দলের কোচ হয়ে আমি গর্বিত: ফ্লিক

শুধু ট্রেবল নয়, চলতি মরশুমে পঁাচটা ট্রফি জয়ের সামনে দঁাড়িয়ে পড়েছে বার্সেলোনা। তবে ট্রেবল যে বার্সেলোনা অতীতে জেতেনি তাতো নয়। এমন কী, হ্যান্সি ফ্লিকও বায়ার্ন মিউনিখে ২০১৯-২০ সালে কোচ থাকাকালীন ট্রেবল জেতার স্বাদ পেয়েছিলেন। সুতরাং দু-পক্ষের যখন ট্রেবল জেতা হয়ে গিয়েছে তখন এই ঘটনা আর নতুন হয়ে কারও কাছে দেখা দেবে না। তাই এবার বার্সার লক্ষ্য বাকি তিনটে টুর্নামেন্ট লিগ, কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। যে তিনটে ট্রফি উল্লেখ করা হল, তা জেতার জন্য বিশ্বের প্রতিটি কোচের চোখ সেদিকেই থাকে। কোপা দেল রে জেতার পর হ্যান্সি ফ্লিককে নিয়ে বার্সার সমর্থকরা আরও বড় কিছু স্বপ্ন দেখার অপেক্ষায়। কোপা দেল রে জেতার পর তাই জার্মান কোচ ফ্লিক শুধু একটা কথাই বলেছেন, “কোপা দেল রে জেতায় নিশ্চয় আনন্দ করব। জয়ের উত্সবে মেতে উঠব। কিন্তু এটা সাময়িক। তারপর চলে যাব বিশ্রামে। আমাদের প্রত্যেককে ভালমতো বিশ্রাম নিতে হবে। ট্রেবল জেতার সুযোগ আমাদের সামনে চলে এসেছে। তবে মুখে বললে তো হবে না। জিততে গেলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সেই পরিশ্রমে যেন ঘাটতি না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরী।” কোপা দেল রে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে হারানোর জন্য ইয়ামালদের প্রশংসায় ভরিয়ে দেন ফ্লিক। প্রত্যেককে প্রশংসা করে বার্সা কোচ বলেন, “এক অসাধারণ রাতের স্বাক্ষী থাকলাম। একটা দল কীভাবে ঘুরে দঁাড়িয়ে জিততে হয় তা প্রমাণ করে দিল বার্সেলোনা। সত্যি অসাধারণ। এই দলটার কোচ হতে পেরে আমি গর্বিত। আমাদের কাছে এই জয় অসাধারণ।” ট্রেবল জয়ের একধাপ এগোতে গেলে সামনে চলে আসবে লা লিগা। পঁাচটা ম্যাচ এখনও বাকি। যা খুশি হতে পারে। অনেকে মনে করছেন ১১ মে লা লিগার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যেতে পারে। সেইদিন বার্সেলোনা মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদের। সেই ম্যাচ জিতে গেলে বার্সার কাছে লা লিগাও চলে আসবে। এমনিতেই বার্সেলোনা এই মুহূর্তে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে। তাই সেই ম্যাচ গড়ে দিতে পারে লা লিগার ভাগ্য। তার আগে ট্রেবলের আশা বঁাচিয়ে রাখতে হলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষেও জিততে হবে বার্সাকে। বুধবার রাতে হবে সেই ম্যাচ।
নাটকীয় জয়ে কোপা দেল রে বার্সার

রেফারি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল ম্যাচের আগেই। তারউপর সেভিয়ায় ম্যাচ শুরুর আগে বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকরা একজোট হয়ে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা বাধিয়ে দেয়। সুতরাং খেলার আগে যদি আগুন জ্বলে যায় তাহলে তার ফুলকি তো এসে পড়বেই ম্যাচে। শুধু ফুলকি নয়, আগুনের হল্কা এসে আছড়ে পড়ল বিশ্বের দুই শ্রেষ্ঠ দলের খেলায়। শেষমেশ বার্সেলোনা ৩-২ গোলে হারিয়ে জিতে নিল কোপা দেল রে। ৯০ মিনিট নির্ধারিত সময়ে খেলার ফল ছিল ২-২। অতিরিক্ত সময়ের খেলায় বার্সা গোল করে চ্যাম্পিয়নের শিরোপা নিয়ে চলে গেল। তাও আবার চোটের কারণে লিয়নডস্কি খেলেননি। তবু বার্সার জিততে কোনও সমস্যা হল না। বার্সার গোলদাতারা হলেন পেদ্রি, ফেরান তোরেস ও জুলস কুন্দে। কিলিয়ান এমবাপে ও চুয়ামেনি রিয়ালের হয়ে গোল দুটি করেন। ২৮ মিনিটে পেদ্রি প্রথম গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। ৭০ মিনিটে সেই গোল শোধ করেন এমবাপে। পরে ৭৭ মিনিটে চুয়ামেনি গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে দেন। বার্সার হয়ে ৮৪ মিনিটে সমতা ফেরান তোরেস। অতিরিক্ত সময়ে বার্সার হয়ে ম্যাচের শেষ গোলটি করেন জুলস কুন্দে। তবে কুন্দের গোল সকলের নজর কেড়ে নিয়েছে। লুকা মদরিচের একটা ভুল পাশ থেকে বল ধরে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো শটে গোল করে যান কুন্দে। এল ক্লাসিকো বলতে যা বোঝায় তাই দেখা গিয়েছে খেলার প্রতিটি মুহূর্তে। দু-দলের সমর্থকদের কাছে পয়সা উসুল। বার্সা প্রমাণ করছে রিয়ালকে নিয়ে আর তারা ভীত নয়। লা লিগায় ৪-০ গোলে হারানোর পর, স্প্যানিশ সুপার কাপে ৫-২ গোলে রিয়ালকে হারায় বার্সেলোনা। এবার হল কোপা দেল রে-তে। তার মানে রিয়ালকে হারানোর হ্যাটট্রিক এই মরশুমে করে ফেললো হ্যান্সি ফ্লিকের দল। তিনবার রিয়ালের বিপক্ষে করে ফেললো ১২ গোল। তাই বলে রিয়ালকে অসম্মান করেনি বার্সা। রানার্স আপ ট্রফি নেওয়ার সময় বার্সার খেলোয়াড়রা গার্ড অব অনার দেয়। তবে খেলার শুরু থেকেই রিয়ালকে প্রচন্ড চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল বার্সা। প্রথম ৪৫ মিনিট বার্সার সামনে বলতে গেলে এঁটে উঠতে পারছিল না রিয়াল। তখন থেকেই মনে হচ্ছিল আগের দুটো এল ক্লাসিকোর মতোই এবারও রিয়াল পর্যদুস্ত হবে। খেলার মোড় ঘোরে বিরতির পর এমবাপে নামায়। ফরাসি তারকা নামার পর থেকে রিয়াল ম্যাচে ফিরে আসে। দ্বিতীয়ার্ধে বার্সার চেয়ে বল পজিশনে এগিয়ে ছিল রিয়াল। রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া ম্যাচের আগে ছিলেন রিয়াল সমর্থকদের কাছে চক্ষুশূল। সেই রেফারি বেনগোচেয়াকে দেখা যায় ম্যাচের মধ্যে রিয়াল সমর্থকদের কাছে হয়ে উঠেছেন পয়লা নম্বর ভিলেন। বিশেষ করে ভারের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি বাতিল করায়। বক্সের মধ্যে রাফিনিয়াকে বিপজ্জনকভাবে বাধা দিয়েছিলেন রিয়াল ডিফেন্ডার রাউল অাসেনসিও। রেফারি রিকার্দো পেনাল্টির বঁাশি বাজান। কিন্তু ভারের সাহায্য নিলে দেখা যায় পেনাল্টি পাওয়ার যোগ্য নয় বার্সা। ততক্ষণে রিয়াল সমর্থকরা আরও চটেছেন রেফারির উপর। ২০২১ সালের পর কোপা দেল রে জিতল বার্সা। ১৯৯০ সালের পর সেভিয়ায় এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে রিয়ালের বিপক্ষে এটি তাদের প্রথম জয়। তবে ম্যাচে লালকার্ডের ছড়াছড়িও হয়েছে। শেষ বাঁশি বাজার মিনিট দেড়েক আগে এমবাপেকে একটা ফ্রি-কিক না দেওয়ায় রিয়ালের রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে রেফারির প্রতি তেড়ে যান ডিফেন্ডার আন্তনিও রুডিগার। তারপর রিয়ালের রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে রেফারির উদ্দেশ্যে ছঁুডে় কিছু একটা মারা হয়। তবে কে কি ছঁুড়ে মেরেছেন তা বোঝা না গেলেও রেফারি রুডিগারকে লালকার্ড দেখান। কিছুক্ষণ পরে লুকাস ভাসকেজকেও কার্ড দেখান রেফারি। তবে ম্যাচের শেষ বঁাশি বাজার পর রিয়ালের সমর্থকরা সম্পূর্ন হতাশায় ভেঙে পড়েন। কারণ তাদের সামনে এটাই ছিল একমাত্র ট্রফি জয়ের সুযোগ। যেহেতু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হাতছাড়া আগেই হয়ে গিয়েছে। লা লিগায় বার্সার চেয়ে এই মুহূর্তে রিয়াল ৪ পয়েন্টে পিছিয়ে। এরপর মনে হয় কার্লো আনচেলেত্তির থাকা নিয়ে রিয়ালের আর কেউ সোচ্চার হবেন।
আইপিএলের সেরা স্পিনার সাই কিশোর: ভিটোরি

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলের হেড কোচ ড্যানিয়েল লুকা ভিটোরি। ২০১৪ থেকে আইপিএলে কোচিং করাচ্ছেন। প্রথমে ছিলেন আরসিবিতে। তারপর ২০২৩ থেকে হায়দরাবাদ দলের কোচের দায়িত্বে। লম্বা কোচিং কেরিয়রে আইপিএলে বিভিন্ন দলের স্পিনারদের দেখেছেন। এবার আইপিএল মাঝপর্বে এসে দাঁড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টে যে সব স্পিনারদের (বাঁহাতি স্পিনার) দেখেছেন, তাদের মধ্যে নজরে পড়েছেন গুজরাট টাইটান্সের সাই কিশোরকে। ৮ ম্যাচে ১২ উইকেট নেওয়া সাই কিশোর তাঁকে চমকে দিয়েছেন। সোজাসুজি না বললেও মনের কথা বুঝে নিতে অসুবিধা হয়নি। সাই কিশোরকে নিজের দলে পেলে ভাল হত। বলেই দিলেন, এবার অকশনে আমরা একজন ভাল স্পিনারকে চাইছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাইনি। সাই কিশোরকে দুকোটি টাকায় গুজরাট রেখে দেয়। তাই আমাদের ইচ্ছে থাকলেও ওকে পাওয়া গেল না। কেন সাই কিশোরকে দলে চাইছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক। বলছেন, শুধু এবারের পারফরম্যান্স দেখে ভাল কিছু বলার লোক আমি নই। ওকে আগেও দেখেছি। হাতে ভাল টার্ন আছে। বল ফ্লাইট করাতে ভয় পায় না। যা আজকাল বেশিরভাগ স্পিনাররা করে থাকে। রান আটক রেখে ব্যাটসম্যানকে চাপে ফেলা ওর কাজ নয়। নানাভাবে পরীক্ষা করে। বোলিংয়ে বৈচিত্র আছে বলে ব্যাটসম্যানরা ওকে উইকেট দিয়ে ফিরে যায়। কখনও গতিতে বল করে। আবার কখনও স্লোয়ার করিয়ে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানায়। এর সঙ্গে সাফল্য তো আছেই। আমার মনে হয় , আমরা ওর মতো একজন স্পিনার পেলে সুবিধা হত। সাই কিশোর শুধু নন। আরও কয়েকজনকে ভিটোরির মনে ধরেছে। রবীন্দ্র জাদেজার কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, জাড্ডুকে নিয়ে এখন আর আলাদা কী বলব। জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নেমে নিজেকে বারবার প্রমান করেছে। তিন ফরম্যাটে দারুন পারফরম্যান্স আমরা ওর কাছ থেকে দেখেছি। সিএসকের নূর আমেদও ভাল বল করেছে। তবে আমি বেশি বাঁহাতি স্পিনারদের দিকে চোখ রাখি। হয়তো নিজে বাঁহাতি স্পিনার ছিলাম বলে হয়তো এমন হয়ে গিয়েছি। সাই কিশোর তামিলনাড়ুর ছেলে হলেও সিএসকে দলে সুযোগ পাননি। তামিলনাড়ুর হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। আইপিএলে গুজরাটের হয়ে মাঠে নেমে চমক দিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্সের কারনে জাতীয় দলে সুযোগও মিলেছে। এশিয়ান গেমসে ভারতীয় দলের হয়ে তিন ম্যাচে চার উইকেট পেয়েছেন। সেই আসরে ভারতীয় দল সোন জেতে। ব্যস, এই পর্যন্ত। তারপর জাতীয় দলে আর খেলা হয়নি সাই কিশোরের। তাঁর সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে প্রাক্তন ক্রিকেটার আম্বাতি রায়াডু বলছেন, সাই কিশোর বেশ কিছুদিন ধরে নজরে পড়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে সাফল্যও পেয়েছে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪৬ ম্যাচে ১৯২টি উইকেট পেয়েছে। এটাই প্রমান করে ভারতের মাটিতে নিজেকে কীভাবে মেলে ধরেছে। আইপিএলে ১৮ ম্যাচে পেয়েছে ২৫টি উইকেট। তাই এখন ওর দিকে সকলের নজর। এবারের আইপিএলে এখনও গুজরাট অনেক ম্যাচ খেলবে। আশা করি, ওর উইকেট সংখ্যা আর বাড়বে। আবার জাতীয় দলে ডাক পাবে।
সূর্যবংশীকে মেজাজে রাশ টানতে বলছেন কোচ রাহুল

এবারের আইপিএলে বিস্ময় বালক বৈভব সূর্যবংশী। ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার হিসেবে খেলতে নেমে দারুন কিছু করে ফেলেছেন তা বলা যাবে না। কিন্তু যা করেছেন, সেটাই বা কম কিসের। দুটি ম্যাচে ওপেন করতে নেমে খেলেছেন ৩২ বল। করেছেন ৫০ রান। এর মধ্যে আছে পাঁচটি ওভার বাউন্ডারি। এই ফরম্যাটে মেজাজটই আসল। সেটাই ধরে রাখতে চাইছেন ১৪ বছরের বৈভব। পাওয়ার প্লে-তে বোলারদের ঘাড়ে উঠে পড়ার লড়াইয়ে বৈভব জিতেছেন। বড় রান না এলেও চমক দিয়েচেন। তাই ভারতীয় ক্রিকেটে এখন নতুন আলোচনা তাঁকে ঘিরে। এসবই ঠিক আছে। কিন্তু তাঁর মেজাজ ঠিক রাখতে বলছেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। সবাই বলছেন, বৈভব ভাগ্যবান। রাহুলের মতো একজন মানুষকে শুরু থেকে পাশে পেয়েছেন। ঠিক মতো নিজেকে ধরে রাখলে রাহুল তাঁর জীবন বদলে দেবেন। কোটি টাকায় অকশন থেকে কিনেছে রাজস্থান রয়্যালস। সঞ্জু স্যামসন চোট পাওয়ার পর রাহুলের চোখে বিস্ময় বালক প্রথম দলে এসেছে। সে ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার হিসেবে হলেও অসুবিধা কোথায়! অনেকে যা পান না, বৈভব সেটা পেয়ে গিয়েছেন। এখন নিজেকে ঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দুটি ম্যাচ শুধু নয়, রাজস্থান রয়্যালসের প্র্যাকটিসে নামার দিন থেকে রাহুল তাঁকে আগলে রেখেছেন। পরামর্শ দিচ্ছেন। এই লেভেলে ভাল ক্রিকেট খেলতে হলে কী করতে হবে। মাঠের বাইরে বসে দুটি ম্যাচ দেখেছেন। তো কী বলছেন রাহুল! ম্যাচের পর তাঁকে নিয়ে বসেছিলেন রাহুল। বলেছেন, সব বল ছক্কা মারা যায়। এই মানসিকতাকে সরিয়ে খেলতে হবে। সে পাওয়ার প্লে-তে হোক, বা মিডলওভারে হোক। নিজেকে ধরে রাখতে হবে। বোলাররা সব সময় মারার সুযোগ দেবে না। লুজ বলের অপেক্ষায় থাকতে হবে। পেলে বড় স্ট্রোক নিতে হবে। না হলে উইকেটে পড়ে থাকতে হবে। উইকেটে গেলাম। মারলাম। আউট হয়ে ফিরে এলাম। এভাবে খেললে চলবে না। আরও বড় রান চাই। নিজেকে এই প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করাতে হলে খেলার স্টাইল বদলাতে হবে। না হলে হারিয়ে যাবে। বয়স কম। মন দিয়ে কোচের কথা শুনেছেন বৈভব। এবার মাঠে নেমে নিজেকে কীভাবে প্রয়োগ করেন, সেটাই দেখার। রাহুলের মতো একভাবে কথা বলেছেন জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী। দুটি ম্যাচ দেখে তিনিও অবাক। বলছেন, প্রথম ম্যাচে বৈভব যেভাবে শার্দুল ঠাকুরের বল কভার দিয়ে মাঠের বাইরে ফেলে দেয় তা দেখে আমার মতো অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছে। তারপরও ওর ব্যাট থেকে এমন সব শট দেখা গিয়েছে তা চমকে দেওয়ার মতো। কিন্তু এভাবে খেললে হবে না। সবে এই লেভেলে ক্রিকেট খেলছে। অন্যরা সেভাবে বৈভবকে দেখে নি। সামনে যত এগোবে, তত খেলা কটিন হয়ে পড়বে। ওকে নিয়ে হোমওয়ার্ক করবে প্রতিপক্ষ দলগুলি। তখন মারার বল খুব বেশি দেবে না। আটকে গেলে বৈভব কী করে সেটাই দেখার। ওকে নানাভাবে বোলাররা আউট করতে চাইবে। বয়স কম বলে বোলারদের আক্রমনের মেজাজ হাল্কা হবে, তা ভেবে নিলে ভুল হবে। তাই এই সব ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজেকে আরও ভাল ককরে পালিশ করে নিতে হবে। অনেকে সুযোগ পায় না। বৈভব পেয়েছে। তাই এবার ওর কাছ থেকে আরও ভাল খেলার আশা করা যেতেই পারে। আর এক প্রাক্তন বীরেন্দ্র শেহবাগ বলছেন, একবছর আইপিএল খেলে ফেললাম, এমন মানসিকতা নিয়ে এগোতে গেলে হারিয়ে যাবে বৈভব। ওকে লম্বা যেতে হবে। বয়স কম। কতজন ক্রিকটার এই বয়সে এমন পর্য়ায়ে খেলেছে। বিরাট কোহলি ১৯ বছর বয়সে প্রথমবার আইপিএল খেলেছে। তারপর ১৮ বছর হয়ে গেল। এখনও খেলে চলেছে। নিজেকে আরও ভালভাবে পালিশ করে রানের পিছনে ছুটে চলেছে। বৈভবকে সেভাবে এগোতে হবে। মাথায় রাখতে আরও ২০ বছর আমি এই লেভেলে ক্রিকেট খেলব। সেটা করতে পারলে শুধু আইপিএল নয়, আরও ভাল জায়গায় নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে বৈভব।
ধোনির পাশে রায়না, ক্রিকেটার বাছাই ম্যানেজমেন্ট করে

মাঠের বাইরে বসে সিএসকের ব্যর্থতা দেখতে ভাল লাগে না প্রাক্তন ক্রিকেটার সুরেশ রায়নার। জাতীয় দলে একসয় ধোনির সতীর্থ ছিলেন। ছিলেন সিএসকের সাফল্যের অন্যতম সাক্ষী। দুবছর আগে খেলা ছেড়ে দিয়ে টিভি ভাষ্যকারের কাজ ব্যস্ত। শুক্রবার চেন্নাইয়ের মাঠে পুরনো দলের খেলা দেখে তিনি হতাশ। টুর্নামেন্টে ৯ ম্যাচের মধ্যে ৭টিতে হার। এ কোন সিএসকে! তাঁদের জমানায় এই দল সাফল্য ছাড়া অন্য কিছু দেখেনি। আর এখন সিএসকে কবে জিতবে তা নিয়ে ফ্যানরাও নিশ্চিত নন। বলছিলেন, ম্যনেজমেন্ট ঠিকভাবে দল গুছিয়ে নিতে পারেনি। অকশন থেকে ভাল ক্রিকেটার তুলে আনার কাজেও তারা ব্যর্থ। তাই দলটি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। সিএসকে মানে ধোনি। তাঁকে কোনও কিছু না জানিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধন্ত নেওয়া হয় না। তাই অকশন থেকে ভাল ক্রিকেটার নেওয়া হয়নি, এই কাজের জন্য ম্যানেজমেন্টের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়া যে অর্থহীন। ধোনিকে কেন আড়াল করা হচ্ছে। তাঁর কি এ ব্যাপারে কোনও মত ছিল না! এই প্রশ্নে রায়না বলেন, আমি কোনদিন দেখিনি ক্রিকেটার বাছাইয়ে ধোনির সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। নতুন মরশুম শুরুর আগে ধোনি চার বা পাঁচজন ক্রিকেটারের নাম বলত। তাদের কাউকে রিটেন করা হত। এর বাইরে দল গড়া নিয়ে ধোনি আলাদা করে কথা বলত না। দল গোছানোর কাজ হয়ে যাওয়ার পর ধোনির হাতে ক্রিকেটারদের তালিকা দেওয়া হত। তখন যে পরিকল্পনা হত, সেখানে ধোনিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হত। কারন ধোনি একজন ক্রিকেটার। একজন অধিনায়ক। আবার পুরো দলকে কাঁধে নিয়ে চলা একজন ক্রিকেটার। তাই সেখানে ধোনিকে আলাদা করে কাজ করতে হত। তা হলে ক্রিকেটার বাছাইয়ের কাজ কারা করতেন। এই ম্যানেজমেন্ট বলতে কাঁদের কথা বলা হচ্ছে। এর উত্তরও রায়না দিয়েছেন। বলছেন, সিএসকে দলের সিইও কাশী বিশ্বনাথ স্যর প্রশাসনিক কাজে গত ৩০-৪০ বছর ধরে যুক্ত। এ ধরনের কাজ তিনি টানা করে আসছেন। আরও একজন আছেন- রুপা ম্যাম। তিনি ক্রিকেটের প্রশাসনিক কাজ দেখেন। ক্রিকেটার বাছাইয়ের কাজ তাঁরা করে থাকেন। সবাই ধোনির কথা বলেন। কিন্তু আমার কথা বিশ্বাস করলে এটাই বলব, ধোনি কোনদিন অকশনে যায়নি। ক্রিকেটার বাছাইয়ের কাজে বেশি কথাও বলেনি। তাই পুরো দোষ ওর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। আমিও তো বলছি অকশনকে ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেনি সিএসকে ম্যানেজমেন্ট। ভাল ক্রিকেটার তুলে আনা যেত। সেটা হয়নি। তাই দলের অবস্থা এমন। তবে ম্যানেজমেন্টকেও পুরো দায়ী করতে চান না রায়না। বলছেন, ৪৩ বছর বয়সে ধোনি যা করছে তা অনেক ক্রিকেটারের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। এদের কারোর পিছনে ১৮ কোটি, ১৭ কোটি বা ১২ কোটি টাকা ঢালা হয়েছে। কিন্তু বদলে ক্রিকেটাররা দলকে কি দিয়েছে। কিছুই না। তাই দলের এমন চেহারা দেখতে হচ্ছে। তারা ঠিকভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারলে পয়েন্ট তালিকায় সিএসকে এই জায়গায় থাকত না। এখনও পাঁচ ম্যাচ বাকি। ক্রিকেটারদের নিয়ে নিশ্চয় ধোনি বসবে। কথা বলবে। নিজেদের প্রমান করতে ক্রিকেটাররা এখনও যদি ঝাঁপিয়ে না পডে়, তা হলে কবে তারা ঘুরে দাঁড়াবে। এখন তো নিজেদের বাঁচার লড়াই। সেই লড়াইয়ে জিততে পারলে সিএসকে লিগ টেবিলে ভাল জায়গায় গিয়ে শেষ করতে পারবে।
বৃষ্টিতে ভেস্তে গেল ইডেনের ম্যাচ, কেকেআর-পঞ্জাব দু`দলই পেল এক পয়েন্ট করে

কী বলবেন, বেঁচে গেল কেকেআর? বাঁচিয়ে দিল বৃষ্টি? যে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রথম লেগের ম্যাচে ১১২ রান তুলতে গিয়ে হামাগুড়ি দিতে দিতে ৯৫ রানে গুটিয়ে যায় যারা, তারা ২০২ রান তুলে ম্যাচ জিতবে, এ আশা কি কেকেআরের অতি বড় সমর্থকও করতে পারছিলেন? বিশেষ করে ব্যাটিংয়ের যা হাল দেখা যাচ্ছে, তারপর? ইডেনে বৃষ্টি যখন নামল তখন ২০২ রান তাড়া করতে নেমে ১ ওভারে ৭ রান তুলেছে নাইটরা। না তখনও অবশ্য কোনও উইকেট হারায়নি। কিন্তু ঝড় বৃষ্টির দাপট এতটাই যে ম্যাচ আর শুরু করাই গেল না। ভেস্তে গেল কলকাতা-পঞ্জাব ম্যাচ। দু দলই পেল ১ পয়েন্ট করে। এই একটা পয়েন্ট পাওয়ায় প্লে অফের দৌড়ে এখনও টিকে রইলেন রাহানেরা। তার আগে কেকেআর বোলিংকে নিয়ে ছেলেখেলা করলেন পঞ্জাবের দুই তরুণ ওপেনার প্রভসিমরন সিং ও প্রিয়াংস আর্য। দুজনেই অর্ধশতরান করলেন। বড় নজিরও গড়ে ফেললেন প্রভসিমরন। পঞ্জাব কিংসের প্রথম আনক্যাপড ক্রিকেটার হিসাবে করলেন এক হাজার রান। দুই ওপেনার ১১.৫ ওভারে ১২০ রান যোগ করে ফেললেন। কেকেআরের কোনও বোলারই থামাতে পারেননি এই দুই তরুণকে। এখান থেকে ২০১ কেন, ২২০ বা ২২৫ রান করা উচিত ছিল পঞ্জাবের। হল না কারণ পরের দিকে কিছুটা রাশ টেনে ধরতে পেরেছিলেন কেকেআর বোলাররা। কেন কেকেআরের এই হাল? কারণ তো অনেক। প্রশ্ন অনেক। ভুল তো শুরু থেকেই। কেন ওপেনার ফিল সল্টকে ধরে রাখা গেল না? কেন অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারকে ছেড়ে দেওয়া হল? কেন বরুণ-নারিনের পর ভাল তৃতীয় স্পিনার নেই? এটা যে বেশ ভোগাচ্ছে। তাছাড়া রাসেল-নারিনের ছায়া থেকে কবে বেরিয়ে আসবে কেকেআর? রভমান পাওয়েলকে তাহলে কেন নেওয়া হল? টি টোয়েন্টির প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ককে কি বাইরে বসে শুধু খেলা দেখেই যেতে হবে? এইসব প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর যবে খুঁজে পাবে কেকেআর তখনই ফিরবে হাল, তার আগে নয়।
বিতর্কিত সিনার এবার কোর্টে নামছেন

তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফের টেনিস কোর্টে ফিরতে চলেছেন জাহ্নিক সিনার। ২৬ জানুয়ারি শেষবার তাঁকে কোর্টে নামতে দেখা গিয়েছিল। তারপর ওয়াডার নির্দেশে পুরোপুরি টেনিস কোর্ট থেকে দূরে সরে যেতে হয়। সেই সিনার ওয়াডার ঘোষিত শাস্তির মেয়াদ কাটিয়ে ফিরতে চলেছেন টেনিস কোর্টে। ৪ মে শুরু হবে ইতালিয়ান ওপেন। সেই প্রতিযোগিতায় তিনি খেলবেন বলে জানিয়েছেন। হামবুর্গ ওপেনেও তঁার খেলার কথা। আসলে ফরাসি ওপেনে নামার আগে যতটা সম্ভব প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে চাইছেন। যাতে নিজেকে পুরোপুরি ম্যাচ ফিট হয়ে নিজের সুনাম বজায় রাখতে পারেন। সিনারের শাস্তি ঘোষণাকে কোনও টেনিস তারকা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তিনি নিষিদ্ধ ক্লোস্টেবল নিয়েছিলেন। দু-দুবার পরীক্ষায় দেখা যায় সিনার ব্যর্থ। ফলে ওয়াডা ইতালীয়কে িতন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তঁার শাস্তির মেয়াদ শুরু হয় ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে। যার দরুন মরশুমের শুরুর দিকে তিনি খেলতে পারেননি। সিনারকে ওয়াডা জানিয়ে দিয়েছিল, ১৩ এপ্রিলের আগে তিনি কোনওমতে প্র্যাকটিশ করতে পারবেন না। স্বশাসিত ট্রাইবুনাল অনুমতি দেওয়ায় তিনি খেলতে পেরেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। এবং দুটোতেই চ্যাম্পিয়ন হন। কিন্তু ওয়াডা সিনারকে মাত্র তিন মাস সাসপেন্ড করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন টেনিস তারকারা। ওয়াডাকে দোষারোপ করে একের পর এক টেনিস তারকা ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। স্ট্যান ওয়ারিঙ্কা যেমন বলেছিলেন, “খেলার উপর থেকে স্বচ্ছতা থাকার বিশ্বাসটাই উঠে গেল। এরপর থেকে টেনিসে স্বচ্ছতা থাকবে বলে মনে হয়না।” নিক কুরিয়র তো সরাসরি বলে দিয়েছিলেন,“টেনিসে সততা বলে আর কিছু নেই।” মেদভেদেভ ওয়াডার নাম এনে বলে ছিলেন, “এবার থেকে যারা নিষিদ্ধ কিছু সেবন করবে তারা শাস্তির কবলে পড়লে ওয়াডার সঙ্গে বসে যেতে পারে। তাহলে নিশ্চয় শাস্তির মেয়াদ কমে যাবে।” জকোভিচও পরে বলেছিলেন, “সিনারের শাস্তির মেয়াদ নিয়ে ওয়াডা যা করল তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বজুড়ে কেউই মেনে নিতে পারছে না। সিনারকে মাত্র তিন মাস শাস্তি দিয়ে ওয়াডা তার ভাবমূর্তি নষ্ট করল। ভাবমূর্তি নষ্ট হল টেনিসেরও। যথেষ্ট পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। কেউ নামী হলে তার শাস্তির মেয়াদ অন্যরকম হতে পারে না।” এমনিতেই সিনার কোনঠাসা। তারউপর শাস্তির মেয়াদ কাটিয়ে কোর্টে ফিরে আসছেন। ফলে তঁাকে যে আগের জায়গায় পাওয়া যাবে না তা নিশ্চিত। বিশ্ব ক্রমতালিকায় তিনি ছিলেন শীর্ষে। এখন তঁাকে ছন্দ খুঁজে পেতে সময় লাগবে। তাই সিনার বলেছেন, “প্র্যাকটিশে কোনও ফঁাকি দিইনি ঠিকই। কঠোর অনুশীলন করেছি। আশাকরছি ক্লে মরশুমের আগে হারানো গতি কিছুটা ফিরে পাব। তবে এটুকু বলতে পারি, আমার পক্ষে পুরোন জায়গায় ফিরে আসা মোটেই সহজ হবে না।” ওয়াডা জানিয়ে দিয়েছিল ১৩ এপ্রিলের আগে তাঁর টিমকে নিয়ে তিনি আদৌ প্র্যাকটিশে নামতে পারবেন না। এমন কী তাঁর কোচ সিমোন ভ্যাগনোজির থেকে দূরে থাকতে হবে। শারীরিক ও মানসিক ভাবে যাতে সক্রিয় থাকতে পারেন তারজন্য একটা বিস্তারিত প্ল্যান তৈরি করা হয়েছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি নিজেকে যতটা ফিট রাখা যায় তাই করার চেষ্টা করেছেন। তবে তিন মাসের মধ্যে অনেক কিছু ইতিবাচক দিক খঁুজে পেয়েছেন ইতালীয় তারকা। “তিন মাসের মধ্যে অনেক কিছু ইতিবাচক দিকও খুঁজে পেয়েছি। যাবতীয় ঝামেলা থেকে দূরে ছিলাম। পরিবার, বন্ধুদের সাথে যথেষ্ট সময় কাটিয়েছি। তাছাড়া নিজেকে খুঁজে পেলাম। চেষ্টা করেছি কোথায় দঁাড়িয়ে আছি তা খুঁজে বের করতে।”