সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ৬ উইকেটে ২৩১ (২০ ওভার)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ১৮৯ (১৯.৫ ওভার)
যার শেষ ভাল, তার সব ভাল। প্রবচনের কথাটি কি সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কর্নধার কাব্য মারানের জানা আছে। জানা থাকলে তিনি সব থেকে বেশি খুশি হবেন। গতবার আইপিএল ফাইনালে উঠেও হেরেছিলেন কেকেআরের কাছে। আর এবার প্লে অফে যেতে পারলেন না। তবু হতাশায় না ডুবে দলটি যে ক্রিকেট খেলছে, তা দেখে সকলেই মনে করছেন-ইস কয়েকটা ম্যাচ আগে যদি কামিনসরা এভাব ছুটতে পারতেন। পারেনননি। তবু কামিনসদের জয়ের রথ ছুটছে, এটাই সানরাইজার্স ফ্যানদের কাছে বড় পাওয়া।
এক সপ্তাহ স্থগিত থাকা আইপিএল শুরু হওয়ার পর হায়দরাবাদ কোন জাদুতে জেগে উঠল! আগের ম্যাচে লখনউ সুপার জায়ান্টাসের ২০৬ রানের টার্গেট চার উইকেট হারিয়ে তুলে নিয়েছিল। আর শুক্রবার প্লে অফে ইতিমধ্যে জায়গা করে নেওয়া আরসিবিকে হারিয়ে দিল ৪২ রানে। টানা দুটি ম্যাচ জিতে তারা অনেকটা সামনে চলে এসেছে। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আফসোস থাকতেই পারে। কটি ম্যাচ আগে তারা এভাবে জ্বলে উঠলে কামিনসরাও হয়তো প্লে অফে চলে যেতে পারত।
তবে যা হয়নি, তা নিয়ে আলোচনা করে কি লাভ। তবু কথা আসে। এমন পারফরম্যান্স দেখার পর ওঠাটাই স্বাভাবিক। বিরাট কোহলিদের সামনে সানরাইজার্স শুরু থেকে ঝড় তুলে দিল। আসল ওঁরা এই মেজাজেই ব্যাটিং করে। মাঝে কয়েকটি ম্যাচ হারার পর প্রাক্তন ক্রিকেটাররা বলেছিলেন, নিজেদের খেলা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সব সময় হুটোপাটা করে খেললে বিপদ আসতে পারে। সেটা না বুঝে খেলতে গেলে বিপদ আসতেই পারে। কামিনসরা শোনেন নি। তারা এই মেজাজ থেকে বেরিয়ে আসতে চান নি। আর সেখানেই ভুল করে বসেছিলেন। স্থগিত থাকার পর খেলা আবার শুরু হতে দেখা গেল, দিল্লি আছে দিল্লিতেই। সানরাইজার্স পুরনো মেজাজ থেকে নিজেদের টেনে নিয়ে আসেনি। আক্রমনাত্মক মেজাজকে সামনে রেখে টান খেলে চলেছে। ওপেনার অভিষেক শর্মা এমন একজন ব্যাটসম্যান যিনি পাওয়ার প্লে-র সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঝড় তোলেন। আগের ম্যাচেও বড় রানের ইনিংস খেলেছিলেন। বিরাটদের সামনেও তাই করলেন। ১৭ বলে করলেন ৩৪। পাওয়ার প্লে-তে তুলল ২ উইকেটে ৭১। তবে সবাইকে পিছনে ফেলে দিলেন ইশান কিষান। তাঁর দাপটেই আরসিবি ব্যাকফুটে চলে গেল। ম্যাচের সেরা ইশান ৪৮ বলে করলেন অপরাজিত ৯৪ রান। বাকির সঙ্গত করে গেলেেন। আর তাতেই সানরাইজার্স করল ২৩১ রান।
এই রান তাড়া করে জিততে হলে ঝড়ে পাল্টা সাইক্লোন হওয়া উচিত। বিরাট ও সল্ট জুটি সেটাই করলেন। বিরাট ২৫ বলে করলেন ৪২। সল্ট ৩২ বলে ৬২। এরপর আর কিছু বলার নেই। একসময় আরসিবির রান ছিল ১৫.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭৩। কিন্তু সেই জায়গা থেকে ১৬ রানের মধ্যে আরসিবির সাত উইকেট চলে গেল। টি২০ ক্রিকেট এমনই। না হলে নাটক থাকবে কেন! তবে ম্যাচ হারলেও আরসিবির অসুবিধা নেই। বৃহস্পতিবার গুজরাট হেরেছে লখনউয়ের কাছে। এবার বিরাটরা হারলেন কামিনসদের কাছে। ম্যাচ হেরে একটা সমস্যা থেকে গেল। আরসিবি ১৩ ম্যাচ খেলে ১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে। গুজরাট এখনও তাদের থেকে এক পয়েন্টে এগিয়ে। কামিনসদের বিরুদ্ধে জিতে গেলে বিরাটরা একনম্বরে যেতে পারতেন। সেটা আর হল না। আর কামিনসরা ১৩ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট করে টেবিলে আপাতত আট নম্বরে দাঁড়িয়ে। এখনও তাদের একটি ম্যাচ বাকি। দেখা যাক, কামিনসরা কোথায় গিয়ে থামেন। নাকি জয়ের রথ এভাবেই ছুটবে!