মতো ধুরন্ধর ক্রিকেট মস্তিষ্ক এমন ভুল করলেন কী করে। সিএসকে মানে ধোনি। তিনি শেষ কথা বলবেন। তো দল বাছাইয়ের সময় তিনি কি অঙ্ক কষেননি। কী করে তাঁরা সাড়ে দশ কোটি টাকায় অশ্বিনকে সই করিয়েছিলেন। তিনি আইপিএল ছাড়া এই ফরম্যাটে কোথাও খেলেন না। রাজস্থান রয়্যালস তাঁকে রিলিজ করে দিয়েছিল। সিএসকে দলে নিল। তাঁর বদলে চাহালকে নিলে ভাল করতেন। আইপিএলে সব থেকে বেশি উইকেট চাহালের পকেটে। তাঁর দিকে ফিরেও তাকায়নি সিএসকে। তা হলে কী করে এই দল ভাল পারফর্ম করবে। তার উপর ঋতুরাজ চোট পেয়ে বাইরে চলে যাওয়ায় তারা মুশকিলে পড়ে। যাদের শিবিরে খলিলদের মতো পেসার, তারা কখনই ম্যাচ জয়ের কথা ভাবতে পারেন না। দিল্লি খলিলকে রিলিজ করে। তাঁকে নিয়ে সিএসকে কি স্বপ্ন দেখল! বোলাররা ম্যাচ জেতায়, এই থিওরি ধোনি নিজেও একসময় বলতেন। এখন কি সেই তথ্য বিশ্বাস করেন না। প্রথম ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারাবার পর সকলে ভেবেছিলেন, শুরুতে ছন্দ পেয়ে গিয়েছেন ধোনিরা। তারপর! ব্যর্থতা সেখান থেকে শুরু হয়ে গেল। এবার এটাই দেখার লিগ টেবিলে কত নম্বরে শেষ করে সিএসকে। তারা এভাবে মার খাবে এমনটা ক্রিকেট ফ্যানরা কি ভেবেছিলেন! এর দায় কে নেবেন! ভুলে ভরা দল গড়ে বলা যায় সবাইকে তাঁরা ফাঁকিতে ফেললেন।
ইডেনে হামাগুড়ি দিতে দিতে হার, কেকেআরকে ঠান্ডা মাথায় খুন করলেন গিল

কলকাতা নাইট রাইডার্সের পুরনো ব্যথা নতুন করে চাগিয়ে দিয়ে গেলন শুভমন গিল। গিল-সুদর্শন ওপেনিং জুটির কাছে, বিশেষত তাদের প্রাক্তনী শুভমনের কাছেই হেরে গেল কেকেআর। ইডেন নাইটদের ৩৯ রানে হারাল গুজরাট টাইটানস। ব্যাপারটা কাকতালীয় হতে পারে কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই দেখা যাচ্ছে প্রাক্তনীরাই কেকেআরের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে এটা প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। সোমবারের ইডেনে যেমন শুভমন গিল। ৫৫ বলে ৯০ রানের ইনিংসে যেমন ছিল সাবলীলতা, তেমনি ছিল বুদ্ধিমত্তা। সাই সুদর্শনের সঙ্গে তাঁর ওপেনিং জুটিতে উঠল ১২.১ ওভারে ১১৪ রান। সেখান থেকে কেকেআরের সামনে ১৯৯ রানের টার্গেট দিল গুজরাট। তাদের রানটা যে ২২০-তে গেল না, সেটা নাইটদের সৌভাগ্য। সুদর্শনও করে গেলেন ৫২ রান। এরপর আবার জস বাটলার। এদিন তেমন টাচে ছিলেন না। দুটি সুযোগ দিয়ে তবু করে গেলেন ২৩ বলে অপরাজিত ৪১ রান। পরের দিকে কিছুটা ভাল বল করে কেকেআরকে লড়াইয়ে ফেরান বোলাররা। কিন্তু এই টপ অর্ডার, এই মিডল অর্ডার নিয়ে ১৯৯ রান টপকে যাওয়াটাও যে কেকেআরের কাছে খুব কঠিন কাজ। ধুঁকতে ধুঁকতে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৯ রানে থেমে গেল রাহানেদের ইনিংস। এই বয়সে, টি টোয়েন্টিতেও যদি একমাত্র অধিনায়ক রাহানেকেই নির্ভরযোগ্য মনে হয়, একমাত্র সেনসেবল মনে হয়, তাহলেই বোঝা যায় দলটার ব্যাটিংয়ের কী হাল। এদিনও অর্ধশতরান করলেন। ডি ককের জায়গায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে আনা হয় গুরবাজকে। দরকার ছিল কি? সিরাজের প্রথম ওভারেই ফিরে গেলেন আফগান তারকা। নারিনও ক্লিক করলেন না। আর বেঙ্কটেশ আইয়ার? ২৩ কোটির চাপে কুঁকড়ে থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ১৯ বলে ১৪ রান করে যেন মুক্তি দিলেন ইডেনকে! এবং আন্দ্রে রাসেল। এক সময়ের মহাতারকাকে নিয়ে কি এবার নতুন করে ভাবার সময় হয়েছে? এই মরসুমে রিঙ্কু সিংয়েরও যেন সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। নিঃসন্দেহে গুজরাট বোলাররা ভাল বল করেছেন, কিন্তু মূলত এই কারণগুলোর জন্যই এত অনায়াসে তাদের জয়টা এল। গুজরাট টাইটানস শুধু ১২ পয়েন্ট নিয়ে মগডালে বসে আছে বলেই নয়, এই মরসুমে এই দলটাকে থামানো সবার পক্ষেই বেশ কঠিন, কারণ এত সঙ্ঘবদ্ধ, এত বুদ্ধিমান, এত পরিণত দল আইপিএলে বোধহয় আর নেই। গুজরাট দলটায় যেমন ট্যালেন্টেড ক্রিকেটার রয়েছে, তেমনি স্টেডি ক্রিকেটারের সংখ্যা বেশি। মাথা দিয়ে কীভাবে ক্রিকেটটা খেলতে হয় সেটা দেখিয়ে চলেছে। আর একটা ব্যাপার, তাদের তুরূপের তাস হল প্রথম তিন ব্যাটসম্যান। প্রায় প্রতি ম্যাচেই গিল, সুদর্শন এবং বাটলারের মধ্যে একজন শেষ অবধি থেকে ইনিংসটাকে গড়ে তুলছেন। এদিন যে কাজটা করলেন শুভমন গিল। কেকেআরকে এমন একটা জায়গায় ঠেলে দিয়ে গেলেন, যেখান থেকে প্ল অফে যেতে গেলে সাঁতরে সমুদ্র পার হতে হবে।