পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করলেন পাক হিন্দু ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া

রীতিমত আলোচনার কেন্দ্রে এখন পাকিস্তানের প্রাক্তন হিন্দু ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া। সাহসী মন্তব্যে নজর টেনে নিয়েছেন সকলের। পহেলগাঁও কাণ্ডে তিনি পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের তীব্র সমালোচনা করেছেন। কানেরিয়া তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে প্রশ্ন তুলেছেন, “পহেলগাঁওয়ের ভয়াবহ ঘটনার পর গোটা বিশ্বের রাষ্ট্রনায়করা যখন নিন্দায় সরব হয়েছেন, তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ চুপ কেন?” এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেছেন, “যদি ওই ঘটনায় পাকিস্তানের কোনও ভূমিকা না থাকে, তাহলে তিনি নিন্দা করছেন না কেন? আপনার বাহিনী হঠাৎ হাই অ্যালার্ট কেন? কারণ আপনারা আতঙ্কবাদিদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিচ্ছেন। সত্যি লজ্জার।“ ভয়াবহ ঘটনার পর ভারতের বিভিন্ন খেলার খেলায়াড়রা নিন্দায় সরব হয়ে িনহত ও আহতদের পরিবাবের জন্য সমবেদনা জানিয়েছেন। বিসিসিআইও এ নিয়ে মুখ খুলেছে। আইপিএলের মঞ্চেও পড়েছে প্রভাব। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ম্যাচে ক্রিকেটাররা কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নেমেছিলেন। এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়। ছিল না কোনও চিয়ার লিডার। পোড়েনি কোনও বাজি। এমনকী পাক ক্রিকেটার হাফিজও মুখ খুলে বলেছেন, ঘটনা দুঃখজনক ও হৃদয় বিদারক। সেখানে পাক প্রধানমন্ত্রীর নীরবতায় অবাক কানেরিয়া। অনিল দলপতের পর দানিশ কানেরিয়া হলেন পাকিস্তানের দ্বিতীয় হিন্দু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। পাকিস্তানের হয়ে ৬১টি টেস্ট খেলেছেন। তিনি নিজেও যে খেলার সময় অনেক অসুবিধা ও সমস্যায় পড়েছিলেন সেকথা আগেও জানিয়েছেন। তবে ইনজামাম উল হক ও শোয়েব আখতার যে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, বলেছেন সে কথাও।আর এদিন এক্স হ্যান্ডেলে পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে সরব হয়ে উঠলেন।
লিগ উতসবে মেতে উঠতে চান সালাহরা

অবাক হলেও সত্যি। খেলতে হল না, তবু প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল লিভারপুল। যদিও সালাহদের প্রয়োজন ছিল ৩ পয়েন্ট। তাহলেই চ্যাম্পিয়ন ফ্ল্যাগ তুলে দিতে পারত। তারজন্য আগামী রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা না করে উপায় ছিল না। সেইদিন ছিল টটেনহ্যামের সঙ্গে খেলা। সেই ম্যাচে লিভারপুল জিতলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত। তবে তার আগেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল সালাহদের সামনে। কীভাবে? সেক্ষেত্রে লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালকে পয়েন্ট নষ্ট করতে হত। বিশেষ করে হেরে গেলে আর বলার কিছু ছিল না। বুধবার ছিল আর্সেনাল-ক্রিস্টাল প্যালেস ম্যাচ। যা ভাবা যায়নি তাই হল। ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে দুপয়েন্ট খুইয়ে বসল আর্সেনাল। দু-দলের খেলার ফল গিয়ে দঁাড়াল ২-২। আর্সেনালের পক্ষে গোল দুটি করেন যথাক্রমে ইয়াকুব কিভিওর, লিয়ান্দ্রো তোসার। এবারেচি এজা ও জঁা ফিলিপ মাতেতা গোল দুটি করেন ক্রিস্টাল প্যালেসের হয়ে। এখন যা পরিস্থিতি তাতেই লিভারপুলের সমর্থকরা একপ্রকার নিশ্চিত তাদের হাতে লিগ এসে গিয়েছে। আর্সেনালের পয়েন্ট ৩৪ ম্যাচ খেলে ৬৭। লিভারপুলের সেখানে ৩৩ ম্যাচ খেলে ৭৯ পয়েন্ট। এই জায়গায় দঁাড়িয়ে লিগ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে লিভারপুলের তা বলা যাচ্ছে না। যেহেতু লিগের বাকি সব ম্যাচ যদি লিভারপুল হেরে যায় আর আর্সেনাল সব ম্যাচ জিতে যায় তাহলে দু-দলের পয়েন্ট হয়ে যাবে সমান। সেক্ষেত্রে দু-দলের মধ্যে গোলের পার্থক্য ধরা হয়। সেখানেও আর্সেনালের চেয়ে ১০ গোলে এগিয়ে লিভারপুল। এত সমীকরণ মেনে লিভারপুলকে হঠিয়ে প্রিমিয়ার লিগ ঘরে তুলবে আর্সেনাল, এই ভাবনাটা একটু বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যাবে। তাই বৃহস্পতিবার থেকে জয়ের উতসবে মেতে উঠতে পারে লিভারপুলের সমর্থকরা।
জিতেও সম্পূর্ন হতাশ আনচেলেত্তি

লা লিগায় এখন চলছে নক-আউটের খেলা। না, নক-আউট বলতে যা বোঝায় তা নয়। কিন্তু ড্র বা হেরে গেলেই সর্বনাশ। বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ এখন একই ট্রাপিজের খেলায় মত্ত। একটু পদস্খলন ঘটলেই চিরশত্রু দল চলে আসবে ঘাড়ের উপর। এমনিতেই বার্সা-রিয়াল একে অপরের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। ঠিক এমনই একটা মুহূর্তে বুধবার হেতাফেকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে রিয়াল। দলের একমাত্র গোলটি করেন তরুণ তুর্কি আরদা গুলেবে। এই জয়ের সুবাদে দুদলের মধ্যে পয়েন্টের ফারাক থাকল চার। বার্সেলোনা ৩৩ ম্যাচ খেলে পয়েন্ট অর্জন করেছে ৭৬। সেই জায়গায় একই ম্যাচ খেলে রিয়াল ৭২ পয়েন্টে দঁাড়িয়ে আছে। লা লিগায় রিয়ালের পরবর্তী ম্যাচ ৪মে। প্রতিপক্ষ সেল্টা ভিগো। তবে এই জয় পেয়েও আদৌ উচ্ছ্বাস নেই রিয়াল শিবিরে। কারণ একটাই, দলের দুই নির্ভরযোগ্য ফুটবলার ডেভিড আলবা ও এডুয়ার্দো কামাভিঙ্গা চোটের কবলে। অথচ আগামী শনিবার কোপা দেল রে-র ফাইনাল। যেখানে মুখোমুখি হবে রিয়াল-বার্সেলোনা। ফাইনালের চেয়ে গুরুত্বপূর্ন হল, এই মরশুমে দু-দুবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। তারউপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেওয়ার পর রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলেত্তিকে নিয়ে সমালোচনা তুঙ্গে। রিয়াল সমর্থকরা ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ছেন দলের পারফরম্যান্স দেখে। সেইজন্য আনচেলেত্তির চাকরি পাকা আর এখন বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দঁাড়ায় এখন সেটাই দেখার। তাই হেতাফের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার পর রিয়াল কোচ আনচেলেত্তি হতাশার সুরে বলতে বাধ্য হয়েছেন, “আলবা ও কামাভিঙ্গার চোট কতটা গুরুতর এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ২৪ ঘন্টা সময় দরকার। তারপর বোঝা যাবে কোথায় গিয়ে দুজনের চোট দঁাড়ায়। দুজনে মাংসপেশীর চোট বেশ ভালোই। তাই শনিবার দুজনের খেলা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।” রিয়াল কোচ আলবাকে ৪৫ মিনিটের মাথায় তুলে নিতে বাধ্য হন। বঁা পায়ের পেশীতে চোট পেয়েছেন অস্ট্রিয়ান সেন্টারব্যক। পরিবর্ত হিসেবে তঁার জায়গায় আনচেলেত্তি নিয়ে এসেছিলেন কামাভিঙ্গাকে। কিন্তু কামাভিঙ্গাও ৮৫ মিনিটে চোট পেয়ে বসেন। হেতাফের মিডফিল্ডার লুইস মিলারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে কামাভিঙ্গা চোট পান। কামাভিঙ্গা প্রথমে চেষ্টা করেছিলেন মাঠে থেকে খেলা শেষ করতে। কিন্তু ব্যথার কারণে আর তিনি মাঠে থাকতে পারেননি। মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। রিয়ালের ফুটবলার পরিবর্তন করা আর সম্ভব ছিল না। তাই খেলার বাকি অংশ দশজনে খেলতে বাধ্য হয়। রিয়ালের যা পরিস্থিতি এই মুহূর্তে দঁাড়িয়ে তাতে কাকে সেন্টারব্যাকে খেলানো হবে তাই নিয়ে সমস্যা বাড়ছে। হাতের কাছে একমাত্র রয়েছেন লেফট ব্যাক ফ্রান গার্সিয়া। যদি গার্সিয়াকে শেষমেশ নামান আনচেলেত্তি তাহলে তঁাকে আটকাতে হবে লামিনে ইয়ামালকে। সব মিলিয়ে সমস্যার পাহাড় রিয়ালের সামনে। না ভুল বললাম, রিয়াল নয় আনচেলেত্তির সামনে।
দুটি ইমেল, গম্ভীরকে প্রাণে মারার হুমকি

পহেলগাঁও কান্ডের মাঝেই আবার একটা হুমকি। ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ গৌতম গম্ভীরকে প্রাণে মারার হুমকি দিল আইএসআইএস। সংবাদসংস্থা এএনআই এই খবর জানিয়েছে। ২২ এপ্রিল গম্ভীর দুটি ইমেল পন। যেদিন পহেলগাঁওয়ে জঙ্গীদের গুলিতে ২৬ জন নিরীহ মানুষ প্রান হারান, সেদিন বিকেলেই প্রথম ইমেল পান গম্ভীর। পরেরটি সন্ধ্যায়। এমন ইমেল পাওয়ার পর গম্ভীর ঝুঁকি না নিয়ে পুরো ব্যাপারটি বুধবার দিল্লি পুলিশকে জানান। প্রথমে তিনি রাজিন্দর নগর পুলিশ স্টেশনে যান। পরে সেন্ট্রাল দিল্লিতে ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়ে পুরো ব্যাপারটি খুলে বলেন। এ নিয়ে তিনি একটি এফআইআরও করেন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সবরকম নিরাপত্তা দেখা হবে। বাড়িতে সিকিউরিটির ব্যবস্থাও থাকছে। এমন প্রাণে মারার হুমকি অবশ্য এর আগেও গম্ভীরের কাছে এসেছে। ২০২১ সালে যখন তিনি সংসদের সদস্য ছিলেন, তখনও তাঁকে এমন ইমেল করা হয়েছিল। পহেলগাঁওয়ে নাশকতার পর গম্ভীর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ২৬ জন নিরীহ মানুষকে কীভাবে মারা হল! এর থেকে ভয়ঙ্কর নিন্দাজনক ঘটনা আর হতে পারে না। ২০১৯ সালে পুলওয়ামার ঘটনার পর জঙ্গীদের এমন কান্ড আবার দেখা গেল। আমি সেই সব মৃত মানুষের পরিবারের পাশে আছি। তাদের সমবেদনা জানাবার ভাষা আমার কাছে নেই। তবু এমন অবস্থায় সঙ্গে থাকাটাও বড় ব্যাপার। গম্ভীর এই মুহূর্তে দিল্লিতে নিজের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে আছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে দেশে ফিরে আসার পর তিনি পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ফ্রান্সে। সেখান থেকে ফিরে বাড়িতেই আছেন। আগামি জুনে তাঁর কাজ শুরু হয়ে যাবে। ভারতীয় দল নিয়ে তিনি যাবেন ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্ট সিরিজ খেলতে। সেখানে ২০ জুন ভারতীয় দলের প্রথম টেস্ট ম্যাচ।
সাফল্য স্ত্রী দেবিশাকে উৎসর্গ করলেন সূর্যকুমার

১৯ বল খেলে অপরাজত ৪০ রান। হায়দরবাাদের বিরুদ্ধে দলের জয়ের পর প্লে অফের খেলার রাস্তা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। লিগের বাকি পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জিতলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স শেষ চারে চলে যেতে পারে। এমন ঘটনার পর শিবিরে খুশির হাওয়া। হাসছেন সূর্যকুমার যাদবও। যাঁকে সবাই স্কাই নামে ডাকে। সেই সূর্য খেলার শেষে জানিয়ে দিলেন, দলের এই জয় তিনি স্ত্রী দেবিশা শেঠিকে উৎসর্গ করছেন। হঠাৎ করে এই ম্যাচে কেন স্ত্রীকে জয় উৎসর্গ করছেন স্কাই! তার ব্যাখ্যা নিজেই দিলেন। বললেন, দেবিশার আসার কথা ছিল না। কিন্তু টানা তিন ম্যাচ জয়ের পর দলের সাফল্য দেখতে ও মুম্বই থেকে হায়দরাবাদ চলে আসে। গ্যালারিতে বসা দেবিশর সামনে ভাল কিছু একটা করে দেখাতে না পারলে নিজের কাছেই খারাপ লাগত। তাই খেলার শেষে মেজাজ ভাল থাকায় এভাবে থা বলতে পারছি। আমি নিজে রান করেছি। দলও জিতেছে। এর থেকে বড় পুরস্কার আর কি হতে পারে। আমরা টানা চারটি ম্যাচ জিতলাম। প্লে অফ খেলার আশা জিইয়ে রেখেছি। সব কিছু ভাল বলতে পারেন। তাই দেবিশা এই পুরস্কার পেয়ে খুশি হবে। এই মরশুমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে দারুন ফর্মে স্কাই। ৯ ম্যাচে তিনবার অপরাজিত থেকে করেছেন ৩৭৩ রান। সর্বোচ্চ ৬৮। গড় ৬২ পার করে গিয়েছে। মিডলঅর্ডারে খেলতে আসা কোনও ক্রিকেটারের এমন পারফরম্যান্স হলে সবাই প্রশংসায় ভরিয়ে দেবেন। দিচ্ছেনও। রান পাচ্ছেন বলে খুশি স্কাইও। বললেন, উল্টোদিকের উইকেটে রোহিত থাকলে খেলা অনেক সুবিধা হয়ে যায়। ওর ব্যাটিং দাপটে প্রতিপক্ষ বোলাররা লাইন হারিয়ে ফেলে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমি নিজেও রান করে পেরেছি। এই কারনে ওকে ধন্যবাদ। শেষ দুটি ম্যাচে আমরা রোহিতকে পুরনো ফর্মে পেলাম। আর ও যেদিন এভাবে খেলা শুরু করে, সেদিন দলের জয় সহজ হয়ে যায়। ২০১২ সাল থেকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলছেন স্কাই। শুরুর দিকে রান পেতেন না। এমনকি ২০১৬ সালে দেবিশাকে বিয়ে করার সময়ও নিজেকে দলের অপরিহার্য ক্রিকেটার হিসেবে চেনাতে পারেননি। কিন্তু তারপর ছন্দ পেয়ে যান। বিশেষ করে ২০২৩ সালে তিনি আইপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি (১০৩) পান। সেই মরশুমে করেন ৬০৫ রান। এবার যেভাবে তাঁর গাড়ি ছুটছে, তারপর বলা যায় যে মুম্বই নকআউটে খেললে স্কাই সেই জায়গায় আবার পৌঁছে যাবেন। তিনি মাঠে আসা মানে স্পিনারদের কপালে দুঃখ নির্ঘাত। সুইপ মেরে বোলারদের লাইন বেলাইন করে দেন। বলছিলেন, প্র্যাকটিসে আমি নিয়মিত সুইপ শট খেলি। ম্যাচে যেভাবে আমাকে দেখছেন, সেই ভাবে স্পিনারদের বিরুদ্ধে খেলার চেষ্টা করি। এটা তো একদিনে হয়নি। খেলতে খেলতে হয়ে গিয়েছে। আশা করব, পরের ম্যাচগুলিতেও আমি নিজেকে এভাবে ধরে রাখতে পারব।
বৃহস্পতিবারের বদলে বুধবারই গোপনে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে অস্কারের মিটিং, ফুটবলারদের তালিকা দিলেন শিংটো

একেবারে গোপনেই হয়ে গেল মিটিংটা। ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কোচ অস্কার ব্রুনজোর মিটিং হওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু বিকেলে ক্লাবের ইতিহাসের উপর তৈরি তথ্যচিত্র উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার রাতেই শহর ছাড়বেন অস্কার। তাই বৃহস্পতিবার সময় বার করা যাচ্ছিল না। সে কারণেই অত্যন্ত গোপনে বুধবারই মিটিংটা সেরে ফেলা হল। না, এই মিটিংয়ে ছিলেন না ক্লাবের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। ইমামি কর্তা বিভাস আগরওয়াল এর সঙ্গে কোচ অস্কারের মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সিটিও অময় ঘোষাল। পরে যোগ দেন ফুটবল ডিরেক্টর থংবই শিংটো। প্রথমে কোচের ব্যাপারে দুপক্ষের কিছু আলোচনা হয়ে যায়। তারপর দল গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। কোচ সব বিদেশিকেই ছেড়ে দিতে চান কিন্তু ক্রেসপো, হিজাজি, দিয়ামন্তাকসের সঙ্গে দু বছরের চুক্তি আছে। তাই ঠিক হয় তাঁদের ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত হবে। কারণ তাঁদের ছাড়তে গেলে বড় অঙ্কের টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তবে দিমির ব্যাপারে একটু দুর্বলতা আছে কোচের। তাঁর ব্যাপারে একটু নরম মনোভাব। তাই দিমির সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করবে ম্যানেজমেন্ট। হিজজি ও ক্রেসপোর ব্যাপারে অবশ্য অস্কার যে অনড়, সেটা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। হিজাজির ছুটি হয়ে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত। ক্রেসপোর পরিবর্ত হিসাবেও তিনি দু তিনটি নাম জানিয়ে দিয়েছেন। এখন তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারটা পুরোপুরিই ইমামির কোর্টে। এই পরিস্থিতিতে আলোচনায় কোচ অস্কার জানিয়ে দিয়েছেন, বিদেশিদের মধ্যে আপাতত তিনি অন্তত একজন উইঙ্গার একজন স্ট্রাইকার ও একজন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার চান। হেক্টর ইউসতে আগেই সরে গিয়েছেন। এখন সেলিস ও মেসিকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়ে গেল। এই তিনজনের বদলেই কোচের চাহিদা মত প্রথমে তিন পজিশনের ফুটবলার নেওয়া হবে। থংবই শিংটো মিটিংয়ে ফুটবলারদের একটি দীর্ঘ তালিকা জমা দেন। যাতে ভারতীয় ফুটবলারের সংখ্যাই বেশি। কয়েকজন বিদেশি ফুটবলারের নামও তালিকায় আছে। সেটা নিয়েও আলোচনা হল। আপাতত নিজের মতামত জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দেশে ফিরে যাচ্ছেন অস্কার। এবার প্রক্রিয়া শুরু হবে। দেশি ও বিদেশি ফুটবলার বাছাই করে আগামী মরশুমের জন্য তৈরি হবেন অস্কার। মিটিং হল কাজ শুরু হবে, কিন্তু প্রশ্ন তো একটা থেকেই যাচ্ছে। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলার বাছাইয়ের পদ্ধতিটাই ভুল। তাই ভুগতে হচ্ছে। এবার কি সেই পদ্ধতি বদলাবে? না হলে কিন্তু লাল হলুদের হাল ফেরা সত্যিই কঠিন।
দুরন্ত রোহিতে টানা চার ম্যাচ জিতে প্লে অফের কাছে মুম্বই

সানরাইজার্য় হায়দরাবাদ: ৮ উইকেটে ১৪৪ (২০ ওভার) মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ৩ উইকেটে ১৪৬ ( ১৫.৪ ওভার) এক অনুষ্ঠানে সান গ্রুপের চেয়ারম্যান কলানিধি মারানকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলেন দক্ষিণী সিনেমার নায়ক রজনীকান্ত। মজা করে বলেছিলেন, আইপিএলে কাব্যর দলকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তোল। দলের ব্যর্থতায় কাব্যর চোখে জল দেখতে আমার ভাল লাগে না। গত মরশুমে আইপিএল ফাইনাল খেলেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ফাইনালে হেরে যায় কেকেআরের কাছে। সেদিনও গ্যালারিতে বসে কেঁদেছিলেন কাব্য মারান। টিভিতে সেই ছবি দেখে কষ্ট পেয়েছিলেন রজনীকান্ত। তো এই মরশুমে রজনীকান্তের মনের অবস্থা কেমন তা জানার ইচ্ছে আছে। কারন গতবারের দুই ফাইনালিস্টের অবস্থা একইরকম। হায়দরাবাদ চার পয়েন্ট পেয়ে ধুঁকছে। কেকেআর এক কদম এগিয়ে। তাদের সংগ্রহ ছয় পয়েন্ট। এই জায়গা থেকে প্লে অফ খেলার স্বপ্ন কেউ কি দেখতে পারে। না, সেটা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। উল্টোদিকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স লাফিয়ে লাফিয়ে চলেছে। টানা চার ম্যাচ জিতে তার লিগ টেবিলে তিন নম্বরে উঠে এসেছে। সাপ লুডো খেলায় সিঁড়িতে পড়ে যেমন লম্বা লাফ দেওয়া যায়, অনেকটা সেভাবে মুম্বই উপরে চলে এসেছে। ভাবা যায়! একসময় যারা একেবারে তলানিতে ছিল, তারা এখন প্রথম দুই দলের পরে। লিগের পাঁচ ম্যাচ খেলত হবে মুম্বইকে সেই পাঁচের মধ্যে তিনটি জিতলে প্লে অফ মোটামু়টি নিশ্চিত। আর যেভাবে খেলছে, তারপর শেষ চারের লড়াইয়ে না গেলে অবাক হতে হবে। হায়দরাবাদকে তারা হারাল ইনিংসের ২৬ বল বাকি থাকতে তিন উইকেট হারিয়ে। সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে ২৭ এপ্রিল মাঠে নামার আগে তারা আলাদা টনিক যে পেয়ে গেল। আগের ম্যাচে ওয়াংখেড়েতে সিএসকের বিরুদ্ধে তারা ৯ উইকেটে জিতেছে। সেই জয় দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। না হলে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে এ কোন মুম্বইকে দেখা গেল। কামিনসদের একটা দোষ আছে। তারা নিজেদের ছক থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে চান না। মাঠে নেমে মারকাটারি ক্রিকেট খেল। প্রতিপক্ষ বোলিংকে ধংস্ব করে দাও। আর এটা করতে গিয়ে নিজেরা ডুবছে। বুধবার হায়দরাবাদের মাঠে চাহার ও বোল্টের পরিকল্পনার কাছে তারা হেরে যায়। মাত্র ১৩ রানে চার উইকেট চলে যায়। সেই জায়গা থেকে ক্লাসেন হাল ধরেন। ৩৫ রানে পাঁচ উইকেট যাওয়ার পর ক্লাসেনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অভিনব মনোহর। তাঁদের জুটিতে ৯৯ রান যোগ হয়। ক্লাসেন ৪৪ বল খেলে করেন ৭১ রান। আর অভিনবের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ রান। আর এই রান কামিনসদের লড়াই করার রসদ জুগিয়ে দেয়। বোল্ট চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হলেও রোহিতের হাতে পুরস্কার তুলে দিলে খারাপ হত না। প্রশ্ন উঠতে পারে কেন রোহিতের কথা বলা হচ্ছে। ধোনিদের বিরুদ্ধে ৭৬ রান করে রোহিত ফর্ম খুঁজে পেয়েছিলেন। বুধবার যেন সেই জায়গা থেকে শুরু করলেন। কখনও পুল মারলেন। কখনও আবার দুর্দান্ত ড্রাইভ। তাঁর ব্যাটিং দাপটের কাছে হায়দরাবাদ ক্রমশ ম্যাচ থেকে হারিয়ে যেতে লাগল। দুরন্ত রোহিতে মুম্বইয়ের টানা চার ম্যাচ জয় সহজ হয়ে গেল সূর্যকুমারের ১৯ বলের ইনিংসেও। সূর্য করলেন অপরাজিত ৪০। একেবারে শেষদিকে রোহিত আউট হলেন ৪৬ বলে ৭০ রানের (৮টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারি) ইনিংস খেলার পর। ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার হিসেবে মাঠে এসে টানা দুটি ম্যাচে বড় রান পেয়ে গেলেন রোহিত। আর তিনি মাঠে থাকা মানে প্রতিপক্ষের কোনও রানই বাধা হতে পারে না রোহিতের ব্যাটের কাছে। তাই মু্ম্বই এখন প্লে অফের স্বপ্ন দেখতেই পারে। কারন তারা তো সেদিকেই ছুটছে। সংক্ষিপ্ত স্কোর: হায়দরাবাদ: ৮ উইকেটে ১৪৩ ( ক্লাসেন ৭১, অভিনব মনোহর ৪৩, বোল্ট ২৬ রানে ৪, চাহার ১২ রানে ২) মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ৩ উইকেটে ১৪৬ ( রোহিত ৭০, সূর্যকুমার ৪০ অপরাজিত) ম্যাচের সেরা: ট্রেন্ট বোল্ট।