সীমান্তে লড়াই চলছে। এর মধ্যে ক্রিকেট হয় নাকি! ভারতীয় আর্মড ফোর্স যখন জীবন বাজি রেখে লড়াই করছে, তখন দেশের বিভিন্ন শহরে ক্রিকেটের বিনোদনে ব্যস্ত ক্রিকেটাররা। এটা কেউ মেনে নিতে পারেন না। তারপর কখন দেশের মধ্যে কোনও অঘটন ঘটে গেলে কে তার দায় নেবে। এরই মাঝে বিদেশিরা দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে বসেছে। এর সমাধান সূত্র বের করতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা সরকারের সাহায্য চায়। জানিয়ে দেয়, সরকারের কথা মেনে বোর্ড কাজ করবে। সকাল থেকে এ নিয়ে নানা বৈঠক করে শুক্রবার দুপুরে ভারতীয় বোর্ড জানিয়ে দেয়, আপাতত এক সপ্তাহ আইপিএল স্থগিত রাখা হল। তারপর সূচি ঠিক করে টুর্নামেন্ট শুরু করা যাবে। টুর্নামেন্ট স্থগিত করার আগে বোর্ড কর্তারা কথা বলে নেন ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে। কথা বলেন সহযোগী ব্রডকাস্টারদের সঙ্গেও। সকলে এই সিদ্ধান্তে একমত পোষন করেন। তারপর বোর্ড জানিয়ে দেয়, আইপিএল আপাতত স্থগিত। বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লা এই খবর জানিয়ে বলেন, নতুন সূচি জানানো হবে সকলের সঙ্গে কথা বলে। আমরা ভারতীয় সেনাকে নিয়ে গর্বিত। আইপিএলের চেয়ারম্যান অরুন ধুমাল বলেন, পরিস্থিতি বিচার করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। ক্রিকেটারদের পাশাপাশি সাধারন মানুষের কথা ভেবে ধরমশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের খেলা বন্ধ করা হয়।
তবে প্রশ্ন উঠেছে যে এরপর আদৌ কি আইপিএল শুরু করা যাবে। পাক-ভারত যুদ্ধের মধ্যে একদিকে পিএসএল, অন্যদিকে আইপিএল নিয়ে ঝামেলায় দুদেশের ক্রিকেট বোর্ড। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সমাধান সূত্র বের করে ফেলল। পিএসএল সরিয়ে নেওয়া হল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। টুর্নামেন্টের আটটি ম্যাচ বাকি। তাই মরুশহরে সেই ম্যাচ করে নিতে অসুবিধা হবে না। পিএসএলের মতো আইপিএল কি সরিয়ে নেওয়া যেত না! টুর্নামেবন্ট শেষ করতে এখনও ১৪টি ম্যাচ বাকি। ভারতের বিভিন্ন শহরে সেই ম্যাচগুলি হওয়ার কথা। পরিস্থিতি বদল হলে টুর্নামেন্ট আবার শুরু কর যাবে বলে বোর্ড কর্তারা মনে করছেন। আর বিদেশে নিয়ে যেতে হলে আর্থিক দিক থেকে খরচ বাড়ছে। এখনও দশদলের খেলা শেষ হয়নি। তাদের বিদেশের মাঠে গিয়ে খেলতে গেলে পকেটের দিকে তাকাতে হবে। আবার ব্রডকাস্টাররা সহজে রাজি হবেন না। তারা অপেক্ষা করতে রাজি। কিন্তু বিদেশে যেতে রাজি নন। তাই বোর্ডের কাছে টুর্নামেন্ট স্থগিত করা ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা ছিল না।
এর আগেও চারবার আইপিএল ধাক্কা খেয়েছে। টুর্নামেন্ট শুরু ২০০৮ সালে। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনের কারনে টুর্নামেন্ট দক্ষিন আফ্রিকা নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৪ সালে একই ঘটনা। সেবার টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়া হয় দুবাইয়ে। করোনাকালেও এক পরিস্থিতি। ২০২০ সালে আইপিএল হয় আরব আমিশাহিতে। ২০২১ সালে করোনার প্রকোপে শুরুটা ভারতে হলেও পরে টুর্নামেন্ট আরব আমিরশাহিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এবার তেমন কিছু কি করা যেত না! নাকি পাকিস্তান আগেভাগে চলে গিয়েছে বলে ভারতের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। এমন নানা কথা উঠে আসছে। এক সপ্তাহ ক্রিকেট নেই। বিদেশিরা নিশ্চয় ভারতে বসে থাকবে না। দেশে ফিরে যাবে। দেশে গিয়ে আবার তারা ফিরে আসবে তো! ২৫ মে আইপিএল ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল। এখন টুর্নামেন্ট বন্ধ থাকায় সেটা হয়তো জুনের প্রথম সপ্তাহে চলে যাবে। এদিকে ভারতীয় দলের তো সেই সময় ইংল্যান্ড যাওয়ার কথা। তারও আগে ভারতীয় এ দল ইংল্যান্ড সফরে যাবে। সেগুলি কি হবে এই সব দেখে মনে হচ্ছে এবারের মতো হয়তো আইপিএল বাতিল করে দেওয়া হবে। কারন পাক-ভারত লড়াই কবে শেষ হবে তা কেউ জানেন না। ধরে নেওয়া হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। না হলে..! এটাই এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বোর্ডের কাছে।