ভারতীয় দলের হয়ে ইংল্যান্ড যাচ্ছেন বৈভব ও মাত্রেরা

বিরাট কোহলিরা যখন ইংল্যান্ডে সিরিজ খেলতে ব্যস্ত থাকবেন, তখন বৈভব সূর্যবংশীরা সাদা বলের ক্রিকেটে চ্যালেঞ্জ জানাতে লড়াইয়ে নামবেন। আগামি জুনে একই সঙ্গে চলবে সিনিয়র ও জুনিয়রদের ক্রিকেট। আইপিএল শেষে বিরাটরা ইংল্যান্ড যাবেন। তার আগে ভারতীয় এ দলের ইংল্যান্ড যাওয়ার কথা। কথা হয়েছে, ভারতীয় এ দলের সঙ্গে কয়েকজন সিনিয়র দলের ক্রিকেটারকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তেমনই ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন হেড কোচ গৌতম গম্ভীর। বিরাটদের সিরিজ শুরু হওয়ার কথা ২০ জুন। ভারতীয় এ দল দুটি বেসরকারি টেস্ট ম্যাচ খেলবে। আইপিএলের কারনে প্রথম ম্যাচে সিনিয়র দলের ক্রিকেটাররা খেলতে না পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁদের খেলার কথা। সিনিয়র দলের টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে ক্রিকেটারদের পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে এমন ভাবনা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। এখন শোনা যাচ্ছে যে অনুদ্ধ্ ১৯ ভারতীয় দল একই সময় ইংল্যান্ড যাবে। সেখানে ভারতীয় দল পাাঁচটি ওয়ান ডে ক্রিকেটের পাশাপাশি দুটি টেস্ট ম্যাচও খেলবে। ওয়ান ডে ক্রিকেট শুরু হবে জুনে। পাঁচ ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পর জুলাইয়ে তারা দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে। সেই দলে ঢুকে পড়ার কথা এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে বিস্ময় বালক বৈভব সূর্যবংশীর। তাঁর জায়গা একপ্রকার নিশ্চিত। বিশেষ করে গুজরাটের বিরুদ্ধে বৈভবের দুর্দান্ত ১০১ রানের ইনিংস দেখার পর সবই তাঁকে দলে ঢুকিয়ে দিতে চাইছেন। ১৪ বছর বয়স হলেও এর আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া জুনিয়র দলের বিরুদ্ধে খেলেছেন বৈভব। সেই সিরিজের একি ম্যাচে করেছিলেন ৫৮ বলে সেঞ্চুরি। তাই এবার তাঁর দলে ঢুকে পড়া নিশ্চিত। শুধু বৈভব নন, তাঁর সঙ্গে ভারতীয় দলে ঢুকে পড়তে চলেছেন আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলা আয়ুষ মাত্রে। এবার আইপিএলের মাঝপর্বে সিএসকের প্রথম একাদশে ঢুকে পড়েছেন মাত্রে। তাঁর ব্যাটিং দেখে অধিনায়ক ধোনিও প্রশংসা করেছেন। একবারল দলে ঢুকে পড়ার পর তাঁকে বাইরে বসানোর কথা ভাবেননি সিএসকে টিম ম্যানেজমেন্ট। আইপিএলে এই দুই ক্রিকেটারেরল জায়গ নিশ্চিত। দুজনকে রেখে বাকিদের নিয়ে দল গড়া হবে। জুনিয়রদের এই সিরিজের জিকে তাকিয়ে থাকবেন নির্বাচকরাও। কারন আগামি বছরের শুরুতে অনুদ্ধ্ ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। যাঁরা এই সিরিজে ভাল খেলবেন, তাঁরা বিশ্বকাপ দলে ঢুকে পড়বেন। আস করা যায়, বৈভব সেই দলেও থাকবেন। বর্তমানে যে ফর্মে তিনি আছেন, তা ধরে রাখতে পারলে বিশ্বকাপ খেলা শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর কিছু নয়।
চাপমুক্ত মোহনবাগান গোয়াকেও শিক্ষা দিতে মরিয়া

কেরল ব্লাস্টার্সকে হারানোর পর এবার কি এফসি গোয়াকে হারাতে পারবে মোহনবাগান? শুধু সবুজ-মেরুন টিম ম্যানেজমেন্টের কতিপয় কর্তারা মনে করছে না গোয়াকে হারিয়ে বাস্তব রায়ের ছেলেরা অনায়াসে পৌছে যাবে সুপার কাপের ফাইনালে। তবু আশার আলো শুধু জ্বলছে তাই নয়, বরং সেই আগুনের শিখা যেন দাউদাউ করে জ্বালিয়ে দিয়েছে সবুজ-মেরুন আপামর জনতার হৃদয়ে। সকলে বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, এই দলই পারবে ফের গোয়াকে হারাতে। ধারে-ভারে নিঃসন্দেহে গোয়া অনেক এগিয়ে মোহনবাগানের তুলনায়। একমাত্র আর্মান্দো সাদিকু বাদে পুরো দলকে ধরে রেখেছে গোয়া। আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া তাদের অন্যতম লক্ষ্য। গোয়াকে কী করে হারাবে মোহনবাগানের দ্বিতীয় সারির দল? কয়েকটা ফ্যাক্টর কাজ করছে মোহনবাগানের পক্ষে। এক, চাপমুক্ত হয়ে খেলা। কোচ বাস্তব রায় ও টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে ফুটবলারদের বারবার বলা হচ্ছে, তোমরা খোলা মনে খেল। হারানোর কিছু নেই। সুতরাং ঝঁাপালে ঝঁাপাও সর্বশক্তি দিয়ে। তাই ফুটবলাররা মোহনবাগানের মতো দলের জার্সি পেয়ে নিজেদের সঁপে দিতে কুন্ঠাবোধ করছে না। দুই, নিজেদের প্রমাণ করা। সিনিয়র ফুটবলার বলতে খেলছেন সাহাল আব্দুল সামাদ, আশিক কুরিনিয়ন ও দীপক টাংরি, বিদেশি নুনো রেইস। চারজন সিনিয়র খেলছেন এমন সব জায়গায় যেখানে দলকে মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন। নুনো-আশিক ডিফেন্সে। দীপক মাঝমাঠে আর সাহাল ফরোয়ার্ডে খেলে জুনিয়রদের বোঝাতে পারছেন কাকে কোথায় কখন যেতে হবে। বা কী করতে হবে। তাছাড়া জুনিয়ররা চাইছে নিজেদের মেলে ধরে মূল দলে আসার পথ পরিষ্কার করতে। আবার সিনিয়ররা চাইছেন পরবর্তী বছরে যেন তঁাদের দর মোটেই না কমে। তিন, আইএসএল খেলা দলকে নিয়ে যারা এখানে এসেছে তারা মোটেই সুবিধে করতে পারবে না। তার কারণ একটাই, ফোকাস নড়ে যাওয়া। দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে চলা আইএসএল খেলে প্রত্যেকে ক্লান্ত। তাছাড়া ফোকাসটা ছিল আইএসএলে ভাল কিছু করার। যেই ফোকাসটা নড়ে যেতেই পরবর্তী টুর্নামেন্টে ভাল খেলার তাগিদ আর তেমন নেই। কিন্তু মোহনবাগান তো সম্পূর্ন নতুন দল। ফলে প্রত্যেকে লাফাচ্ছে-ঝঁাপাচ্ছে। চার, গতম্যাচে গোয়া হারতে হারতে কোনওমতে জিতেছে। বিরতি পর্যন্ত খেলার ফল ছিল গোলশূন্য। পরে পাঞ্জাব এফসি গোল করে এগিয়ে যায়। গোয়া খেলা শেষের কয়েক মুহূর্ত আগে পরপর দুটো গোল করে জিতে শেষ চারে এসেছে। জেতার পেছনে গোয়াকে সুবিধে করে দিয়েছে পাঞ্জাবের পলকা ডিফেন্স। তাই মোহনবাগান চাইছে রক্ষণকে শক্ত ভিতের উপর দঁাড়় করিয়ে আক্রমণে ঝঁাপানো। পঁাচ, কেরলের চেয়ে নিঃসন্দেহে গোয়া এগিয়ে। তাই মোহনবাগান ঠিক করে ফেলেছে, প্রথম ৪৫ মিনিট কোনওভাবে গোল খাবে না। যদি প্রথমার্ধ গোলশূন্য রাখতে পারে তাহলে বিরতির পর সর্বশক্তি দিয়ে জেতার জন্য ঝঁাপাবে। তখন গোয়া বাধ্য হবে নিজেদের রক্ষণ সামলাতে। সোজা কথা মোহনবাগান যত সময় গড়াবে ততই আক্রমণের দিকে ঝঁুকবে। এভাবেই জয়ের পথ খঁুজতে মরিয়া হয়ে রয়েছে মোহনবাগান। একই দল ধরে রাখতে চান বাস্তব। আর একই দল নিয়ে গোয়াকে বুঝিয়ে দিতে চান, মোহনবাগানের দ্বিতীয় সারির দলও ভয়ংকর।
বার্সা-মিলান ম্যাচ নিয়ে শঙ্কা

লোডশেডিংয়ে ঢেকে গিয়েছে স্পেনের একটা রেল স্টেশন। লোডশেডিংয়ের দরুন ঘন্টার পর ঘন্টা দঁাড়িয়ে আছে ট্রেন।
আফ্রিদিকে কঠিন জবাব শিখরের

আফ্রিদির বক্তব্যের সমালোচনা করলেন শিখর ধাওয়ান।
জাতীয় দলে নিয়মিত খেলাই লক্ষ্য রিম্পার

বাবা শ্রীবাস ও মা বাসন্তী হালদারের মাঝে দঁাড়িয়ে পুরস্কার মঞ্চে রিম্পা।
বৈভবকে নিয়ে মন্তব্যে সমালোচনার মুখে শুভমন গিল

পরিণত মানসিকতার পরিচয় দিতে পারেননি গুজরাট টাইটানস অধিনায়ক শুভমন গিল। যে বৈভবকে নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে গোটা দেশে, আবেগে, উচ্ছ্বাসে বৈভব বন্দনায় মুখর সকলেই, তখন তাঁকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক শুভমন গিল, সেটাকে ভালভাবে নিতে পারেননি কেউ। সমালোচনা হচ্ছে গিলের মন্তব্য নিয়ে। ম্যাচের শেষে গিলকে বৈভবের বিস্ফারক ইনিংস নিয়ে বলতে বললে তিনি বলেন, এটা বৈভবের দিন ছিল, সেটাকে ও ভালভাবে কাজে লাগিয়েছে। আসলে বাটলার বৈভবের ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন, সেটাকেই ইঙ্গিত করেছেন গিল। এমন ইনিংসের পর, এমন অবিস্মরণীয় কৃতিত্বের পর সেই ইনিংস নিয়ে এমন মন্তব্য নিয়েই এখন চর্চা। শুধু শুভমন গিল কেন, গুজরাট টাইটানসের কেউই ভাবতে পারেননি ১৪ বছর ৩২ দিনের একটা কিশোরের কাছে এভাবে নাস্তানাবুদ হতে হবে। টাইটানসের কী সব বোলার! মহম্মদ সিরাজ, ইশান্ত শর্মা, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, রশিদ খান – সব আন্তর্জাতিক বোলার, তাঁদের নিয়ে এভাবে ছেলেখেলা করবে বাচ্চা ছেলেটা, কে ভেবেছিল! হ্যাঁ, মারতে গিয়ে ক্যাচ একটা তুলেছিলেন বৈভব, কিন্তু অবিস্মরণীয় ইনিংসে সেটা কি ভুলিয়ে দেননি বৈভব সূর্যবংশী? অথচ গিল কেন ভুলতে পারলেন না, সেটাই ভাবছেন সকলে। প্রাক্তন ক্রিকেটার অজয় জাদেজাও আশা করেছিলেন বৈভবের অনেক বেশি প্রশংসা করবেন শুভমন গিল, বিশেষ করে তিনি যখন ছিলেন প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়ক। গিল যেভাবে ভাগ্যের কথা নিয়ে এসেছেন, সেটা একেবারেই পছন্দ হয়নি জাদেজার। গিল যদি মন খুলে প্রশংসা করতেন তাহলে হয়ত সমালোচনার বদলে প্রশংসিত হতেন তিনিও।
লক্ষণ বলেছিলেন রাহুলকে, তোমার দলে বৈভবকে নাও
বৈভব সূর্যবংশীর কথা প্রথম শুনিয়েছিলেন ভিভিএস লক্ষণ। তিনি রাজস্থান রয়্যালসের কোচ রাহুল দ্রাবিড়ক বলেছিলেন, আইপিএলে রাজস্থান দলের দায়িত্ব নিয়েছ। একটা জুনিয়র ছেলেকে দলে নাও। ও তোমাকে ভাল সার্ভিস দেবে। লক্ষণের কাছ থেকে বায়োডাটা নিয়ে রাহুল কথা বলেন রাজস্থান রয়্যালসের কর্তাদের সঙ্গে। তারপর বৈভব সূর্যবংশীর ডাক পড়ে ট্রায়ালে। সেখানে তাঁকে দেখে রাহুলের পছন্দ হয়। অকশনে বাজি লাগিয়ে তুলে নেওয়া হয় বৈভবকে। শুধুমাত্র রাহুলের মুখ চেয়ে রাজস্থান কর্তরা টকার থলির দিকে না তাকিয়ে দিল্লির সঙ্গে লড়াইয়ে নামেন। শেষে বাজি জিতে রাহুলের হাতে বৈভবকে তুলে দেন। সেই শুরু। প্রথম দুটি ম্যাচে দরুন কিছু করতে না পারলেও গুজরাটের বিরুদ্ধে তঁর ১০১ রানের ইনিংস রাহুলকে তৃপ্তি দেয়। তাই বৈভবের সেঞ্চুরি আসার পর নিজেকে খোলস ছেড়ে বের করে দুহাত আকাশে তুলে আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এখানে লক্ষণের কৃতিত্ব কোথায়! আছে। তিনি বৈভবের উপর বাজি না লাগালে রাহুলকে বলবেন কেন! এনসিএতে হেড কোচ লক্ষণ। তিনি জুনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করেন। একসময় এই কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন রাহুল স্বয়ং। তিনি রোহিতদের দায়িত্ব নেওয়ার পর লক্ষণ সেই জায়গায় আসেন। এভাবে সব কিছু চলছিল। একবছর আগে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার জন্য দেশের ডিস্ট্রিক ক্রিকেটারদের জাকা হয়। সেই দলে ছিলেন ১৩ বছরের বৈভবও। তাঁকে রাখা হয়েছিল ভারতীয় বি দলে। একটি ম্যাচে ৩৬ রান করে রান আউট হন বৈভব। আউট হয়ে ফিরে এসে ড্রেসিংরুমের এক কোনায় বসে কাঁদছিলেন বৈভব। শুরুতে কারোর নজর পড়েনি। পরে লক্ষণ ড্রেসিংরুমে ঢুকে দেখেন বৈভব কাঁদছেন। তাঁকে কাছে ডেকে লক্ষণ বলেন, এখানে তুমি কত রান করছ তা দেখার জন্য ডাকা হয়নি। তোমার স্কিল ও ট্যালেন্ট কেমন সেটাই আমরা যাচাই করতে চাই। তাই ভেঙ্গে পড়ার কিছু নেই। নিজেকে সামলাও। পরের ম্যাচে এই ভুল যেন না হয়। লক্ষণের কথা শুনে নিজেকে সমলে নেন বৈভব। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দলে এসে দারুন ব্যাট করেন বৈভব। ৫৮ বলে তাঁর সেঞ্চুরির কথা লক্ষণ নিজেও ভোলেননি। বুঝতে পারেন, এর মধ্যে স্পার্ক আছে। এ লম্বা রেসের ঘোড়া। নিজের পছন্দ হওয়ায় একদিন রাহুলকে ডেকে আলাদা করে কথা বলেন। আইপিএলে রাজস্থান দলে সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমান করতে পারব বলে বিশ্বাস জন্মায় লক্ষণের। তাই নিজের মতামত জানান। আর লক্ষণ বলছেন বলে রাহুল আপত্তি করেননি। একসঙ্গে দুজনে দীর্ঘদিন খেলেছেন। ভরসা ছিল বলে রাজস্থান রয়্যালসের কর্তাদের তিনি বলেন, ট্রায়ালে বৈভবকে ডকা হোক। সেখানে তিনি বৈভবকে দেখতে চেয়েছিলেন। দেখলেন। ভারতীয় ক্রিকেটের কোহিনুরকে চিনতে ভুল করেননি রাহুল। আসলে জহুরি জহর চেনে, কথাটি তো ভুল তো পারে না। লক্ষণের পর রাহুলের নজরে পড়ে যান বৈভব। এরপর অকশন। দলের সঙ্গে তিনমাস প্র্যাকটিস। তারপর আইপিএলে নেমে পড়া। তিন নম্বর ম্যাচে সেঞ্চুরি। রাহুলের আনন্দের বর্হিপ্রকাশ। এ তো তাঁরই জয়। তবে মনে রাখতে হবে রাহুলের সেই আনন্দে ভাগ বসিয়ে দিয়েছেন ভিভিএস লক্ষণও। তিনি রাহুলকে না বললে এত তাড়াতাড়ি কি বৈভব পাদপ্রদীপের আলোয় ভেসে উঠতে পারতেন।
রাহুলের সামনে ট্রায়ালে এক ওভার ব্যাাট করে পাশ বৈভব

বৈভব সূর্যবংশী। এখন আর নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। নামেই পরিচিতি। বিশ্ব ক্রিকেট জেনে গিয়েছে ১৪ বছরের কিশোর আগামিদিনে ক্রিকেট মাঠের বাইশ গজকে শাসন করতে তৈরি হচ্ছে। আইপিএলে নিজের তিন নম্বর ম্যাচে কী খেলাই না খেললেন। প্রতিপক্ষে জাতীয় দলের সব বোলাররা রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের সামনে ফিয়ারলেস ক্রিকেট খেলে কত রেকর্ড গড়ে ফেললেন। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি। ৩৮ বলে ১০১ রান। তাঁর ব্যাটের দাপটে ২৫ বল বাকি থাকতে ঘরের মাঠে রাজস্থানের দুর্দান্ত জয়। কথাগুলি কত সহজে লিখে ফেলা গেল। কিন্তু গলি থকে রাজপথ উঠে আসার কাহিনি তত সহজ নয়। একটা করে ধাপ পার করে আসা বৈভবের যাত্রা পথ বেশ কঠিন ছিল। তবে বৈভব ভাগ্যবান। চলার পথে পাশে পেয়ে যান ভিভিএস লক্ষণ, রাহুল দ্রাবিড়, বিক্রম রাঠোরদের। যাঁরা জাতীয় দলে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। খেলা ছাড়ার পর কোচিংয়ে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছেন। তাঁরা পাশে ছিলেন বলেই বৈভব এত তাড়াতাড়ি আলো ছড়াতে পেরেছেন। বৈভবের শুরুর যাত্রা এতদিনে অনেকে জেনে গিয়েছেন। অজানা থেকেছে তাঁর পরের পথ চলার গল্প। কীভাবে তিনি চলে এলেন একেবারে রাহুল দ্রাবিড়ের কাছে। আইপিএলে সব দলেরই স্কাউটিং টিম আছে। রাজস্থান এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। তবে বৈভবকে খুঁজে বের করার কাজটি স্কাউটিং টিম করেনি। তাদের কাজ সহজ করে দিয়েছিলেন রাজস্থান রয়্যালসের কোচ রাহুল দ্রাবিড়। তাঁর কথার উপর ভরসা করে রাজস্থান এগিয়ে চলে। দলের ম্যানেজার রোমি ভিনডার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাকে বলা হয়েছিল, বিহারে বৈভবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে। যত তাড়তাড়ি সম্ভব ওকে যেন নাগপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিহার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গেও কথা বলি। ওকে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার সব ব্যবস্থা যেন ওরা করে দেয়। সেভাবেই সব কিছু চলে। আমাদের হাই পারফরম্যান্স সেন্টার নাগপুরে। তাই ক্রিকেটারদের সেখানে আসতে বলা হয়। বৈভব আসে। এটা নভেম্বরের ঘটনা। ট্রায়ালের দিন হাজির ছিলেন হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়, ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর এবং হাই পারফরম্যান্স সেন্টারের ডিরেক্টর জুবিন বারুচা। একে একে সব ক্রিকেটার নেটে ব্যাট করতে ঢোকে। ডাক পড়ে বৈভবেরও। এক ওভার ব্যাটিং করানো হয়। তারপর নেট থেকে বেরিয়ে আসতে বলা হয়। বৈভবের শুধু ব্যাটিং নয়, ওর স্কিল ও ট্যালেন্ট দেখে সবাই খুশি। সেখানেই পাশ বৈভব। আমাকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়। বলা হয়,ওর বাড়ির সঙ্গে কথা বলতে। ওদের যেন জানানে হয় আমরা বৈভবের পারফরম্যান্সে খুশি। চেষ্টা করব অকশন থেকে তুলে নিতে। না পেলেও বৈভব আমাদের নজর থাকবে। অকশন নিয়ে রাজস্থান সংশয়ে ছিল। কারন দিল্লিও বৈভবকে দলে নিতে আগ্রহ দেখিয়েছিল। শোনা যায়, দিল্লির ট্রায়ালেও নেমেছিলেন বৈভব। তারপর কি হয়েছে জানা যায়নি। তবে অকশনে কঠিন লড়াই হবে, সেটা আন্দাজ করেছিল রাজস্থান। লড়াইও হয়েছিল। শেষপর্যন্ত দিল্লির সঙ্গে লড়ে ম্যাচ জেতে রাজস্থান। অকশন থেকে কোটি টাকায় পেয়ে যায় বৈভবকে। অকশনের পর আসল লড়াই শুরু বৈভবের। রোমি বলেন, অকশন শেষ হওয়ার পর নতুন ক্রিকেটারদের জানিয়ে দেওয়া হয় যে তাদের নাগপুরে হাই পরাফরম্যান্স সেন্টারে প্র্যাকটিসে নামত হবে। ঠিক সময় সব ক্রিকেটার চলে আসে। এখানেই অন্যদের সঙ্গে তিন মাস কাটায় বৈভব। প্র্যাকটিসে রুটিং সহজ ছিল না। কঠিন প্র্যাকটিস সেরে নিজেদের তৈরি করার সুযোগ পায় বৈভব। তারর আইপিএল শুরু। বাকিটা তো ইতিহাস। তিন ম্যাচ খেলে বৈভব বিশ্ব ক্রিকেটে আলোচনায় চলে এল। বৈভবই প্রথম নয়, আমরা অনেক ক্রিকেটারকে এভাবে জায়গাকরে দিয়েছি। যারা আগমিদিনে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নেমে নজড় কেড়েছে। আশা করি একদিন বৈভবের সামনেও সুযোগ আসবে। এটটাই আমাদের বড় পুরস্কার। আমাদের ভাবনা ও পরিশ্রম যে সার্থক, সেটা প্রমান হবে।
৬ মাস আগেই দিওয়ালি এলো, বললেন বৈভবের বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশী

বৈভব সূর্যবংশী – এই একটা নাম নিয়েই ক্রিকেট মহলে এখন যত আলোচনা। সোমবার জয়পুরে সকলের হৃদয় জিতে নিয়েছেন ১৪ বছরের কিশোর বৈভব সূর্যবংশী। কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসাবে টি টোয়েন্টিতে শতরান করে বিশ্বরেকর্ড। ৩৫ বলে শতরান করে আইপিএলে দ্বিতীয় দ্রুততম হিসাবে অনন্য নজির। বিস্ফারক, বিধ্বংসী ওই ইনিংস নিয়ে চর্চা চলছেই। আপ্লুত বৈভবের বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশীর আবেগঘন প্রতিক্রিয়া, ৬ মাস আগেই দিওয়ালি এসে গেল। সোমবার জয়পুরে বৈভব যখন তাণ্ডব করছেন, তখন এক হাজার ১৭৭ কিলোমিটার দূরে বিহারের সমস্তিপুরে বিস্ময় কিশোরের মহল্লায় সবাই প্রার্থনায় ব্যস্ত ছিলেন। তারপর সেটাই উৎসবে পরিণত হয়ে গেল। শুভমন গিলের উঠে আসার যে গল্প, তাতেই উৎসাহিত হয়ে বৈভবের জন্যও তেমনই ব্যবস্থা করেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমী বাবা। এনসিএতে ভিভিএস লক্ষণের হাতে তৈরি। এখন রাজস্থান রয়্যালসে রাহুল দ্রাবিড়, বিক্রম রাঠোরদের তত্ত্বাবধানে আছেন বৈভব, তাই তাঁদের সকলকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছেন সঞ্জয়। শুভমন গিল, পৃথ্বী শ, অভিষেক শর্মা, সরফরাজ খানদের বাবারা যেমন তাঁদের ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন, ক্রিকেটার তৈরি করার জন্য নিজেদের সামর্থ্যকে উজাড় করে দিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই বৈভবের জন্য করেছেন সঞ্জীব সূর্যবংশী। শুভমনের গল্প জেনে বৈভবের জন্যও সিমেন্টর পিচ বানিয়ে দিয়েছিলেন। সেই শুভমনের দলের বিরুদ্ধেই এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটায় বেশি খুশি সঞ্জীব বৈভবের সৌভাগ্য, বেড়ে ওঠার সময় পাশে পেয়েছেন লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়দের। এনসিএতে কোচিং দিয়ে লক্ষ্মণই দ্রাবিড়কে বলেছিলেন এই অসামান্য প্রতিভাকে রাজস্থান রয়্যলস দলে নিতে। তাই কৃতজ্ঞতায় মাথা ঝুঁকে আসছে সঞ্জীবের। বৈভবের কোচ মনীশ ওঝা জানান, ২ বছর ধরে বৈভবকে কোচিং দিচ্ছেন লক্ষ্মণ। রাজস্থান রয়্যলসের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরও এই দুরন্ত প্রতিভায় মুগ্ধ, বিস্মিত।
জুনে ব্রাজিলের দায়িত্বে আনচেলেত্তি

রিয়াল ছেড়ে এবার ব্রাজিল দলের দায়িত্ব নিতে চলেছেন আনচেলেত্তি।