মহম্মদ শামিকে ইংল্যান্ড সফরে দলে না নেওয়ার ব্যাপারে আইপিএল অগ্রাধিকার পেয়েছে। আইপিএলে ৯টি ম্যাচে শামির উইকেট মাত্র ৬টি। এমন পারফরম্যান্স করার পর কেউ কি জাতীয় দলে খেলার ব্যাপারে আলোচনায় থাকতে পারেন! পারেন না বলেই শামি দলের বাইরে। সেখানে তাঁর আগের পারফরম্যান্স দেখা হয়নি। ট্রেনার বা ফিজিওর সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়নি, শামিকে টেস্টের উপযোগী করতে তুলতে কতদিন সময় লাগবে। এমন কি এটাও ভেবে দেখা হয়নি, ভারতীয় এ দলে খেলিয়ে তাঁকে ফিট করে তোলা যায় কিনা। আসলে আইপিএল নির্বাচকদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে, শামিকে ইংল্যান্ড নিয়ে গেলে ভুগতে হবে।
তা হলে কি ঋষভ পন্থের ব্যাপারে আলোচনায় আইপিএল আসেনি। নিশচয় আসেনি। এলে ঋষভ দলে আসেন না। এই মরশুমে ১২টি ম্যাচে ঋষভ রান করেছেন ১৫১। গড় ১৩.৭২। তিনি নিজেও এই মরশুমের আইপিএলকে ভুলে যেতে চাইবেন। ২৭ কোটি টাকা জলে গেল, একথা ভাবতে পারেন লখনউয়ের কর্তারা। তবু ঋষভকে দলে নেওয়া হয়েছে। শুধু দলে নেওয়াই নয়, তাঁকে অ্ধিনায়ক শুভমান গিলের ডেপুটি করা হয়েছে। কোন যুক্তিতে ঋষভ দলের সঙ অধিনায়ক হলেন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন নির্বাচক প্রধান অজিত আগারকর। তিনি বলেছেন, আসলে টেস্টে অভিজ্ঞতার কারনে ঋষভকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ৪৩টি টেস্টে ওর রান প্রায় তিন হাজারের (২৯৪৮) কাছে। গড় ৪২-এর উপর। সেঞ্চুরি ৬টি। ৫টি হাফ সেঞ্চুরি আছে। সব থেকে বড় ব্যাপার এটাই যে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিন আফ্রিকার উইকেটে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে বড় ইনিংস খেলার ক্ষমতা আছে। ২০২১ সালে ব্রিসবেন টেস্টের কথা নিশ্চয় সকলের মনে আছে। গাব্বায় ঋষভের অসাধারন ৮৯ রানের ইনিংস দলকে সিরিজ জিতিয়েছিল।
এত সব দেখার পর আগারকর বলছেন, গত চার-পাঁচ বছর ধরে জাতীয় দলের হয়ে টেস্টে খেলছে ঋষভ। আমি বিশ্বাস করি, উইকেটের পিছন থেকে খেলা দেখে দলকে মতামত দিতে পারে। খেলা ভাল বোঝে। জাতীয় দলে খেলে ওর অভিজ্ঞতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন আসতে পারে না। শুভমানকে ঠিকভাব বোঝাতে পারবে। ওর মতো তরুন ক্রিকেটারদের দিকে আমদের সকলের নজর রয়েছে। যার আগামিদিনে দলকে ঠিকভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। তাই ওকে সহ অধিনায়ক করা হয়েছে।
তবে কি অধিনায়কের দৌড়ে অন্য কোনও ক্রিকেটারের নাম ওঠেনি! বুমরা বা রাহুল আলোচনায় আসেনি। আগারকর বলছেন, বুমরার নাম ওঠেনি। ওর সঙ্গে আগে এ নিয়ে কথা হয়েছে। ও নিজেও জানিয়েছে তিনটির বেশি টেস্ট খেলতে পারবে না। তাই আমরা ওর উপর বাড়তি চাপ দিতে চাই নি। আমরা চাই বোলিংয়ে নিজের সেরাট দেওয়ার চেষ্টা করুক। অন্য কিছু ভাবতে হবে না। তাই বুমরা কখনই আলেচনায় ছিল না। রাহুলের কথাও সেভাবে আসেনি। আমরা বিশ্বাস করি এই সিরিজে রাহুলের অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগবে। রাহুল এর আগেও ইংল্যান্ডের মাঠে খেলেছে। ওর কাছ থেকে বড় রানের ইনিংস দরকার। বাকি কাজে মাথা ঢুকিয়ে নিজের খেলায় চাপ বাড়াক, সেটা আমরা চাই নি। তাই গিলের জায়গায় অন্য কারোর নাম আসেনি।
ভাল কথা। নিজের ব্যাটিংয়ে নজর দিতে হবে রাহুলকে। বোলিংয়ের বাইরে কিছু ভাবার দরকার নেই বুমরার। তবে গিলকে কি করতে হবে। নিজের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দলের সব ক্রিকেটারদের নিয়ে ওকে বসতে হবে। ওর নিজেরও ব্যাটে রান কোথায়। ইংল্যান্ডে তিন টেস্টে গিল রান করেছেন ৮৮। তা হলে! তাঁর উপর বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। আসলে গম্ভীর জমানায় অন্য কিছু হতে পারে না। তিনি যা ভাববেন তাই হবে। এবং তাঁর সঙ্গে সঙ্গত করবেন আগারকর। এর বাইরে ভারতীয় ক্রিকেটে তো আর কিছু পড়ে রইল না।