ভারতের সিঁদুর অভিযানকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ও ভারতের ক্রিকেটে বিশাল প্রভাব ফেলতে শুরু করল। বিশেষ করে পাকিস্তান ক্রিকেটে বিশাল অদল-বদল ঘটছে। আগামী দিনে যে পাকিস্তান সুপার লিগ বা পিএসএল হবে তা নিয়েও প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গিয়েছে। সব মিলিয়ে সিঁদুর অভিয়ানকে কেন্দ্র করে তুলকালাম এশিয়ার ক্রিকেট।
ভারতে এখন চলছে আইপিএল। ঠিক তেমনি পাকিস্তানে চলছে পিএসএল। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এই মুহূর্তে উত্তেজনা চরমে। যে জায়গায় গিয়ে পিএসএল দঁাড়িয়েছে তাতে এই প্রতিযোগিতা শেষ পর্যন্ত হবে কিনা তাই নিয়ে সন্দেহ তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার পিএসএলে খেলা ছিল করাচি কিংস বনাম পেশোয়ার জালমি। খেলাটি হতো রাওয়ালপিন্ডিতে। সেই ম্যাচ খেলা শুরুর আগের মুহূর্তে বাতিল করা হয়। বিশেষ করে ম্যাচের কয়েক ঘন্টা আগে রাওয়ালপিন্ডিতে ড্রোন হামলার পর আর কোনও ঝঁুকি নেয়নি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। শুধু এই ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে তাই নয়, শুক্রবার খেলা ছিল লাহোর কালান্দার্স বনাম পেশোয়ার জালমি। সেই ম্যাচও বাতিল করে দিয়েছে পাকিস্তান বোর্ড। বৃহস্পতিবার সমস্ত ফ্রাঞ্চাইজিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল পাক বোর্ডের কর্তারা। সেখানেই ঠিক হয়েছে, বেশ কিছু ম্যাচ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাতিল করা হতে পারে। তারজন্য সকল ফ্র্যাঞ্চাইজি যেন প্রস্তুত থাকে।
রাওয়ালপিন্ডিতে চারটে ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। সেই খেলাগুলি ছিল ৭, ৮, ৯ ও ১০ মে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ হওয়ার কথা ১১ মে মুলতানে। রাওয়ালপিন্ডিতে ১৩ মে কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল। এলিমিনেটর ও ফাইনাল ম্যাচগুলো হবে ১৪, ১৬ ও ১৮ মে লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচগুলো লাহোরে হওয়া নিয়ে জোর সংশয় দেখা দিয়েছে। সম্ভবত সেই ম্যাচগুলো লাহোর থেকে সরিয়ে নিয়ে চলে যাওয়া হতে পারে করাচিতে। সবই ঘটছে ভারত-পাকিস্তানের সাময়িক উত্তেজনার কারণে।
এদিকে লন্ডনের দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন জানাচ্ছে, পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের গোলাবর্ষণের কারনে পিএসএলে খেলা ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা আর থাকতে চাইছেন না। একাধিক ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার এখন পিএসএলে খেলেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জেমস ভিন্স, টম কারান, স্যাম বিলিংস, ক্রিস জর্ডান, ডেভিড উইলি, লুক উড ও টম কোহলার-ক্যাডামোর। তাছাড়া কোচ হিসেবে রয়েছেন রবি বোপারা, আলেকজান্দ্রা হার্টলি-রা। বুধবার অপারেশন সিঁদুর অভিযানের পর দু-দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌছেছে। ২২ এপ্রিল পাহেলগামে সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালিয়ে নিরীহ ২৬জন ভারতীয়কে হত্যা করে। তারই প্রতিশোধ হিসেবে অপারেশন সিঁদুর অভিযানে নেমেছে ভারত। তাই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা চাইছেন না নিজেদের জীবনের ঝঁুকি নিয়ে পাকিস্তানে থাকতে।
ভারতীয় ক্রিকেটেও এই উত্তেজনা প্রভাব ফেলেছে। ১১ মে ধর্মশালায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম পাঞ্জাব কিংসের মধ্যে খেলাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমেদাবাদে স্থানান্তরিত করা হয়েছে খেলাটি। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচ হবে। ম্যাচটি শুরু হবে ৩-৩০ মিনিট থেকে। সুতরাং ভারতেও ক্রিকেট খেলার উপর প্রভাব পড়েছে। কিন্তু ভারতের চেয়ে এই মুহূর্তে পাকিস্তানের ক্রিকেটে প্রভাব পড়েছে বিশাল। তাই পাকিস্তানের মাটিতে পিএসএল হবে কিনা তাই নিয়ে এখন সন্দেহ চরমে।