অনেক দিন পর নাইট শিবিরে আবার নারায়ন – নারায়ন, এটা দলগত সাফল্য, বলছেন মিস্ট্রি স্পিনার

কী হত, নারিন যদি এভাবে নিজেকে মেলে না ধরতেন? ইনিংসের শুরুতে গুরবাজের সঙ্গে ওই ঝড়টা না তুলতেন বা ওভাবে সরাসরি থ্রোয়ে উইকেট ভেঙে রাহুলকে না ফেরাতেন কিংবা ১৪ তম ওভারে বল করতে এসে উইকেট দুটি তুলে না নিতেন? না, অক্ষর-দুপ্লেসিদের হাত থেকে ম্যাচ বার করে নিয়ে আসা সম্ভব হত না। তাই তো ম্যাচ শেষে নাইট শিবিরে শুধু `নারায়ন নারায়ন!` নায়ক নিজে অবশ্য এই সাফল্যের জন্য গোটা দলকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন। ম্যাচের শেষে জানিয়ে দিলেন, “টিম এফোর্টেই এই সাফল্য। মাঝের ওভারে অঙ্গরীশ-রিঙ্কুরাও ভাল খেলেছে। অমি সব সময় চাপ সরিয়ে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্চা করি। দল সমস্যায় থাকলে নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে এভাবেই অধিনায়কের পাশে থাকার চেষ্চা করি।“ মঙ্গলবার দিল্লিকে হারাতে ২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। জানিয়ে দিলেন বিশেষ কোনও উইকেটই সেরা নয়। সব উইকেটই গুরুত্বপূর্ণ। যত উইকেট পাওয়া যায়, তত দলের ভাল। দুরন্ত থ্রোয়ে রাহুলকে রান আউট করে ম্যাচ জেতাতে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। সে প্রসঙ্গে নারিনের বক্তব্য, “আমি জানি, সেরা ফিল্ডার নই, তবু এভাবে রান আউট করে বেশ ভাল লাগছে।“ আর ম্যাচ উইনার নারিন এভাবে ভরসা দেওয়ায় খুশির সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তি নাইট শিবিরে।
ব্যর্থ সিন্ধু-প্রণয়, সুদিরমান কাপের সেমিফাইনালে যাওয়া এবারও স্বপ্নই থেকে গেল ভারতের

হল না। এবারও হল না। সুদিরমান কাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন এবারও অধরাই রয়ে গেল ভারতের। এবারও গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হল। মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার কাছে ১-৪ ম্যাচে হেরে গেলেন সিন্ধু-প্রণয়রা। এর আগে ডেনমার্কের কাছেও একই ফলে হারতে হয়েছিল। এখন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিয়মরক্ষার ম্যাচ খেলবে ভারত। তবে শুধু নিয়মরক্ষা নয়, ওই ম্যাচে হারলে গ্রুপে সবার নিচে থেকে শেষ করতে হবে। এই গ্রুপ থেকে কোয়ালিফাই করে গেল ইন্দোনেশিয়া ও ডেনমার্ক। ভারতের সঙ্গে বিদায় নিল ইংল্যান্ডও। মঙ্গলবার অবশ্য শুরুটা ভাল হয়েছিল। মিক্সড ডাবলসের ম্যাচটি জিতেই শুরু করেছিল ভারতীয় দল। কিন্তু এরপর নিজেদের সিঙ্গলসে হারেন পিভি সিন্ধু ও এইচএস প্রণয়। পুরুষ ও মহিলাদের ডাবলসেও হারে ভারত। এই টুর্নামেন্টে ভারতের পুরুষ ও মহিলা দুই বিভাগেই সেরা দুটি ডাবলস জুটিকে পায়নি টিম ইন্ডিয়া। চোটের জন্য খেলতে পারেননি সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগ শেট্টি জুটি ও ত্রিসা জলি-গায়ত্রী গোপিচাঁদ জুটি। ২০২২ টমাস কাপ ও ২০২৩ এশিয়ান গেমসে ভারতীয় পুরুষ দলের সাফল্যের পর আশা জেগেছিল, এবারের সুদিরমান কাপে হয়ত প্রথমবার সেমফাইনালে ওঠা যাবে। কিন্তু চিনে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্ট থেকেও এক রাশ হতাশা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে। সাত্ত্বিক-চিরাগ ও ত্রিসা-গায়ত্রীরা থাকলে হয়ত অনেক বেশি লড়াই করতে পারত টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু তাঁরা তো ছিলেনই না, পাশাপাশি চূড়ান্ত ব্যর্থ হলেন সিন্ধু-প্রণয়রাও।
দিল্লি থেকে অক্সিজেন নিয়ে শহরে ফিরছেন রাহানেরা

কেকেআর: ৯ উইকেটে ২০৪ (২০ ওভার) দিল্লি ক্যাপিটালস: ৯ উইকেটে ১৯০ (২০ ওভার) রোগী এখনও আইসিইউতে। তবে আগের থেকে কিছুট ভাল। রিপোর্ট বলছে, এক ধাপ সামনের দিকে এগিয়েছে। এখনও অনেকটা পথ পার করতে হবে। কারন এই অবস্থায় ভাল ও মন্দের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা রোগী যে কোনও সময় খারাপের দিকে যেতে পারে। অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে কেকেআরের ম্যাচ রিপোর্টের শুরুটা এমনই হতে পারে। পাঁচে পাঁচ করার জায়গা থেকে রাহানেদের লক্ষ্য এখন চারে চার। একবার পা হড়কে গেলে সব শেষ। তাদের কাছে আইপিএল নিয়ে বলার কিছু থাকবে না। তবে ৪মে ইডেনে বৈভব সূর্য়বংশীদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে দিল্লি ম্যাচের ভিডিও কয়েকবার দেখে নিতে পারেন ক্রিকেটাররা। ২০৫ রানের টার্গেট দিল্লির সামনে দিয়ে কেকেআর জিতল। ব্যবধান বিরাট কিছু নয়-১৪ রানের। একটা ঝড়ে সব কিছু লন্ডভন্ড হতে পারত। সেটা যেন পরের ম্যাচে না হয় তার আগাম সতর্কতা দিয়ে গেল দিল্লি ম্যাচ। খেলার শেষে আন্দ্রে রাসেল বলছিলেন, টিম মিটিংয়ে সতীর্থদের বলেছিলাম, আমার জন্মদিনে তোমাদের কাছ থেকে একটা জয় চাই। সেটাই হবে আমার সেরা উপহার। সেরা উপহারই বটে। কেকেআরের স্লোগান- করব, লড়ব, জিতব রে। সবাই মিলে লড়াই করলে জয় কঠিন হবে না। ক্রিকেটাররা লড়াই করলেন। রাসেলের হাতে জয় উপহার তুল দেওয়াই নয়, দলকে অক্সিজেনও দিল। কারন এই ম্যাচ হারলে সব শেষ হয়ে যেত। নিয়য়মরক্ষার বাকি ম্যাচে ইডেন মুখো কেউ হতে চাইতেন না। কে আর হেরোদের খেলা দেখবেন। লড়াই করল বটে কেকেআর। রানের দিকে তাকালে কারোর বড় স্কোর দেখা যাবে না। সবাই মিলে মিশে রান করেছেন। রঘুবংশী (৪৪) ও রিঙ্কু (৩৬) বাদে কেউ তিরিশের ঘরে ঢুকতে পারেননি। তবু কেকেআর দুশো ব্যারিকেড পার করে গেল। এর পিছনে অবশ্যই ওপেনারদের কৃতিত্ব আছে। গুরবাজ ও নারাইন যেভাবে দিল্লির বোলারদের উপর চেপে বসলেন, সেই জায়গা থেকে দিল্লি বোলারদের ঘুরে দাঁড়াবার রাস্তা ছিল না। পাওয়ার প্লে-তে ১ উইকেটে ৭৯। এটাই কেকেআরকে চালকের আসনে বসিয়ে দিল। কিন্তু সেখান থেকে দলের রান অন্তত ২২০-২৩০ হওয়া উচিত ছিল। সেটা হল না। এই অঙ্ক কষতে হবে রাহানেদের। কেন আরও কুড়ি রান তুলতে পারলেন না তাঁরা। তবু ২০৪ রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই করতে হলে পাওয়ার প্লে-তে ধাক্কা দিতে হয়। কেকেআর বোলররা সেটা করে দেখিয়েছে। দিল্লি ম্যাচে অনুকূল রায়কে দলে নিয়ে আসা হয়। তিনি শুরুটা করলেন। তারপর দুই স্পিনার ধাক্কা দিয়ে গেলেন। তবে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট রাহুলের রান আউট। শর্ট ফাইন লেগে বল ঠেলে রান নিতে ছোটেন রাহুল ও ডুপ্লেসি। নারাইনের থ্রো সরাসরি উইকেট ভেঙ্গে দিতে রাহুল আউট। তিনি থাকলে ম্যাচের রং বদলে যেতে পারত। কিন্তু ডুপ্লেসি ও অক্ষররা রান করলেও কেকেআরের দেওযা টার্গেটে পৌঁছনো সম্ভব ছিল না। একসময় তাদের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৩৫। ১৩ ওভার হয়ে গিয়েছে। সাত ওভারে প্রায় ৭০ রান তোলা সহজ ছিল না। হয়ওনি। নারাইন ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন। ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে তিন উইকেট পেলেন। জিতলেন ম্যাচের সেরার পুরস্কার। বরুন দুটি উইকেট পেলেন ৩৯ রান খরচ করে। সব শেষে ১৯০ রানে আটকে দিল্লি হারল ১৪ রানে। জয় এল। এক ধাপ সামনে উঠল কেকেআর। কিন্তু লিগ টেবিলের জায়গার বদল হল না। তারা এখনও সাতে। এই জায়গা তেকে রান রেটের দিকে তাকিয়ে খেলতে হবে। কারন বাকি ৬টি দল প্রয় গয়ে গায়ে ছুটছে। মনে হচ্ছে তিন ও চার নম্বর দল নির্বাচিত করার সময় রান রেট দেখা হবে। তাই কেকেআরের ম্যাচ জয়ের পাশে রান রেট দেখে খেললে সুবিধা পাবে। তার আগে অবশ্য় জয়ের কথা ভাবতে হবে। সেটা না এলে তো কিছুই পড়ে থাকবে না। সক্ষিপ্ত স্কোরঃ কেকেআর ৯ উইকেটে ২০৪ (গুরবাজ ২৬, নারাইন ২৭, রাহানে ২৬, রঘুবংশী ৪৪, আইয়ার ৭, রিঙ্কু ৩৬, রাসেল ১৭, পাওয়েল ৫, স্টার্ক ৪২ রানে ৩অক্ষর ২৭ রানে ২) দিল্লি ক্যাপিটালস ৯ উইকেটে ১৯০ ( ডুপ্লেসি ৬২, অক্ষর ৪৩, নিগম ৩৮, নারাইন ২৯ রানে ৩, বরুন ৩৯ রানে ২)