ধোনির ওপর বিশ্বাস রাখুন, ঘুরে দাঁড়াবে সিএসকে, কেকেআরের সুরেই বলছেন কাশী বিশ্বনাথন

এক সুর কেকেআর আর সিএসকের। দুটি দলই খুব খারাপ জায়গায় আছে। মঙ্গলবার কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোর বলেছিলেন, প্রত্যাবর্তনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে কেকেআরের। এবারও তাঁরা ঘুরে দাঁড়াবেন। আর বুধবার সিএসকে সিইও কাশী বিশ্বনাথনও বললেন, আমাদের ইতিহাস দেখুন, থালা ধোনির ওপর বিশ্বাস রাখুন, আমরা এবারও ঘুরে দাঁড়াবো। এবারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত মাত্র দুটি ম্যাচ জিতেছে সিএসকে। রয়েছে সবার নিচে। উদ্বিগ্ন সমর্থকরা। আর তাই তাঁদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন সিইও বিশ্বনাথন। তিনি ২০১০ সালের উদাহরণ তুলে ধরেন। বলেন, সেবার আমরা পরপর পাঁচটি ম্যাচ হেরেছিলাম। তারপরও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। দলে থালা আছেন। মাহির ওপর বিশ্বাস রাখুন, এবারও ঠিকই আমরা ঘুরে দাঁড়াবো। ঠিক এইভাবেই বলেছিলেন কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোর। ২০১৪ ও ২০২১ -এর প্রসঙ্গ তুলে তিনি জানিয়ে ছিলেন, ওই দুবারই প্রথম সাতটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি ম্যাচ হেরেছিল কেকেআর। তারপরও একবার চ্যাম্পিয়ন ও একবার রানার্স হয়েছিল নাইটরা। কাশী বিশ্বনাথনের গলাতেও একই সুর।একই আত্মবিশ্বাস। একই আশা। সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “সিএসকের এবারের পারফরম্যান্সে আপনারা খুবই হতাশ। এটা খুবই স্বাভাবিক। সত্যিই আমাদের খুব কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে। আমরা জানি সিএসকে একেবারেই ভাল খেলছে না। কিন্তু আমি প্রবল আশাবাদি, পরের ম্যাচগুলিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভাল খেলবে সিএসকে।“ সব মিলিয়ে এখনই আশা ছাড়তে একেবারেই নারাজ কাশী বিশ্বনাথন। আশা ছাড়ছে না কলকাতা নাইট রাইডার্স। তেমনি আশা ছাড়তে নারাজ চেন্নাই সুপার কিংস। দুটি দলেরই দুরন্ত কামব্যাকের ইতিহাস উদ্দীপ্ত করছে, শেষ পর্যন্ত আর একটা কামব্যাকের নজির তারা তৈরি করতে পারে কিনা নজর সেদিকেই।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের আক্রমণের প্রতিবাদে আইপিএলে কালো ব্যান্ড পরবেন ক্রিকেটাররা, সঙ্গে এক মিনিট নীরবতা

পহেলগাঁওয়ে যা ঘটল, এমন ঘটনা ভারতে আগে হয়নি। জঙ্গিদের আক্রমনে ২৬ জন নিরীহ মানুষ প্রান হারালেন। তারা কি দোষ করেছিলেন! কেন তাদের মারা হল! এর উত্তর নেই। উত্তর পাওয়া না গেলেও ঘটনার প্রতিবাদ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রথমে এগিয়ে এল ভারতীয় ক্রিকেট দুনিয়া। বুধবার হায়দরাবাদে আইপিএলে খেলতে নামছেন প্যাট কামিনসদের বিরুদ্ধে হার্দিক পান্ডিয়ারা। সেই ম্যাচের আগে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থা এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ম্যাচে কোনও বাজি পোড়ানো হবে না। দেখা যাবে না চিয়ার লিডারদের নাচ। দুদলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে আম্পায়াররাও হাতে কালো ব্যান্ড লাগিয়ে মাঠে নামবেন। খেলা শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। ২৬ জন নিরীহ মানুষের আত্মার শান্তি কামনা করতেই এমন সিদ্ধান্ত। দুদলের ক্রিকেটারদের আগেভাগে এ ব্যাপারটি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাই একমত। এই ঘটনার প্রতিবাদ এক দৃষ্টান্তমূলক হওয়া উচিত বলে সকলে মনে করছেন। আইপিএল এমনই একটা মঞ্চ যা গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে খুব কাছের। টিভির পর্দায় সকলে চোখ রাখেন। তাঁরা দেখবেন ক্রিকেটাররা কীভাবে এই ঘটনার প্রততিবাদ করছেন। ক্রিকেটারদের জবাব দেওয়ার জায়গা মাঠ। সেই মাঠেই তাঁরা এমন কিছু করে রাখতে চান যা গোটা বিশ্ব দেখতে পারবে। তাঁরা মনে করছেন, এভাবেই না হয় শুরু করা হল। তারপর আরও অনেক কাজ বাকি। ক্রিকেট মাঠে এই বকিছু করার আগেই ক্রিকেটাররা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইনস্ট্র্যাগ্রামে, টুইটারে, এক্স হ্যান্ডেলে ক্রিকেটাররা নিজেদের মন্তব্য জানিয়ে মৃত ২৬ জন মানুষের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কে নেই সেখানে। জাতীয় দলের হেড কোচ থেকে শুরু করে বিরাট কোহলি, হরভজন সিং, জসপ্রীত বুমরা, হার্দিক পান্ডিয়া, সুরেশ রায়না, শুভমান গিল, রবি শাস্ত্রী, ইরফান ও ইউসুফ পাঠান। সকলেই ঘটনার নিন্দা করে মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।
খেলা শেষে অন্য ম্যাচও জিতলেন কে এল রাহুল

শার্দুল ঠাকুরের বল মিড উইকেটের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে ফেলে তিনি যেন এই বার্তাই দিলেন- স্যর এবার আপনি হোটেলে যান। তিনি মানে লোকেশ রাহুল। একবছর আগে লখনউয়ের একানা স্টেডিয়ামে হায়দরাবাদের কাছে বিশ্রিভাবে হারার পর মাঠের মধ্যেই অধিনায়ক রাহুলকে এক হাত নিয়েছিলেন দলের অন্যতম কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। তাঁর চোখ, মুখের ভাষায় মনের ছবি পড়ে নেওয়া গিয়েছিল। সেদিনের সেই ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছিল। তারপর গোয়েঙ্কাকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীদের সঙ্গে প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও। পরে মিস্টার গোয়েঙ্কা পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে মলম লাগাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু রাহুলের বুকে জমে থাকা ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় নাকি! মনে পুষে রেখেছিলেন। অপেক্ষায় ছিলেন কবে দিন আসবে। সুযোগ এলে সব কিছু মিটিয়ে নেবেন। অবশেষে দিন এল। সময়ও এল। সব কিছুর জবাব দিয়ে খেলা শেষে অন্য ম্যাচ জিতে বেরিয়ে এলেন। অবাক করার বিষয় ছিল ম্যাচ শেষে দু সেকেন্ডের ঘটনাটি। রাহুলকে দেখে এগিয়ে এলেন মিস্টার গোয়েঙ্কা। সকলের সঙ্গে হাত মেলাবার সময় লখনউয়ের কর্ণধারের বাড়িয়ে দেওয়া হাতে হাত রেখে পাশে দাঁড়ানো অন্যজনের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলেন রাহুল। এর থেকে বড় জবাব আর কি হতে পারে! এখানেই ম্যাচ শেষ করে দিলেন লখনউয়ের প্রাক্তন অধিনায়ক। দিনটার কথা মিস্টার গোয়েঙ্কাও নিশ্চয় ভুলতে পারবেন না। রাহুলের কাছ থেকে এমন পাল্টা কিছু পাবেন তিনি বোধহয় আশা করেননি। তবে ভুল তো কিছু করেননি রাহুল। সেদিনের ছবি সামনে এনে মঙ্গলবারের রাতের দৃশ্য পাশে রাখলে একটা কথাই বলতে ইচ্ছে করবে, মিস্টার গোয়েঙ্কা এখন কেমন লাগছে! T কম কথার মানুষ লোকেশ রাহুল। আসলে দক্ষিণ ভারতের ক্রিকেটাররা এমনই হন। সাধারণত তাঁরা বেশি কথা বলেন না। প্রায় সবাই শিক্ষিত বলে কোনটা ভাল বা কোনটা মন্দ তা সহজে বুঝতে পারেন। কোনও দল একটা ম্যাচ হারতেই পারে। তাই বলে ম্যাচ শেষে মাঠেই দলের অধিনায়ককে কড়া ভাষায় আক্রমন! এ কেমন কর্তা! এটা কি মেনে নেওয়া যায়! তবে মিস্টার গোয়েঙ্কাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এমনটা সব ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরাই করে থাকেন। ভাল হলে তোমার মতো কেউ হয় না। সকলের সামনে জড়িয়ে ধরে ছবি তোলার জন্য নানারকম পোজ দেন। হারলে উল্টো ছবি। সকলের সামনে দাঁড়িয়ে সমালোচনা। স্থান, কাল, পাত্র ভুলে যা খুশি তাই করেন। এমন করেন বলেই ক্রিকেটারদের কাছে কর্তারা কাছের হয় না। ক্রিকেটাররা জানেন, সুযোগ পেলে এঁরাই ছুরি মারবেন। এবারের আইপিএলে লখনউয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে রাহুল খেলেননি। প্রথম সন্তানের জন্মের সময় স্ত্রী-র কাছে থাকার জন্য ছুটি নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার সরে গেলেন না। বিশেষ করে একানা স্টেডিয়ামেই খেলা বলে হয়তো নিজেকে দারুনভাবে মোটিভেট করতে পেরেছিলেন। ভেবে রেখেছিলেন, দারুন কিছু একটা করতে পারলে সব কিছু পুষিয়ে দেবেন। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসকে গুছিয়ে নিলেন। সঙ্গী বাংলার অভিষেক পোডে়লকে বলেছিলেন, বাড়তি ঝুঁকি নিয়ে খেলার দরকার নেই। স্ট্রাইক রোটেড কর। অপেক্ষা কর। মারার বল পাবে। তখন মারবে। এসবই অভিষেকের কাছ থেকে শোনা। সেভাবে দুজনে খেলতে চেয়েছিলেন। জয়ের খিদে যেন বেশি ছিল রাহুলের। স্টেডিয়ামে মিস্টার গোয়েঙ্কার সামনে হারতে চাননি। পুরো ইনিংসকে গুছিয়ে নিয়ে টার্গেটের পিছনে ছোটার চেষ্টা করেছিলেন। অভিষেকের পর পেয়ে যান অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেলকে। অক্ষরের দাপুটে ইনিংসকে সঙ্গী করে রাহুল এগিয়ে চলেন। মনে কতটা রাগ পুষে রেখেছিলেন তা বোঝা যায় হাফ সেঞ্চুরির পর। প্রথমে ব্যাট তুললেন না। তবে ব্যাট পিছনে নিয়ে জার্সিতে লেখা একনম্বরকে দেখাতে চাইলেন। তারপর ব্যাট তুললেন। এটাই রাহুলের জবাব। ৪২ বলে অপরাজিত ৫৭ রানের ( ৩টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারি) ইনিংস খেলেও তিনি নির্বাক। মাঠে যা প্রমান দেওয়ার দিলেন। আর ভিআইপি বক্সে বসে মিস্টার গোয়েঙ্কা দেখলেন, বোলারদের পিটিয়ে রাহুল কীভাবে ম্যাচ জিতে নিলেন। এটাই জবাব। সেটা দিতে পেরে রাহুল তৃপ্ত। খেলার শেষে তাঁকে বেশ শান্ত লাগল। মানসিক শান্তি বলতে যা বোঝায়, অনেকটা তেমন। আর মিস্টার গোয়েঙ্কা। সব কিছু কি মেনে নিতে পারলেন। তারপর তো শেষের ঘটনা। যেখানে রাহুল পাত্তা না দিয়ে সরে গেলেন। সত্যি এটা হজম করা সহজ নয়। একবছর আগে রাহুল যেমন সব কিছু মেনে চুপ ছিলেন। সেটাও তো হজম করা কঠিন ছিল। মিস্টার গোয়েঙ্কা রাতে ভাল করে ঘুমোতে পেরেছেন তো! সবশেষে, একটা কথা বলে রাখি। এমনদিন আসতে পারে, মিস্টার গোয়েঙ্কা কি আগেভাবে আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া মাটিতে টেস্ট সিরিজ বা দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রাহুলের পারফরম্যান্স দেখার পর তিনি কি পড়ে নিতে পারেননি এবার পাল্টা জবাব আসতে পারে। তিনি কি দলের ক্রিকেটারদের বলেছিলেন, আমি শুধু এই ম্যাচ জিততে চাই। এটা তোমরা আমাকে উপহার হিসেবে দাও। মনে হয় না এমন কথা তিনি বলেছেন। তাই হয়তো কষ্টটা তাঁর বেশি।
পন্থকে পুজারার পরামর্শ, ধোনিকে নকল করতে যেও না

মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে দারুন সম্পর্ক ঋষভ পন্থের। নানা সময় তাঁদের একসঙ্গে গল্প করতে দেখা যায়। অনুষ্ঠান বাড়িতেও দেখা যায়। তাই কি ধোনির মানসিকতাকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান পন্থ! আইপিএলে সিএসকের হয়ে এবার ধোনিকে কখনও সাতে, কখনও বা আবার নয় নম্বরে ব্যাট করতে দেখা যাচ্ছে। তিনি ফিনিশার। খেলাকে ছোট করে শেষপর্যন্ত তিনি উইকেটে থেকে বোলারদের উপর রোলার চালাবার চেষ্টা করছেন। উল্টোদিকে লখনউ সুপার জায়ান্টসের অধিনায়ক ঋষভ পন্থ নিজের ফর্মে না থাকায় নিজেকে ফিনিশারের ভূমিকায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে একানা স্টেডিয়ামে তিনি ব্যাট করতে নামলেন সাত নম্বরে। কিন্তু করলেন কি! তিনি যখন ব্যাট করতে নামলেন, তখন ইনিংসের মাত্র দুবল বাকি ছিল। রান করতে পারলেন না। মুকেশের শেষ বলে তিনি বোল্ড হলেন। ভাঁড়ারের খাতা শূন্য। এমন ঋষভ পন্থকে কে আর দেখতে চান। এমন সিদ্ধান্তে অবাক জাতীয় দলে তাঁর প্রাক্তন পার্টনার চেতেশ্ব পুজারা। এক চ্যানেলে ম্যাচ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পন্থকে পরামর্শ দিতে গিয়ে বললেন, ধোনিকে নকল করতে যেও না। ওটা তোমার কাজ নয়। আর এটাও ভেব না যে তুমি ফিনিশার। তোমার কাজ ইনিংসকে তৈরি করা। সামনের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া। সেখানে সাত নম্বরে ব্যাট করার যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। নিজেকে শুধরে নাও। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে লখনউ সুপার জায়ান্টসের টিম ম্যানেজমেন্ট দলের ব্যাটিং অর্ডারে বদল আনে। ওপেনে আসেন মার্করান ও মার্শ। তারপর একে একে নিকোলাস পুরান, আবদুল সামাদ, ডেভিড মিলার, আয়ুষ বাদোনি। সাত নম্বরে ঋষভ পন্থ। এই ব্যাটিং অর্ডারকে মেনে নিতে পারছেন না পুজারা। বলছেন, এট কী করে হল! পন্থ কেন এত নিচে ব্যাট করবে! মানছি, এবার ওর ব্যাটে রান পাচ্ছে না লখনউ। তাই বলে এতটা নিচে নেমে আসবে। রান পেতে উপরেই ব্যাট করতে হবে। বেশি বল খেলার সুযোগ পাবে। নিচে নামলে বলের সংখ্যা কমে যাবে। তখন সব বল মারতে হবে। যা এখনই ওর পক্ষে সম্ভব নয়। আমার মতে, পাঁচ নম্বরে পন্থের ব্যাট করতে নামা উচিত। এর নিচে কিছুতেই নয়। আয়ুষ বাদোনিকে পাঁচ নম্বরে নিয়ে আসা হয়েছে। দিল্লির ক্রিকেটারটিকে ২০২২ সালে ২০ লাখ টাকায় কিনেছিল দিল্লি। তারপর লখনউয়ের মেন্টর হিসেবে গৌতম গম্ভীর কজ শুরু করার সময় বাদোনি চলে আসেন তাঁর দলে। এবার তাঁকে চার কোটি টাকায় দলে রেখেছে লখনউ। গম্ভীর খেলাতেন ছয় নম্বরে। সেখানে নেমে নজর কেড়েছিলেন বাদোনি। রানও পেয়েছিলেন। তাঁকে সুযোগ দিতে এবার উপরে ব্যাট করতে পাঠানো হচ্ছে। তাই বলে আবদুল সামাদ কেন আগে ব্যাট রতে যাবে। দরকার হলে সেই জায়গায় ( পাঁচ নম্বরে) পন্থ যেতে পারতেন। কিন্তু সেটা লখনউকে করতে দেখা গেল না। তা হলে পন্থকে দলে এনে লাভ কি হল লখনউয়ের। শুধু কিপিংয়ের জন্য তো পন্থকে দলে আনা হয়নি। অলরাউন্ড পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে বলেই অকশনে লখনউ ২৭ কোটি টাকায় পন্থকে কিনে নেয়। সেই ক্রিকেটার রান পাচ্ছেন না। তাঁকে সময় দেওয়া হোক। রান করলে পন্থ পাঁচে নেমেই করবেন। তার জন্য সাত নম্বরে নামিয়ে আনার কোনও যুক্তি নেই। পুজারা সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন। ধোনি জাতীয় দলে শেষদিকে সতে এসে ফিনিশারের কাজ করতেন। এখন পন্থের সেই সময় আসেনি। পুজারা ঠিকই বলেছেন। তিনি তো ফিনিশার নন। তাঁর খেলা হবে দলের ইনিসকে সামনে টেনে নিয়ে যাওয়া। তা না করে দলকে চাপে ফেলে দিচ্ছেন। এ নিয়ে কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও বোলিং কোচ জাহির খানের ভাবা উচিত। সঙ্গে ঋষভেরও। না হলে তিনি কিন্তু হারিয়ে যাবেন। জাতীয় দলে টি২০ ক্রিকেটে তাঁর জায়গা চলে যাবে। তিনি নিশ্চয় সেটা চান না।
আইপিএলের মঞ্চে বাংলার দিন, বর্ণময় লিগে আরও বর্ণময় বাংলার দুই ক্রিকেটার

আইপিএলের মঞ্চে বাংলার দিন বললে বোধহয় একটুও বেশি বলা হবে না। বর্ণময় লিগে মঙ্গলবার আরও বর্ণময় হয়ে উঠলেন বাংলার দুই ক্রিকেটার। একজন বল হাতে আর একজন ব্যাটে দাপুটে পারফরম্যান্সে ঝলমল করে উঠলেন দুই বঙ্গ ক্রিকেটার – মুকেশ কুমার ও অভিষেক পোড়েল। লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ১২ পয়েন্টে পৌঁছে গেল দিল্লি ক্যাপিটালস, এটা বোধহয় আজকের হেডলাইন নয়। খুব ভাল শুরু করেছিল নবাবের শহর। ১০ ওভারের মধ্যে কোনও উইকেট না হারিয়ে ৮৭ রান করে ফেলেছিল, মার্করাম (৫২) ও মিচেল মার্শ (৪৫) এমন একটা শুরু দেওয়ার পরও পরপর উইকেট হারিয়ে কেন ৬ উইকেট মাত্র ১৫৯ রানে থেমে গেল লখনউ, এটাও বোধহয় আলোচনার বিষয় নয়। এমনকী ২ উইকেট হারিয়েই ১৬১ রান তুলে যে সহজেই ম্যাচ জিতে গেল দিল্লি, এটা নিয়েও বোধহয় বিশেষ কিছু বলার নেই, যতটা বলার, যেটা এই ম্যাচের নির্যাস, তা হলেন ওই দুজন – মুকেশ ও পোড়েল। মুকেশের বোলিংটা দেখুন, ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট। এরপর ম্যাচের সেরার পুরস্কার আর কে পাবেন? আর পোড়েল? ৩৬ বলে ৫১ রানের ঝকঝকে ইনিংস। মরসুমের প্রথম অর্ধশতরান তো কী, এখনও পর্যন্ত এ মরসুমে ৮ ইনিংসে করে ফেলেছেন ২২৫ রান। গড় ৩২.১৪। আর গত মরসুমে ৩২.৭০ গড়ে করেছিলেন মোট ৩২৭ রান। আইপিএলের ঝলমলে মঞ্চে এভাবেই আরও ঝলমলে এক বঙ্গ সন্তান। হ্যাঁ, দিল্লি ক্যাপিটালসকে ধন্যবাদ দিতেই হয়, দুই বঙ্গ ক্রিকেটারের ওপর তারা এতটা ভরসা রেখেছেন বলে। আর এখানেই তো মুকেশ-অভিষেকরা প্রশ্নটা তুলে দিচ্ছেন, তাহলে বাংলার ক্রিকেটারদের ওপর আস্থা রাখা যায়, ভরসা করা যায়। বাংলার দল, কলকাতার দল কেকেআর যাই ভাবুক না কেন, এভাবেই জবাব দিচ্ছেন মুকেশ আর পোড়েল। শুধু নিজেদের পারফরম্যান্স নয়, নিজেদের সাফল্যটা নয়, এই জবাবটা, বার্তাটাই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ।