ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীরকে অনেকেই পছন্দ করেন না। তাঁর কোচিং নিয়ে কথা বলছেন না। বলা হচ্ছে, মাঠের বাইরে গম্ভীর যে ধরনের কথা বলেন, সেটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। তাই অনেকের কাছেই তিনি ভিলেন। এই যেমন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর বোর্ডের পক্ষ থেকে ক্রিকেটারদের পুরস্কার দেওয়া হয়। দেওয়া হয় কোচ ও সাপোর্ট স্টাফদেরও। সেখানে দেখা যায়, গম্ভীর যে টাকা পাচ্ছেন, তার থেকে অনেক কম টাকা দেওয়া হচ্ছে দলের সাপোর্ট স্টাফদের। এমন হবে কেন! গাভাসকর এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি টি২০ বিশ্বকাপে কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের উদহরন টেনে এনে বলেছিলেন, দলের সাফল্য সকলের। সেখানে কোচের থেকে তারপ সহকারিদের কম টাকা দেওয়া হবে কেন! কোচ এ নিয়ে বোর্ডকে কোনও কথা বলেছে। আমার অন্তত জানা নেই।
একথা শোনার পর গম্ভীর ছেড়ে কথা বলেননি গাভাসকরকে। কড়া ভাষায় আক্রমন করেছিলেন। সেটা এবার পুষিয়ে নিলেন গাভাসকর। আইপিএলে কেকেআর ছিটকে যাওয়ার পর কেউ কেউ বলছেন, গম্ভীর থাকলে এভাবে ছিটকে যেতে হত না। গাভাসকর উল্টোপথে হাঁটলেন। তিনি বললেন, গতবার কেকেআর চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবার দল গড়ার সময় তারা গতবারের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেন। কেন! এর ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। সাফল্য কি শুধু কোচের জন্যই এসেছে! একজন অধিনায়ক মাঠে দাঁড়িয়ে দলকে পরিচালনা করে। ফিল্ডিং করার সময় দলকে সঠিকভাবে টেনে নিয়ে যায়। কোচ ডাগআউটে বসে তো আর পরামর্শ দেয় না। একটা স্ট্র্যাটেজি আগে থেকে তৈরি থাকে। সেটা নিয়ে সবসময় সাফল্য আসে না। তখন বদলের প্রয়োজন হয়। সেটা অধিনায়ক করে। এখানে কোচের ভূমিকা থাকে না। তাই সাফল্য এলে অধিনায়ককে কৃতিত্ব দিতে হবে। কোচকে নয়। কেকেআর সেই অধিনায়ককে রিটেন না করে অন্যদের দিকে তাকায়। অকশনে পাঞ্জাব ভাল চাল দেয়। শ্রেয়সকে তুলে নিয়ে অধিনায়কও বানিয়ে দেয়। তাদের বিশ্বাসের মর্যাদাও দিয়েছেন শ্রেয়স। পাঞ্জাব প্লে অফে খেলছে। এর কৃতিত্ব পুরোপুরি শ্রেয়স। তা হলে কেকেআর মাঠের বাইরে কি দেখতে পেল। এটা নিশ্চয় আলাদা করে বলার দরকার পড়ে না। এবারের আইপিএলে দেখা গেল কোচ পন্টিং ডাগআউটে বসে পুরো দায়িত্ব শ্রেয়সের হাতে ছেড়ে দিলেন। দুজনের কেমেস্ট্রি আগে থেকে জানা। একসময় দিল্লি ক্যাপিটালসে দুজনেই ছিলেন। সেদিনের জুটি এবারের আসরে কাজে লেগে গেল।
দলের হয়ে চার নম্বরে ব্যাট করতে নামে। পাঞ্জাবের হয়ে শ্রেয়স বেশিরভাগ ম্যাচে তিনে খেলেছেন। রানও পেয়েছেন। এখনও পর্যন্ত চারশোর উপর রান পেয়ে গিয়েছেন শ্রেয়স। রান পাচ্ছেন। দলকে সাফল্য এনে দিচ্ছেন। একজন অধিনায়কের কাছ থেকে দল আর কি চাইতে পারে। অধিনায়কের মশলা যে শ্রেয়সের মধ্যে আছে তা তিনি দুটি আইপিএলে দলকে নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাই গতবারের সাফল্য শুধু গম্ভীরের হতে পারে না। এটাই গাভাসকর বোঝাতে চেয়েছেন।
রোহিত ও বিরাট টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন। অবসর নিয়ে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, আর পাঁচদিনের ক্রিকেটে তাঁদের পাওয়া যাবে না। চার নম্বরে জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে বিরাট চার নম্বরে খেলতেন। সেখানে শ্রেয়স অনায়াসে খেলতে পারতেন। কিন্তু তাঁকে তো ভারতীয় এ দলে রাখাই হল না। জানা নেই, টেস্টের দল নির্বাচনে তাঁর নাম আসবে কিনা। এটাও কি জাতীয় দলের হেড কোচ গম্ভীরের পরিকল্পনা! শ্রেয়স দলে না এলে বোঝা যাবে শ্রেয়সের সাফল্য মন থেকে মেনে নিতে পারেননি গম্ভীর। তাই ঘুরেও তাঁর দিকে তাকাতে চাইছেন না তিনি। এ নিয়ে এখনও ঝড় ওঠে নি। আগে দল ঘোষনা হোক। তারপর নিশ্চয় গাভাসকর আবার মুখ খুলবেন। ততদিন নিজেকে গুটিয়ে রাখলেন।