রজার ফেডেরার ও রাফায়েল নাদালের চেয়ে গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের সংখ্যায় তিনি এগিয়ে। এমন কী বহু টেনিস বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফেডেরার ও নাদালের চেয়ে টেকনিক্যাল দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন। তবু এই দুজনের কাছে নিজেকে ব্রাত্য বলে মনে করেন নোভাক জকোভিচ।
ফেডেরার ২০টা ও ২২টা গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন নাদাল। সেই জায়গায় জকোভিচের গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের সংখ্যা ২৪। তবু এই দুজনের তুলনায় টেনিস মহলে তিনি সেভাবে পূজিত হননি। যারজন্য একে সাক্ষাতকারে সার্বিয়ান তারকা আক্ষেপের সুরে বলেছেন, “তিনজনের মধ্যে আমি সর্বদা নিজেকে অবাঞ্ছিত সন্তানের মতো মনে করতাম। নিজেকে এই নিয়ে প্রশ্ন করিনি তা নয়। কেন আমাকে তাদের তুলনায় ছোট মনে হয়, তা নিয়ে অনেক সময় মনে কষ্ট পেয়েছি। তবু সবকিছু মেনে নেওয়া ছাড়া আমার সামনে অন্যকোনও পথ খোলা ছিল না।” পরমুহূর্তে তঁাকে বলতে শোনা যায়, “অনেক সময় মনে হয়েছে, আমার আচরণে হয়তো কোনও সমস্যা রয়েছে। হয়তো এই দিকটা পরিবর্তন করলে ঠিক হয়ে যাবে। পরিবর্তন করেও দেখেছি, যেখানে ছিলাম সেখানেই থেকে গিয়েছি।”
নবম দশকে যখন ফেডেরার-নাদালের আধিপত্য চরমে, তখন তঁাকে তৃতীয় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কেউ মনে করেনি। বরং তঁাকে এই দুজনের তুলনায় অনেকটা পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। নাদাল ছিলেন স্প্যানিয়ার্ড, সুইস ছিলেন ফেডেরার। তাই হয়তো বিশ্ব টেনিস এই দুজনকে অনেক বেশি কাছে টেনে নিয়েছিল। পশ্চিমের দেশগুলো এঁদের নিয়ে হইচই জুড়ে দিত। তেমনই মনে করছেন জকোভিচ। এও মনে করছেন, এই দুজনের তুলনায় টেনিস জগত্্ তঁাকে কখনও সেইভাবে গুরুত্ব দেয়নি। “তবে এটুকু বলতে পারি, এই দুজনকে কখনও আমি অশ্রদ্ধা করিনি। বরং শ্রদ্ধার চোখে তঁাদের সব সময় দেখতাম। পিছিয়ে রাখলেও আমি কখনও হতোদ্যম হয়ে পড়িনি। আমি প্রকাশ্যে বলেছিলাম, এই দুজনকে একদিন ঠিক ছাপিয়ে যাব। হব এক নম্বর। কিন্তু সাধারণ টেনিস প্রেমীরা আমার কথাকে কেউই গুরুত্ব দেয়নি।” আক্ষেপের সুরে বলেন জকোভিচ।
সম্প্রতি ফরাসি ওপেনের সেমিফাইনালে জানিক সিনারের কাছে সেমিফাইনালে হেরে যান সার্বিয়ান তারকা। এখন তিনি জুনিয়রদের কাছে সেভাবে এঁটে উঠতে পারছেন না। তবু চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যেভাবে হোক আরও একটা গ্র্যান্ড স্লাম জিততে। তাহলে ২৪ সংখ্যাকে নিয়ে যাবেন ২৫। তবু জকোভিচ বলছেন, ফেডেরার ও নাদালের মধ্যে তঁার দারুন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। কিন্তু কখনও তঁাদের বন্ধুত্বে চিড় ধরেনি। “বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হলে তাকে ঘৃণা করতে হবে, কিংবা হারাবার জন্য অন্যকোনও পথ অবলম্বন করব, এসব মাথায় কোনওদিন আসেনি। বরং চেষ্টা করেছি, লড়াই করে ম্যাচটা জিততে। যেদিন যে ভাল খেলেছে সেই জিতেছে।” সার্বিয়ান তারকার সাফ কথা, ফেডেরার ও নাদালকে তিনি সবসময় শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছেন। কখনও তিনি এই দুজন সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করেননি। করবেনও না। ফেডেরার ও নাদালের মধ্যে তঁার বন্ধুত্ব বেশি ছিল নাদালের সঙ্গেই।