“ফুটবলে গুরুত্বপূর্ন হল গোল। দু-লেগের খেলায় সেই গোল করে প্রমাণ করে দিয়েছি, আমরা ফাইনালে ওঠার যোগ্য। তাই এরচেয়ে আর বেশি কিছু বলা আমার উচিত নয়।” প্যারিসের মাটিতেও ২-১ গোলে জেতার পর পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে একটানা কথাগুলো বলে গেলেন। এনরিকে মানছেন, আর্সেনাল ভাল খেলেছে। তঁাদের জিততে যে যথেষ্ট ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাও মেনে নিচ্ছেন পিএসজি কোচ। তবু তঁার স্পষ্ট অভিমত, তঁারাই যোগ্য দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছেন।
লন্ডনের মাটিতে গিয়ে আর্সেনালকে ১-০ গোলে হারানোর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার পথে এক পা ফেলে রেখেছিল পিএসজি। বুধবারও পার্ক দ্য প্রিন্সেসে দ্বিতীয় সেমিফাইনালেও ফ্যাবিয়ান রুইস ও আশরাফ হাকিমির করা গোলে ২-১ ব্যবধানে আর্সেনালকে হারিয়ে দেয় পিএসজি। যদিও শুরু থেকে দাপটের সঙ্গে বুধবার খেলা শুরু করে লন্ডনের দলটি। সেই সময় যদি পিএসজি গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে না তুলতেন তাহলে খেলার ফল অন্যরকম হতে পারত। তবে খেলা যত গড়িয়েছে ততই ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিতে শুরু করেছে পিএসজি। ১৭ মিনিটে খিচা কাবারাস্কেইয়ার শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। নাহলে সেই সময় পিএসজি এগিয়ে যেতে পারত। তবে গোল পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ফরাসি দলটিকে। ২৭ মিনিটে প্রথম গোল করে তারা এগিয়ে যায়। গোলটি করেন রুইস। বিরতিতে দু লেগ মিলিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে মাঠ ছাড়ে পিএসজি। ৭২ মিনিটে ফের গোল করে পিএসজিকে এগিয়ে দেন হাকিমি। তার মাঝে ৬৬ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছিল পিএসজি। ভিতিনিয়ার দুর্বল শট রুখে দেন আর্সেনালের গোলরক্ষক ডেভিড রায়া। ৭৬ মিনিটে সাকা গোল করে কিছুটা মানরক্ষা করেন আর্সেনালের। ২০০৬ সালের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়েছিল আর্সেনাল। সেই সুযোগ তাদের হাতছাড়া হল। উল্টোদিেক ২০২০ সালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে যাওয়া পিএসজি এবার সেই মিউনিখের মাঠে ইন্টার মিলানের বিরুদ্ধে ফের ফাইনাল খেলবে। ফাইনাল ৩১ মে।
লুইস এনরিকে যেখানে দাবি করেছেন তঁারাই ফাইনাল খেলার যোগ্য, ঠিক উল্টো বার্তা দিয়েছেন মিকেল আর্তেতা। আর্সেনালের কোচ আর্তেতা জানিয়ে দিয়েছেন,“আমরা দু-লেগেই ভাল খেলেছি। কোনও সন্দেহ নেই, আমরা ভাল খেলেও হেরে গিয়েছি। তবে স্পষ্ট বলে দিতে চাই, আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার যোগ্য দল ছিলাম। দুটো ম্যাচে দোন্নারুম্মার ম্যাচের সেরা হওয়ার পিছনে এটাই তা প্রমাণ করে দিচ্ছে।” কিন্তু এনরিকের বক্তব্য হল, তঁারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্যায়ের খেলায় লিভারপুল ও অ্যাস্টন ভিলাকে হারিয়ে ছিলেন। তাছাড়া লিগে পর্বে তঁারা মোটেই ভাল খেলতেও পারছিলেন না। প্রথম পঁাচ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে হেরেছিলেন। তারমধ্যে আবার আর্সেনালের কাছেই ২-০ গোলে পরাভূত হয়েছিল পিএসজি। “যে কোনও প্রতিযোগিতায় ফলাফল হল গুরুত্বপূর্ন। লিগ পর্বে আমাদের নয় পয়েন্ট আরও প্রাপ্য ছিল। কিন্তু ফলাফল তা বলছে না।” মন্তব্য এনরিকের। পরমুহূর্তে লুইস এনরিকে দাবি করেছেন, লিগ পর্বে কঠিন ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাই তঁাদের দলকে ফাইনালে তুলতে সাহায্য করেছেন,“পরিসংখ্যান দেখিয়ে দিচ্ছে, আমরা ইউরোপ সেরা দলগুলোর মধ্যে একটা। এই মুহূর্তে আমরা ধীরে ধীরে নিজেদের উন্নতি করতে শুরু করেছি। এখন আমরা প্রমাণ করে দিতে পারলাম, ফাইনাল খেলার যোগ্য আমরাই।” গতবছর লুইস এনরিকের ছিল প্রথম মরশুম। সেবার বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে সেমিফাইনালে হেরে ছিটকে যায় পিএসজি। এবার ফাইনালে উঠে বার্সেনোলার প্রাক্তন কোচ লুইস এনরিকে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি ইতিহাস তৈরিতে একজন কিংবদন্তী কোচ। “পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর আমি জানিয়ে ছিলাম, ইতিহাস তৈরি করতে পিএসজির দায়িত্ব নিয়েছি। সেই লক্ষ্যে অনেকটা সফল। তবে পিএসজির হাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ট্রফি তুলে দিতে পারলে তবেই ভাববো ইতিহাসের পাতায় অন্তত নাম লেখালাম।”

সিনার শীর্ষে, দ্বিতীয় স্থানে আলকারাজ
গতবার জকোভিচকে ফাইনালে হারিয়ে ট্রফি তুলে ধরেছেন উইম্বলডন বিজয়ী আলকারাজ।