চমক বোইসনের, দুরন্ত গফ

ফিরে আসার লড়াই দেখাচ্ছেন কোকো গফ।
থাইল্যান্ডের মাটিতে সুনীলরা অসহায়

বুধবার থাইল্যান্ড-ভারত ম্যাচের একটা মুহূর্ত।
প্র্যাকটিশ শুরু ইস্টবেঙ্গলের

হাওড়া স্টেডিয়ামে শুরু হল ইস্টবেঙ্গলের প্র্যাকটিশ।
পিছিয়েও নজর কাড়ছে ভারত

থাইল্যান্ড বিরতিতে এগিয়ে।
ভয়ঙ্কর ঘটনা, আরসিবির বিজয়োৎসবে পদিপষ্ট হয়ে মৃত এগারো, আহত অসংখ্য

সেলিব্রেশন বদলে গেল বিষাদে। আরসিবির বিজয়োৎসবে ভয়ঙ্কর ঘটনা। ভিড়ের চাপে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে এগারোজন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। চিন্নাস্বামীর ভিতরে চলছিল সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও সেলিব্রেশন। যদিও যানজট হওয়ার আশঙ্কায় বিধান সৌধ থেকে চিন্নাস্বামী পর্যন্ত খোলা বাসে প্যারেডের পরিকল্পনা বাতিল করা হয় কিন্তু স্টেডিয়ামের বাইরে জনজোয়ার। ভিড়ের চাপে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এর মধ্যেই এগারো জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে স্টেডিয়ামের ভিতরে সে খবর কেন পৌঁছোল না, বোঝা যাচ্ছে না, কারণ ভিতরের অনুষ্ঠান তখনও চলছিল। বিরাটদের সেলিব্রেশনে এমন ঘটনায় হতবাক সকলে। যা জানা যাচ্ছে, বড় ড্রেনের ওপরেের স্ল্যাবগুলি ভিড়ের চাপে ভেঙে পড়ে। তাতে যেমন বহু মানুষ আহত হন, তেমনি প্যানিক তৈরি হওয়ায় দৌড়োদৌড়ি, বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তাতেই মৃত্যু হয় এগারো জনের। বিসিসিআিই গোটা ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে জানিয়েছে, এটাই জনপ্রিয়তার নেতিবাচক দিক। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল, দায় কার, এসব নিয়ে যেমন প্রশ্ন আছে, তেমনি বড় প্রশ্ন, স্টেডিয়ামের বাইরে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও কীভাবে ভিতরে তখনও অনুষ্ঠান চলছিল? আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমল ফোন করেন ফ্র্যাঞ্চািইজি কর্তাদের, বাইরের ঘটনার কথা জানিয়ে তখনই অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু বাইরের ঘটনার কথা কেন ভিতরে পৌঁছোল না, সেটা সত্যিই বিস্ময়কর। এমন মর্মান্তিক ঘটনার দায় কার? ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের? ফ্র্যাঞ্চািজির? না সরকারের ? প্রশ্ন অনেক কিন্তু উত্তর নেই।
আরসিবির আইপিএল ট্রফি জয়ে উঠে এল অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গ

১৮ বছরের চেষ্টার পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গলোরের ঘরে এল আইপিএল ট্রফি। স্বপ্নপূরণ হল বিরাট কোহলির। মাঠ থেকে হোটেল – মঙ্গলবার রাত থেকে উচ্ছ্বাসে ভাসছে আরসিবি। ড্রেসিংরুমে ফিরেও হয়েছে সেলিব্রেশন। তারই মধ্যে ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট মো বোবাট আবেগঘন বক্তব্য রাখলেন। সেলিব্রেশনের মধ্যেও সাজঘরের আবহ ছিল নতুন শুরুর। নতুন শপথের। বোবাট বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ওয়েল ডান। আমরা যা অর্জন করলাম, তার জন্য দারুণ গর্বিত। কোচ, সাপোর্ট স্টাফ, অ্যানালিস্ট- সকলের সাফল্য। আলাদা করে বিরাট কোহলির উদ্দেশে তিনি বলেন, “জানি একজনকে তুলে ধরা তুমি পছন্দ কর না। বিরাট, তোমাকে তো বিশেষ ধন্যবাদ। অন্য যে কারও চেযে এটা তোমার প্রাপ্য ছিল।“ অধিনায়ক রজত পাতিদার, ফিল সল্ট, জস হ্যাজলউডদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান বোবাট। তারপরই আগামির স্বপ্ন। তিনি বলেন, “আগামি বছর বেঙ্গালুরুতে ফাইনাল। আমাদের আবার চ্যাম্পিয়ন হতে হবে।“ ফাইনালের পর আরসিবি সাফল্যে উঠে এল অপারেশন সিঁদুরের প্রসঙ্গ। হেড কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার জানিয়ে দিলেন, ওই সময় খেলা বন্ধ থাকায় তাঁদের দারুণ সুবিধা হয়েছে।তিনি মনে করেন, এই সময়টা পেয়ে যাওয়ার জন্যই রজত পাতিদার, জস হ্যাজলউডরা চোট সারিয়ে ওঠার সময় পেয়ে গিয়েছিলেন। তাই এটাকে একটা টার্নিং পয়েন্ট বলছেন ফ্লাওয়ার।
কিয়ান, প্রীতম ফিরতে মরিয়া

কিয়ান নাসিরি চান কলকাতায় খেলতে।
অপ্রতিরোধ্য আলকারাজ

দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছেন আলকারাজ।
দ্য ওয়েট ইজ ওভার, রাতে শিশুর মত ঘুমোতে চান বিরাট

রাতটা তার। শুধুই তাঁর। চোখে জল, মুখে হাসি নিয়ে বলে গেলেন, আজ রাতে শিশুর মত ঘুমোবেন। শিশু, সত্যিই এক শৈশবের উচ্ছ্বাস দেখল ক্রিকেট দুনিয়া। দেখবে না? উফঃ আঠারোটা বছর। কম দিন! দাঁতে দাঁত চেপে, চোয়াল চেপে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন এই রাতটার জন্য। হ্যাঁ, বিরাট কোহলিই একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি একটি মাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজিতেই খেলে গিয়েছেন। খেলে গিয়েছেন আঠারো বছর ধরে। অবশেষে এল মাহেন্দ্রক্ষণ। প্রথমবার আইপিএল ট্রফি হাতে তুলে ধরলেন বিরাট। স্বস্তি পেল আসমুদ্রহিমাচল। খুশি হল ক্রিকেট দুনিয়া। না, এই ট্রফিটা না পেলেও কিছু হত না। বাইশ গজের সব সাফল্যই ধরা দিয়েছে তাঁর কাছে। সাফল্য তাঁকে কিংবদন্তি বিরাট কোহলি করে দিয়েছে আগেই, তবু, তবু এটুকুই বা বাকি থাকবে কেন? কেরিয়ারের শেষ পর্বে এসে একদিনের বিশ্বকাপ জিতে বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়েছিল সচিন তেন্ডুলকরের। ঠিক একইভাবে আহমেদাবাদে ৩ জুনের মায়াবী রাতে বৃত্ত সম্পূর্ণ হল কিং কোহলির। ই সালা কাপ নামদু অর্থাৎ এ বছর কাপ আমাদের। স্লোগানটা বছরের পর বছর দিয়ে এসেছে বেঙ্গালুরু। দিয়ে এসেছেন বিরাট কোহলি। এদিন আরসিবির দুই প্রাক্তন সতীর্থ ক্রিস গেইল ও এবি ডিভিলিয়ার্সকে জড়িয়ে ধরে সমস্বরে স্লোগানটা তুললেন তৃপ্ত কোহলি। “আরসিবিকে আমার যৌবনটা দিয়েছি, আমার সেরা সময়টা দিয়েছি। আমার অভিজ্ঞতাটা দিয়েছি। আরসিবি আমার হৃদয়, আমার আত্মা” – আবেগ, আবেগ তখন বাঁধ মানছে না বিরাটের। তিন বল বাকি থাকতেই ট্রফিজয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তখনই মুখ ঢাকলেন নায়ক। শেষ বল হতেই দু’হাতে মুখ ঢেকে হাঁটু মুড়ে বসে মাটিতে মুখ গুঁজলেন। আবেগটা যে তখন বড় বাড়াবাড়ি করছিল। চোখের জল কি দেখতে দেওয়া যায়! মাঠের চর্তুদিক থেকে ধেয়ে এলেন সতীর্থরা। তাঁদের বুকে হারিয়ে গেলেন ‘শিশু’ কোহলি। গ্যালারিতে অনুষ্কা আর মাঠের মধ্যে বিরাট – অনুভূতি, অভিব্যক্তি মিলিয়ে দিল দু’জনকে। আর বন্ধুর টানে সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছুটে আসা প্রাক্তন আরসিবি সতীর্থ ডিভিলিয়ার্স তখন মোবাইলে সেই ছবি ধরে রাখতে ব্যস্ত। দ্য ওয়েট ইজ ওভার – হ্যাঁ, এবির-ও যে! মাঠে নেমে এসে বন্ধুকে বুকে টেনে নিলেন এবি। ততক্ষণে নেমে এসেছেন অনুষ্কাও। তারপরই রাতের সেরা ছবিটা – দুজনে দুজনকে পরম আবেগে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। দুজনেই হাসছেন। কাঁদছেন। অনুষ্কার কপালে চুম্বন এঁকে দিলেন তিনি – স্বামীর কৃতজ্ঞতা। গলা বুজে আসছিল বিরাটের, বললেন “ওর ত্যাগ, আমার জন্য দায়বদ্ধতা- কী বিরাট অবদান!” গেইল-এবিরাও তখন আরসিবির জার্সি গায়ে চড়িয়ে নিয়েছেন। দুজনকে জড়িয়ে ধরে কোহলির অভিব্যক্তি, “এ সাফল্য যতটা আমাদের ততটা ওদেরও। ওঁদের উপস্থিতি আনন্দ ১০গুন বেশি স্পেশ্যাল করে তুলেছে।“ একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাপটার জন্য লড়াই করেছেন বছরের পর বছর। এবি নিজেও দুটি ফাইনাল খেলেছেন। তাই কাপ যখন এল, তখন এবি যেমন দূরে থাকতে পারেননি, তেমনি কোহলিও জানিয়ে দিলেন ওঁদের সেলিব্রশনেও থাকবেন এবি। দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তিও কতটা আরসিবির, বুঝিয়ে দিলেন বন্ধু। বাকরুদ্ধ হয়ে সেসব দেখতে দেখতে, শুনতে শুনতে নভজ্যোৎ সিং সিধুও বলে উঠলেন তাঁর প্রিয় পঞ্জাব হেরেছে কিন্ত প্রিয় কোহলি তো জিতেছেন। শুনেই সিধুকেও বুকে নিলেন বিরাট। গোটা বিশ্বের, গোটা দেশের বিরাটভক্তদের অবস্থা যদি এমন হয়, তাহলে আরসিবি ভক্তদের এ কেমন রাত বুঝবেন না তিনি! বছরের পর বছর ই সালা কাপ নামদু স্লোগান ব্যর্থ হতে হতে ১৮তম বছরে স্বপ্নপূরণ। ফ্যানেদের জন্য খুব সহজ আবেগ কোহলির গলায়, সাফল্য যতটা আমাদের, ততটাই ওঁদেরও। আবেগ তো তাঁর সহজাত। মাঠে, মাঠের বাইরেও। রান করলেও আবেগ। আউট হলেও অন্যরকম আবেগ। তাহলে আজ তাঁর কী হবে, সেটা তো জানাই ছিল। তবু অনুষ্কা হয়ত তখন ভাবতে শুরু করেছেন, এবার থাম তুমি। যাও সতীর্থদের সঙ্গে উৎসব কর। তারপর তুমি যা চাও বললে, তাই কর, শিশুর মত ঘুমোও। যাও বিরাট। যাও।
অপেক্ষার অবসান, স্বপ্ন বাস্তবে নেমে এসে বিরাটের হাতে ট্রফি

ট্রফিতে চুম্বন বিরাটের।