বাংলার ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে কজনের মাথাব্যথা আছে! কতজন রনজিতে খেলা বাংলার ১১ জন ক্রিকেটারের নাম বলতে পারবেন! কেউ পারবেন না। আসলে ফুটবলের মতো বাংলার ঘরোয়া ক্রিকেট জনপ্রিয় না হওয়ায় এমনটা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার দুপুরে সেই ক্রিকেট নিয়েই গোল বাঁধল। খেলা বন্ধ হল। শুরু করতে এগিয়ে আসতে হল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। পাঁচ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর খেলা শুরু হল। এমন ঘটনা বাংলার ক্রিকেটে আগে হয়েছে কিনা অনেকেই মনে করতে পারলেন না। এটাই হয়তো ময়দানে ক্রিকেটকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এল।
ঘটনাটি কি হয়েছে। সেদিকে তাকানো যেতে পারে। লিগ ফাইনাসল শুরু হয়েছে রবিবার। দিনরাতের ফাইনাল গোলাপি বলে খেলা হয়। দুপুর একটায় খেলা শুরু। প্রথমদিনের শেষে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভবানীপুর করে ৩ উইকেটে ২৫৭ রান। সেঞ্চুরি করে নজর কাড়েন শাকির হাবিব গাধীঁ। তিনি ১০২ রান অপরাজিত ছিলেন।
সোমবার দুপুরে তাঁকে ঘিরেই গোল। প্রথম ওভারে দ্বিতীয় বলে কনিষ্ক শেঠের বোলিংয়ে গাধীঁ স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। আম্পায়ার অভিজিত ভট্রাচার্য ( যিনি এবার আইপিএল ম্যাচ করেছেন) আউটের সিদ্ধান্ত দেন। তাঁর সিদ্ধান্ত জানার পর গাধীঁ প্যাভিলিয়েনের দিকে হাঁটা শুরু করেন। পরের ব্যাটসম্যান বিবেক সিংও মাঠে ঢুকে পড়েন। বাউন্ডারি লাইনের বাইরে আসার আগে গাধীঁকে আটকে দেন প্যাভিলিয়েনের বাইরে বসে থাকা ভবানীপুরের ক্রিকেটার ও কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য গাধীঁ আউট নন। রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে ক্যাচ ঠিকভাবে ধরা হয়নি। তাঁদের অভিযোগে তৃতীয় আম্পায়ার টিভিতে ঘটনাটি দেখেন। তিনি দেখে বোঝেন ক্যাচটি ঠিকভাবে ধরা হয়নি। এনিয়ে গোল বাঁধে দুই দলের মধ্যে। ভবানীপুরে জানায় গাধিঁকে আবার ব্যাট করতে না দিলে তার খেলবেন না। পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গলও এক কথা জানায়। এই টাপান উতোরে খেলা বন্ধ হয়ে য়ায়। সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় মাঠে এসে দুই দলের কর্তাদের সঙ্গে বলেন। কিন্তু সেই কথায় কাজ হয় না। ফলে আম্পায়াররা খেলা বন্ধ করে মাঠের বাইরে চলে আসেন। এটাই লিগ ফাইনালকে আলোচনায় নিয়ে আসে।
খবর যায় সৌরভের কাছে। সোমবার বিকেলে সিএবিতে অ্যাপেক্স কমিটির মিটিং ছিল। তার জন্য সৌরভ বিকেলের দিকে ইডেনে আসেন। এসে পুরো ঘটনা শোনেন। দুই শিবির তাঁর সঙ্গে কথা বলে। তাঁদের কথা শুনে সৌরভ যান আম্পায়ার্স রুমে। সেখানে আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানিয়ে দেন গাধীঁ আবার ব্যাট করবেন। কারন টিভি রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে গাধীঁর ক্যাচ ঠিকভাবে ধরা হয়নি। এতেই সব মিটে যায়। সন্ধ্যে ৬টা ১০ মিনিটে আবার খেলা শুরু হয়। খেলা বন্ধ হয়েছিল দুপুরে ১টা ৫ মিনিটে। এর অর্থ পাঁচ ঘন্টা খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হল। এখন প্রশ্ন, সৌরভ শহরের বাইরে থাকলে কি হত! খেলা কি শুরু করা যেত!
মাঠের কেউ কেউ বলছেন প্রচন্ড গরমের জন্য নাকি ক্রিকেটাররা খেলতে চাইছিলেন না। তাঁরাও মনে করেছিলেন খেলা বন্ধ থাকলে ভাল হয়। ঘটনা বাস্তব কিনা তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে এটাও ঘটনা যে দুপুরে প্রচন্ড গরম ছিল। এই তাপদাহে খেলা সম্ভব নয়। দিনরাতের খেলা। তাহলে বিকেল তিনটেয় শুরু করলে অসুবিধা কোথায়! ফ্লাড লাইটে খেলা হবে। সেটা তো করাই যায়। এটা ভেবে দেখতে পারেন বাংলার ক্রিকেটার কর্তারা।