শ্রেয়স বনাম রাহানে, বদলার ম্যাচে বদলই ভরসা

নাথিং ইজ ইমপসিবল, অনেকদিন আগে বিজ্ঞাপনে অনিল কুম্বলের কথাটি আবার যেন নতুন করে সামনে আসছে। আরও আছে। ইদানীং অনুপম খেরের এক প্রোগ্রামের শিরোনামের কথা কী করে ভুলি! দুনিয়া মে সব কুছ হোতা হ্যায়…। এই সব কথা মেনে নিলে কেকেআরের অন্দরমহলের ছবি কেন মানা যবে না! আইপিএলের গ্রুপ লিগে কেকেআরের বাকি ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে কেন জয় আসবে না। হাতের কাছে অনেক উদাহরন আছে। ২০১৪ সালে এবারের মতো শুরু করেও কেকেআর ট্রফি জিতেছিল। ২০২১ এর আইপিএলে এমনই অ্যাকশন রিপ্লে দেখার পর কেকেআর ফাইনাল খেলেছিল। সেবার অবশ্য ট্রফি হাতে ওঠে নি। অতীতে এমন কিছু ঘটাতে পারলে এবার রাহানেরা কেন কিছু করে দেখাতে পারবে না। পারতে পারে। সোজা সাপটা বললে বলতে হয়, পারতেই হবে। না হলে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা হারিয়ে যাবেন। কে আর বলবে চ্যাম্পরা যাচ্ছে। ক্রিকেটাররা সবই জানেন। তাঁরা যে চেষ্টা করছেন না তা নয়। চেষ্টায় খামতি নেই। কিন্তু হচ্ছে না। এমন অনেক সময় হয়। আসলে ব্যাটিং ক্লিক করছে না বলে কেকেআর ডুবছে। ভেসে যাওয়া দলকে টেনে তুলতে ব্যাটসম্যানদের বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। না হলে সব শেষ। শনিবার ইডেনে রাহানেরা হেরে গেলে ধরে নিতে হবে এবারের মতো সব শেষ। তখন কেউ বিশ্বাস করবেন না যে বাকি পাঁচ ম্যাচে পাঁচটি জিতলে প্লে অফ খেলা সম্ভব। তবে এখনই অতদূর ভাবার দরকার নেই। একটা করে ম্যাচ ধরে এগোতে পারলে কাজ সুবিধা হবে। প্রশ্ন উঠছে, কেকেআর কি শুধু ব্যাটসম্যায়নদের ব্যর্থতায় ম্যাচ হারছে! সেটাই বা বলি কী করে। সাদা চোখে পরিকল্পনার অভাব দেখা যাচ্ছে। কাকে কখন ব্যাট করতে পাঠাবে, তা নিয়ে দলের মধ্যে পজিটিভ ভাবনা নেই। না হলে গুজরাট ম্যাচে রাসেলকে কেন ডাগআউটে বসিয়ে দেরিতে নামানো হবে! তিনি কি ওভার প্রতি ১৫-২০ রান দরকার হলে মাঠে নেমে হাওয়ায় ব্যাট ঘোরাবেন! সেদিন রাসেলকে চার নম্বরে নামানোই যেত। তাঁর মতো ক্রিকেটারকে যত বেশি বল দেওয়া যাবে, ততই লাভ। এটা কেন বুঝতে পারছে না টিম ম্যানেজমেন্ট। পাঞ্জাব ম্যাচে আশা করা যায় এমন ভুল হবে না। পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে গেলে যা যা করার দরকার তাই করবে। কদিন আগে মুল্লানপুরে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে বোলাররা দারুন পারফরম্যান্স করেছিলেন। ১১১ রানে পাঞ্জাবকে আটকে দেওয়ার পর নিজেরা কী করে ৯৫ রানে শেষ। এখানেই প্রশ্ন উঠে আসে। সেদিনও ম্যানেজমেন্ট অঙ্কে ভুল করেছিল। শোনা যাচ্ছে, ইডেনে বদলার ম্যাচে কেকেআরে নাকি বেশ কিছু বদল হবে। সেই বদলের উপর ভরসা রেখে কেকেআর জয়ের কথা ভাবছে। তো সেই বদল কী হতে পারে। প্রথমে নাম উঠে আসছে রাসেলের! এমন ম্যাচে কী করে এটা সম্ভব! রাসেল রান পাচ্ছেন না। তাই তাঁকে বাইরে রাখ। বদলে পাওয়েলকে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। ডু অর ডাই পরিস্থিতিতে রাসেলকে বাইরে রেখে দল জয়ের কথা ভাববে। রাসেল রান পাচ্ছেন না। তো কে রান করছেন। এই তালিকায় অনেকের নাম উঠে আসবে। আইয়ার, রিঙ্কু, রামনদীপ, কারোর ব্যাট রান নেই। বদলের কথা ভাবা হলে এঁরা কেন দলে থাকবেন। রাসেলকে রেখে অন্যভাবে দল সাজানো যেতে পারে। ডিকক আগেই বাইরে গিয়েছেন। গুরবাজ গুজরাট ম্যাচে রান পাননি। তা হলে এই ম্যাচে বেঙ্গালুরুর সিসোডিয়াকে আনা যেতে পারে। প্র্যাকটিসে ম্যাচে তিনি ভাল ব্যাটিং করেছিলেন। তিনি এলে রাসেলের সঙ্গে পাওয়েলকেও নামানো যেতে পারে। আর কে আসবেন! ডাগআউটে কপিল দেবের মতো এমন কোন ক্রিকেটার তো বসে নেই। যিনি এসে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংও করে দিতে পারবেন। মনে রাখতে হবে পাঞ্জাব প্রথমে ব্যাট করে দুশো করে দিলে কেকেআর চাপে পড়ে যাবে। বৈভব খারাপ বল করছেন না। রানা সেভাবে চাপে ফেলতে পারছেন নাা। সব থেকে অবাক করার ব্যাপার এটাই যে নারাইনকে বল হাতে ভয়ঙ্কর হতে দেখা যাচ্ছে না। ব্যাটিংয়েও বড় রানই বা কোথায়! দলের একজন ব্যাটসম্যানকে শেষপর্যন্ত উইকেটে থাকতে হবে। সেই কাজটা করতে পারেন রাহানে। তিনি খারাপ খেলছেন না। তা হলে শেষ পর্যন্ত না থেকে কেন আউট হয়ে যাচ্ছেন। টিম মিটিংয়ে নিশ্চয় এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিরাট যা পারছেন, রাহানে সেই কাজটা করে দিলেই তো হয়। তা হলে সমস্যায় পড়তে হয় না। বেশি বদলে না গিয়ে পরিকল্পনা ঠিক রেখে এগোতে পারলে জয় আসবে। রাহানেদের উল্টোদিকে আছেন শ্রেয়স আইয়ার। গত মরশুমে যে ড্রেসিংরুমে তিনি ছিলেন, কলকাতায় এসে তার ঠিক উল্টোদিকের ঘরে বসছেন। উইকেট নিয়ে তাঁদের ভাবনার কিছু নেই। শ্রেয়স জানেন, এখানে উইকেট কেমন হবে। এই ম্যাচে বাড়তি খিদে নিয়ে শ্রেয়স মাঠে নামবেন। আগের ম্যাচে রান পাননি। তাই শুধু জয়ই লক্ষ্য নয়, সঙ্গে বড় ইনিংসও খেলতে চাইবেন শ্রেয়স। পাঞ্জাব আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলে। পাওয়ার প্লেতে আটকে দিতে পারলে ওরা চাপ পড়বে। সঙ্গে দুটি উইকেটও চাই। না হলে কাজ কঠিন হবে। মাথায় রাখতে হবে পাঞ্জাব দলে চাহাল আছেন। আগের ম্যাচে চার উইকেট নিয়ে যিনি কেকেআর ইনিংস ভেঙ্গেছিলেন। তেমন যেন ইডেনে না হয়। কেকেআরের হার মানে ইডেন ফাঁকা। সেটা নিশ্চয় রাহানেরা চাইবেন না।
নোয়াকে রুখতে দীপক ভরসা

নোয়া সাদুইকে নিয়ে মাথাব্যথা এখন সবুজ-মেরুন শিবিরে। শনিবার মোহনবাগান সুপার কাপ অভিযানে নামছে। প্রতিপক্ষ কেরল ব্লাস্টার্স। যারা কিনা প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। সেই দলকে নিয়ে ভাবতেই হত না দ্বিমুকুট জয়ীদের, যদি না আইএসএল খেলা দলটা থাকতো। অধিকাংশ ফুটবলারকে বাদ দিয়ে সুপার কাপ খেলতে গিয়েছে মোহনবাগান। ভুবনেশ্বরের মাটিতে কেরলকে যদি এই দল হারাতে পারে তাহলে নিঃসন্দেহে চমক সৃষ্টি করবে। তা ভালমতোই জানেন কোচ বাস্তব রায়। তিনি কেরল বনাম ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ দেখেছেন। তাই জানেন, খেলার ফল নিজেদের অনুকূলে আনতে গেলে কী করতে হবে। সেইজন্য ঠিক করে ফেলেছেন কেরলের প্রাণভোমরা নোয়াকে অকেজো করে দিতে। তারজন্য তিনি ঠিক করেছেন দীপক টাংরিকে ব্যবহার করবেন নোয়াকে আটকানোর জন্য। যদি দীপক নোয়াকে আটকে দিতে পারেন তাহলে মোহনবাগানের জয় তুলে নিতে বিশেষ সমস্যা হবে না। টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্য স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “কেরলের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখে আমাদের মনে হয়েছে, নোয়া হল তাদের প্রধান সম্পদ। তাই নোয়াকে যদি রুখে দেওয়া যায় তাহলে না জেতার কোনও কারণ নেই। সেইজন্য আমরা ঠিক করেছি, নোয়াকে ধরে নেবে দীপক টাংরি। আর প্রতি-আক্রমণে দ্রুত উঠে আসবে আশিক কুরিনিয়ন। ফলে নোয়া বাধ্য হবে নিচে নেমে আসতে। নাহলে আশিককে থামানো সহজ হবে না। এই জোড়া ফলাতে আমরা কাবু করতে চাইছি কেরলকে।” মোহনবাগানের এই দলটার কাছে প্রমাণ করার অনেক কিছু আছে। বিশেষ করে যারা ঠিকমতো খেলার সুযোগ আইএসএলে পাননি মূলত তঁাদের নিয়ে সুপার কাপে খেলতে গিয়েছে মোহনবাগান। ম্যাকলারেন, পেত্রাতোসদের মতো প্রতিষ্ঠিত বিদেশি ফুটবলাররা বাড়ি চলে গিয়েছেন। একমাত্র ডিফেন্ডার নুনো রেইসকে রেখে দিয়েছে সবুজ-মেরুন শিবির। যিনি কিনা এবারের আইএসএলে খেলেননি। তাছাড়া প্রথম একাদশেরও বলতে গেলে কেউ নেই। সাহাল আব্দুল সামাদকে রাখা হয়েছে সুপার কাপের দলে এই কারণে, যেহেতু তিনি চোট-আঘাতে দীর্ঘদিন জর্জরিত ছিলেন। তাছাড়া সাহাল ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি। ফলে সাহালকে রেখে দেওয়া হয়েছে সুপার কাপের দলে। লেফট ব্যাক আশিক কুরিনিয়ন রাখা হয়েছে বলতে গেলে একই কারণে। তাছাড়া আশিক যদি ঠিকমতো ওভারল্যাপে উঠতে পারেন তাহলে প্রতিপক্ষ দল বিপদে পড়তে বাধ্য। দীপক টাংরি হয়েছেন সুপার কাপে মোহনবাগানের অধিনায়ক। সেইসঙ্গে সিনিয়র দল থেকে নেওয়া হয়েছে সুহেল ভাট, অভিষেক সূর্যবংশী, ধীরাজ সিংদের। ডেভলাপমেন্ট স্কোয়াড থেকে ্এসেছেন শিবাজিত সিং, সন্দীপ মালিক, রাজ বাসফোরদের মতো প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলাররা। কেরল শনিবার ছয় বিদেশি নিয়ে মাঠে নামতে পারে। সুতরাং ধারে-ভারে এগিয়ে আছে কেরল। দলের কোচ বাস্তব রায় জানিয়ে দিলেন, প্রতিপক্ষ দলের কতজন বিদেশি আছেন তা নিয়ে তিনি আদৌ ভাবছেন না। বাস্তব বলছিলেন, “প্র্যাকটিশ করানোর সুযোগ সেভাবে পেলাম না। তবে আমার কাছে প্লাস পয়েন্ট হল, এরা সকলেই ম্যাচের মধ্যে ছিল। তাই ম্যাচ ফিট নিয়ে আমার দলে কোনও সমস্যা নেই। সিনিয়র ও জুনিয়রদের নিয়ে আমরা দলগঠন করেছি। সিনিয়র দল যেমন আইএসএলে লিগ-শিল্ড ও কাপ জিতেছে। তেমনি জুনিয়ররা আবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আরএফডিএল। মাত্র তিন-চারদিনের প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। তাই বলে দলে চোট-আঘাত, ফিটনেস, কন্ডিসনিং নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। যদি ঠিকমতো ছেলেরা বোঝাপড়া ঠিকমতো গড়ে তোলে তাহলে আমাদের ভাবতে হবে বলে মনে হয়না।” তাই বলে কেরলকে উড়িয়ে দিচ্ছেন তা নয়। বরং কেরলকে সমীহ করে বাস্তবকে বলতে শোনা গেল, “কেরল ব্লাস্টার্সের কোচ বদল হয়েছে। তারা তাই নবরূপে বলতে গেলে খেলতে এসেছে সুপার কাপে। দলটা বেশ ভালোই খেলছে। একদিক দিয়ে আমাদের ভালোই হয়েছে। কেরলের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ছেলেরা কেমন খেলে সেটাই দেখার বিষয় হয়ে রইল। আমরা তো প্রথম লক্ষ্য থাকবে, জুনিয়ররা ভাল খেলে সিনিয়র দলে নিজেদের জায়গা করে নিক। তাহলেই ভাববো কিছু করা গেল।”
কন্যাশ্রী কাপেও দাপট ইস্টবেঙ্গলের

মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধান। মহিলা জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চকম সৃষ্টি করেছিল ইস্টবেঙ্গল। পুরুষদের সিনিয়র দল যখন ধঁুকছে তখন মেয়েদের এই সাফল্য ময়দানে সাড়া ফেলে দেয়। কিছুটা হলেও লজ্জার হাত থেকে বেঁচেছিল লাল-হলুদ শিবির। সেই ইস্টবেঙ্গল কন্যাশ্রী কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে জয় তুলে নিল। শুক্রবার ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ ছিল মৈত্রী সংসদ। যারা মশাল বাহিনির কাছে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। তাও আবার মহিলা জাতীয় লিগে খেলা দলের অধিকাংশ ফুটবলার ছিলেন না। বলতে গেলে নবাগতদের নিয়ে ঘরোয়া লিগ অভিযান শুরু করেছে ইস্টবেঙ্গল। আর তাতেই কিনা আক্রমণের ঢেউয়ে পুরোপুরি ভেসে গেল মৈত্রী সংসদ। ইস্টবেঙ্গল ম্যাচটা জেতে ৮-১ ব্যবধানে। ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে গোলগুলি করেন দুটো করে সুলঞ্জনা রাউল ও দেবলীনা। বাকি গোলদাতারা হলেন সিন্ডি, সুজেশ, সুস্মিতা লেপচা ও কার্থিকা। তার আগে কন্যাশ্রী কাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয় কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে। শুক্রবার থেকে কন্যাশ্রী কাপ এ ডিভিসন লিগে মোট ১৪টা দল অংশ নিয়েছে। উদ্বোধন করে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মেয়েদের লিগকে ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “বাংলার মেয়েদের নিয়ে সত্যি গর্ব করা উচিত। যেভাবে বাংলার মেয়েরা ফুটবলে এগিয়ে আসছে তা নিয়ে আমরা গর্ব করতেই পারি। কিছুদিন আগে ইস্টবেঙ্গল হয়েছে ভারত সেরা। এখন দেখা যাচ্ছে, মেয়েরা খেলাধূলোতে প্রচন্ড আগ্রহ প্রকাশ করছেন। মাঠে এসে নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এসবই বুঝিয়ে দিচ্ছে, বাংলার মেয়েরা আর পিছিয়ে থাকতে রাজি নয়।” উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, আইএফএ-র চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত, সচিব অনির্বাণ দত্ত, সহ-সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস, সৌরভ পাল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে এই কন্যাশ্রী কাপকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। গত কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা সকলের নজর কেড়ে নিয়েছে।
নিজেকে সরিয়ে নিলেন নীরজ

এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিলেন নীরজ চোপড়া। দক্ষিণ কোরিয়ার গুমিতে এই প্রতিযোগিতা হবে। ২৭-৩১ মে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তঁার যোগ না দেওয়ার পেছনে কারণ হল-দোহা ডায়মন্ড লিগ ও নীরজ চোপড়া ক্লাসিক। এই দুটো প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা যথাক্রমে ১৬ মে ও ২৪ মে। এনসি ক্লাসিক হওয়ার তিন দিন পর ২৭ মে গুমিতে এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ হবে। তাই এই দুটো প্রতিযোগিতাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নীরজ। ইতিমধ্যে নীরজ ২ কেজি ওজন কমিয়েছেন। নিজেকে রেখেছেন নিবিড় অনুশীলনের মধ্যে। তঁার বদলে দলে নেওয়া হয়েছে শচীন যাদব ও যশ বীর সিংকে। শচীন ৮৩.৮৬ মিটার থ্রো করে ফেডারেশন কাপে সোনা পেয়েছেন। ধারাবাহিকতার তুঙ্গে রয়েছেন শচীন। তার আগেও ৩৮তম জাতীয় গেমসে রেকর্ড সহ সোনা পেয়েছিলেন। ৮৪.৩৯ মিটার থ্রো করে হরিয়ানার রাজেন্দ্র সিংয়ের পুরোন রেকর্ড ৮২.২৩ মিটার ভেঙে দিয়েছেন। এদিকে যশ ইন্ডিয়ান ওপেন অ্যাথলেটিক্স ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এশিয়ান গেমসে রুপো জয়ী কিশোর জেনাকে পেছনে ফেলে যশ সোনা জিতে নেন। তাই এই দুই প্রতিযোগিকে জ্যাভলিন থ্রো-বিভাগে রাখা হয়েছে।
এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে নিয়ে সমস্যা তুঙ্গে

পাহেলগমে সন্ত্রাসবাদীদের হামলাকে কেন্দ্র করে পুরুষদের এশিয়া হকি কাপ অনিশ্চিয়তার সামনে এসে পড়ল। বিহারের রাজগীরে ২৭ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর এই প্রতিযোগিতা হবে। কিন্তু পাহেলগমে সন্ত্রাসবাদীদের হামলার পর পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের ভিসা দিতে আর রাজি নয় ভারত। তিনজন বিদেশি নাগরিক-সহ ২৬জন ভারতীয় নিহত হয়েছেন। যদিও পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীরাই যে এই ঘটনার মূলচক্রী তা এখনই সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু কথাবার্তা ছিল উর্দু উচ্চারণের ঢঙে। যা সাধারণত পাকিস্তানিদের কথায় ধরা পড়ে। এমনিতেই দু-দেশের সঙ্গে তেমন সম্পর্ক ছিল না। যেটুকু টিমটিম করে জ্বলছিল তা আর এখন অবশিষ্ট নেই। পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ভারত। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিক বর্তমান ভারতে রয়েছেন তঁাদেরও এই মাসের মধ্যে পাকিস্তান ফিরে যেতে বলা হয়েছে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মাসের শেষে সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিককে দেশে ফিরে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। “যে সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিককে ভারতে আসার জন্য বৈধ ভিসা দেওয়া হয়েছিল তা ২৭ তারিখের পর থেকে বাতিল করা হয়েছে। চিকিতসা সংক্রান্ত ভিসা যারা পেয়েছিলেন তঁাদের জন্য ২৯ তারিখ অব্দি বৈধ থাকবে। বর্তমানে ভারতে থাকা সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে চলে যেতে বলা হয়েছে।” এমন কড়াকড়ি চলছে যখন ধরে নেওয়া যায় এশিয়া কাপে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয় থাকবেই। ধরেই নেওয়া যায়, ভারত পাকিস্তানিদের হকি খেলার জন্য ভিসা দেবে না। একটাই বঁাচোয়া, প্রতিযোগিতা শুরু হতে যথেষ্ট দেরি আছে। তাই পরিস্থিতি বদল ঘটতেই পারে। তবে এই প্রতিযোগিতার গুরুত্ব অপরিসীম। এখানকার বিজয়ী দল আগামী বছর মেগা ইভেন্টে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবে। যা হবে নেদারল্যান্ডস-বেলজিয়ামে। শুধু সিনিয়র দল নয়, পাকিস্তানের জুনিয়র দলকে ভারতে আসা নিয়ে সংশয় বাড়ছে। এবছর শেষের দিকে মাদুরাইতে জুনিয়র হকি বিশ্বকাপ হবে। সেখানেও মনে হয়না পাকিস্তান দলকে আসার অনুমতি দেবে ভারত। পাকিস্তান হকি দল শেষবারের মতো এসেছিল ২০২৩ সালে। সেবার চেন্নাইতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান দল অংশ নিয়েছিল। ২০১৮ বিশ্বকাপ ও ২০২১ সালে জুনিয়র বিশ্বকাপেও যোগ দিয়েছিল পাকিস্তান। এমন কী ২০২৩ সালে পাকিস্তানের ফুটবল দল দক্ষিণ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার জন্য এসেছিল। এমন কী গতবছর ডেভিস কাপে খেলার জন্য ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা। কিন্তু এসব মনে হয়না সাম্প্রতিককালে আর ঘটবে।
বাংলার প্রতি কৃতজ্ঞ, জন্মদিনে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন বিজয়ন

কালো হরিণের উচ্ছ্বাস আমরা দেখেছি। সবুজ ক্যানভাসে ছবি আঁকা দেখেছি। দেখেছি তাঁর ফুটবলে বিদ্যুতের ঝলক। আর তাঁর ৫৬তম জন্মদিনে আমরা দেখলাম তাঁর বিনয়, তাঁর কৃতজ্ঞতাবোধ, তাঁর সরল অভিব্যক্তি। শুক্রবার ৫৬-এয় পা দিলেন আইএম বিজয়ন। ভারতীয় ফুটবলে কিংবদন্তি হয়ে যাওয়া ফুটবল মাঠের শিল্পী বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের জন্য উজাড় করে দিলেন তাঁর কৃতজ্ঞতা। জানালেন অজস্র ধন্যবাদ। বিজয়নের কথায়, বাংলা, বাংলার মানুষই তাঁকে বিজয়ন করেছে। তাই অনেক ধন্যবাদ। কথাগুলো বলার সময় বিজয়ন সেই একই রকম উচ্ছল, আবেগপ্রবণ। কেরলের ত্রিচূড় থেকে কলকাতায় এসে হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় ফুটবলের এক মহীরুহ। তাঁর ফুটবল শিল্পে মোহিত হয়েছিলেন, উদ্বেলিত হয়েছিলেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। সবুজ মেরুন, লালহলুদ দুটি জার্সিতেই ফুটিয়েছেন ফুল। ভারতীয় দল, আন্তর্জাতিক ফুটবল – বর্ণময় এক জার্নি। ভারতীয় ফুটবলে আইএম বিজয়ন এক মহাকাব্যিক অধ্যায়। ১৯৬৯-এর ২৫ এপ্রিল ত্রিচূড়ে জন্ম। দ্রারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বেড়ে ওঠা। পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহা্য্য করতে ত্রিচূড় কর্পোরেশন স্টেডিয়ামে সোডা বোতল বিক্রি করেছেন।সঙ্গে চালিয়েছেন পড়াশোনা ও ফুটবল। ১৭ বছর বয়সে যোগ দেন কেরল পুলিশের ফুটবল টিমে। তারপর বদলে গেল জীবন। বদলে দিলেন ছবি। শুরু হল সোনালি এক কেরিয়ার। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, জেসিটি, এফসি কোচি – তাঁর যৌবনের উপবন। কলকাতায় প্রথম ক্লাব মোহনবাগান আর কেরিয়ারের শেষ ক্লাব ইস্টবেঙ্গল। জাতীয় দলে অভিষেক ১৯৯২ সালে। ভারতীয় ফুটবলে বাইচুংয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে ঐতিহাসিক এক অধ্যায়। ২০০০ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত ছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক। ১০২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে করেছেন ৯৭টি গোল। ২০০৩-এর অর্জুন, এ বছরের পদ্মশ্রী – তাঁকে তো বটেই, গর্বিত করেছে আমাদেরও। জন্মদিনে বাংলার জন্য যেমন তাঁর কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ, বাংলারও তেমনি অজস্র ভালবাসা, শুভেচ্ছা। বিজয়ন মানে একটা আবেগ। বিজয়নের ফুটবল মানে একটা সুখানুভূতি। আর কিংবদন্তির জন্মদিন মানে মাথা ঝুঁকিয়ে শুভেচ্ছা, অভিনন্দনে ভাসিয়ে এ কথা বলার দিন – হ্যাপি বার্থ ডে বিজয়ন, হ্যাপি বার্থ ডে।
শনিবার সুপার কাপে অভিযান শুরু মোহনবাগানের, তরুণ ব্রিগেডের বড় পরীক্ষা

শনিবার সুপার কাপে যাত্রা শুরু মোহনবাগানের। ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আসা কেরালা ব্লাস্টার্সের মুখোমুখি হবে সবুজ মেরুন ব্রিগেড। মোহনবাগান কোচ, সিনিয়র ফুটবলার থেকে কর্তা – কারোরই সুপার কাপ নিয়ে মাথাব্যথা নেই। সে কারণেই বিদেশিরাসহ প্রথম দলের বিদেশিদের সুপার কাপে খেলানো হচ্ছে না। তরুণ ব্রিগেড নিয়েই মাঠে নামবেন কোচ বাস্তব রায়। হেড কোচ হোসে মোলিনাও এই টুর্নামেন্টে বেঞ্চে নেই। তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন সহকারি বাস্তব রায়কে। মোলিনা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন আইএসএলে যাঁরা বেশি ম্যাচ টাইম পাননি, তাঁদেরই সুযোগ দেওয়া হবে সুপার কাপে। সেই মত দলে রয়েছেন ধীরাজ সিং, দীপেন্দু বিশ্বাস, দীপক টাংরি, সাহাল আব্দুল সামাদ, আশিক কুরুনিয়ান, অভিষেক সূর্যবংসীরা। এদেঁর সঙ্গে থাকবেন আরএফডিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া তরুণ মোহনবাগান দল।একমাত্র বিদেশি হিসাবে খেলবেন নুনো রেইস। কোচ বাস্তব রায় প্রথম একাদশও মোটামুটি সাজিয়ে ফেলেছেন। গোলে ধীরাজ, রক্ষণে দুই স্টপার পজিশনে খেলবেন নুনো রেইস ও দীপেন্দু। দুই সাইডব্যাক আমনদীপ ও সৌরভ ভানওয়ালা।মাঝমাঠে সাহাল, টাংরি ও সূর্যবংশী। বাঁদিকের উইংয়ে আসিক, ডানদিকে সালাহউদ্দিন। সামনে থাকবেন সুহেল ভাট। মোহনবাগানের নেতৃত্ব পেয়ে দারুন আপ্লুত দীপক টাংরি। কোচ বাস্তব রায় জানিয়ে দিলেন, আরএফডিএলে চ্যাম্পিয়ন তরুণরা খেলার মধ্যেই ছিলেন, তাই প্রস্তুতিতে ঘাটতি নেই, শুধু সিনিয়র দলের ফুটবলারদের সঙ্গে তাঁদের বোঝাপড়া গড়ে তোলাটাই চ্যালেঞ্জ। কেরল ব্লাস্টার্স খুবই কঠিন প্রতিপক্ষ। তবে এটা ভালই হয়েছে বলে মনে করেন বাস্তব। কারণ হিসাবে তিনি জানান, শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর তরুণ ফুটবলারদের ক্ষমতাকে আরও ভালভাবে বুঝে নিতে পারবেন। তাই শনিবারের ম্যাচের দিকে শুধু বাস্তব নন, তাকিয়ে আছে মোহনবাগান ম্যানেজমেন্টও।
মেসিরা সম্পূর্ন হতাশ

কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপে সংশয়ের পাহাড়ের সামনে দঁাড়িয়ে গেল ইন্টার মায়ামি। প্রথম লেগের সেমিফাইনালে মেসি, সুয়ারেজরা হেরে বসলেন। ভ্যাঙ্কুভার ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে ইন্টার মায়ামিকে। প্রথম সেমিফাইনালে হেরে বসায় ইন্টার মায়ামির সমর্থকরা আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন। তাহলে কি ফাইনালে ওঠা আর সম্ভব নয়! ভরসা জোগাচ্ছে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ। লস অ্যাঞ্জেলসের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে প্রথম লেগের খেলায় হেরে গিয়েছিল মায়ামি। কিন্তু পরবর্তী রাউন্ডের খেলায় জিতে যান মেসিরা। ভ্যাঙ্কুভার সমস্যায় ফেলে দিয়েছে ২-০ গোলে জিতে যাওয়ায়। লস অঞ্জেলস জিতেছিল ১-০ গোলে। ভ্যাঙ্কুভারের বিরুদ্ধে মোটেই সুবিধে করতে পারেননি মেসি। তাই তঁার পথ ধরেই সুয়ারেজ, সের্জিও বুসকেতসরাও কেমন যেন ঝিমিয়ে ছিলেন। আক্রমণ আর প্রতি-আক্রমণে খেলা বেশ জমজমাট হয়ে ওঠে। গোলের সুযোগ পাচ্ছিল দুটি দলই। কিন্তু কেউই শেষ লক্ষ্যে পৌছতে পারেননি। বিশেষ করে মেসি যখন ভ্যাঙ্কুভারের সীমানায় ঢুকে গিয়েছেন তখনই চলেছে প্রবল উল্লাস। ফেটে পড়েছেন মেসি ভক্তরা। ২৪ মিনিটে দুরন্ত এক ক্রস থেকে হেডে গোল করে ভ্যাঙ্কুভারকে এগিয়ে দেন মার্কিন স্ট্রাইকার ব্রায়ান হোয়াইট। তারপর গোল পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল মায়ামি। সুবিধে করতে পারেনি। বিরতির আগে ম্যাচের রাশ পুরোপুরি নিয়ে ফেলেছিল মায়ামি। তবু গোল পায়নি। বিরতির পরও মেসিরা মরিয়া মনোভাব নিয়ে ঝঁাপিয়ে ছিলেন। তাই বলে পিছিয়ে পড়েনি ভ্যাঙ্কুভারও। ভ্যাঙ্কুভারের রক্ষণভাগকে অবশ্যই প্রশংসা করতে হবে। তারা মেসি, সুয়ারেজদের কোনও সময়ের জন্য গোল করতে দেয়নি। ফ্রি-কিক থেকে শুরু করে, বিপক্ষের সীমানায় ঢুকে তেমন সুবিধে করতে পারছেন না মেসিরা তখন-ই কফিনে শেষ পেরেকটি পুতে দেয় ভ্যাঙ্কুভার। ৮৫ মিনিটে দুরন্ত আক্রমণ থেকে দলকে দ্বিতীয় গোলটি এনে দেন সেবাস্তিয়ান বেরহাল্টার। তখন মায়ামির সমর্থকরা বুঝে গিয়েছেন, আজ তঁাদের দিন নয়। ১ মে মায়ামির মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ফের মুখোমুখি হবে দু-দল। এখন সেইদিকে তাকিয়ে আছেন মেসিরা।
প্রচন্ড ক্ষুব্ধ নীরজ

এনসি ক্লাসিকে আরশাদ নাদিমকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে যেভাবে নীরজ চোপড়ার সমালোচনা করা হচ্ছে তাতে তিনি ক্ষুব্ধ। তাই বাধ্য হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজস্ব বক্তব্য তুলে ধরতে গিয়ে নীরজ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, যেভাবে তঁার সমালোচনা চলছে তা সহ্যের অতীত। নিজস্ব বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নীরজ বলেছেন, “অবাক হয়ে যাচ্ছি, এনসি ক্লাসিকে আরশাদ নাদিমকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে যেভাবে আমাকে সমালোচনা করা হচ্ছে তারজন্য সত্যিই কি আমাকে দায়ী করা উচিত? গত কয়েকদিন ধরে দেখছি, আরশাদকে এনসি ক্লাসিকে খেলতে আসার জন্য বলায় আমাকে যা নয় তাই বলা হচ্ছে। বুঝতে পারছি না, এসব বলার মানে কী। অনেকেই আমাকে দেখছেন ঘৃণার চোখে। বুঝতে পারছি না, আমন্ত্রণ জানিয়ে কী দোষ করলাম। আরও দুঃখের বিষয় হল, আমার পরিবারকেও টেনে আনা হচ্ছে সমালোচনার কেন্দ্রে। কেন যে এসব হচ্ছে তাই বুঝতে পারছি না।” বেঙ্গালুরুতে আগামী মাসে ২৪ মে অনুষ্ঠিত হবে এনসি ক্লাসিক। নীরজ চোপড়ার নামেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। অলিম্পিকে জোড়া পদক জয়ী নীরজ এনসি ক্লাসিক প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার জন্য বিশ্বের সেরা থ্রোয়ারদের সঙ্গে আরশাদ নাদিমকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। যিনি গত অলিম্পিকে সোনা জিতেছেন। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু পহেলগঁাওতে সন্ত্রাসবাদীদের হামলার পর অনেকেই এখন টার্গেট করে ফেলেছেন নীরজকে। যেহেতু তিনি আরশাদকে এই প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। “আরশাদকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলাম, একজন ক্রীড়াবিদ আর একজন ক্রীড়াবিদকে যেভাবে সম্মান জানায়, সেইভাবে তাকে এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। এর বেশি কিছু যেমন নয়, আবার কমও নয়। এনসি ক্লাসিক করার প্রধান উদ্দেশ্য হল বিশ্বের সেরা ক্রীড়াবিদদের নিয়ে এসে এই প্রতিযোগিতায় নামানো। বিশ্বের দরবারে অ্যাথলেটিক্সকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা। পহেলগঁাওতে যেদিন সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালায় তার দু-দিন আগে বিশ্বের সেরা জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের আমন্ত্রণ জানাই।” নীরজ স্বীকার করে নিচ্ছেন, পহেলগঁাওতে এমন বিশ্রি ঘটনার পর আরশাদকে হয়তো আর আসতেই দেওয়া হবে না। তিনিও মনেপ্রাণে চাইছেন না আরশাদ এই প্রতিযোগিতায় নামুন। “আমি সবসময় আমার দেশকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। তাই দেশের স্বার্থ সবার আগে দেখব। যারা ভারতবাসীর ক্ষতি করতে চায় তাদের নিশ্চয় আমন্ত্রণ জানাতে যাব না। এরজন্য ভারতীয় জনগণের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি। সমগ্র ভারতবাসীর সাথে যা ঘটেছে তাতে আমি আহত শুধু নই, প্রচন্ড ক্ষুব্ধ।” শুধু এইটুকু বলে থেমে যাননি নীরজ। তিনি আরও বলেন, “আমি এতবছর ধরে ভারতবাসী হিসেবে নিজেকে গর্বিত বলে মনে করি। সেই জায়গায় দঁাড়িয়ে যদি আমার সততা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন তখন কষ্ট হতে বাধ্য। আরও খারাপ লাগছে, এমন সব লোকদের সামনে গিয়ে আমাকে ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে যারা আমার পরিবারকে কোনও যুক্তি ছাড়াই গালমন্দ করতে ছাড়ে না। আমরা সরল প্রকৃতির মানুষ। দয়া করে আমাদের অন্যকিছু পরিচয়ে খাড়া করবার চেষ্টা করবেন না। কিছুদিন ধরে দেখছি, মিডিয়াও ক্রমাগত আমাকে টার্গেট করার চেষ্টা করছে। যা নয়, তাই মিথ্যে বলে চালাবার চেষ্টা চলছে। আমি সাধারণত কম কথা বলি। এখন যদি কম কথা বলাকে অনেকে সত্য বলে মনে নেয় তাহলে সত্যি আমার বলার কিছু থাকে না।” গতবছর প্যারিস অলিম্পিকে আরশাদ জ্যাভলিন থ্রো-তে সোনা পান। রুপো পেয়েছিলেন নীরজ চোপড়া। সোনার পদক ছেলের হাতছাড়া হলেও অখুশি ছিলেন না নীরজের মা। তঁার বক্তব্য ছিল, নীরজ পায়নি তো কী হয়েছে। ঘরের ছেলে তো আরশাদও। তার সোনার জয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে নীরজ বলেন, “মানুষের মত যে কীভাবে সহজে পরিবর্তন ঘটে যায় তা এখন বুঝতে পারছি। অলিম্পিকের পর আমার মা সরলতার সঙ্গে বলেছিলেন, আরশাদও আমার ছেলে। তখন প্রশংসার ঝড় উঠে গিয়েছিল। সকলে তঁার এই মন্তব্যকে বাহবা দিতে ছাড়েননি। অথচ এখন তারাই কিনা বিরূপ মন্তব্য করতে পিছপা নয়।”
থাংবই শিংটোকে স্বাগত ফুটবলারদের; ড্রেসিংরুমের আবহাওয়া বদলানোই লক্ষ্য আগামি মরশুমে

সুদীপ পাকড়াশী: সুপার কাপে প্রথম ম্যাচেই লজ্জ্বার বিদায়ের পর সাংবাদিক বৈঠকে ফুটবলারদের ‘ক্যাজুয়াল’ মানসিকতা নিয়ে অস্কার ব্রুজোর হতাশায় সম্মতি একাধিক ফুটবলারেরও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভারতীয় ফুটবলার মেনে নিচ্ছেন, সুপার কাপে কেরালা ব্লাস্টার্স-ম্যাচে ফুটবলারদের মধ্যে জেতার ন্যুনতম তাগিদটুকুও ছিল না। আগামি মরশুমে দলের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে ফুটবলারদের বিশ্লেষণে উঠে আসছে অন্যতম প্রধান একটা শর্ত। ড্রেসিংরুমের আবহাওয়া বদলাতে হবে। বিশেষত দল যখন ব্যর্থ হচ্ছে। এরকম বিদেশি নিয়ে আসতে হবে যার স্বভাব দলের মধ্যে গ্রুপ-তৈরি করে নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে কথা বলা নয়। ভারতীয় ফুটবলারদের সঙ্গে নিজেদের মিশিয়ে সব ফুটবলারদের নিয়ে যারা চলতে পারবে এরকম বিদেশি। অর্থাৎ এককথায়, আগামি মরশুমে দলগঠনের সময়, শুধু ভাল ফুটবলার নিলেই হবে না, ‘ভাল মানসিকতার’ ফুটবলার প্রয়োজন, যাদের সহায়তায় ড্রেসিংরুমের গুমোটভাব কাটতে পারে। আর এই প্রক্রিয়ায়, ক্লাবের নবনির্বাচিত ফুটবল ডিরেক্টর থাংবই শিংটোকে স্বাগত জানাচ্ছেন ফুটবলাররা। শিংটোর কোচিং অভিজ্ঞতা, বিশেষভাবে ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ইস্টবেঙ্গলে আগামি মরশুমে দেখা যাবে বলে ফুটবলারদের বিশ্বাস। আর ফুটবলাররা মনে করছেন ড্রেসিংরুমের পরিবেশও পাল্টানোর ক্ষেত্রে শিংটোর ভূমিকা থাকবে। কারণ তা কোচিংয়ে-ই তার আগের ক্লাব, হায়দ্রাবাদ এফসি ১১ জন ভারতীয় ফুটবলারকে নিয়ে আইএসএলে ম্যাচ জিতেছিল গত মরশুমের আগের মরশুমে। স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোর ওপর ভরসা রাখছেন ফুটবলাররা। অস্কারের সপক্ষে তাদের কাছে তথ্যও আছে। কার্লোস কুয়াদ্রাত চলে গিয়েছিলেন প্রথম তিন ম্যাচ হারের পর। তারপর দুটো ম্যাচ বিনো জর্জের কোচিংয়ে খেলেছিল লাল-হলুদ। ছয় নম্বর ম্যাচ থেকে দলের হাল ধরেছেন অস্কার। সেই হিসেবে এবাব্রের আইএসএলে অস্কারের পারফম্যান্স ধরলে, ইস্টবেঙ্গল চতুর্থ স্থানে শেষ করেছে। ইস্টবেঙ্গলেরই অনূর্ধ্ব-১৫ দলের কোচ, দলের প্রাক্তন ফুটবলার ফাল্গুনী দত্তের দলের পারফরম্যান্স এবং আগামি মরশুম নিয়ে প্রতিক্রিয়া, “আমি তো সিনিয়র দলের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নই। বাইরে থেকে খেলা দেখে মনে হয়েছে, দলে সংঘবদ্ধতার অভাব। ফুটবলারদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশের জেতার তাগিদই ছিল না। আমাদের সময়েও দল ব্যর্থ হয়েছে। আবার ঘুরেও দাঁড়িয়েছে। তার কারণ ছিল, আমাদের নিজেদের মধ্যে সাফল্য পাওয়ার তাগিদ ছিল। দলের ট্রেনিং-শিডিউলের বাইরেও আমরা নিজেরা বাড়তি ট্রেনিং করেছি। ক্লাব কর্তা বা কোচের চেয়েও এক্ষেত্রে ফুটবলারদের নিজেদের তাগিদই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।” শিংটোকে স্বাগত জানালেন ফাল্গুনীও। বললেন, “গত এক দশক ধরে ও যে যে ক্লাবে গিয়েছে, সম্ভাবনাময় ভারতীয় ফুটবলার তুলে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জহুরীর চোখ ওর। আমার আশা, আগামি মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের সিনিয়র দল তৈরির ক্ষেত্রেও শিংটো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।”