পিএসজির হাতে ট্রফি উঠে গিয়েছে। ট্রফি নিয়ে সকলে উন্মাদ। ঠিক সেই সময় গ্যালারিতে ভেসে উঠল বিশাল একটা টিফো। সেই টিফোতে দেখা গেল এনরিকে ও তঁার প্রয়াত মেয়ে জানার ছবি। ছবিতে দেখানো হয়েছে, এনরিকে পিএসজির পতাকা পঁুতছেন। পাশে দঁাড়িয়ে তঁার ৫ বছরের মেয়ে জানা। আট নম্বর জার্সি গায়ে জানা দঁাড়িয়ে আছেন বাবার পাশে। হাড়ের ক্যানসারে ২০১৯ সালে মারা গিয়েছে তঁার নয় বছরের মেয়ে জানা। তারপর থেকে এনরিকে যেন তঁার মেয়েকে সবসময় খঁুজে বেড়ান মাঠে। মেয়ের মৃতু্যর পর জানা ফাউন্ডেশন করেছেন তিনি। সেই ফাউন্ডেশনের কালো টি শার্ট পরেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিজার্ভ বেঞ্চে বসবেন বলে এসেছিলেন তিনি। তঁারও গেঞ্জিতে রয়েছে ১০ বছর আগের একটা ছবি। যেখানে পিএসজির পতাকা পোঁতার স্কেচ রয়েছে গেঞ্জিতে। তাই তো ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আনন্দে আত্মহারা হতে দেখা গেল পিএসজি কোচকে। যাবতীয় আনন্দের মাঝে যেন খঁুজে নিলেন মেয়ে জানাকে।
মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ এরিনায় তখন খেলা শেষের বঁাশি বেজে গিয়েছে। আনন্দের জোয়ারে মুহূর্তের মধ্যে যেন ভেসে গেলেন এনরিকে। কখনও ফুটবলারেদর জড়িয়ে ধরছেন। আবার কখনও পাগল পারা হয়ে এদিকে থেকে ওদিকে ছুটে বেড়াচ্ছেন। মনে হচ্ছিল যেন নিজেকে আজ মেয়ের জন্য উত্্স্বর্গ করেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে কখনও কোনও দল ৫-০ গোলে জেতেনি। এবার সেটাই করে দেখাল পিএসজি। তারচেয়েও বড় কথা যে পিএসজিকে একসময় ইউরোপের সেরা করার জন্য কোটি কোটি ইউরো খরচ করে বিশ্বের তারকাদের নিয়ে এসেছিল। অথচ আজ তারকা বিহীন দল কিনা স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাল। ট্রেবলজয়ী হয়েছে পিএসজি। তাও আবার কিনা এনরিকের হাত ধরে। একদিকে মেয়েকে হারানোর স্মৃতি ফিরে পাওয়া, অন্যদিকে দলের বিশাল সাফল্য, সব মিলিয়ে দিনটাকে যেন বিশাল জয়ের উত্্সবে পরিণত করলেন এনরিকে।
“বার্লিনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পর একটা দারুন মুহূর্তের ছবি এখনও আমার মনের মণিকোঠায় ভেসে ওঠে। যেখানে আমার মেয়ে জানা বার্সেলোনার পতাকা পঁুতে দিয়েছিল। এবার সে নেই। আশাকরি তার আত্মা আমার সঙ্গে আছে। তাই তার হয়ে নাহয় আমি মাঠে পিএসজির পতাকা পঁুতে দেব।” গত জানুয়ারিতে এক সাক্ষাতকারে একথা বলেছিলেন এনরিকে। সেই কথার সঙ্গে তঁাকে মনে করিয়ে দেওয়া হয় বিশাল টিফোর প্রসঙ্গ। “খুব ভাল লাগছে যে, আমার পরিবারের কথা সমর্থকরা মনে রেখেছেন। জানার স্মরণে তঁারা টিফো বানিয়েছেন। তাই আমার কাছে এই টিফো হল একটা আবেগপূর্ন ব্যাপার। সবসময় মেয়ের কথা ভেবে চলি। দেখুন মেয়েকে মনে রাখার জন্য যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে হবে তার কোনও মানে নেই। ওতো আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী। বিশেষ করে যখন হেরে যাই তখন আমার পাশেই থাকে।” মিক্সড জোনে কথাগুলো বলে গেলেন এনরিকে। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে দলের জয় প্রসঙ্গে শুধু কয়েকটা কথা বলেন তিনি। পঁাচ গোলে জিতলেও বিষয়টাকে বড় করে দেখছেন না এনরিকে। সেইজন্য তিনি বলছিলেন, “নিঃসন্দেহে আমার কাছে এই ঘটনা একটা আবেগপূর্ন ব্যাপার। তাই বলে দল পঁাচ গোলে জিতেছে বলে আলাদা করে কিছু বলার থাকতে পারে না। পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে আমি সবসময় স্বপ্ন দেখতাম যাতে একাধিক ট্রফি ক্লাবের হাতে তুলে দিতে পারি। সেই লক্ষ্যে সফল হওয়ার জন্য নিঃসন্দেহে আমি খুশি।” দল পঁাচ গোল জেতার চেয়ে তঁাকে আরও বেশি আনন্দ দিয়েছে, ফ্রান্স ফুটবলে একটা ইতিহাস তৈরি করে দিয়ে যেতে পেরেছেন বলে। “ফরাসিদের হৃদয় নিশ্চয় জয় করতে পারলাম। ফ্রান্স ফুটবলে ইতিহাস তৈরি করল পিএসজি। এই ব্যাপারটা কিছুটা হলেও গর্বের।” বলেন এনরিকে। পরমুহূর্তে তঁাকে বলতে শোনা যায়, “শুরু থেকে খেলাটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখাই ছিল আমার প্রধান উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্যে আমি পুরোপুরি সফল। ফুটবলারদের একটা কথা ডাগআউটে বসে বলে গিয়েছি, তোমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগবে না। খেলার ফল যখন তখন ঘুরে যেতে পারে। তারজন্য সুযোগ পেলে তাকে কাজে লাগাও। ছেলেরা সেটাই করে দেখাতে পেরেছে। জয় সুনিশ্চিত করার জন্য তারা পরিশ্রম করে গিয়েছে ৯০ মিনিট।”

এজবাস্টনে কুলদীপকে চাই, ফিল্ডিংয়েও নজর দিতে হবেঃ ক্লার্ক
শুরুতেই সিরিজে ভারত পিছিয়ে পড়েছে। এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। সেই লড়াইয়ে জিততে হলে দলে কিছু বদল দরকার। সঙ্গে আগের